ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে তীব্র গরম ও প্রবল বাতাসের কারণে বুধবার একাধিক দাবানল ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে বেইত শেমেশ সংলগ্ন বেইত মেইর, এশতাওল এবং মেসিলাত সিয়ন শহরগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দাবানলের ফলে রুট ৩৮ এবং রুট ৬ এর একাধিক অংশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি স্থানে যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক চালক গাড়ি ফেলে হেঁটে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বাধ্য হন।
দাবানল শুরু হয় মোশাভ তারুম এলাকার কাছে, যেখানে প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস, আইডিএফ, আইএএফ এবং হোম ফ্রন্ট কমান্ড যৌথভাবে কাজ করছে। ঘটনাস্থলে প্রায় ১১০টি দমকল দল, ৮টি ফায়ারফাইটিং বিমান ও একটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
ফায়ার ও রেসকিউ কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত ৯ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ জন দমকল কর্মী এবং ২ জন সাধারণ নাগরিক।
অগ্নিকাণ্ডের প্রভাবে জেরুজালেম শহরেও ধোঁয়ার প্রভাব পড়ে এবং বায়ু দূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে নেমে আসে।
ইসরায়েলের আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বেই সতর্কতা জারি করেছিল যে মঙ্গলবার ও বুধবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চরম মাত্রার তাপপ্রবাহ ও শুকনো আবহাওয়া বিরাজ করবে, যা দাবানলের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ফায়ার ও রেসকিউ কমান্ড সেন্টারে পৌঁছে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন এবং দিকনির্দেশনা দেন।
একাধিক বনাঞ্চলে এখনও আগুন জ্বলছে, এবং উদ্ধারকর্মীরা আশেপাশের হাইকিং এলাকায় মানুষজন আটকে আছে কিনা তা অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানানো হয়, দেশটির ফায়ার ও রেসকিউ কর্তৃপক্ষ মাত্র ৯% অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সম্পন্ন করেছে। ২০১৯-২০২২ সালের মধ্যে জাতীয়তাবাদী উদ্দেশ্যে সংঘটিত ২২৮টি অগ্নিসংযোগ মামলার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশেই কেবল অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ইসরায়েলের মতো অঞ্চলে গ্রীষ্ম আরও দীর্ঘতর, শুষ্ক ও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, যার ফলে বড় ধরনের দাবানলের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।
নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া:
এ ঘটনার পর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষ হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই দাবানল ঘটছে। তাদের মতে, এই আগুন আল্লাহর পক্ষ থেকে এক ধরনের শাস্তি, বিশেষ করে ইসরায়েলের আধিকারিকদের ভূমিকার জন্য। কিছু মন্তব্যে বলা হয়েছে, “এটা আল্লাহর গজব, যা ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর জন্য ইসরায়েলের জন্য এসেছে।”
অন্যদিকে, কিছু নেটিজেন আগুনের বিস্তার এবং এর পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কিন্তু তাদের বক্তব্য ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি মানবিক সহানুভূতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন