ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বেসামরিক ব্যবহারযোগ্য ড্রোনকে বোমা ও নজরদারি সরঞ্জামে পরিণত করে গাজার ওপর হামলা চালাচ্ছে — এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে আল জাজিরার সানাদ তদন্ত সংস্থা।

তদন্ত অনুযায়ী, চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান DJI-এর তৈরি ড্রোন ইসরায়েল হামলার জন্য ব্যবহার করছে। বিশেষ করে এই ড্রোনগুলো গাজার হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র এবং বেসামরিক জনগণের ওপর হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি ফিলিস্তিনি বন্দিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ইসরায়েলি সেনারা এই ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

তদন্তে জানা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনী DJI Matrice 300, DJI Mavic, DJI Avata, এবং DJI Agras মডেলের ড্রোনকে সামরিক অভিযানের জন্য বিশেষভাবে কাস্টমাইজ করেছে।

মুসলিম বিশ্ব রিলেটেড নিউজ

ইয়েমেন ইসরাইলী লক্ষ্য ও মার্কিন যুদ্ধজাহাজের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে

ইসরাইলের বিমান হামলায় গাজায় ৪০০ জন নিহত, যুদ্ধবিরতি ভেঙে নতুন সংঘাত

ইসরায়েল গাজার ৭০% এলাকা ‘নো-গো জোন’ ঘোষণা করেছে: আল জাজিরা

কাসসাম ব্রিগেডে ৩০ হাজার তরুণ নিয়োগ, ইসরায়েলের বিপদ ঘনিয়ে আসছে?

• DJI Agras মূলত কৃষিকাজের জন্য তৈরি হলেও, এর বড় পে-লোড বহনের ক্ষমতা ও নির্ভুল উড়ার সক্ষমতা একে বিস্ফোরক বহনে উপযোগী করে তুলেছে।

• DJI Avata ব্যবহার করা হচ্ছে গাজার টানেল নেটওয়ার্ক মানচিত্র তৈরি ও নজরদারির কাজে।

• DJI Mavic ব্যবহৃত হচ্ছে রিকনেসান্স ও টার্গেট অ্যাকুইজিশনের কাজে।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে, একটি DJI Agras ড্রোন গাজার জাবালিয়ায় তুর্কি সাহায্য সংস্থা IHH-র একটি ভবনে বোমা ফেলে, যার মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে একটি স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।

একই রকমভাবে নভেম্বর মাসে বেইত লাহিয়ার একটি আবাসিক এলাকায় এই ড্রোন দিয়ে বোমা হামলা চালানো হয় যেখানে আগে থেকেই বেসামরিক জনগণ আশ্রয় নিয়েছিল।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শুজাইয়া এলাকায় একটি স্কুলে প্রবেশ করানোর জন্য একজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে DJI Avata ড্রোনের মাধ্যমে সেই পুরো অপারেশন নজরদারি করে ইসরায়েলি সেনারা।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক সেনা FPV গগলস ব্যবহার করে ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করছে এবং বন্দির প্রতিটি পদক্ষেপ রেকর্ড করছে।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে DJI তাদের ড্রোন বিক্রি উভয় দেশেই বন্ধ করেছিল এবং সফটওয়্যারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। কিন্তু ইসরায়েলের বেলায় এমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

DJI জানিয়েছে, তারা “সহিংস ব্যবহারের জন্য ড্রোনের ব্যবহার সমর্থন করে না।” কিন্তু তারা এখনও ইসরায়েলের জন্য বিক্রি বন্ধ করেনি কিংবা সফটওয়্যার রেস্ট্রিকশনও কার্যকর করেনি।