সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার সাতপাড়া (কার্তিকপুর) গ্রামে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে আপন চাচাতো ভাই হেলাল উদ্দিন (২৮) কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইউসুফ মিয়া (৪৪), রিকসন মিয়া (৩৫) ও আলমগীর মিয়া (৩৭) নামের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল গভীর রাতে কার্তিকপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, একই মামলায় গত বছর আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৭ জুন সকাল ১১টার দিকে সাতপাড়া বাজারে খাস জমিতে থাকা একটি দোকান ঘর নিয়ে ইউসুফ মিয়া ও মুজিবুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মুজিবুর রহমানের সমর্থক হাবিবুর রহমান নিহত হন। ঘটনার সময় হেলাল উদ্দিন ছিলেন হবিগঞ্জের আজমীরিগঞ্জে। কিন্তু দুপুরে এলাকায় ফেরার পর, ইউসুফ মিয়া, রিকসন মিয়া ও আলমগীর মিয়া সহ আরও কয়েকজন তাকে প্রকাশ্যেই নৌকায় তুলে নিয়ে যায়। পরে খালিয়াজুড়ির শেষপ্রান্তে হাওর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান ইউসুফের বোন মিনারা বেগম।
পরবর্তীতে মিনারা বেগম একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যেখানে মুজিবুর রহমানের সমর্থকদের অভিযুক্ত করে মোট ৩৪ জনকে আসামি করা হয়। এরপর, ২০২৩ সালের ১০ জুলাই সিলেট ডিআইজি রেঞ্জের এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পিবিআই তদন্তে নামে এবং বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে প্রমাণ পাওয়া যায়, হেলাল উদ্দিন হাবিব হত্যার সময় ঘটনাস্থলে না থাকলেও, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই তারিকুল ইসলাম জানান, “সাতপাড়া বাজারের সংঘর্ষের সময় হেলাল উদ্দিন আজমিরীগঞ্জে ছিলেন। পরে হাবিব হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউসুফ, রিকসন ও আলমগীর তাকে হাওরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই হেলালকে হত্যা করে তার আপন তিন চাচাতো ভাই। গ্রেফতারকৃতদের শাল্লা থানা পুলিশ থেকে পিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “পিবিআইয়ের রিকুইজিশনের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেফতার করে পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন