সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সর্বস্তরের অংশগ্রহনে এ দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে পৌরসভা এলাকার বিরিশিরিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পন, বৃক্ষরোপন ও শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। পরবর্তিতে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা আফসানা এর সভাপতিত্বে, একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন এর সঞ্চালনায় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন তালুকদার ও আবুল আজিজ, উপজেলা বিএনপি‘র সাবেক সভাপতি ইমাম হাসান আবুচান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এডভোকেট এম এ জিন্নাহ, সাবেক অধ্যক্ষ শহীদুল্লাহ খান, ডিএসকে‘র নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, অফিসার ইনচার্জ কামরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাখাওয়াত হোসেন সজিব, বিকাশ সরকার প্রমুখ। এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তান, শহীদ পরিবারের সন্তানগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, উপজেলায় কর্মরত অফিসার্সবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ সহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী এ দেশীয় দোসর আল-বদর, আল সামস্ এর সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করে। বাংলাদেশকে মেধাশুন্য করে দিতে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। এমন ন্যাক্কার ঘটনার পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এই দিনকে “শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস” ঘোষণা করেন। এই দিনের তাৎপর্য নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে সকলকে আহবান জানানো হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধের ঘটনায় নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর উপজেলায় টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি)। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ৮.০০ টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের (৩১ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান (পিবিজিএম)। বিজিবির অধিনায়ক জানান, নেত্রকোনা ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা এবং ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা সীমান্তে যে কোন প্রকার পারাপার বন্ধ করতে নি:ছিদ্র টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। টহল জোরদারের কারণ উল্লেখ করে বিজিবি অধিনায়ক এস এম কামরুজ্জামান জানান, ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ঢাকায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক উসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণকারী আততায়ী, যাতে সীমান্ত দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য গতকাল গভীর রাত থেকে সীমান্তে সকল এন্ট্রি পয়েন্টে বিজিবি চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিশেষ টহলের মাধ্যমে সীমান্তে সকল চলাচল বন্ধে বিজিবি তৎপর রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী, চালক ও সীমান্তে বসবাসকারী জনগণকে সম্পৃক্ত করে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান বিজিবির ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও নেত্রকোণা ১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, বিএনপি জাতীয় সংসদে গেলে ইসলামবিরোধী কোনো আইন পাস হওয়ার কোন সুযোগ নেই। শনিবার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে উলামাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ইসলাম ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। ফলে ইসলাম বা ধর্মবিরোধী কোনো আইন জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কখনো বলি না যে আমাদের ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া যাবে। কিন্তু বর্তমানে কেউ কেউ এ ধরনের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই বক্তব্য কতটুকু যুক্তিসংগত, তা আমার জানা নেই।’ কায়সার কামাল বলেন, ‘বিএনপির কোন নেতা যদি কখনো ইসলামবিরোধী কোন বক্তব্য দিয়ে থাকেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। তবে দল হিসেবে বিএনপি কখনোই ইসলামবিরোধী কোন আইন প্রণয়নের পক্ষে নয় এবং বিএনপি সংসদে গেলে এমন কোন আইন পাস হতে দেয়া হবে না।’ মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দল গঠনের পর সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে বিএনপি ইসলামকে পুঁজি করে রাজনীতি করতে চায় না; বরং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সম্মান রেখেই রাজনীতি করে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের বিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি করা অনুচিত। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই দেশের প্রকৃত কল্যাণ সম্ভব।’ বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।
র্যাবের অভিযানে টাঙ্গাইল সদর থানায় দায়ের করা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমান (৩২)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, টাঙ্গাইল ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে—বাদী একজন বিধবা নারী। গত ২০২৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলার ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের পর সংসার করার একপর্যায়ে ভিকটিম জানতে পারেন, অভিযুক্ত তার পূর্বের স্ত্রী ও দুই সন্তানের বিষয়টি গোপন রেখে তাকে বিবাহ করেছেন। বিবাহের কিছুদিন পর অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যান। পরবর্তীতে দেশে ফিরে ব্যবসা করার কথা বলে ভিকটিমের পিতার কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভিকটিমকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম তার স্বামী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা এবং টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলা প্রত্যাহার না করলে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঘনিষ্ঠ অবস্থার আপত্তিকর স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্ত। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১২ নভেম্বর দুপুরে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান তার ব্যবহৃত ইমু আইডি থেকে ভিকটিমের ইমু নম্বরে আপত্তিকর ভিডিও পাঠান এবং ভিকটিমের বসবাসরত গোলড়া এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে ভিকটিম চরম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরবর্তীতে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকেই সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, টাঙ্গাইল ক্যাম্প ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্তের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে শনিবার বিকেলে ঘারিন্দা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পর্নোগ্রাফি মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমান (৩২)-কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামারপাড়া ও চামুটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ভাওড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য চামুটিয়া গ্রামের ফরহাদ হোসেন (৫৩) এবং ভাওড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শশধর পট্রি গ্রামের লতিফুর রহমান (৪৩)। পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কসংলগ্ন গোড়াই হাইওয়ে থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের ছররা গুলিতে গুরুতর আহত হন গোড়াই ইউনিয়নের লালবাড়ি গ্রামের হিমেল। ওই ঘটনায় হিমেলের দুই চোখ স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জেরে ভুক্তভোগী হিমেলের মা নাছিমা বেগম টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জাপুর আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ ১০০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। মির্জাপুর থানার পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে শনাক্ত হওয়ায় ফরহাদ হোসেন ও লতিফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার আলামত, সাক্ষ্য ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হবে। তদন্তের প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আরও গ্রেপ্তার হতে পারে।” স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেও আবার কেউ বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম চলবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার করটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাঁকড়ার ঝোড়া এলাকায় বংশাই নদীর শাখা টুঙ্গি নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজের কাজ দীর্ঘ পাঁচ বছরেও শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় হাজারো মানুষ। প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পিএসসি গার্ডার ব্রিজটি এলাকাবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনের কথা থাকলেও বাস্তবে তা এখন ভোগান্তির প্রতীকে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় ও এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলার কালিদাস–বহুরিয়া সড়কের করটিয়াপাড়া বাজারসংলগ্ন কাঁকড়ার ঝোড়া নামক স্থানে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেলেও এখনো তা সম্পন্ন হয়নি। কাজ চলছে থেমে থেমে—একটানা কয়েকদিন কাজ করার পর দীর্ঘ সময় ধরে পুরোপুরি বন্ধ থাকে নির্মাণ কার্যক্রম। এর ফলে ব্রিজের দুই পাড়ের মানুষের স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলা শহর কিংবা আশপাশের এলাকায় যাতায়াত করতে স্থানীয়দের বাধ্য হয়ে ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরপথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি বাড়ছে যাতায়াত ব্যয়। বিশেষ করে দিনমজুর, কৃষক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এলাকাবাসী জানান, এই একটি ব্রিজের ওপর নির্ভর করে কালিদাস, ঠকাইনাপাড়া, ফুলঝুড়িপাড়া, করটিয়াপাড়া, বেলতলী, হারিঙ্গাচালা, হতেয়া–রাজাবাড়ি, কালমেঘা, ছলংগা ও বহুরিয়া চতলবাইদসহ ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন চলাচল। ব্রিজটি অসম্পূর্ণ থাকায় স্কুল–কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে যেতে পারছে না। অনেক সময় অসুস্থ রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, রোগীদের কাঁধে করে কিংবা ঝুঁকি নিয়ে নদী পার করতে হয়, যা অত্যন্ত মানবিক সংকট তৈরি করছে। স্থানীয় কৃষকরাও পড়েছেন বিপাকে। ব্রিজ না থাকায় ফসল, শাকসবজি ও অন্যান্য কৃষিপণ্য বাজারে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, দুই পাড়ের কালিদাস ও করটিয়াপাড়া বাজারে মালামাল পরিবহন এখন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে তারা এই বাড়তি খরচ বহন করে আসছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাইন উদ্দিনবাসী কিছুদিন কাজ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য লাপাত্তা হয়ে যায়। ফলে মাসের পর মাস কোনো কাজ হয় না। সাময়িক পারাপারের জন্য সরকারি বিধান থাকলেও ঠিকাদার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে অর্থ সংগ্রহ করে ব্রিজের পশ্চিম পাশে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো তৈরি করেছেন। সখীপুর উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাইন উদ্দিনবাসী ব্রিজটির কার্যাদেশ পায়। এলজিইডির কাগজপত্রে কাজের ৮০ শতাংশ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, “পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির প্রায় ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিছু কারিগরি ও প্রশাসনিক কারণে কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। আশা করছি খুব শিগগিরই পুনরায় কাজ শুরু হবে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই ব্রিজটির কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।” তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধু আশ্বাস নয়—দীর্ঘ পাঁচ বছরের ভোগান্তির অবসান ঘটাতে এখন প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ ও কঠোর নজরদারি। তারা দ্রুত ব্রিজের কাজ সম্পন্নের পাশাপাশি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক দরবার হলে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মওলানা ভাসানীর রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “মওলানা ভাসানী ছিলেন আপসহীন রাজনীতির প্রতীক। তিনি আজীবন মজলুম মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর আদর্শ আজও আমাদের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সময়ে মওলানা ভাসানীর ন্যায় সাহসী ও জনবান্ধব নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। তাঁর দেখানো পথে দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে।” মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা প্রফেসর এ. কে. এম. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মওলানা ভাসানীর আদর্শ ও দর্শন নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিয়মিত গবেষণা, আলোচনা সভা ও স্মরণ কর্মসূচি জোরদার করা প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ বিভিন্ন সামগ্রী অপসারণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশনা ও নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে শৃঙ্খলাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে নিজেই উপস্থিত থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এসব ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এ সময় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মোড় ও জনবহুল এলাকায় টাঙানো ব্যানার, ফেস্টুন এবং দেয়ালে লাগানো পোস্টার নামিয়ে ফেলা হয়। পুরো কার্যক্রমটি সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করা হয়। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এ সময় বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে চলা আমাদের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। আমরা চাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সে লক্ষ্যেই আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রচারণার সামগ্রী অপসারণ করছি।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে শালীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রাখবে।” এ কর্মসূচিতে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের বাইরে নির্বাচনী পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ বাধ্যতামূলক।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (রাত ১টার দিকে) ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাতের ওই সময়ে দীপ্ত একটি গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়ান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশ দিয়ে আসা আরেকটি বাস হঠাৎ সামনে চলে আসে। এ সময় দুই গাড়ির মাঝখানে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেও ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সদ্য স্নাতক। তিনি ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহর একমাত্র পুত্র। পরিবারের সঙ্গে তিনি মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটি কবরস্থান এলাকায় বসবাস করতেন। পড়াশোনা শেষ করে সম্প্রতি দেশের একটি খ্যাতনামা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দিনাজপুর অঞ্চলে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।পরিবারের সদস্যরা জানান, কর্মস্থল দিনাজপুর থেকে বৃহস্পতিবার মির্জাপুরে ফিরছিলেন দীপ্ত। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও তিনি মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মির্জাপুরের কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ফেরাই যে হবে তার শেষ ফেরা—তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।শুক্রবার বাদ জুমা মির্জাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় শিক্ষক, সাংবাদিক, সহপাঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।দীপ্তর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষক সমাজ, স্থানীয় সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে সিঙ্গার কোম্পানির এক তরুণ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক শহীদুল্লাহ খানের একমাত্র ছেলে। পারিবারিকসূত্রে জানা যায়, দীপ্ত মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটী কবরস্থান এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। পরিবার জানায়, সিঙ্গার কোম্পানিতে দিনাজপুর জেলা ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন দীপ্ত। সাপ্তাহিক ছুটিতে দিনাজপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার রাতে মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় পৌঁছে বাস থেকে নামার পাঁচ মিনিট আগেই তিনি মুঠোফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু বাস থেকে নামার পরপরই অজ্ঞাত একটি দ্রুতগামী যান তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, তারা বহুবার ফোন করেও দীপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ পাননি। পরে কিছুক্ষণ পর মির্জাপুর থানা পুলিশই ফোন করে তাদের দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে। হঠাৎ করে পরিবারের ভবিষ্যৎ ভেঙে যাওয়ায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো মির্জাপুরে। সদ্য লেখাপড়া শেষ করে স্বপ্ন নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করা এই তরুণের অকাল মৃত্যু সহপাঠী, সহকর্মী ও এলাকাবাসীর মনে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল সারোওয়ার বলেন, “দুর্ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনার যানটি শনাক্তে আমাদের তদন্ত চলছে।” এদিকে এলাকাবাসী দ্রুতগামী যানবাহনের বেপরোয়া গতিকে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে মহাসড়কে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সোনামুই উত্তরপাড়া জামে মসজিদের শুভ উদ্বোধন করলেন এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু সংবাদদাতা : এস কে শিপন টাঙ্গাইলের সোনামুই উত্তর পাড়া এলাকায় নবনির্মিত সোনামুই উত্তরপাড়া জামে মসজিদ-এর শুভ উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠিত হয়। এ শুভ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেন এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু, সাবেক উপমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানস্থলে এডভোকেট সালাম পিন্টুর সঙ্গে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় মুসল্লি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। উদ্বোধনী বক্তব্যে এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, “আমি যদি এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনতার ভালোবাসায় এমপি নির্বাচিত হতে পারি, তবে টাঙ্গাইল জেলার মানুষের কল্যাণে সর্বদা সমাজসেবার কাজে পাশে থাকব ইনশাল্লাহ।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এলাকার সার্বিক উন্নয়নকাজে তিনি কার্যকর ভূমিকা রাখতে চান। অনুষ্ঠানের শেষে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাকে ফুলের মালা পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। পরে তিনি নিজ হাতে মসজিদের উদ্বোধনী কাজের সূচনা করেন। স্থানীয়দের মতে, নতুন এই জামে মসজিদটি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করবে এবং ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় নবম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ে বন্ধ হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতি ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের ফলে বাল্য বিয়ে বন্ধ হওয়ায় এলাকাজুড়ে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলুয়া গ্রামের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে একই গ্রামের আবু সামা মিয়ার ১৭ বছর বয়সী ছেলে জিসান মিয়ার সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। বিষয়টি গোপন থাকলেও খবর পায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়। খবর পেয়ে সুপারভাইজার মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে কয়েকজন স্টাফ শিশু কন্যার বাড়িতে গিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বাল্য বিয়ে বন্ধে বাধা দেন এবং কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। স্থানীয়রা জানান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুর রহমান মাস্টার, সহ-সভাপতি মফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মোসলেম মিয়া সহ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির সহযোগিতায় বাল্য বিয়ের আয়োজন চলছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের টিম ফিরে এসে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। পরে রাতেই ইউএনও জোহরা সুলতানা যূথী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাইমিনুল ইসলামসহ প্রশাসনের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতে বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং মেয়েটির মাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ইউএনও বলেন,“উপজেলায় কোথায় বাল্য বিয়ে হচ্ছে এমন খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে নামবে প্রশাসন। বাল্য বিয়ে রোধে জড়িত যেই হোক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযান শেষে প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্থানীয়দের সচেতন করেন এবং মেয়ের পরিবারকে আইনগত ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করেন। অন্যদিকে, সামাজিকভাবে এই ঘটনায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করলেও বাল্য বিয়েতে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের অভিযানে ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত সিআর পরোয়ানায়-০১জন, সিআর পরোয়ানায়-০৩জন, জিআর পরোয়ানা-০১জন, নিয়মিত মামলায় ০২জন, পুলিশ আইন-৩৪ ধারায়-০৩জনসহ মোট-১০জন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। আজ দুপুরে অফিসার ইনচার্জ,বেগমগঞ্জ মডেল থানার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়, জেলা পুলিশের দিক নির্দেশনা ও বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আঃ বারী এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে থানার এএসআই(নিরস্ত্র) মোঃ ইলিয়াছ উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত সিআর পরোয়ানা ৬৩৪/২০২১ দায়রা-১১৩৮/১৯, এর আসামী ১।দিপক মজুমদার, পিতা-হরেরাম শীল, সিআর পরোয়ানা-৭৬২/২৫ এর আসামী ২। জাহানারা, পিতা-মোঃ মনির, মাতা-আংকুরের নেছা, উভয় সাং-গণিপুর চৌমুহনী পৌরসভা, সিআর পরোয়ানা-৭৬৪/২৫ এর আসামী ৩। বিবি উম্মে সালমা, পিতা-আবদুল মান্নান, মাতা-ছকিনা বেগম, সাং-মীরওয়ারিশপুর, এএসআই(নিঃ) মোঃ শাহাজাদা সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় সিআর পরোয়ানা ২৯০/২০ এর আসামী ৪। কবির হোসেন মিলন, পিতা-মৃত তনু মিয়া, সাং-আলাইয়ারপুর। এএসআই(নিঃ) মোঃ করিব হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় জিআর পরোয়ানা ১৯/২৫ এর আসামী ৫। জাহাঙ্গীর(৩০), পিতা-মৃত শহিদ উল্যাহ, সাং-বারইচতল। এসআই(নিঃ) মোঃ খোরশেদ আলম সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় বেগমগঞ্জ মডেল থানার নিয়মিত মামলা নং-০৪(১২)২৫ এর আসামী ৬। নিজাম উদ্দিন প্রঃ রুবেল(৩৪), পিতা-মৃত আব্দুর রব, মাতা-আঙ্কুরের নেছা, সাং-হাজীপুর, ৭। মোঃ পারভেজ(২৮), পিতা-ইমন হাওলাদার, সাং-টঙ্গীপাড়া, থানা-টঙ্গীপাড়া, জেলা-মুন্সিগঞ্জ। এসআই(নিঃ) মাহামুদুল হক সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় ৮। মহিন উদ্দিন প্রঃ নান্নু(৩০), পিতা-আব্দুল জাব্বার, মাতা-ফরিদা আক্তার, ৯। মোঃ দেলোয়ার হোসেন(৪৫), পিতা-মোঃ হানিফ, মাতা-দূরলফী বেগম, উভয় সাং-নাজিরপুর, ১নং ওয়ার্ড, চৌমুহনী পৌরসভা, ১০। মোঃ সজিব(২০), পিতা-নুরুল ইসলাম, মাতা-বিবি মরিয়ম, সাং-পশ্চিম শোলকিয়া, ৬নং ওয়ার্ড, ৯নং কালাদরাপ ইউপি, থানা-সুধারাম গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিধি মোতাবেক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বেগমগঞ্জ মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আঃ বারী জানান, পুলিশ কর্তৃক বিশেষ অভিযান এর কার্যক্রম চলমান আছে। এছাড়াও থানা এলাকায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত ও নিয়মিত মামলার আসামী গ্রেফতারসহ অবৈধ অস্ত্র ও অবৈধ মাদক উদ্ধার সংক্রান্তে অভিযান অব্যাহত থাকবে, এইসব কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য গণমাধ্যমের সহায়তা আশা করে
টাঙ্গাইলে পোষা প্রাণীসহ বিড়াল, ইঁদুর, শেয়াল ও কুকুরের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব রোগীর জন্য র্যাবিস টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও সরকারি হাসপাতালে প্রায় সারা বছরই টিকার সংকট বিরাজ করছে। এর ফলে রোগীদের বাইরে থেকে টিকা কিনতে বাধ্য হতে হচ্ছে। যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তারা টিকা না পেয়ে গুরুতর ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন। ২৫০ শয্যার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রতি মাসেই দেখা যায় জলাতঙ্ক রোগের র্যাবিস টিকা সংকট। শুধু র্যাবিস নয়, প্রায় এক বছর ধরে সরকারিভাবে আরআইজি (ইমিউনোগ্লোবুলিন) টিকার সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এতে নিম্নবিত্ত রোগীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী টিকা নিতে আসেন। কিন্তু সরকারি সরবরাহ কম থাকায় অনেক রোগী টিকা না পেয়ে বিপাকে পড়েন। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে অতিরিক্ত দামে টিকা কিনতে হচ্ছে তাদের। রোগীর স্বজনরা জানান, প্রতিটি ‘প্রাতটি’ ভ্যাকসিন (চার ডোজ) ৪৭০–৫০০ টাকায় কিনে নার্সদের দিতে হয়। র্যাবিস টিকার প্রতিটি ডোজে খরচ হয় ১২০–১২৫ টাকা। তিন ডোজ নিতে একজন রোগীর ৩৬০–৩৭৫ টাকা লাগে। ওজনভেদে এক থেকে তিনটি আরআইজি টিকা প্রয়োজন হয়, যেখানে খরচ দাঁড়ায় ৮২০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। সরকারিভাবে টিকার সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ফার্মেসিগুলোতে পর্যাপ্ত টিকা মজুদ রয়েছে। তবে সেখানেও সংকট দেখিয়ে দ্বিগুণ দাম আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অনেক রোগী র্যাবিস টিকা সংকট সম্পর্কে জানেন না; হাসপাতালে এসে যখন টিকা কিনে আনতে বলা হয়, তখন বিপাকে পড়েন। হাসপাতালের নার্স ও ওয়ার্ড বয়রা জানান, বাইরে থেকে আনতে হয় বিষয়টি রোগীদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়—না জানালে পরে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও জানিয়েছেন, “চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম।” বরাদ্দ পেলেও দুই দিনেই তা শেষ হয়ে যায়। প্রতি মাসে মাত্র ৩০০–৪০০ র্যাবিস ভ্যাকসিন আসে, যা চাহিদার তুলনায় অতি অপ্রতুল। এই চিত্র শুধু জেলা হাসপাতালেই নয়—জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই অবস্থা। উপজেলা পর্যায়ে কোনো র্যাবিস কিংবা আরআইজি টিকা মজুদ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে প্রাণীর কামড়ে আক্রান্তদের টিকা সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে, জেলার নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য জলাতঙ্ক প্রতিরোধ এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি টিকার ঘাটতি না কাটলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোকছেদুর রহমান জানান, তিন আরোহী একটি মোটরসাইকেলে করে গারোবাজার থেকে ঘাটাইলের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে অতিরিক্ত গতি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোয় মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশের একটি গাছের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই আরোহী মারা যান এবং অপরজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন প্রথমে তাদের উদ্ধার করে। পরে আহত ব্যক্তিকে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )আরও বলেন, “মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ছিলেন। অতিরিক্ত গতি এবং হেলমেট না পরার কারণে মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়েছে। পরিচয় শনাক্তের পর পরিবারকে জানানো হবে।”
সাজিদ পিয়াল:আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর চালু, অনিবন্ধিত মোবাইল নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। দেশে প্রথমবারের মতো মোবাইল ফোনের জাতীয় পরিচিতি নিবন্ধন ব্যবস্থা—ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)—আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হতে যাচ্ছে। তবে সুবিধার কথা বিবেচনা করে বর্তমানে ব্যবহৃত অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনগুলো আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,দেশে মোবাইল ফোন চোরাচালান, ক্লোনড ও রিফার্বিশড ফোনের অনুপ্রবেশ রোধ, পুরোনো বিদেশি ফোনের বাজারে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, ছিনতাই ও চুরি হওয়া ফোন শনাক্ত, অনলাইন জুয়া, এমএফএস ও ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধের জন্য এনইআইআর চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে শুল্ক ফাঁকি রোধ করাও এ ব্যবস্থার অন্যতম লক্ষ্য।ব্যবসায়ীদের দাবিতে সময় বাড়ল গত তিনদিন মোবাইল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার পর দেশজুড়ে থাকা সকল অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সময় ১৬ ডিসেম্বরের বদলে ১৫ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোবাইল আমদানিতে বাধা নেই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়— মোবাইল ফোন আমদানিতে কোনোরূপ নিষেধাজ্ঞা নেই। কত পুরোনো ফোন বা কোন মডেল আমদানি করা যাবে, তা মন্ত্রণালয় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে জানাবে।আমদানির বিষয়টি সরকারকে অবহিত করতে হবে।শুল্ক পুনর্নির্ধারণে এনবিআর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্টের প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান।বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে বলা হয়, এনইআইআর চালুর মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ ফোনের ব্যবহার বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হবে। তাই এ বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো বা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার যেকোনো অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এনইআইআর উদ্বোধন করা হবে, যেখানে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির নেতারা সমর্থন জানিয়েছেন।
জন্মের পর থেকেই শ্বাসকষ্ট ও দুর্বলতায় ভুগছিল ছোট্ট ইসরাত জাহান আছিয়া। বয়স মাত্র ২ বছর ৩ মাস—কিন্তু এতটুকু বয়সেই জীবনের সঙ্গে লড়াই করছে সে। নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের রানীগাঁও গ্রামের এই নিষ্পাপ শিশুটির হৃদপিণ্ডে জন্মগত ছিদ্র ধরা পড়ে কয়েক মাস আগে। দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারটির পক্ষে এমন ব্যয়বহুল চিকিৎসা বহন করা ছিল প্রায় অসম্ভব। তখনই এগিয়ে আসেন দেশের আলোচিত মানবিক ব্যক্তিত্ব, অসহায়ের শক্ত ভরসার নাম—ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, আইন বিষয়ক সম্পাদক—কেন্দ্রীয় বিএনপি এবং মহাসচিব—জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।পরিবারটির আর্থিক অসহায় অবস্থা জানার পর তিনি দ্বিধাহীনভাবে ঘোষণা দেন, আছিয়ার সম্পূর্ণ চিকিৎসা, ভর্তি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশন ও পরবর্তী সকল খরচ আমার ব্যক্তিগত দায়িত্বে। তার এই উদ্যোগ পরিবারে ফিরিয়ে এনেছে আশার আলো ও বাঁচার সাহস। ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ব্যারিস্টার কায়সার কামালের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আছিয়াকে ভর্তি করা হয় ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। চিকিৎসক দল জানিয়েছে—আছিয়ার অপারেশনটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, তবে সময়মতো সার্জারি হলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। প্রস্তুত করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা ও সার্জিক্যাল টিম। পারিবারিক বাস্তবতা: দারিদ্র্যের মধ্যেও সন্তানের প্রতি অসীম স্নেহ, আছিয়ার বাবা আইনুল ইসলাম পেশায় দিনমজুর, মা ময়না আক্তার গৃহিণী। পরিবারের দুটি সন্তান—এক ছেলে ও এক মেয়ে। আছিয়া সবার ছোট; সবার আদর ও স্নেহের কেন্দ্রবিন্দু। শিশুটির জন্মের পর থেকেই তাদের জীবনে শুরু হয় দুঃশ্চিন্তার দিন। স্থানীয় চিকিৎসকদের ব্যাখ্যায় জানা যায়—আছিয়ার হৃদযন্ত্রে গুরুতর ছিদ্র রয়েছে, যা সময়মতো চিকিৎসা না হলে জীবন সংকট তৈরি করতে পারে। হাতে ছিল না প্রয়োজনীয় অর্থ, ছিল শুধু অসহায়ত্ব। মানবতার ফেরিওয়ালা কায়সার কামালের ধারাবাহিক সেবা, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ইতিমধ্যেই পরিচিত নাম। থেলাসেমিয়া, কিডনি বিকল, ক্যান্সার, চোখের চিকিৎসা, হার্ট সার্জারি—এমন বহু ব্যয়বহুল চিকিৎসার দায়িত্ব তিনি নিঃস্বার্থভাবে গ্রহণ করেছেন। আছিয়ার চিকিৎসা উদ্যোগটি তার পরিচালিত ৬ নম্বর ছিদ্র হার্ট অপারেশন । মানুষের কষ্ট লাঘব ও মানবতার সেবা তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। মানুষের দোয়া—আছিয়ার শক্তি ,রানীগাঁও গ্রামে এখন একটাই প্রার্থনা—আছিয়ার অপারেশন সফল হোক। পরিবার, প্রতিবেশী, আত্মীয়সহ এলাকার মানুষ ব্যারিস্টার কায়সার কামালের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। নিষ্পাপ এই শিশুটির মুখের হাসি ফিরিয়ে আনার জন্য সবার দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করেছেন তিনিও। শিশু আছিয়ার অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হোক—এই কামনাই সকলের। মানবতার কল্যাণে, অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর এই ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও আরও প্রসারিত হবে—ইনশাআল্লাহ।
‘মানবাধিকার, আমাদের নিত্যদিনের অপরিহার্য’’ এই প্রতিপাদ্যে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টারের আয়োজনে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহায়তায় নানা আয়োজনে এ দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষ্যে বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি পৌরশহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জন ক্রসওয়েল খকসি‘র সভাপতিত্বে, সংস্থার উপজেলা কোঅর্ডিনেটর পল সুকান্ত বিশ^াস এর সঞ্চালনায়, প্রধান অতিথি‘র বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সমবায় অফিসার বিজন কান্তি ধর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এডভোকেট এম এ জিন্নাহ্, প্রেসক্লাব সভাপতি তোবারক হোসেন খোকন, সাবেক সভাপতি মো: মেহান মিয়া, সংস্থার ফাইন্যান্স অফিসার পল সুকান্ত বিশ^াস প্রমুখ। এছাড়া কবি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এরপর থেকে সারাবিশ্বেই এই দিনে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। বর্তমানে বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধনের গড় হার ৫০ শতাংশ অর্থাৎ এখনো অর্ধেক মানুষকে নিবন্ধন না থাকার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক অধিকার পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। নিবন্ধনহীনতা দেশে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, মানবপাচারসহ বিভিন্ন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে ত্বরান্বিত করছে। একইভাবে, মৃত্যু নিবন্ধন না থাকায় উত্তরাধিকার প্রমাণেও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। আইন সংস্কারের মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম জনবান্ধব করতে হবে, যাতে কোনো মানুষই পরিচয়হীন না থাকে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ সকল মৌলিক অধিকার সমানভাবে ভোগ করতে পারে। এ কাজে সরকারের পাশাপাশি সকলকে সহায়তা করতে আহবান জানানো হয়।
যাদের জন্য সেতু নির্মাণ, সেই ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের হাতে উদ্বোধন; উপকৃত হবে ৬ গ্রামের হাজারো মানুষ, নেত্রকোণার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা এলাকার জনজীবনে দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় সমস্যা ছিল “বৈঠাখালি মঙ্গল শরি” নদী পারাপার। নদীতে সারা বছর পানি থাকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হতো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কৃষক, নারী ও সাধারণ পথচারীদের। সরকারি উদ্যোগের অভাবে বহু বছর ধরে এলাকা ছিল অবহেলিত। আর সেই দুর্ভোগের মধ্যেই স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত হলো ১০৫ ফুট দীর্ঘ কাঠ-বাঁশের সেতু—যা নির্মাণ করে দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। ২৯/১১/২০২৫ ইং নাজিরপুর কৃষক সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখতে পান—স্কুলের শ’খানেক ছাত্র-ছাত্রী এবং কয়েকজন শিক্ষক নদীর পাড়ে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করছেন। তিনি গাড়ি থামিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান এবং জানতে চান সমস্যার কারণ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল কে জানান, স্যার, প্রতিদিনই এই নদী পার হতে গিয়ে আমরা বহু কষ্ট করি। বর্ষায় নৌকা না পেলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকে। গ্রামবাসীর জন্যও নদী পার হওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই কথাগুলো তাঁকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নেন—এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নির্দেশনা ও আশ্বাসে স্থানীয় জনগণ, ছাত্রদের অভিভাবক, যুবসমাজ এবং দলীয় কর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসেন। মাত্র একদিনের প্রস্তুতির পরই শুরু হয় সেতু নির্মাণ। ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে শুরু হওয়া এই কাজটি দিনে-রাতে অব্যাহত থাকে। নির্মিত সেতুর বৈশিষ্ট্য—দৈর্ঘ্য: ১০৫ ফুট ,প্রস্থ: ৫ ফুট কাঠ ও বাঁশের সমন্বয়ে মজবুতভাবে তৈরি বর্ষাকালসহ সারা বছর ব্যবহারযোগ্য করে নকশা করা স্থানীয় প্রবীণ নাগরিকদের মতে, “বিগত ৩০ বছরে এমন কাজ কেউ দেখেনি। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত, এত দ্রুত কাজ—এটি এলাকার মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।” ১০ ডিসেম্বর: আবেগঘন উদ্বোধন ,মাত্র চার দিনের প্রচেষ্টায় সেতুটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে। এরপর ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, সেতুটির উদ্বোধনে ছিল অনন্য একটি দৃশ্য—কোনো রাজনৈতিক নেতা বা অতিথি নয়, সেতুটি উদ্বোধন করেন সেই শিশু-কিশোর, শিক্ষক এবং গ্রামবাসী, যাদের দৈনন্দিন জীবনের কষ্ট লাঘবের জন্যই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী মুহূর্তে উপস্থিত লোকজন বলেন, “এটি শুধু একটি সেতু নয়—এটি আমাদের বাঁচার স্বস্তি, আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা।”৬ গ্রামের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব নতুন সেতুটি চালু হওয়ায় উপকৃত হবে—২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী,পার্শ্ববর্তী জামে মসজিদের অসংখ্য মুসল্লি,কৃষক, দিনমজুর, কর্মজীবী মানুষ,এবং মোট ৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষ, যাদের প্রতিদিনের যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হয়েছে। স্থানীয় নারীরা জানান, হাসপাতাল, বাজার ও স্কুলে যেতে আর আগের মতো দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে প্রশংসা জানিয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন—মানুষের সমস্যা শুনে চুপ থাকা আমাদের কাজ নয়। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি কারণ মানুষের কষ্ট সহ্য হয় না। উন্নয়ন ও মানবসেবা—এই দুটি বিষয়ই আমার অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন,জনগণ সহযোগিতা করলে আরও অনেক এলাকায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে। এলাকার জনপ্রিয় মহল এবং প্রবীণদের মন্তব্য—ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখিয়ে দিলেন—উদ্যোগ চাই, কাজ করা সম্ভব। এটি মানুষকে সম্মান দেওয়ার নজির। আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা আজ নিশ্চিত হলো। দুর্গাপুর–কলমাকান্দা অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সক্রিয় ভূমিকা মানুষের মধ্যে নতুন আস্থা সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসা সহায়তা, রাস্তা-মেরামত, সেতু নির্মাণ, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো—সব ক্ষেত্রেই তাঁর কার্যক্রম জনমনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। এই কাঠের সেতু তাই শুধু একটি স্থাপনা নয়—এটি জনকল্যাণমুখী রাজনীতির জীবন্ত উদাহরণ।
টাঙ্গাইলে কাভার্ড ভ্যানকে ট্রাকের ধাক্কা: নিহত ২ টাঙ্গাইলের কান্দিলা এলাকায় ০৯/১২/২০২৫ ইং তারিখ রোজ মঙ্গলবার রাত প্রায় ১০টার দিকে কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত কাভার্ড ভ্যানের পিছনে দ্রুতগতির একটি ট্রাক এসে ধাক্কা দিলে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা জানান, রাতের অন্ধকারে হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে তারা ছুটে এসে মহাসড়কে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দেখতে পান। সংঘর্ষের ফলে কাভার্ড ভ্যানের পেছনের অংশ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রী মারা যান। দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধারসহ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত যান দুটি রাস্তার পাশের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলে। এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ট্রাকটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে এবং মরদেহ দুটি পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।এ দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কে দ্রুতগতির যানবাহনের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে, তাই নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
টাঙ্গাইলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় চালকসহ দুই জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিন জন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার কান্দিলা বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাতের অন্ধকারে প্রচণ্ড শব্দে দুর্ঘটনার খবর দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। নিহতরা হলেন—শেরপুর জেলার বাসিন্দা ট্রাকচালক সোহেল এবং টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মুরগি ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান। নিহত দু’জনই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান বলেন, “জামালপুর থেকে ঢাকাগামী হাঁস-মুরগি বোঝাই ট্রাকটি সামনে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই জনের মৃত্যু হয়। আহত তিন জনকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনায় মহাসড়কে সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হলেও দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কে অতিরিক্ত গতি ও অসতর্ক ড্রাইভিংয়ের কারণে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।