ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা 'শিন বেত'-এর প্রধান রনেন বার এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তাকে বরখাস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে অবৈধ কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া এক হলফনামায় রনেন বার এই অভিযোগ করেন। গত মাসে নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আদালত তা স্থগিত করে দেয় এবং একটি তদন্তের নির্দেশ দেয়। এর ফলে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যেখানে জনগণ নেতানিয়াহুর পদক্ষেপকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করে।
রনেন বার বলেন, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বেশ কিছু ঘটনা এই বরখাস্তের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। তিনি আরও জানান, নেতানিয়াহু তাকে একাধিকবার বলেছিলেন, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর নজরদারি চালাতে এবং বিশেষ করে এসব আন্দোলনের অর্থায়নকারীদের শনাক্ত করতে হবে।
এছাড়াও রনেন বার বলেন, তিনি এমন একটি নিরাপত্তা অনুরোধে সই করতে অস্বীকার করেন যার মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে তার চলমান দুর্নীতির মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতো। উল্লেখ্য, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি এবং আস্থা ভঙ্গের অভিযোগে মামলা চলছে।
এই সময়ে শিন বেত একটি তদন্ত চালাচ্ছিল, যেখানে নেতানিয়াহুর দপ্তর ও কাতারের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছিল। বিশ্লেষকদের মতে, এই তদন্ত থামাতেই রনেন বারকে বরখাস্তের চেষ্টা করেন নেতানিয়াহু।
শিন বেত একইসঙ্গে একটি স্বাধীন তদন্ত চালাচ্ছিল, যেখানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা সম্পর্কে পূর্ব সতর্কবার্তা উপেক্ষা করার অভিযোগও ছিল। ওই হামলায় ১,১০০’র বেশি মানুষ নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
এখনো প্রায় ৫০ জন বন্দি গাজায় অবস্থান করছেন। নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ব্যর্থ হওয়ায় দেশজুড়ে ক্ষোভ বাড়ছে।
নেতানিয়াহুর দপ্তর অবশ্য রনেন বার-এর অভিযোগকে “মিথ্যা” বলে দাবি করেছে এবং বলেছে, বার হামাসের হামলা রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন। দপ্তরের দাবি, বরখাস্তের সিদ্ধান্ত তদন্ত ঠেকানোর উদ্দেশ্যে নয়, বরং উল্টো তদন্তই বরখাস্ত ঠেকানোর জন্য চালু করা হয়েছে।
রনেন বার অবশ্য নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, তিনি খুব শিগগিরই পদত্যাগের তারিখ ঘোষণা করবেন।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন