প্রকাশিত; ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৪৫ পিএম
মোঃ আরিফুল ইসলাম
আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল ২০২৫) জুমার নামাজের পর টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার ঝাওয়াইল ইউনিয়নে ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ঝাওয়াইল ইউনিয়ন কওমী ওলামা পরিষদ ও মোয়াজ্জিন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেন।
বিক্ষোভ মিছিলটি ঝাওয়াইল ইউনিয়নের বিভিন্ন মহল্লা থেকে শুরু হয়ে ঝাওয়াইল বাজার কাচারিপাড়া জামে মসজিদের সামনে সমবেত হয়। সেখানে বিশিষ্ট আলেম মাওলানা শহীদুল ইসলাম সুমন সাহেব ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, “বিশ্বে ২০০ কোটি মুসলমান থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল ফিলিস্তিনে মুসলমানদের জাতিগতভাবে নিধন করছে। এই অবস্থায় আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। আমরা প্রতিবাদ জানাতে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতেই আজ এখানে এসেছি।”
বক্তব্য শেষে বিশাল মিছিলটি ঝাওয়াইল বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থান নেয়। সেখানে ওলামায়ে কেরামগণ পুনরায় বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বলেন, “জাতিসংঘ ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। একইসাথে আরব রাষ্ট্রগুলোর নীরবতাও প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের কাছে এর জবাব আমরা চাই।”
বিশেষভাবে মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন দিদারী সাহেব বলেন, “ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য যদি আমাদের যুদ্ধেও যেতে হয়, আমরা প্রস্তুত। প্রয়োজনে আমরা আমাদের স্ত্রীদের বিধবা, সন্তানদের এতিম করবো, তবুও ফিলিস্তিনকে মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ।”
বাংলাদেশের প্রবীণ আলেম মাওলানা জয়নাল আবেদীন সাহেব বলেন, “আমাদের অবশ্যই ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করতে হবে। আমি ঝাওয়াইল বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের সতর্ক করছি—আপনারা ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করবেন না। করলে আপনাদের বয়কট করতে আমরা বাধ্য হবো।”
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের ছবি আগুনে পোড়ানো হয়, যা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চরম ঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়। শেষে উপস্থিত মুসল্লিরা ফিলিস্তিনের ভাইদের জন্য বিশেষ মুনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
ঝাওয়াইল ইউনিয়নের মতো বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নোয়াখালী, পীরগঞ্জ, সাভারসহ বিভিন্ন জেলায় হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাজধানী ঢাকাতেও বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে ইসলামী দল ও সংগঠনগুলোর ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে গণহত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এছাড়া, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচিগুলো ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সংহতি ও সমর্থনের প্রতিফলন। ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ তাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে।