ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। গাজায় চলমান যুদ্ধের জেরে দেশজুড়ে সাধারণ জনগণের মাঝে নেতানিয়াহুর প্রতি ক্ষোভ দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাজধানী তেল আবিবে ইসরাইলি পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে, যা এখন নিয়মিত চিত্রে পরিণত হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ ইসরাইলিরা অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে এই সংঘাতকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাদের দাবি, তিনি জিম্মিদের জীবনের বিষয়ে উদাসীন এবং গাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর ব্যাপারে কোনো মানবিকতা দেখাচ্ছেন না।
একজন আন্দোলনকারী বলেন, “এখনো গাজায় আমাদের ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে। সামরিক অভিযানের ফলে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। এই যুদ্ধ অনেক আগেই থেমে যাওয়া উচিত ছিল।” আরেকজন স্পষ্টভাবে অভিযোগ করেন, “নেতানিয়াহু একজন মিথ্যেবাদী। গাজার মানুষের জীবন আমাদের কাছে মূল্যবান, আমরা আমাদের জিম্মিদের ফেরত চাই।”
সাধারণ মানুষই শুধু নন, সেনাবাহিনীর একাংশও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বিক্ষোভ এবং অভ্যন্তরীণ চাপ উপেক্ষা করে গাজায় আগ্রাসন আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসের পক্ষ থেকে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব এসেছে, তা তিনি মানবেন না। বরং, আইডিএফকে (ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) হামাসের উপর আরও চাপ বাড়াতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু বলেন, “এই যুদ্ধে আমাদের বড় মূল্য দিতে হচ্ছে। কিন্তু অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বিজয় ছাড়া আর কোনো পথ নেই। হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “হামাসের দাবি মেনে নিলে আরেকটি ৭ অক্টোবরের ঘটনা ঘটবে, সেটা শুধু সময়ের ব্যাপার।”
এদিকে, ‘রিস্টোর ইসরাইল’ নামক একটি অনলাইন ক্যাম্পেইনে ইতোমধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি ইসরাইলি নাগরিক যুদ্ধবিরতির দাবিতে স্বাক্ষর করেছেন। এ তালিকায় সেনা সদস্য থেকে শুরু করে লেখকসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন।
গাজার যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। একদিকে সরকার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতির দাবিতে রাজপথে নেমে আসছে।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন