টাঙ্গাইলে পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত জেলার ১২টি থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— পথিক কুমার, সঞ্জয় রবি দাস, মোঃ আলতাফ হোসেন শান্তি, খন্দকার আহম্মদ আলী, খন্দকার আয়নাল হক, খন্দকার বাবুল হোসেন এবং মোঃ ওয়াহেদ আলী। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও অপরাধ দমনের লক্ষ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা নাগরপুর, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার, ঘাটাইল, সখীপুর, ধনবাড়ী, কালিহাতী, ভুঞাপুর, মধুপুর, বাসাইল ও গোপালপুর থানার বিভিন্ন মামলার এজাহারনামীয় ও সন্দিগ্ধ আসামি। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সহিংসতা, হামলা, মারধর, গুরুতর আহত, হত্যাচেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি এবং বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন। এদিকে পুলিশ সুপার জানান, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং কাউকে আইনের বাইরে থাকার সুযোগ দেওয়া হবে না। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় বনের ভেতরে ছাড়পত্রবিহীন করাতকল স্থাপনের দায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় করাতকলের বিভিন্ন মালামাল জব্দ করে বন বিভাগের জিম্মায় দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের শালিয়াবহ গ্রামের জাঙ্গালিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদুল রহমান। অভিযানে সহযোগিতা করেন টাঙ্গাইল বন বিভাগের ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাব্বির হোসেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বন আইনে বনের ভেতরে এবং বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ ওই এলাকার বাসিন্দা মো. সোলায়মানের ছেলে মনিরুজ্জামান (৩৮) দীর্ঘদিন ধরে আইন অমান্য করে বনের ভেতরে করাতকল পরিচালনা করে আসছিলেন। বিষয়টি বন বিভাগের নজরে এলে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। পরবর্তীতে যৌথ অভিযানে অভিযুক্তকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং করাতকলের জব্দকৃত মালামাল বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদুল রহমান ও ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাব্বির হোসেন জানান, বন রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চলমান থাকবে।
টাঙ্গাইলে পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত জেলার ১২টি থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকারের দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— আবু ছালেক, জীবন মিয়া, সুজন মিয়া, মোখলেছুর রহমান খান ফরিদ, জয়নাল হোসেন, আব্দুল জলিল, রফিকুল ইসলাম, রেখা খাতুন, ফাতেমা খাতুন, মোকাদ্দেস আলী সদুদ এবং আহাদুল ইসলাম। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশেষ অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা নাগরপুর, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার, ঘাটাইল, সখীপুর, ধনবাড়ী, কালিহাতী, ভুঞাপুর, মধুপুর, বাসাইল ও গোপালপুর থানার বিভিন্ন মামলার এজাহারনামীয় ও সন্দিগ্ধ আসামি। পুলিশ জানায়, এসব মামলায় সংঘবদ্ধ সহিংসতা, হামলা, মারধর, গুরুতর আহত করা, হত্যা চেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার আরও জানান, আসন্ন নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ ধরনের বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ।
টাঙ্গাইলের সখিপুরে ডিবি (দক্ষিণ) পুলিশের সফল অভিযানে ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ২৫ ডিসেম্বর রোজ বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি (দক্ষিণ) পুলিশের একটি বিশেষ টিম- সফল মাদকবিরোধী অভিযানে ১০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করতে সফল হয়েছে। এ সময় পুলিশের হাতে দুইজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছেন। ডিবি (দক্ষিণ),গণমাধ্যম কর্মীদের জানায়,২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের চৌকস (দক্ষিণ) টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের অংশ হিসেবে সখিপুর থানাধীন গ্যাসফিল্ড চৌরাস্তা মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে তাদের বিশেষ চৌকস টিমের দক্ষভাবে মাদকবিরোধী অপারেশন সফল করেছে এবং স্পট থেকে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে তল্লাশি করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ১০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, উদ্ধারকৃত ইয়াবার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় মাদক কেনাবেচার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল এবং ইয়াবা বিক্রির উদ্দেশ্যে সেগুলো বহন করছিল।এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের সখিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা জানান,সমাজ থেকে মাদক নির্মূলের লক্ষ্যে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ ও ডিবি (দক্ষিণ)-এর মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তারা।
ফাইলা পাগলার মেলা বন্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান। টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলায় আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফাইলা পাগলার মেলা বন্ধে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেকোনো বড় ধরনের জনসমাগম এবং দীর্ঘমেয়াদি উৎসব বর্জনের আহ্বানের প্রেক্ষিতেই এ অভিযান পরিচালিত হয়। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।অভিযানে নেতৃত্ব দেন সখিপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুন্নাহার শিলা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেলাল উদ্দীন, বাসাইল সেনা ক্যাম্পের সেনা কর্মকর্তাসহ সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।অভিযানকালে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা মেলা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নির্বাচনকালীন সময়ে সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ফাইলা পাগলার মেলা বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন। মেলা আয়োজকদের বিষয়টি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয় সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে। নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।স্থানীয় সচেতন মহল এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন নির্বাচনকালীন সময়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের এ ধরনের কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই পরিচালিত টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পাঁচটি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব ইটভাটাকে মোট ২৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং কিলন ভেঙে ইট প্রস্তুত কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল ও জেলা প্রশাসন টাঙ্গাইলের যৌথ উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় টাঙ্গাইলের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নওশাদ আলম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানকালে ইটভাটাগুলোর কিলন ভেঙে দেওয়া হয় এবং কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে অবৈধভাবে ইট প্রস্তুত কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। যেসব ইটভাটায় অভিযান চালানো হয় সেগুলো হলো— কালামাঝি গ্রামের মেসার্স বিজয় ব্রিকস, কুড়ালিয়া এলাকার সিটি ব্রিকস ও এসকেবি ব্রিকস, এবং দড়িহাতিল এলাকার তিতাস ব্রিকস ও মধুপুর ব্রিকস। এর মধ্যে বিজয় ব্রিকসের মালিককে ৫ লাখ টাকা এবং বাকি চারটি ইটভাটার মালিককে ৬ লাখ টাকা করে মোট ২৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইলের সহকারী পরিচালক তাপস চন্দ্র পাল, পরিদর্শক বিপ্লব কুমার সূত্রধরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মধুপুর থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সহায়তা
দুই মাদককারবারি গ্রেফতার, জব্দ পিকআপ ও মোবাইল ফোন। টাঙ্গাইলে র্যাবের বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য গাঁজা উদ্ধারসহ দুই মাদককারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত গাঁজার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৯ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে র্যাব।র্যাব-১৪, সিপিসি-৩ টাঙ্গাইল ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটে টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার থানার নাটিয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় একটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়। এ সময় একটি হলুদ ও নীল রঙের মিনি পিকআপ ভ্যান থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিকালে পিকআপ ভ্যানের ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকেই দুইজন মাদককারবারিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব সদস্যরা।গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মোঃ রনি (৩৯)আক্কেলপুর,জয়পুরহাট জেলা এবংমোঃ রনি (২৯)কেরানীগঞ্জ।র্যাব জানায়,গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ৩০ কেজি গাঁজার পাশাপাশি একটি মিনি পিকআপ ভ্যান ও দুইটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে মাদক পরিবহন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল।আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেফতারকৃতদের উদ্ধারকৃত আলামতসহ দেলদুয়ার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে র্যাব নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। র্যাব সূত্র আরও জানায়, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মাদক নির্মূলে র্যাবের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও কঠোর বার্তা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
টাঙ্গাইলে র্যাব-১৪ এর বিশেষ অভিযানে ৩৬ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি গ্রেফতার টাঙ্গাইলে র্যাব-১৪ এর বিশেষ অভিযানে ৩৬ কেজি অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজাসহ দুই মাদককারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানে একটি মিনি পিকআপ ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। র্যাব-১৪, সিপিসি-৩টাঙ্গাইল ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত আনুমানিক ৭টা ৩০ মিনিটে টাঙ্গাইল জেলার সদর থানাধীন আশিকপুর বাইপাস সড়কের পশ্চিম পাশে সিরাজগঞ্জগামী লেনে একটি চেকপোস্ট স্থাপন করে। চেকপোস্ট চলাকালে হলুদ রঙের একটি মিনি পিকআপ গাড়িকে থামার সংকেত দেওয়া হলে গাড়িটি থামে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে গাড়িটি তল্লাশি করে মাদক কারবারি মোঃ আনোয়ার (৩৮) ও মোঃ ইমরান আলী (২২)-কে আটক করা হয়।জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা মিনি পিকআপে অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজা বহনের বিষয়টি স্বীকার করে। তাদের দেওয়া তথ্য ও দেখানো মতে গাড়িটিতে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ৩৬ (ছত্রিশ) কেজি অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র্যাব।এ সময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত মিনি পিকআপ গাড়ি এবং দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত গাঁজার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা বলে জানিয়েছে র্যাব।গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাদকসহ আলামত টাঙ্গাইল সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।র্যাব-১৪ সূত্র জানায় মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং মাদক নির্মূলে র্যাব সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
টাঙ্গাইলে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’-এ ১৬ জন গ্রেপ্তার টাঙ্গাইল ২১ ডিসেম্বর (রোববার) টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে পরিচালিত এই অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সহিংসতা, হামলা, মারধর, গুরুতর জখম, হত্যাচেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত নানা অভিযোগ রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা নাগরপুর, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার, ঘাটাইল,সখীপুর,ধনবাড়ী,কালিহাতী, ভূঞাপুর, মধুপুর, বাসাইল ও গোপালপুর থানার বিভিন্ন মামলার এজাহারভুক্ত ও সন্দিগ্ধ আসামী। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন: আল আমিন, আব্দুল্লাহ আল মামুন রতন ভূঁইয়া জাহাঙ্গীর আলম,আলমাস মিয়া, মমিন সিকদার তারেক আহাম্মেদ নাদিম আব্দুর রউফ মোস্তফা কামাল আব্দুল বাছেদ মন্ডল মফিজ শিকদার তানভির হোসেন মোতালেব আরাফাত আনিছুর রহমান, ওলিউর রহমান সিফাত ও মিজানুর রহমান। গ্রেপ্তারকৃতদের টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হবে।
টাঙ্গাইলে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত জেলার ১২টি থানার বিভিন্ন এলাকায় একযোগে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, অপরাধ দমন এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন থানার একাধিক মামলার এজাহারনামীয় ও সন্দেহভাজনআসামি। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— আল আমিন, আব্দুলালহ আল মামুন, মোঃ রতন ভুইয়া, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ আলমাস মিয়া, মোঃ মমিন সিকদার, মোঃ তারেক আহম্মেদ নাদিম, মোঃ আব্দুর রউফ, মোস্তফা কামাল, আ্দুল বাছেদ মন্ডল, মোঃ মফিজ শিকদার, মোঃ তানভির হোসেন, মোঃ মোতালেব আরাফাত, মোঃ আনিছুর রহামান, মোঃ ওলিউর রহামন সিফাত এবং মিজানুর রহমান। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামিরা নাগরপুর, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার, ঘাটাইল, সখীপুর, ধনবাড়ী, কালিহাতী, ভুঞাপুর, মধুপুর, বাসাইল ও গোপালপুর থানার বিভিন্ন মামলার সঙ্গে জড়িত। এসব মামলায় সংঘবদ্ধ সহিংসতা, হামলা, মারধর, গুরুতর আহত করা, হত্যাচেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি এবং বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ আরও জানায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। একই সঙ্গে অপরাধ দমনে এ ধরনের বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়।
২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়ান(বিজিবি) ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ দল গোয়েন্দা তথ্যর ভিত্তিতে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামে একটি পরিত্যক্ত ঘরে অভিযান চালিয়ে ২৫০০ কেজি অবৈধ ভারতীয় জিরা এবং ৯৫০০ কেজি ভারতীয় ফুসকা আটক করা হয়েছে। রোববার ভোরে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ অভিযানে এসব অবৈধ ভারতীয় পণ্য আটক করে সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুরস্থ বিজিবি”র হেকোয়াটারে নিয়ে আসা হয়। যার বর্তমান সিজার মূল্যে ৪০ লাখ টাকা। সেনাবাহিনীর অফিসারসহ ১৫ জন এবং বিজিবি”র জেসিও-১০০১২ নায়েক সুবেদার কাজী মোঃ কামালসহ ১৪ জন সদস্যসহ মোট ২৮ জন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এই অভিযানে অংশগ্রহন করেন। এ ব্যাপারে ২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়ান(বিজিবি)”র সুনামগঞ্জ অঞ্চলের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল একেএম জাকারিয়া কাদির সাংবাদিকদের জানান,বিজিবি”র সদর দফতরের উধর্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতীয় অবৈধ পন্য প্রবেশের কারণে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিরোধে সুনামগঞ্জের ১৯টি বিওপির সদস্যরাপ্রতিটি সীমান্ত এলাকায় অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় গোয়েন্দা তথ্যর ভিত্তিতে আভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানান। আটককৃত এইসব অবৈধ ভারতীয় জিরা ও ফুসকা সুনামগঞ্জ শুল্ক কার্যালয়ে জমাদার করা হয়েছে বলে ও উল্লেখ করেন। ##
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত জিআর পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিসহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর পুলিশ সুপার টি. এম. মোশাররফ হোসেনের নির্দেশনায় এবং বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল বারীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন থানার এসআই (নিরস্ত্র) আবদুর রহমান, এএসআই মো. কবির হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ সংশ্লিষ্ট ফোর্স। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন, ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত জিআর পরোয়ানা নং ১০৭২/১৭ এর আসামি মো. মোস্তফা (রসুলপুর), জিআর পরোয়ানা নং ২০৪/২৪ এর আসামি আনোয়ার হোসেন (আমানউল্যাপুর), পুলিশ আইন ৩৪ ধারার আসামি এমদাদুল হক (লক্ষ্মীনারায়নপুর) এবং বেগমগঞ্জ মডেল থানার মাদক মামলা নং-১(৮)২৫ এর আসামি মো. তানভির হোসেন সৌরভ, মো. ইউসুফ মোল্লা, ফখরুল ইসলাম ও মো. সাইফুল ইসলাম। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত সকল আসামিকে বিধি মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ জানায়, এলাকায় বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ও নিয়মিত মামলার আসামি গ্রেফতারের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারেও পুলিশি তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে
কালিহাতি ও এলেঙ্গায় তিন বেকারি ও মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে জরিমানা এলেঙ্গায় মারহাবা এ ওয়ান বেকারি, তাজমহল বেকারি এবং মামা ভাগ্নে মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে BSTI এর স্ট্যান্ডার্ড মার্ক ব্যবহার,BSTI এর সার্টিফিকেটশন ব্যতীত নির্দিষ্ট পণ্য বিক্রয় ইত্যাদি অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোবাইল কোর্টের তফসিলভুক্ত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন আইন, ২০১৮ এর অধীন তিনটি পৃথক মামলায় ১০৫০০০/- (এক লক্ষ পাচঁ হাজার টাকা) টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি),কালিহাতি,টাংগাইল। এসময় ফিল্ড অফিসার BSTI এবং কালিহাতি থানার পুলিশ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলা ও এলেঙ্গা এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে প্রশাসন। লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়াই বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর স্ট্যান্ডার্ড মার্ক ব্যবহার এবং বিএসটিআইয়ের সার্টিফিকেশন ব্যতীত নির্দিষ্ট পণ্য উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলায় মোট ১ লাখ ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বুধবার ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে পরিচালিত এ অভিযানে কালিহাতি ও এলেঙ্গা এলাকার মারহাবা এ ওয়ান বেকারি, তাজমহল বেকারি এবং মামা ভাগ্নে মিষ্টান্ন ভাণ্ডার-এ ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় লাইসেন্স গ্রহণ না করেই বিএসটিআইয়ের স্ট্যান্ডার্ড মার্ক ব্যবহার করছে এবং বিএসটিআই সার্টিফিকেশন ছাড়াই নির্দিষ্ট খাদ্যপণ্য বাজারজাত করছে, যা স্পষ্টভাবে আইন লঙ্ঘনের শামিল।এ প্রেক্ষিতে মোবাইল কোর্টের তফসিলভুক্ত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন আইন ২০১৮ এর বিভিন্ন ধারায় তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করে আদালত তাৎক্ষণিকভাবে মোট ১ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করেন।মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন কালিহাতি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) টাঙ্গাইল। অভিযানে বিএসটিআইয়ের ফিল্ড অফিসার এবং কালিহাতি থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থেকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন ও বিক্রি রোধ এবং আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা নিশ্চিত করতে এ ধরনের মোবাইল কোর্ট অভিযান নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতেও কেউ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে একাধিক মামলার আসামিসহ মোট ১৮ জন দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত থেকে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় একযোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। পুলিশ জানায়, দেশব্যাপী চলমান বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ এর আওতায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানে জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশ, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও বিশেষ টিম অংশ নেয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ চিহ্নিত অপরাধীরা রয়েছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— আমজাদ হোসেন (৫৫), ফেরদৌস আলম পাহাড়ী (৪৫), শরীফ হোসেন (২৫), নাসির উদ্দিন (৪৭), সৈয়দা তানিয়া ইসলাম (৪৫), তারিফুল ইসলাম (৩৭), ফজলুল হক (৫০), আব্দুল হোসেন (৩২), মো. রাসেল (২৩), ওয়াদুদ রহমান শাহীন (৫১), এম. এ. হাকিম তালুকদার (৫৫), হৃদয় আহমেদ (২৮), মো. শামীম (৪৬), তাহসিন হোসেন আলীফ (২০), তপু মন্ডল (২২), মো. জুয়েল (২৫), রিপন মিয়া (৫০) ও মিনহাজ উদ্দিন (৫০)। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০১৯, দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এবং দি এক্সপ্লোসিভ সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট, ১৯০৮-এর বিভিন্ন ধারায় একাধিক মামলা রয়েছে। মামলাগুলোতে সংঘবদ্ধ সহিংসতা, হামলা, মারধর, গুরুতর জখম, হত্যাচেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধসহ নানা অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধ দমনে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে যেকোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কালিহাতীতে বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় অবস্থিত এম রহমান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার কারণে এক নবজাতক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহত শিশুর পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ, শোক ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য) রাতের দিকে হাসপাতালটির চিকিৎসক ডা. সুমির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলাকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনরা। নিহত নবজাতকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী প্রসূতিকে চিকিৎসার জন্য এম রহমান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর প্রসূতির শারীরিক অবস্থা জটিল হয়ে উঠলেও সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। স্বজনদের দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে প্রসূতির কষ্ট ও জটিলতার বিষয়টি চিকিৎসককে জানানো হলেও তা যথাযথভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। পরে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় স্বজনরা চিকিৎসায় চরম অবহেলা ও ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, যদি সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে নবজাতকের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব ছিল। ঘটনার পরপরই হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকার প্রতিবাদ জানান এবং দায়ী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন। তারা অভিযোগ করেন, ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দেয়নি। নবজাতকের পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। তারা বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে দায়িত্বহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে এ ধরনের হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।এ বিষয়ে এম রহমান মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিংবা অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. সুমির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি, কালিহাতীসহ আশপাশের এলাকায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর চিকিৎসা কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি না হওয়ায় রোগীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলে ভেজাল জিরা বিক্রির দায়ে মালেক এন্টারপ্রাইজকে ২ লাখ টাকা জরিমানা টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা কলেজ রোডে অবস্থিত মালেক এন্টারপ্রাইজকে ভেজাল জিরা বিক্রির দায়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির মালিক বারেক মিয়া। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের উদ্যোগে পরিচালিত এক অভিযানে এ জরিমানা আরোপ করা হয়। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে সতর্ক করা হয়। অভিযানকালে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দেখতে পান, মালেক এন্টারপ্রাইজ আমদানিকৃত ভারতীয় ও মিশরীয় জিরার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার নিম্নমানের জিরা মিশিয়ে নতুনভাবে “ডায়মন্ড জিরা” নামে মোড়কজাত করে বাজারজাত করছিল। এতে সাধারণ ভোক্তারা প্রতারণার শিকার হচ্ছিলেন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী এই অপরাধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রোমেল। তিনি বলেন, ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় ভেজাল ও প্রতারণার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মির্জাপুরে ‘অপবাদ’ দিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পরকীয়ার ‘অপবাদ’ দিয়ে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী দুইজনকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের বটটেকী গ্রামে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর বয়স আনুমানিক ২৭ বছর। তিনি একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের স্ত্রী এবং পাঁচ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনার সময় ওই গৃহবধূ তার শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় স্থানীয় দুই ব্যক্তি পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে জোরপূর্বক তার ঘরে প্রবেশ করেন। তারা তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে শিশুকে জিম্মি করা ও তার স্বামীকে হত্যা করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।গৃহবধূ কৌশলে নিজেকে রক্ষা করে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন।শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের বটটেকী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই দুইজনকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওই গৃহবধূ।প্রেসক্লাবে এসে ওই গৃহবধূ বলেন, ৫ মাস বয়সী একমাত্র সন্তানকে নিয়ে শয়নকক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। এ সময় গোড়াই এলাকার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও ময়লার ব্যবসায়ী আজাহার মিয়া (৪২) ও রাজিব মিয়া (৩৫) তার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে পরপুরুষ রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে তারা ওই নারীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। আশেপাশের লোকজন জড়ো হলে তারা তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদায় করে দেন। এরপর শিশুকে জিম্মি ও শিল্প কারখানায় কর্মরত স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে শ্লীলতাহানি ঘটান তারা। কিন্তু ওই নারী জন্মনিরোধক আবরণ আনার কথা বলে কৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে ধর্ষণের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন। পরে রাতে তিনি মির্জাপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মির্জাপুর থানার পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তরা ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় ব্যবসায়ীকে এক মাসের কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে এক ব্যবসায়ীকে এক মাসের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে একটি মাটি খননযন্ত্র জব্দ করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীর নাম আতোয়ার রহমান (৩৮)। তিনি উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার সময় আতোয়ার রহমানকে হাতেনাতে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, আতোয়ার রহমান দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছিলেন। অভিযানের সময় ঘটনাস্থলেই আদালত বসিয়ে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী তাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। দণ্ডাদেশ কার্যকরের পর বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে আতোয়ার রহমানকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা জানান, অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান রয়েছে। পরিবেশ ও কৃষিজমি রক্ষায় এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।
শরীয়তপুরে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ; তদন্তে ভিন্ন তথ্য বলছে পুলিশ শরীয়তপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে এক তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন—এমন অভিযোগ সামনে এলে তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনার ভিন্ন চিত্র পেয়েছে বলে জানিয়েছে। অভিযোগকারী তরুণী নিজেকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিলেও পুলিশ বলছে—তিনি কলেজ শিক্ষার্থী নন। বরং তদন্তে জানা গেছে, ওই নারীর বিয়ে হয়েছে এবং তার দুইটি সন্তান রয়েছে। পালং মডেল থানা পুলিশ জানায়, তরুণী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও ঘুরতে গিয়ে ফেরার পথে তাকে কেউ মারধর করেছে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাবিবুর রহমান বলেছেন, তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। এছাড়া মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও ওই তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার পর স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমকে তরুণী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের বনবিভাগ কার্যালয়ের পাশের নির্জন এলাকায় কয়েকজন যুবক তাদের পথরোধ করে। এ সময় তার সহপাঠীকেও আটক রেখে মারধর করা হয় এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তরুণীর দাবি, তাকে তিন যুবক পালাক্রমে ধর্ষণ করে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখে। সহপাঠীর বর্ণনাও প্রায় একই। তিনি বলেন, বাস না পেয়ে তারা হাঁটছিলেন। দুই যুবক ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ভিতরে নিয়ে যায়। তাকে মারধর করে টাকা দাবি করা হয় এবং বান্ধবীকে আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হয়। তরুণী আরও অভিযোগ করেছেন, তাকে টেনে নেওয়ার সময় দুইজন নারী ঘটনাটি দেখলেও কোনো সহায়তা করেনি। এছাড়াও ঘটনাস্থল এলাকায় কিছু কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেননি। স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন জানান, তিনি বাসায় ফেরার সময় দেখতে পান কয়েকজন যুবক এক মেয়েকে নিয়ে বনবিভাগের দিক থেকে বের হচ্ছে। মেয়ে আতঙ্কে কিছু বলতে পারছিল না। সঙ্গী ছেলেটির ইশারায় তিনি সন্দেহ করেন। তাদের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে যুবকরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়ে ঘটনাটি খুলে বলে।ওসি শাহ আলম বলেন,ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে গেছি। কিন্তু তরুণী আমাদের কাছে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেছে। প্রাথমিক তদন্তেও ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। তারপরও বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে একাধিক মামলার আসামি গণপিটুনিতে হত্যা দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার দুপুরে নোয়াখালী ডিসি অফিসের সামনে এই মানববন্ধন করেন হত্যা মামলার আসামিদের আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসী। গত সোমবার বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর গ্রামের ফখরুল ইসলাম মন্জু ওরফে বলি নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকায় নির্যাতিত নারীপুরুষরা। এ ব্যাপারে পুলিশ বলছে নিহত যুবক একাধিক মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ১৪নং হাজীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মান্দার বাড়ির দরজায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত বলি উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের খালাসী বাড়ির বদিউজ্জামানের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার নিহতের বাবা বদিউজ্জামান বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ৮জনের নাম উল্লেখ্য করে ও অজ্ঞাত আটজনের নাম দিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তাই মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে আসা খালেদা আক্তার জানান, বলি এলাকাতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। গত দুই-তিন বছর আমরা তার ভয়ে কথা বলতে পারেনি। এলাকাতে কোন সিএনজি আসলে সিএনজি থেকে সবাইকে নামিয়ে ছিনতাই করে টাকা পয়সা নিয়ে যেত। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতো না। ভুক্তভোগী আশরাফ আলী বলেন আমার ছেলেকে নষ্ট করার পিছনে বলি দায়ী, ইয়াবা সেবনসহ, গাঞ্জা, মাদক ব্যবসা করত সে। গ্রামের লোক তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। আম্বিয়া খাতুন বলেন, আমাদের পাশের বাড়িতে সেই টর্চার সেল তৈরি করে রেখেছে, কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে সেখানে তাকে কারেন্টের শর্ট দেওয়া হতো। মহিলারা দিনে দুপুরে বের হতে ভয় পেতো। গত সোমবার সবাই যখন তাকে গণপিটুনি দেয় বলি মারা যায়, কিন্তু তার মারা যাওয়ার কারণে হত্যা মামলা করে গ্রামবাসীকে হয়রানি করার এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আমরা দাবি জানাচ্ছি। সন্ত্রাসী গণপিটুনে মারা যায় সেখানে আবার মামলা কি ? মামলা প্রত্যাহার না করলে আমরা এলাকাবাসী রাজপথ ছাড়বো না। আজকের মানববন্ধনের মাধ্যমে আমরা নোয়াখালীর ডিসি ও এসপিকে এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে মামলা প্রত্যাহার করার আহবান করি
মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে হত্যা মামলার মূল আসামি আয়েশা গ্রেপ্তার। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া মূল আসামি গৃহকর্মী আয়েশাকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বরিশালের ঝালকাঠির নলছিটি এলাকার একটি আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তেজগাঁও জোনের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আয়েশার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। ঘটনার পর থেকেই তিনি নলছিটি এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুরের বাসায় লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) নির্মমভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশা। এ ঘটনায় নিহত নাফিসার বাবা আ. জ. ম. আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি উত্তরা এলাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ঘটনার দিন সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আয়েশাকে বোরকা পরে লিফটে উঠতে দেখা যায় সিসিটিভি ফুটেজে। এরপর সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মুখে মাস্ক, কাঁধে ব্যাগ ও স্কুল ড্রেস পরে ভবন থেকে বেরিয়ে যান তিনি। নিহত নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পুলিশ বলছে, জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত কারণ ও পেছনে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না—তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।