ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর, গাজার ৭০% এলাকা ‘নো-গো জোন’ বা সাধারণ মানুষের প্রবেশের জন্য নিষিদ্ধ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সংস্থা OCHA জানিয়েছে, এই অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় গাজাবাসীদের প্রবেশ ও বসবাস নিষিদ্ধ করে ইসরায়েল তাদের জোরপূর্বক অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
দক্ষিণে রাফাহ, উত্তরে গাজা শহর – সবই লক্ষ্যবস্তু
গাজার দক্ষিণে রাফাহ গভর্নরেটের বড় অংশ এবং উত্তরে প্রায় পুরো গাজা শহর এখন ‘নো-গো জোন’। বিশেষ করে শুজাইয়া এলাকার পূর্বাংশ এবং ইসরায়েলি সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোও সম্পূর্ণভাবে সীমাবদ্ধ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা: গাজায় স্থায়ী দখল?
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, গাজার দুই মিলিয়নের বেশি মানুষকে নতুন একটি স্থল অভিযানের মাধ্যমে "স্থানান্তর" করা হবে এবং সেখানে ইসরায়েলি সেনারা একটি "স্থায়ী উপস্থিতি" বজায় রাখবে।
এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসরায়েল ৬০,০০০ রিজার্ভ সেনা ডেকেছে এবং খাদ্য ও অন্যান্য মানবিক সহায়তার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিচ্ছে। মানবিক সংকট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
ফিরে না আসার শঙ্কায় গাজাবাসী
আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজজুম জানান, বহু ফিলিস্তিনি মনে করছেন এটি শুধু হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান নয়, বরং গাজাকে জনশূন্য করে ফেলা ও ভূখণ্ড পুনর্গঠনের অপচেষ্টা।
গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি চরমে
ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট (PRCS) জানিয়েছে, গাজায় এখন “চরম দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি” তৈরি হয়েছে। বাজার ও সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে খাবারের কোন অস্তিত্ব নেই। ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা B’Tselem বলছে, “ক্ষুধা ও অভাবকে একটি যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।” তাদের মতে, দুর্ভিক্ষের শিকারদের অর্ধেকই শিশু।
PRCS জানায়, এখন শুধু সামান্য ডাল জাতীয় খাবার দিয়ে গুটিকয়েক রান্নাঘরে সীমিত খাবার বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
নিহতের সংখ্যা ভয়াবহ
১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২,৪৫৯ জন নিহত হয়েছেন। চলমান সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫২,৫৬৭ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সূত্র।
সূত্র: আল জাজিরা
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন