মোস্তফা মাসুদ: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের চিংড়িখালিতে মিথ্যা মামলা দায়ের, ভুমিহীন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও অপ-প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ভূমিহীন জনপদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শতশত ভুমিহীন নারী পুরুষের অংশগ্রহনে এ মানববন্ধনে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে আতঙ্ক সৃষ্টি, সন্ত্রাস, মাদক বিস্তারসহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্বে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী মামলাবাজ সাইদুল ও সাত্তারের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার নলতা ইউনিয়নের চিংড়িখালিতে ভূমিহীন নেতা শহিদুল ইসলাম, মধু সরদারসহ তাদের একান্ত সহযোগীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, নানান ষড়যন্ত্র ও অপ-প্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১লা নভেম্বর) বিকেলে চিংড়িখালি বৈরাগীর চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বসুখালী বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ লাইনে মানববন্ধনে অংশ নেন চিংড়িখালি ভূমিহীন জনপদের প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। মানববন্ধনে উপস্থিত জনতা একক কণ্ঠে সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভূমিহীন জনপদের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ভুমিহীন জনপদের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম গাজী, সহ- সভাপতি আব্দুল হালিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বুল্লা, উপদেষ্টা আবুল হোসেন গাজী, সদস্য মধু সরদার, কুতুব মোড়ল, শওকত হাজী, গোলাপ ঢালী, মজিবার, রফিকুল ইসলাম, আরিজুল সরদার, ভুমিহীন নেত্রী নুরবানু, জাহানারা, শামসুন্নাহার ও মমতাজ প্রমুখ। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আশাশুনি উপজেলার বসুখালী গ্রামের মৃত আব্দুল হক গাজীর ছেলে মাদক সম্রাট ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাইদুল ইসলাম গাজী (৪৭) এবং নলতা ইউনিয়নের কাজলা কাশিবাটি গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মাদকসেবী শেখ সাত্তার (৪৫) দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। এরা ভূমিহীন ও অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে ভয় সৃষ্টি করে, চাঁদা দাবি করার পাশাপাশি নলতার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানসহ অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়ানো, মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনসহ এলাকায় দুঃশাসন কায়েম করে অশান্ত করার পায়তারা করে আসছে। বক্তারা আরও বলেন, বিগত সরকারের সময়ে এদের বিরুদ্ধে মাদক, নারী কেলেঙ্কারি ও চাঁদাবাজিসহ নানাবিধ অভিযোগ থাকলেও প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়ে থেকেছে। এরা আজও রয়েছে বহালতবিয়তে ও বেপরোয়া হয়ে। তারা বৈরাগীর চক, চিংড়িখালি, বসুখালী, সন্ন্যাসীর চক ও ঝায়ামারিসহ আশপাশের এলাকায় তাদের সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। ভূমিহীন জনপদের নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন,“অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে আতঙ্ক সৃষ্টি করা সন্ত্রাসীদের আর ছাড় দেয়া হবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজি ও মাদকের বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ব। ”বক্তারা অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মাদক-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। একই সাথে তিন শতাধিক ভুমিহীনের শেষ সম্বল যায়গাটুকু ফেরত পেতে সরকার বাহাদুরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা। এছাড়াও চিংড়িখালির শান্তি স্থাপন ও ভূমিহীনদের ন্যায়সঙ্গত দাবিতে জনতার এই জাগরণ এখন পুরো কালিগঞ্জের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
মোস্তফা মাসুদ: সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলাধীন নলতা শরীফে আহছানিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর আয়োজনে বার্ষিক পাঠ, পুরষ্কার বিতরণী ও সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১লা নভেম্বর (শনিবার) বিকাল সাড়ে ৪ ঘটিকায় আহছানিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর হল রুমে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের কর্মকর্তা শিক্ষক মশিউর রহমানের সঞ্চালনায় নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সাঈদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, আহছানিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল ফজল (শিক্ষক), নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের সহ-সম্পাদক আলহাজ্ব মালেকুজ্জামান, মিশনের কর্মকর্তা আলহাজ্ব মোঃ ইউনুস, নলতা কেন্দ্রীয় শাহী জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব গোলাম কিবরিয়া, পীরজাদা মোঃ রবিউল ইসলাম ও একরামুল রেজা, শিক্ষক মোহর আলী, লেকচারার আনিছুর রহমান, লেকচারার মাহমুদন্নবী খান, বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থী সহ খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) এর অনুসারী ও সাধারণ মুসুল্লিরা উপস্থিত ছিলেন। বার্ষিক পাঠ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শিক্ষা সংস্কারক পীরে কামেল হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) এর জীবনী সম্পর্কিত পাঠ প্রতিযোগিতায় ক-গ্রুপে প্রথম স্থান দখল করে পুরস্কার তুলে নেন নলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বুশরা নিশাত। খ-গ্রুপে হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) এর চাকুরী জীবন নিয়ে পাঠ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করে পুরস্কার গ্রহণ করেন নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান। এবং গ-গ্রপে হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) আধ্যাত্মীক জীবন নিয়ে পাঠ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করে পুরস্কার নেন নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার।পুরস্কার বিতরণী শেষে বক্তারা পীরে কামেল হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) এর জীবনী, আধ্যাত্মিকতা, ধর্মপ্রচার ও ইসলাম নিয়ে তার কর্ম জীবন ও তার লেখা বইগুলো নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
মোস্তফা মাসুদ: : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের এক শ্রমিক খুলনায় কাজ করতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। ঠিকাদারের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা খরচ না পেয়ে তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ঘটনায় আহত শ্রমিক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, যা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নারায়নপুর গ্রামের মৃত জামাত মোড়লের ছেলে আহত শ্রমিক মোঃ আফজাল হোসেন (৪০) ,তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, সোনালি কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার আব্দুল হাকিম সরদার (৫৮) এবং তার লেবার সর্দার মোঃ ইকবাল হোসেন (৪০) এর অধীনে কাজ করতে গিয়ে তিনি গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হন।ভুক্তভোগী জানান,খুলনা শহরের বউবাজার এলাকায় একটি সরকারি বিদ্যালয়ের চারতলা ভবনের নির্মাণকাজ চলাকালীন অসাবধানতাবশত তিনি তৃতীয় তলা থেকে নিচে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ঠিকাদার পক্ষ তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে মাত্র তিন দিন চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। সেই সময় ঠিকাদার হাকিম সরদার প্রতিশ্রুতি দেন যে, পরবর্তীতে চিকিৎসার পূর্ণ খরচ বহন করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা কোনো সহায়তা বা খোঁজখবর নেয়নি। বর্তমানে আফজাল হোসেন কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, “২৬ অক্টোবর বিকেলে আমি চিকিৎসা খরচ চাওয়ার জন্য ঠিকাদার হাকিম সরদার ও লেবার সর্দার ইকবালের কাছে গেলে তারা আমাকে ভয়ভীতি দেখায় এবং বলে—‘তোর কিছু করার থাকলে করে নিস।এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন,আমি তাকে খুলনা হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম, কিছু খরচও দিয়েছি। বাড়ি নিয়ে এসে আরো দেবো বলেছিলাম।” এরপর তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়রা বলেন, “একজন দিনমজুর শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। এখন ঠিকাদার চিকিৎসা ব্যয় না দিলে তা অমানবিক আচরণ ছাড়া কিছু নয়। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন।আহত শ্রমিক আফজাল হোসেন বর্তমানে চিকিৎসাহীন অবস্থায় হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মানবিক সংগঠনগুলোর কাছে চিকিৎসা সহায়তা ও ন্যায়বিচার কামনা করেছেন।
মোস্তফা মাসুদ: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম 'কে আরও সুসংগঠিত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে কালিগঞ্জ উপজেলা তাঁতি দলের আওতাধীন ০৪ নং দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন শাখার আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার (২৬ অক্টোবর ২০২৫) বিকাল ৫টায় উপজেলা তাঁতি দলের আহবায়ক শরিফ মোঃ আব্দুল রাজ্জাক ও সদস্য সচিব শেখ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক অনুমোদন পত্রে ১১ সদস্য বিশিষ্ট এই আহবায়ক কমিটির অনুমোদন প্রদান করা হয়। গঠিত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন- আহবায়ক: মোঃ শরিফুল ইসলাম (মধু),সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক: মোঃ আবু বকর আলী কারিকর, যুগ্ম আহবায়ক: মোঃ ওহিদুল ইসলাম, মোঃ শাজউদ্দিন,মোঃ নুরুজ্জামান,সদস্য সচিব: মোঃ আল আমিন, সদস্য মোঃ মাহফুজুর রহমান,মোঃ ফারুক হোসেন,মোঃ মিজানুর রহমান,মোঃ আরিফ হোসেন ও মোঃ মুজিবর রহমান। নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, তাঁতি দলের রাজনীতিকে তৃণমূল পর্যায়ে আরও শক্তিশালী ও জনমুখী করতে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। তাঁদের বিশ্বাস,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের আদর্শ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে দলীয় সংগঠন আরও সুসংহত হবে। উপজেলা আহবায়ক মোঃ আব্দুল রাজ্জাক বলেন,“ তাঁতি দল হচ্ছে বিএনপির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংগঠন।আমরা প্রত্যাশা করি,নতুন এই আহবায়ক কমিটি দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে আরও তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেবে।এদিকে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও নতুন কমিটি গঠনের খবরে উৎসাহ ও নবউদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। তাঁরা মনে করেন, নতুন এই নেতৃত্ব তাঁতি দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নতুন গতি আনবে এবং আগামীর আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
হিজরি তারিখ লোড হচ্ছে...
তারিখ লোড হচ্ছে...
ঢাকা, বাংলাদেশ
সময় লোড হচ্ছে...
বর্তমান সময়
| নামাজ | সময় | অবস্থা |
|---|
বর্তমান নামাজ: লোড হচ্ছে...
[জুমার বয়ান : ২৬-১০-১৪৪৬ হি., ২৫-৪-২০২৫ ঈ.] [বয়ানটি আলোচকের নযরে সানী ও সম্পাদনার পর পাঠকের সামনে পেশ করা হল। প্রসঙ্গের প্রয়োজনে এতে কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে। –সম্পাদক] গত জুমায় হজ্ব সম্পর্কে কিছু কথা হয়েছিল। আজকের আলোচনাও হজ্বের প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু হবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সামনে আসায় সেটি নিয়ে কিছু আলোচনা করার ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ। কুরআন কারীমে সূরা বাকারায় হজ্ব প্রসঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, যখন তোমরা হজ্বের কাজসমূহ সমাপ্ত করবে তখন আল্লাহর যিকির করবে। হজ্ব পালনকারী ব্যক্তি ইহরাম বেঁধে মিনা হয়ে আরাফায় যাবে। আরাফা থেকে মুযদালিফায় আসবে। মুযদালিফা থেকে আবার মিনায় গিয়ে ১১-১২ যিলহজ্ব পর্যন্ত (দুই দিন বা ১৩ যিলহজ্বসহ তিন দিন) অবস্থান করবে। সেখানে জামারায় পাথর নিক্ষেপ করবে। এই পবিত্র স্থানগুলো দুআ কবুলের জায়গা। এসব স্থানে কী দুআ করবে– সেটিও আল্লাহ তাআলা আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। দুআটি আমাদের বর্তমান অবস্থার সঙ্গেও খুব সামঞ্জস্যপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা বলেছেন– فَاِذَا قَضَیْتُمْ مَّنَاسِكَكُمْ فَاذْكُرُوا اللهَ كَذِكْرِكُمْ اٰبَآءَكُمْ اَوْ اَشَدَّ ذِكْرًا فَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا وَمَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ، وَمِنْهُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّفِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ، اُولٰٓىِٕكَ لَهُمْ نَصِیْبٌ مِّمَّا كَسَبُوْا وَاللهُ سَرِیْعُ الْحِسَابِ. তোমরা যখন হজ্বের কার্যাবলি শেষ করবে, তখন আল্লাহকে সেভাবে স্মরণ করবে, যেভাবে নিজেদের বাপ-দাদাকে স্মরণ করে থাক; বরং তার চেয়েও বেশি স্মরণ করবে। কিছু লোক তো এমন আছে, যারা (দুআয় কেবল) বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়ায় দান করুন। আখেরাতে কিন্তু তাদের কোনো অংশ নেই। আবার তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে, যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দান করুন, দুনিয়ায়ও কল্যাণ এবং আখেরাতেও কল্যাণ এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। এরা এমন লোক, যারা তাদের অর্জিত কর্মের অংশ (সওয়াবরূপে) লাভ করবে। আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। –সূরা বাকারা (০২) : ২০০-২০২ হজ্বের কাজগুলো সমাপ্ত করে মিনায় অবস্থানকালে আল্লাহর যিকির করবে। যেমন তাকবীরে তাশরীক– اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ. এই সময় তাকবীরে তাশরীকের যিকিরসহ অন্যান্য যিকিরও করবে। আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহর যিকির কর এবং আল্লাহকে স্মরণ কর, তোমাদের বাপ-দাদা ও পূর্বপুরুষদের স্মরণের মতো। ইসলামপূর্ব যুগে মক্কার মুশরিকসহ অন্যান্য বেদ্বীনরাও হজ্ব করার জন্য মক্কা মুকাররমায় যেত। বলার অপেক্ষা রাখে না, তারা যেহেতু তাওহীদের শিক্ষা হারিয়ে ফেলেছিল, সেহেতু তাদের হজ্ব তাওহীদের হজ্ব ছিল না; ছিল শিরকের হজ্ব। এমনকি হজ্বের মধ্যে তাওহীদের যে তালবিয়া– لَبَّيْكَ اَللّٰهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيكَ لَكَ. –সেটি পর্যন্ত তারা পরিবর্তন করে ফেলেছিল। ওই সময় তারা নিজেদের মতো করে হজ্ব সম্পন্ন করার পর নিজেদের পূর্ব পুরুষদের বাস্তব-অবাস্তব যাবতীয় গুণকীর্তন ও প্রশংসা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের তাওহীদের হজ্ব শেখাচ্ছেন। সেখানে এ নির্দেশনাও দিচ্ছেন যে, হজ্ব সমাপ্ত করার পর কেবল আল্লাহর যিকির কর। আগে যেমন পূর্বপুরুষ ও বাপ-দাদার চর্চা করতে, অন্তত ততটুকু যিকির তো আল্লাহর জন্য করবে; বরং তার চেয়ে বেশি কর– اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ. মুমিন ও কাফেরের প্রার্থনার পার্থক্য যিকিরের প্রধান ও প্রথম সারির প্রকারগুলোর মধ্যে দুআ অন্যতম। সেই দুআর ধরন কেমন হবে, তা-ও আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন। কিছু লোক আছে, যাদের চিন্তা, স্বপ্ন, প্রার্থনা সবকিছু কেবল দুনিয়া ও ইহজগতকে কেন্দ্র করে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেন– فَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا. কিছু লোক তো বলে, মালিক, আমাদের কেবল দুনিয়া দান করুন! দুনিয়াতে সুখে রাখুন! ইহজগতের সকল সুখ দান করুন! ব্যস, আখেরাতের কোনো আলাপ নেই। আখেরাতের জন্য তাদের কোনো প্রার্থনা নেই। আল্লাহ বলছেন– وَ مَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ. ‘আখেরাতে তার কোনো অংশ নেই।’ অর্থাৎ তার নিজেরই যেহেতু আখেরাত নিয়ে কোনো ভাবনা নেই, তাই আখেরাতে তার কোনো অংশও নেই। পক্ষান্তরে তাওহীদে বিশ্বাসী মুমিন বান্দাদের দুআ কেমন সেটাও আল্লাহ তাআলা বলেছেন– رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّفِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ. অর্থাৎ আল্লাহ, আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দান করুন! আখেরাতেও কল্যান দান করুন! দুনিয়াতেও যেন আমরা সুখে-শান্তিতে থাকতে পারি! আপনার নেক বান্দা হয়ে থাকতে পারি! আর আখেরাতেও যেন শান্তি ও নিরাপদে থাকতে পারি! এককথায় আমরা আপনার নিকট দুনিয়া-আখেরাত উভয় জগতের কল্যাণ কামনা করি এবং দোযখের আগুন থেকে পানাহ চাই! আল্লাহ তাআলা বলছেন– اُولٰٓىِٕكَ لَهُمْ نَصِیْبٌ مِّمَّا كَسَبُوْا وَ اللهُ سَرِیْعُ الْحِسَابِ. তাদের আমল অনুযায়ী তাদের জন্য আখেরাতে বড় অংশ থাকবে। আর আল্লাহ অনেক দ্রুত হিসাব নিতে পারেন। কোটি কোটি মানুষের মধ্যে কে আল্লাহর কাছে কেবল ইহজগতের কল্যাণ চেয়েছিল আর কে ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের কল্যাণ চেয়েছিল– সেই হিসাব নিতে আল্লাহর কোনো সময় লাগবে না। তিনি অনেক দ্রুত সমস্ত হিসাব সম্পন্ন করতে সক্ষম। আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং দেখেন। ভাইয়েরা আমার! আমরা মুমিন, মুসলিম। আমরা তো আল্লাহর নিকট দুনিয়া-আখেরাত উভয়টাই চাই। বরং আমাদের দুনিয়াও নিছক দুনিয়া নয়, মূলত তা আখেরাতের প্রস্তুতির জন্য। আখেরাতের প্রতি অবিশ্বাস ও উদাসীনতা জাহান্নামে যাওয়ার কারণ সূরা ইউনুসেও আল্লাহ তাআলা বলেন– اِنَّ الَّذِیْنَ لَا یَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا وَرَضُوْا بِالْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَاطْمَاَنُّوْا بِهَا وَالَّذِیْنَ هُمْ عَنْ اٰیٰتِنَا غٰفِلُوْنَ، اُولٰٓىِٕكَ مَاْوٰىهُمُ النَّارُ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ، اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَهْدِیْهِمْ رَبُّهُمْ بِاِیْمَانِهِمْ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهِمُ الْاَنْهٰرُ فِیْ جَنّٰتِ النَّعِیْمِ، دَعْوٰىهُمْ فِیْهَا سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ وَتَحِیَّتُهُمْ فِیْهَا سَلٰمٌ وَاٰخِرُ دَعْوٰىهُمْ اَنِ الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ. নিশ্চয়ই যারা (আখেরাতে) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আশা রাখে না এবং পার্থিব জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট ও তাতেই নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে এবং যারা আমার নিদর্শনাবলি সম্পর্কে উদাসীন— নিজেদের কৃতকর্মের কারণে তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। (অপরদিকে) যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের ঈমানের কারণে তাদের প্রতিপালক তাদেরকে এমন স্থানে পৌঁছাবেন যে, প্রাচুর্যময় উদ্যানরাজিতে তাদের তলদেশ দিয়ে নহর বহমান থাকবে। তাতে (প্রবেশকালে) তাদের ধ্বনি হবে এই যে, হে আল্লাহ! সকল দোষ-ত্রুটি থেকে আপনি পবিত্র এবং সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’। আর তাদের শেষ ধ্বনি হবে এই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। –সূরা ইউনুস (১০) : ৭-১০ এখানে আল্লাহ তাআলা বলেন, যাদের আমার সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো আশা নেই বা বিশ্বাস নেই এবং তারা দুনিয়ার জীবনকেই সবকিছু মনে করে, মৃত্যুর পরে কবর থেকে যে জগৎ শুরু হয়, হাশর-নশর, আল্লাহর দরবারে দাঁড়ানো ইত্যাদি বিষয়ে যাদের বিশ্বাস নেই, তাদের পরিণতি জাহান্নাম। তেমনিভাবে যাদের বিশ্বাস আছে, কিন্তু মনোযোগ ও গুরুত্ব নেই। অর্থাৎ আরেকটা জগতের বিষয়ে জানা আছে, কিন্তু সেই জগতের বিষয়ে কোনো তৎপরতা ও প্রস্তুতি নেই, ভাবখানা এমন, সবাই যেহেতু বলছে মৃত্যুর পরের জগতের কথা, কিছু একটা না থাকলে তো আর বলার কথা না! এভাবে একধরনের জানা আছে, কিন্তু তার জন্য প্রস্তুতি ও তৎপরতা নেই। তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। আয়াতের উপস্থাপনায় যারা পরকালকে বিশ্বাসই করে না এবং যারা মোটামুটি একধরনের বিশ্বাস হয়তো করে, কিন্তু আচরণে তার কোনো প্রকাশ নেই, উভয় শ্রেণির লোকদের কথাই এসে যায়। তারপর বলা হয়েছে– وَرَضُوْا بِالْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ اطْمَاَنُّوْا بِهَا. অর্থাৎ দুনিয়া নিয়েই তারা সন্তুষ্ট এবং মনটাও তার ওপর স্থির ও প্রশান্ত। অর্থাৎ দুনিয়া ঠিক তো সব ঠিক! দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে মত্ত, আখেরাতের কোনো ভাবনা নেই। وَ الَّذِیْنَ هُمْ عَنْ اٰیٰتِنَا غٰفِلُوْنَ. আর তারা আল্লাহর দেওয়া কুরআনের আয়াত সম্পর্কে গাফেল। তাঁর স্থাপনকৃত কুদরত ও হেদায়েতের বিভিন্ন নিদর্শন সম্পর্কে উদাসীন। তাদের ঠিকানা ও পরিণতির কথা আল্লাহ বলছেন– اُولٰٓىِٕكَ مَاْوٰىهُمُ النَّارُ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ. অর্থাৎ তাদের হাতের কামাই অনুযায়ী তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। কারণ আখেরাত বিষয়ে তাদের কোনো গুরুত্বই ছিল না। আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে, হিসাব দিতে হবে, এই ভাবনাই তাদের ছিল না; বরং দুনিয়া নিয়েই ছিল ব্যস্ত। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলছেন– اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَهْدِیْهِمْ رَبُّهُمْ بِاِیْمَانِهِمْ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهِمُ الْاَنْهٰرُ فِیْ جَنّٰتِ النَّعِیْمِ. অর্থাৎ যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তাদের ঈমানের বরকতে আল্লাহ তাআলা তাদের সঠিক পথ দেখাবেন। ফলে দুনিয়ায় থেকে তারা আখেরাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। আর আখেরাতে গেলে জান্নাত পাবে। এখানে আল্লাহ তাআলা ভাগ করে দিয়েছেন। যার ভাবনা কেবল ইহজগৎ তার ঠিকানা ও পরিণতি কী। আর যার ভাবনা দুনিয়া ও আখেরাত উভয়টা এবং সে দুনিয়ার কল্যাণও চায় আখেরাতের লক্ষ্যে, যেখানে দুনিয়া পেতে হলে আখেরাত ছাড়তে হয়– সে সেখানে কখনো দুনিয়ার দিকে ধাবিত হয় না; বরং আখেরাতকে প্রাধান্য দেয়– তার ঠিকানা ও পরিণতি কী– তাও আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন : স্পষ্ট আল্লাহদ্রোহিতা ও শরীয়তদ্রোহিতা কুরআনের এই শিক্ষা এবং ইসলাম ও ইসলামী শরীয়তের এই মৌলিক আকীদা মাথায় রেখে একটু ভাবতে পারি, আমাদের বর্তমান অবস্থা কী? সবাই ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি, আমাদের প্রধান উপদেষ্টার নিকট নারী বিষয়ক সংস্কারের প্রতিবেদন জমা হয়েছে। যারা এই প্রতিবেদন ও প্রস্তাবনা পেশ করেছেন, তারা একদিক থেকে তো ধন্যবাদ পাওয়ার উপযুক্ত যে, তারা স্পষ্টভাষী। কারণ কোনো রাখঢাক করেননি তারা; বরং তাদের ভেতরে যা আছে তা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন। কোনো মুসলিম রাষ্ট্র কি কেবল ইহজাগতিক হতে পারে? একটি দৃষ্টান্ত দেখুন। প্রতিবেদনের ৩৫নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘যেহেতু রাষ্ট্র একটি ইহজাগতিক সত্তা, সেহেতু কোনো ধর্মীয় বিধান অনুসরণ করে সংবিধান শুরু হওয়া উচিত নয়। তা ছাড়া, একটি ধর্মকে প্রাধান্য দেওয়া ধর্মনিরপেক্ষতা নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। তাই অনুচ্ছেদ ২ক বাতিল করা প্রয়োজন।’ তাদেরকে বলা হয়েছে, নারী বিষয়ক সংস্কারের প্রস্তাবনা, মতামত ও পরামর্শ জমা দেওয়ার জন্য, তারা সেখানে দিয়ে বসল রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের মূলনীতি সম্পর্কে প্রস্তাবনা! বলল, আমাদের রাষ্ট্র হল ইহজাগতিক! নাউযুবিল্লাহ! কোনো মুসলিম দেশ কি কেবল ইহজাগতিক হতে পারে? হওয়া সম্ভব? আমাদের দেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং তা যুগ যুগ ধরেই আছে। যাদেরকে এদেশ থেকে সবাই মিলে বের করে দিয়েছে তারাও এটা বাদ দেয়নি বা দিতে পারেনি; কিন্তু এই কমিশন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এটা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করছে! এই রাষ্ট্র নাকি ইহজাগতিক, নাউযুবিল্লাহ! একথা একাধিক জায়গায়ই বলেছে। ২৪০নং পৃষ্ঠায় আছে, ‘রাষ্ট্র হবে ইহজাগতিক এবং মানবিক!’ অর্থাৎ রাষ্ট্র হবে কেবল দুনিয়াকেন্দ্রিক, যেখানে আখেরাত সংক্রান্ত কিছুই থাকবে না। যাদের সবকিছু দুনিয়া কেন্দ্রিক, তাদের ঠিকানা কোথায় হবে– একটু আগেই আমরা কুরআনে দেখলাম। সুতরাং আমরা কি আমাদের দেশ ও সমাজের জন্য এমন কিছু চাই? চাইতে পারি? কখনোই না। আরও বলছে ‘মানবিক’! আরে, যেটা কেবল ইহজাগতিক হয়, সেটা মানবিক হওয়া কখনো সম্ভব নয়। মানবতা কোত্থেকে আসবে? আপনাকে ‘মানবিক’ হতে হলে তো আপনার মধ্যে সর্বপ্রথম আখেরাতমুখিতা ও পরকাল ভাবনা থাকতে হবে। আখেরাতের ফিকির যার নেই, সে কখনো মানবতা বাস্তবায়ন করতে পারে না এবং পারবেও না। এই যে দুই কথাকে একসঙ্গে মিলিয়ে দিল যে ‘রাষ্ট্র হবে ইহজাগতিক এবং মানবিক’ এটা কি পরস্পর সাংঘর্ষিক নয়? ইহজাগতিক হলে সেটি কখনোই মানবিক হতে পারে না; বরং সম্পূর্ণ অমানবিক। মানবিক বানাতে হলে সেটিকে অবশ্যই আখেরাতমুখী ও আল্লাহমুখী বানাতে হবে। বলতে হবে– لَبَّيْكَ اَللّٰهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيكَ لَكَ. اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ. একজন মুমিনের ন্যায় বলতে হবে– سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا. আল্লাহ, আমরা আপনার বিধান শুনেছি, তা গ্রহণ করেছি এবং মেনে নিয়েছি। আবারো বলছি, তারা কিন্তু স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তাদের কাছে রাষ্ট্র হল সম্পূর্ণ ইহজাগতিক ও দুনিয়াকেন্দ্রিক! এর মধ্যে আখেরাত, ঈমান-আমল ও দ্বীন-শরীয়তের কিছু পাওয়া যাবে না। সুতরাং যার কাছে ঈমান-আমল ও আখেরাতের গুরুত্ব নেই, সে এটা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু যার কাছে কুরআন-হাদীস, ঈমান-আমল, ইসলামী শরীয়ত ও আখেরাতের গুরুত্ব আছে, সে এটা কখনো গ্রহণ করতে পারে না। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বার্তা : ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে নবীজীর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ্ই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় আপনাদের জানার কথা, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরীতে জগনণের উদ্দেশে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লামের সীরাত বিষয়ক একটি বাণী ও বার্তা দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তওহিদের মহান বাণী নিয়ে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তি, শান্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, যা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারি হিসেবে পথ দেখাবে। আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে মহানবী (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, তাঁর সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং (আল্লাহর) ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে বলে আমি মনে করি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং এর মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।’ আমি আমাদের সরকারকে অনুরোধ করব, যেহেতু নবীজীর এই সীরাতই হল সবকিছুর সমাধান, তাই নারী উন্নয়ন চান আর নারী অধিকার চান, সবই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত থেকে গ্রহণ করুন! কুরআন ও হাদীস থেকে গ্রহণ করুন। তার জন্য আপনাকে আলাদা কোনো কমিশন বানাতে হবে না। ধর্মমন্ত্রণালয়ের অধীনে আমাদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন আছে, ফাউন্ডেশনকে বলুন। আপনাকে সর্বোচ্চ সুন্দর ও চমৎকার নারী উন্নয়ন নীতিমালা পেশ করে দিতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ; বরং পেশ করা আছেও। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে সীরাত বিষয়ক যেমন বই লেখা আছে, নারী বিষয়েও যাবতীয় বিধিবিধান বই আকারে ছাপা আছে। আর কুরআন-সুন্নাহ ও নবীজীর সীরাত থেকে আপনাদেরকে যে কোনো সময়ই প্রস্তুত করে পেশ করা সম্ভব! সেটাকে বাস্তবায়ন করে দিন! দেখবেন, পুরো বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শান্তিতে ও সম্মানে থাকবে আমাদের দেশের মা-বোনেরা! কিন্তু সরকার যাদেরকে এই কমিশনের দায়িত্ব দিয়েছেন, তারা কি আসলে এসব সূত্র থেকে নারী উন্নয়নের নীতি খোঁজ করেছেন? এদেশের নারীরা আসলে কী চান? তারা কীভাবে থাকতে সম্মানবোধ করেন? তারা তাদের কোন্ অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করতে চান? সর্বপ্রকার জুলুম-নির্যাতন ও বঞ্চনা থেকে তাদেরকে মুক্ত করার জন্য কোন্ পন্থাটি আসলে সঠিকভাবে কার্যকর– এই কমিশনের সদস্যগণ কি সত্যিই সেটি অনুধাবন করার ক্ষমতা বা যোগ্যতা রাখেন? তাদের প্রতিবেদনটি দেখলে তো অন্তত তা বোঝা যায় না। পশ্চিমাদের পার্থিব উন্নতি অশ্লীলতা ও আল্লাহবিমুখতার কারণে নয় পশ্চিমাদের দাপট দেখে অনেকে মনে করে, সেখান থেকে আমাদের সবকিছু নিতে হবে। অথচ বোঝে না যে, পশ্চিমাদের জাগতিক উন্নতি ও অগ্রগতি তাদের অশ্লীলতা ও খোদাবিমুখতার কারণে নয়। যে কারণে তাদের জাগতিক অগ্রগতি, বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সে বিষয়ে তাদের থেকে আমাদের নেওয়ার কিছু নেই; বরং আমাদের কাছেই আছে তাদের চেয়ে অনেক উন্নত পথ ও পন্থা। আসলে আমাদেরগুলোই তারা গ্রহণ করেছে; ফলে তারা জাগতিক উন্নতি করছে। কাজেই নিজের ঘরেরটাই বাস্তবায়ন করে দেখুন, জাগতিক উন্নতি কীভাবে সাধিত হতে থাকে! তাদের জাগতিক উন্নতি দেখে ভাববার কোনো প্রয়োজন নেই যে, বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার কারণে তারা উন্নতি করছে! বা তাদের জাহেলী সভ্যতার কারণে তারা উন্নতি করছে। আচ্ছা, তারা কি সুদের কারণে উন্নতি করছে? সেক্যুলারিজমের কারণে উন্নতি করছে? লিবারেলিজমের কারণে উন্নতি করেছে? সেক্যুলার শিক্ষা ও সেক্যুলার রাষ্ট্রব্যবস্থার কারণে অথবা নারী উন্নয়নের নামে যতসব বেহায়াপনা রয়েছে, সেগুলোর কারণে কিংবা লিবারেলিজমের অবাধ উশৃঙ্খল উন্মত্ত চাল-চলনের কারণে উন্নতি করছে তারা? কখনোই নয়। বরং বেহায়াপনা বিস্তার করে নিজেরা যেমন বরবাদ হয়েছে, অন্যদেরও বরবাদ করতে চাচ্ছে। পশ্চিমাদের পার্থিব উন্নতির মৌলিক দুটি কারণ আবারো বলছি, এগুলো পশ্চিমা বিশ্বের উন্নতির চালিকাশক্তি নয়! তাদের সামরিক শক্তি ও পার্থিব উন্নতির কারণ এসব নয়। বরং তার কারণ অন্য কিছু। মৌলিকভাবে দুটি : প্রথমত, মুসলিম উম্মাহর মাঝে ব্যাপকভাবে তাকওয়ার অভাব এবং শরীয়ত পালনে উদাসীনতা বেড়ে গেছে, যার কারণে আল্লাহ তাআলা এদের শক্তি তাদেরকে দিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, আমাদের নবীজীর সীরাতের মধ্যে যেসব শিক্ষা রয়েছে, যেমন দুর্নীতি না করা, ধোঁকা ও প্রতারণা না করা, সততা ও সত্যবাদিতা গ্রহণ করা ইত্যাদি; তারা তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নিজেদের বিশেষ কিছু গণ্ডিতে এই নীতিগুলোর চর্চা ধরে রেখেছে। এর পাশাপাশি তাদের মধ্যে রয়েছে পরিশ্রম, উদ্যম, পরিকল্পনা মাফিক কাজ, টিমওয়ার্ক, সময়ানুবর্তিতা, নিয়মানুবর্তিতা এবং জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের পারদর্শিতা, যা আমাদের খোলাফায়ে রাশেদীন ও খাইরুল কুরুনের যামানার বৈশিষ্ট্য ছিল। ফলে তারা জাগতিক উন্নতি লাভ করছে। তাদের জাগতিক উন্নতি এজন্য নয় যে, তারা সকল অশ্লীলতা ও বেহায়াপনাকে গ্রহণ করে নিয়েছে। তাদের জাগতিক উন্নতি এজন্যও নয় যে, তারা খোদাবিমুখতা ও আখেরাত বিমুখতা প্রদর্শন করে। সেজন্য আমাদের অনুরোধ, আল্লাহর ওয়াস্তে সেখান থেকে কোনো কিছু ধার নিতে না যাই! বরং আমাদের নবীজীর সীরাত ও শরীয়তের মধ্যেই সব আছে। সেখান থেকেই আমাদের গ্রহণ করতে হবে। এই প্রতিবেদন জুলাই-আগস্টের শহীদদের সঙ্গে স্পষ্ট গাদ্দারি মনে রাখবেন, যদি এক্ষেত্রে আমরা ভুল করি এবং এই ধরনের অহেতুক ও পঁচা-গান্দা জিনিস এদেশে বাস্তবায়নের চিন্তা করা হয়, এটা হবে সবচেয়ে বড় জুলুম! এটা হবে সবচেয়ে বড় বেঈমানী! সবচেয়ে বড় খেয়ানত! জুলাই-আগস্টের শহীদদের সঙ্গে সবচেয়ে বড় গাদ্দারি! জুলাই-আগস্টের শহীদদের কথা বিশেষভাবে এজন্য বললাম, এই প্রতিবেদন পেশ করার সময় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেছেন, “জুলাইতে যারা প্রাণ দিয়েছে তাদের স্মরণার্থে এমন কিছু করতে চেয়েছি, যা মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে, সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে”। নাউযুবিল্লাহ! আরে, যে জিনিসের মধ্যে জুলাই-আগস্টের শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা হয়েছে, সেখানে বলছে, এটা নাকি তাদের স্মরণার্থে করা হয়েছে! এটা মুনাফেকী নয় কি? খবরদার, যে জিনিস শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি, সেটি তাদের স্মরণে করতে যাবেন না! বলেছেন ‘মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে, সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।’ অথচ এই প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে, সেটা মানুষের জন্যও অকল্যাণকর, সমাজের জন্যও অকল্যাণকর। দেশের জন্যও অকল্যাণকর, সর্বোপরি এটি নারীদের জন্যও অকল্যাণকর। এর মধ্যে কল্যাণের কিছু নেই। সমতা নয়, চাই নারীর ন্যায্য অধিকার আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি ঈমান আছে এমন কোনো নারী এ প্রতিবেদন মেনে নিবে না; মেনে নিতে পারে না। যদিও প্রতিবেদনে বারবার সমতা ও সমান অধিকারের জিগির তোলা হয়েছে। কিন্তু সুস্থ বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন পুরুষ-মহিলা সকলেই বোঝেন, যেখানে ভিন্নতা প্রযোজ্য ও ন্যায়সংগত সেখানে সমতার দাবি অন্যায়। বরং যে বিষয়টি সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং ন্যায়সংগত তা হল ন্যায্য অধিকার। সেটা ক্ষেত্র বিশেষে দুই শ্রেণির জন্য সমানও হতে পারে, কম বেশিও হতে পারে। সব জায়গায় সমান করার দাবি যেমন অবাস্তব তেমনি অন্যায়। নারীর প্রতিও অন্যায়। যারই আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান আছে, সেই বুঝতে সক্ষম– অধিকার তো যিনি খালেক, মালেক, রাব্বুল আলামীন, তিনিই নির্ধারণ করতে পারেন। কাজেই অধিকারের নাম ব্যবহার করে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করার অধিকার কারও নেই। অথচ এ প্রতিবেদনে এ কাজটিই হয়েছে। এই প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু যেমন কুরআন-সুন্নাহ ও শরীয়ত বিরোধী, তেমনি এটি বাস্তবতা বিরোধীও। এটি সাধারণ বিবেক-বুদ্ধি ও সুস্থ রুচি বিরোধী। সর্বোপরি এটি হায়া-লজ্জা বিরোধী! মানুষের মধ্যে তো ন্যূনতম লজ্জাবোধ বলতে কিছু থাকে– সেই বিবেচনায়ও এই প্রতিবেদন প্রত্যাহারযোগ্য। এই প্রতিবেদনের দাবি হল, হায়া-শরম, লজ্জা জাতীয় শব্দগুলোই সমাজ থেকে বের করে দাও! নাউযুবিল্লাহ! এরা ‘শালীনতা’ ও ‘নৈতিকতা’ শব্দগুলোকেই বাদ দিতে চাচ্ছে আমাদের সংবিধানের ৩৯।(২) অনুচ্ছেদে শালীনতা ও নৈতিকতার কথা আছে। তারা বলে কী– এই অনুচ্ছেদ থেকে শালীনতা ও নৈতিকতার বিষয়টি বাদ দিয়ে দিতে হবে। অথচ আমাদের সংবিধান সংস্কার করা প্রয়োজন এজন্য যে, যদিও সেখানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, একথা লেখা আছে, কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনুচ্ছেদে ইসলামবিরোধী বিভিন্ন কথাও আছে; সেজন্য এর সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু এরা এসে সংবিধান থেকে ইসলামই বাদ দিয়ে দিতে চাচ্ছে! শালীনতা আর নৈতিকতার যা কিছু অবশিষ্ট আছে, সেটাও বাদ দিতে চাচ্ছে! শালীনতা ও নৈতিকতা যারা বাদ দিতে চায়, তারা কি আসলে নারীর উন্নয়ন চায়? প্রতিবেদনের ৩৫নং পৃষ্ঠায় প্রস্তাব করেছে– ‘(সংবিধানে) শব্দ প্রয়োগে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা। ... ‘গণিকাবৃত্তি’, ... শালীনতা, নৈতিকতা–’ শব্দসমূহের ব্যবহার পরিহার করা।’ তারা আরও বলেছে, অস্পষ্ট কোনো শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। ১৬২নং পৃষ্ঠায় তারা অস্পষ্ট পরিভাষা পরিহার করতে বলেছে এবং টীকায় অস্পষ্ট পরিভাষার উদাহরণ দিয়ে বলেছে, ‘অস্পষ্ট পরিভাষা যেমন, ‘নৈতিক অবক্ষয়’, ‘সুস্থ বিনোদন’, ‘জনস্বার্থ বিরোধী’, ‘অশ্লীল’, ‘ধর্মীয় অনুভূতি’। ‘রাজনৈতিক অনুভূতি’। ‘শালীনতাপূর্ণ পোশাক’।’ তারা বলছে, এসব পরিভাষা বিলুপ্ত করে দিতে! এতদিন আমাদের অভিযোগ ছিল, আপনারা ইসলামী শরীয়ত ও নবীজীর শিক্ষা পরিপূর্ণ গ্রহণ করুন। এই ধরনের অস্পষ্ট ভাষা ব্যবহার করে কিছু মানবেন আর কিছু মানবেন না– এমনটা হয় না। কিন্তু এরা এসে প্রস্তাব করছে যে, এই শব্দগুলোই সংবিধান থেকে মুছে দাও! এই যে ‘নৈতিক অবক্ষয়’– এটা কত বড় আফসোসের বিষয়! এখন তারা শব্দটাই বাদ দিয়ে দিতে বলছে! ‘সুস্থ বিনোদন’ বলার দরকার কী? বরং যে কোনো বিনোদনের জন্য রাস্তা খুলে দাও! ‘জনস্বার্থ বিরোধী’ আবার কী জিনিস? মানুষের ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ ‘রাজনৈতিক অনুভূতিতে আঘাত’ শব্দগুলো আমাদের দেশে খুব প্রচলিত। এই ভাষাগুলোর মাধ্যমে কিছুটা হলেও আমরা নৈতিকতা ও শালীনতার বার্তা পেতাম এবং বিভিন্ন অপরাধকে এসব শব্দের আওতায় এনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাকড়াও বা প্রতিবাদ করার একটা সুযোগ থাকত। কিন্তু এখন এরা এসে বলে, এগুলোই বাদ দিয়ে দাও! দেখুন, কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে এরা! এরা শালীনতা ও নৈতিকতার শেষ চিহ্নটুকুও মুছে দিতে চায়! এরা ‘শালীনতা’ আর ‘নৈতিকতা’কে বাদ দিতে বলে। অথচ এই হালকা হালকা শব্দগুলো দিয়ে কোনোরকমে একটু হলেও আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল, সেই কথাগুলোকেই তারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করছে! এর মানে এরা শালীনতা ও নৈতিকতার শেষ চিহ্নটুকুও মুছে দিতে চায়! কতটা জঘন্য দেখুন! কতটা কঠিন দুর্গন্ধযুক্ত এই প্রতিবেদন! এসবের পরেও পৃথকভাবে বলার প্রয়োজন আছে কি যে, এই প্রতিবেদনের কোন্ কোন্ অনুচ্ছেদ কুরআনবিরোধী, হাদীসবিরোধী? ইসলামী শরীয়তে চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা, দৃষ্টির হেফাজত, সব ধরনের অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকার যত নির্দেশনা এবং বিবাহ ও তালাক বিষয়ক, মিরাস, নসব তথা বংশ বিষয়ক, হিযানাহ তথা সন্তান লালন-পালন বিষয়ক যত বিধান ইসলামী শরীয়তে রয়েছে, তাদের প্রস্তাব হল এ সবকিছু বাদ দিয়ে দাও! এর মানে, তারা মুসলিম উম্মতকে দ্বীন-শরীয়ত, ঈমান-আখলাক এবং তাকওয়া-তাহারাত সবকিছু থেকে হাত ধুয়ে ফেলতে বলছে। আল্লাহর শরীয়তের পরিবর্তে আল্লাহদ্রোহী ও আখেরাত বিমুখ সমাজের কৃষ্টি-কালচার গ্রহণ করতে বলছে। ঈমানের পরিবর্তে কুফুর, পবিত্রতার পরিবর্তে কলুষতা, পারিবারিক বন্ধনের পরিবর্তে লাগামহীনতা, হায়া-লজ্জার পরিবর্তে নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা এবং জান্নাতের পরিবর্তে জাহান্নাম খরিদ করতে বলছে। কাজেই যারা এই প্রতিবেদন সমর্থন করতে চায়, তাদের এর পরিণতি বুঝে-শুনে সমর্থন করা উচিত। মনে রাখতে হবে, তাওহীদের এই যমীনে ঈমান-আখলাক বরবাদকারী এমন প্রস্তাবনা কখনো বাস্তবায়ন হবে না ইনশাআল্লাহ! বরং যারা বাস্তবায়ন করতে যাবে, তারাই বরবাদ হয়ে যাবে! তাদের দাবি হল, কেবল ইসলাম ধর্মই নয়, অন্য যতসব ধর্ম রয়েছে, সকল ধর্মের সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন করে সবার জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন বানাও! নাউযুবিল্লাহ! এদেরকে শরীয়ত পরিবর্তনের অধিকার কে দিল? প্রশ্ন হল, আপনাদেরকে শরীয়ত পরিবর্তন করে বিভিন্ন নিয়ম-নীতি বানাবার দায়িত্ব কে দিয়েছে? ইসলামী শরীয়তে অন্য সকল বিষয়ের মতো এই বিষয়েও প্রয়োজনীয় হেদায়েত ও নির্দেশনা তো দেওয়াই আছে। শরীয়ত দেওয়ার মালিক তো একমাত্র আল্লাহ তাআলা। কোনো মাখলুক অপর মাখলুকের জন্য শরীয়ত দিতে পারে না। আপনাকে শরীয়ত বানানোর দায়িত্ব তো দেওয়া হয়নি! আপনাকে একথা বলার জন্য তো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি যে, মুসলিমরা তাদের পারিবারিক আইন বাদ দেবে। হিন্দুরা তাদের পারিবারিক আইন বাদ দেবে, খ্রিস্টানরা নিজেদের পারিবারিক আইন বাদ দেবে! ব্যভিচার ও পতিতাবৃত্তিকে আইনি বৈধতা দেওয়ার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা যেটা করার কাজ সেটার খবর নেই, উল্টো পতিতাবৃত্তি, বিবাহ বহির্ভূত অবাধ যৌনতা, এলজিবিটির কর্মকাণ্ড কীভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা যায়– সেই ধান্দায় আছে তারা। যৌনকর্মীদের কি ওভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন, না তাদেরকে পাপাচারের ঘৃণ্য পথ থেকে সরিয়ে সঠিক পথে এনে সম্মানজনক স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনবেন? তাদের জন্য যেটা করণীয়, সেটা না বলে তারা বলছে, ওরা পতিতালয়ে আছে, সেখানেই তাদের রাখা হোক এবং সেভাবেই তাদেরকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে দেওয়া হোক! বিষয়টা কি তাদের প্রতি ইনসাফ হল? বরং এটি তাদের প্রতিও না-ইনসাফী নয় কি? আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অধ্যায়ে অনুচ্ছেদ ১৮।(২) -এ বলা আছে, ‘গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ এই কমিশন দাবি করেছে, এই অনুচ্ছেদের ‘গণিকাবৃত্তির বিষয়টি বাদ দিতে হবে। কারণ জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার নামে যৌনকর্মীদের পেশাকে নিরোধ করা মানবাধিকার লঙ্ঘন।’ আপনারা কী বলেন, যারা পতিতাবৃত্তির মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িয়ে গেছে, তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসাটা মানবাধিকার, নাকি তাদেরকে সেই ঘৃণ্য কাজে রেখে দেওয়াটা মানবাধিকার? তাদেরকে সেই পথ থেকে ফিরিয়ে এনে সুস্থ ধারায় পুনর্বাসন করা সরকারের দায়িত্ব, সমাজের দায়িত্ব। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন উল্টো পতিতাবৃত্তিকেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে। কোনো শব্দও যদি এর পথে অন্তরায় হয় সেই ‘শব্দ’কেও দেশছাড়া করতে চাচ্ছে। ‘শালীনতা’ ‘নৈতিকতা’র মতো শব্দকেও সংবিধান থেকে বাদ দিতে বলছে। আর এটাও লক্ষণীয় বিষয় যে, ‘যিনা-ব্যভিচার’, ‘গণিকাবৃত্তি’, ‘ব্যভিচারিণী’ শব্দ বাদ দিয়ে ‘যৌনকর্ম’ ‘যৌনকর্মী’ শব্দ আমদানি করা হচ্ছে। যেন শব্দ থেকে এসমস্ত ঘৃণ্য কাজের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি না হয়। এটাও এই ধরনের লোকদের একটি প্রতারণা। একদিকে এই নোংরা কাজকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করছে, সেইসাথে শালীনতা, নৈতিকতা, হায়া-লজ্জাকে বাদ দিতে বলছে– এভাবে তারা এই সমাজকে কী পরিমাণ বরবাদ করতে চাচ্ছে– তা কি আর বোঝার বাকি থাকে? আরেকটি বিষয় দেখুন, প্রতিবেদনের দশম অধ্যায়ের শিরোনামটি লক্ষ করুন– ‘শরীর আমার, সিদ্ধান্ত আমার’ একথা কারা বলে, কী মতলবে বলে, সেটা যারা বোঝেন, তাদেরকে তো কিছু বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। এরা শিক্ষা-পাঠ্যক্রমেও অশ্লীলতা ঢোকাতে চায় প্রতিবেদনের পৃষ্ঠা ৭৪-এ বলা হয়েছে, ‘শিক্ষা-পাঠ্যক্রম সংস্কারের মাধ্যমে সম্মতি বিষয়ে ধারণা, যৌন নির্যাতন ও হয়রানি কী... সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।’ হুবহু একই কথা পৃষ্ঠা ২০৬-এও বলা হয়েছে। বুঝতেই পারছেন ইসলামের বিয়ের বিধান এবং যিনা-ব্যভিচার হারাম হওয়ার বিধানের জায়গায় তারা পশ্চিমা কুফরী কালচার ঢুকাচ্ছে। শব্দের মারপ্যাঁচে ট্রান্সজেন্ডারের বৈধতার অপচেষ্টা আরও শুনুন, এর মধ্যে ট্রান্সজেন্ডারের সবকিছু আছে; শব্দের মারপ্যাঁচে। আজকাল ট্রান্সজেন্ডারের যে ফেতনা চলছে, তার পুরোটাই এখানে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে; কেবল শব্দটা ব্যবহার করেনি। তদ্রূপ শব্দের মারপ্যাঁচে এলজিবিটি, সমকামিতা বলতে যা আছে এবং যত প্রকারের আছে, সবকিছুকে আইনি কাঠামোর মধ্যে এনে বৈধতা দেওয়া, বরং প্রতিষ্ঠিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মোটকথা, অশ্লীলতার কোনো কিছুই বাদ রাখেনি। এজন্যই তারা চাচ্ছে যে ‘অশ্লীলতা’ শব্দই বিলুপ্ত করে দেওয়া হোক! যেন আপনি অভিযোগ করতে না পারেন যে, ছি ছি, এমন অশ্লীল প্রস্তাব তারা কীভাবে দিল? যেন আমাদের অভিধান থেকেই শব্দগুলোকে বিদায় করে দিতে চাচ্ছে! অর্থাৎ পুরো ইসলামী শরীয়তের বিপরীতে একটা জিনিস দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং এটা মুসলিম উম্মতের ফয়সালা করার বিষয়। তারা কি ইসলামের শরীয়ত চায়? জান্নাত চায়? যদি চায়, তাহলে প্রস্তাবিত এই নীতিমালাকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। এটি বাস্তবায়নের চিন্তা হবে আত্মঘাতী! আর এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, একটি মুসলিম দেশে তাওহীদের যমীনে আমাদেরকে দেখতে হল সংস্কারের নামে আল্লাহর নাযিলকৃত কুরআন-সুন্নাহ ও আল্লাহর দেওয়া শরীয়তের সম্পূর্ণ বিপরীত একটি প্রতিবেদন এবং তা জাতির সামনে পেশও করা হল। আমাদের কাছে আফসোস প্রকাশেরও ভাষা নেই, নিন্দা জানানোরও ভাষা নেই। অন্য ধর্মের লোকদেরও চিন্তা করা উচিত। যদিও আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য ধর্ম কেবল ইসলাম, কিন্তু অন্য ধর্মের লোকেরাও তো তাদের ধর্ম পালন করে থাকে। তাদেরকেও বলা হচ্ছে, তোমাদের ধর্ম নয়, বরং এখানে যে নীতিমালা প্রদান করা হবে, সেটাই মানবে! সুতরাং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা কী করবে, না করবে– সেটা তাদের বিষয়। যেসব ধর্মের কোনো গোড়া নেই এবং বাতিল ধর্ম, তারা তাদের ধর্মের বিষয়ে বিভিন্ন কম্প্রোমাইজ ও সমঝোতা করলে তা তাদের বিষয়; কিন্তু মুসলিম উম্মতের জন্য কম্প্রোমাইজ বা সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। আমরা কি একথা বলতে পারি যে, কুরআনের এই বিধানগুলো আমরা পশ্চিমাদের খাতিরে বাদ দিয়ে দিব? এটা কি সম্ভব? কখনো নয়। কাজেই ঠান্ডা মাথায় আমাদেরকে ভাবতে হবে, তাওহীদের এই যমীনে ইসলামী শরীয়ত বিরোধী এই ধরনের কোনো নীতিমালা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়! এটা দেশের জন্য হুমকি। আমরা দুআ করি, আল্লাহ তাআলা আমাদের রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলদের হাতকে শক্তিশালী করুন দেশ ও জাতির কল্যাণে! সমস্ত অকল্যাণ থেকে তাদেরকে হেফাজত করুন! এই ধরনের বিষয়গুলো উপস্থাপন করা এবং সেগুলো বাস্তবায়নের চিন্তা থেকে আল্লাহ তাআলা তাদের সবাইকে দূরে রাখুন! আর এটা অনুভব করার তাওফীক দান করুন যে, এটা বাস্তবায়ন করার চিন্তা করতে গেলেই আত্মঘাতী হবে! এই কমিশনের আসল কাজ কিন্তু বাকিই রয়ে গেল আরেকটি কথা, এই কমিশনের আসল যে কাজ ছিল, তা কিন্তু বাকিই রয়ে গেল। তারা যা করেছেন তা হল, আগাগোড়া অনধিকার চর্চা, আল্লাহদ্রোহিতা এবং আল্লাহর দেওয়া কুরআন-সুন্নাহ ও শরীয়তদ্রোহিতা। যেটা দরকার ছিল তা হল, নারী বিষয়ে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নের অভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা যে অধিকার বঞ্চিত হয়, সেটার জন্য বাস্তবমুখী একটি প্রস্তাবনা পেশ করা, যাতে নারীরা আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধান মেনে আল্লাহর নেক বান্দি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধান অনুযায়ী নিজেদের সমস্ত অধিকার লাভ করতে পারে। এ কমিশনের সংস্কার করার মতো আরেকটি কাজ ছিল– ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে শরীয়তের স্পষ্ট বিরোধী অনেকগুলো ধারা রয়েছে। উলামায়ে কেরামের সহায়তা নিয়ে এই ধারাগুলোকে শরীয়তসম্মত করে দেওয়া। তা তো করেইনি, উল্টো আরও কুফরী মতবাদ এবং জাহেলী রীতি-নীতি অবলম্বনের প্রস্তাব করেছে। সরকার যদি আসলেই দেশ ও জনগণের কল্যাণ চায়, তাহলে এই প্রতিবেদনকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে ইসলামী শরীয়ত ও নবীজীর সীরাত থেকে নারী বিষয়ে নীতিমালা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা কর্তব্য। ব্যস, ভাই! বলার আরও অনেক কিছুই আছে। এতটুকুতে আমি শেষ করলাম। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাজত করুন।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: اِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ اِذَا عَمِلَ اَحَدُكُمْ عَمَلاً اَن يُّتْقِنَهٗ "নিশ্চয়ই, আল্লাহ পছন্দ করেন যে আপনি যা করছেন তা দক্ষতার সাথে সম্পাদন করুন।"[1] আল্লাহর সমর্থন ব্যক্তির সাথে তার কর্মের সাথে সাথে থাকে। যে ব্যক্তি দক্ষতা ও মার্জিততার সাথে এটি সম্পন্ন করে তার জন্য কর্মের পুরষ্কার দ্বিগুণ হয়। যখন কোন ব্যক্তি এ ব্যাপারে উন্নতি করে, তখন সে আল্লাহর কাছে প্রিয় হয়ে যায়। আল্লাহ যাকে দক্ষতা ও প্রতিভা দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন তাকে অর্থ লাভের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। বরং আল্লাহর সৃষ্টিকে উপকৃত করার জন্য তাদের দক্ষতা ব্যবহার করা উচিত, যা আল্লাহর নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি রূপ। আমাদের বিশ্বাস আমাদেরকে সমাজের দায়িত্বশীল সদস্য হতে উৎসাহিত করে যারা অনিচ্ছা ছাড়াই তাদের কাজ করে। এটি আমাদেরকে আমাদের লেনদেন, কর্ম এবং ধর্মীয় ও নাগরিক কর্তব্যগুলিকে নিখুঁত করার আহ্বান জানায়। এই দায়িত্ববোধ একটি কারণ যে ইসলামিক ইতিহাসকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়। দায়িত্ববোধের জন্য প্রয়োজন যে কাজটি একজনের সর্বোত্তম ক্ষমতা এবং দক্ষতা অনুযায়ী সময়মতো সম্পন্ন করা হয়। যদি এটি না হয়, তাহলে ফলাফল অপর্যাপ্ত হবে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষকরা, যাদের কার্যকরভাবে শেখানোর যোগ্যতা এবং দক্ষতার অভাব রয়েছে তাদের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নষ্ট করার ঝুঁকি রয়েছে। অযোগ্য স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের জন্য মারাত্মক পরিণতি ঘটাতে পারে। এবং সর্বোপরি, ইসলামী প্রকল্পগুলিতে একজন অদক্ষ এবং অদক্ষ অবদানকারী মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে এবং তাদের বিশ্বাসকে বিপন্ন করতে পারে। জীবনে আপনার দক্ষতার প্রয়োগ এবং নেতিবাচক ফলাফল প্রতিরোধ করার গুরুত্ব নবী صَلَّى الـلّٰـهُ عَلَيْهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم দ্বারা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। যে ব্যক্তি এই দক্ষতাগুলি প্রয়োগ করেছিল তাকে আল্লাহর প্রিয় বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। দক্ষতার সাথে কাজ সম্পাদন করার জন্য, কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। 1. ক্রমাগত পেশাদার উন্নয়ন (CPD) আজকের বিশ্বে, প্রতিটি ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং প্রতিটি সেক্টরকে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মানিয়ে নিতে হবে। নিজেকে ক্রমাগত উন্নত না করে, আপনি পিছিয়ে পড়বেন এবং বেকার হয়ে যাবেন। অতএব, আপনি যদি সফল হতে চান তবে নিয়মিত পেশাদার বিকাশ করুন। 2. স্ব-মূল্যায়ন একজন ব্যক্তি পরিশ্রম করে আঙ্গুরের একটি ছবি তৈরি করেছেন। ছবিটি এতটাই বাস্তবসম্মত ছিল যে পাখিরা সেগুলিকে বাস্তব বলে মনে করেছিল এবং সেগুলি খাওয়ার চেষ্টা করেছিল। এ কারণে ছবিটি মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। লোকে শিল্পীর প্রশংসা করলেও তাকে সন্তুষ্ট দেখাচ্ছিল না। কেউ একজন শিল্পীকে জিজ্ঞাসা করেছিল কেন এবং তিনি উত্তর দিলেন: আঙ্গুরের প্রতিচ্ছবিটি বাস্তব মনে হচ্ছে এবং সেই কারণেই পাখিরা এর দিকে যাচ্ছে। কিন্তু আঙ্গুরের কাছাকাছি স্ক্যারেক্রোর ছবিটি বাস্তব দেখায় না। তা হলে পাখিরা ভয়ে উড়ে যেত। আমি স্বীকার করি এটি একটি ত্রুটি, এবং আমি এই ছবিতে আরও কঠোর পরিশ্রম করব। শিল্পী এই অভাব পূরণ করে পরের দিন তার লক্ষ্য পূরণ করেন। বিভ্রম এবং অসারতা দক্ষতার পথে প্রধান বাধা, কারণ তারা আমাদের ত্রুটি এবং ত্রুটিগুলির প্রতি আমাদের অন্ধ করে দেয়। আমরা কথায় মহান প্রমাণিত হই কিন্তু যখন কর্মের সময় আসে তখন ব্যর্থ হই। আপনার অর্জনগুলিকে সমালোচনামূলকভাবে মূল্যায়ন করা এবং আরও উন্নতি করার উপায় খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এই সম্ভাবনাগুলি আপনার ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের আপনার যাত্রায় সহায়ক হবে। 3. একটি দৈনিক পরিকল্পনাকারী ডিজাইন করুন পরিকল্পনা আপনার লক্ষ্য অর্জনের মূল চাবিকাঠি। একটি দৈনিক পরিকল্পনাকারীর সাথে, আপনি কার্যকরভাবে আপনার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যগুলিকে সংগঠিত করতে পারেন। একটি ভালো নিয়তের আশীর্বাদের কারণে, আপনার লক্ষ্যগুলি স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং আল্লাহর রহমত নিশ্চিত করে যে আপনার কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দৈনিক পরিকল্পনাকারী ব্যবহার করা সহজ হবে যদি এটি সহজ হয় এবং আপনার সমস্ত কাজ একসাথে সংযুক্ত করে। এটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ফোকাস বজায় রাখতেও সহায়তা করে। 4. স্ক্রীন টাইম কমিয়ে দিন ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলি অনুৎপাদনশীলতা, অদক্ষতা এবং অসাবধানতার একটি প্রধান কারণ। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট, স্ট্যাটাস, টুইট এবং মেসেজ চেক করা আপনার কাজের জন্য বিষাক্ত। এমনকি লোকেরা অপারেশন থিয়েটারে, গাড়ি চালানোর সময়, রান্নাঘরে কাজ করার সময় এবং অফিসে মিটিং করার সময় তাদের ফোন চেক করার জন্য পরিচিত। এতে জীবন বা জীবিকা নষ্ট হতে পারে। আপনার ফোনে অত্যধিক সময় ব্যয় করা আপনাকে আপনার দক্ষতার সর্বোচ্চ ব্যবহার থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধা দেয়। আপনি যদি দক্ষতার সাথে আপনার কাজ সম্পূর্ণ করতে চান তাহলে স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দিন। আপনি যদি এই বাধা অতিক্রম করেন তবে আপনার স্বপ্নগুলি বাস্তবে পরিণত হবে এবং আপনি সাফল্য অর্জন করতে থাকবেন। 5. সময় বরাদ্দের ক্ষেত্রে বিচক্ষণ হোন দৈনিক পরিকল্পনাকারীর মাধ্যমে, আমরা সিদ্ধান্ত নিই কোন কাজটি করতে হবে এবং একটি সময়সূচীর মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নিই কখন এটি করতে হবে এবং কতটা সময় দিতে হবে। অতএব, আমাদের অবশ্যই সৎ এবং নির্ভুল হতে হবে। প্রতিটি কার্যকলাপের জন্য একটি উপযুক্ত সময় বরাদ্দ করা আবশ্যক। এটি আমাদের দক্ষতা প্রকাশ করতে এবং সাফল্য অর্জন করতে সহায়তা করবে। আল্লাহ আমাদেরকে দক্ষতা ও দক্ষতার বরকত দান করুন এবং সেগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার তাওফিক দান করুন। اٰمِیْن بِجَاہِ النَّبِیِّ الْاَمِیْن صَلَّی اللہ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلہٖ وَسَلَّم
বাংলাদেশে চলতি বছরের (১৪৪৬ হিজরি/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ) ফিতরার হার নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সভায় এ হার নির্ধারণ করা হয়। নতুন ফিতরার হার ঘোষণা সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরার হার ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর (২০২৪) সর্বনিম্ন ফিতরা ছিল ১১৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ২৯৭০ টাকা। জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের নতুন ফিতরার হার ঘোষণা করেন। ফিতরার হার নির্ধারণের ভিত্তি ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী, ফিতরা নির্ধারণ করা হয় গম, আটা, যব, খেজুর, কিশমিশ ও পনিরের নির্দিষ্ট পরিমাণের বাজারমূল্যের ভিত্তিতে। একজন মুসলমান সামর্থ্য অনুযায়ী এসব পণ্যের যে কোনো একটি বা তার সমপরিমাণ বাজারমূল্য ফিতরা হিসেবে প্রদান করতে পারবেন। এই বছর ফিতরার হার নির্ধারণে যে পরিমাণ খাদ্যশস্যের মূল্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে তা হলো: গম বা আটা: ১.৬৩ কেজি যব: ৩.২৫ কেজি খেজুর: ৩.২৫ কেজি কিশমিশ: ৩.২৫ কেজি পনির: ৩.২৫ কেজি ফিতরা আদায়ের গুরুত্ব সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। এটি ঈদের দিন গরিব ও দুস্থদের জন্য সাহায্য হিসেবে দেওয়া হয়, যাতে তারা ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। ইসলামি পণ্ডিতরা পরামর্শ দেন, ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করা উত্তম। যাদের ওপর ফিতরা ওয়াজিব, তারা যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি বিতরণ করেন এবং গরিবদের সহযোগিতা করেন। প্রতিবছরের মতো এবারও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত ফিতরার হার মুসলিম উম্মাহকে শরিয়াহ নির্দেশিত পন্থায় এই ইবাদত সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে। সামর্থ্য অনুযায়ী ফিতরা প্রদান করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ইসলামের শিক্ষা।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নতুন ইসলামপন্থী জোট গঠনের পথে কওমি ঘরানার অন্তত পাঁচটি দল। জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে তফসিল ঘোষণার পরপরই। ইতিমধ্যে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা। সূত্র জানায়, শরিকদের কাছে শতাধিক আসন ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি জানিয়েছে, আকিদাগত দ্বন্দ্ব ভুলে ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের অভিপ্রায় থেকেই তারা আসন সমঝোতার পথে এগোচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রায় ১০০ আসন, মামুনুল হক নেতৃত্বাধীন দল ৫০ আসন এবং বাকি তিনটি ইসলামপন্থী দল ৭০ থেকে ৮০ আসনের দাবি জানিয়েছে বলে জানা গেছে। একাধিক সূত্র বলছে, যেখানে ইসলামপন্থী প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি, সেখানে একক প্রার্থী দেয়া হবে। এদিকে, বিএনপি এই জোট নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন নয়। দলটির নেতা হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “অনেক জিরো প্লাস জিরো প্লাস জিরো ইজ জিরো। ইসলামের জিকির তুলে নির্বাচনের আগে রাজনীতি করা দেশের জন্য সঠিক আচরণ নয়।” অন্যদিকে, বিএনপিও ইসলামপন্থী কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। জানা গেছে, কওমি ঘটনার পুরনো দল জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামীর চার নেতাকে নির্বাচনী কাজে যুক্ত হওয়ার অনুমতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসলামপন্থী দলগুলোর এই নতুন সমঝোতা নির্বাচনে ভোটের মাঠে একটি আলাদা মাত্রা যোগ করবে। তবে এখনো স্পষ্ট নয়, জোট ক্ষমতায় গেলে কে নেতৃত্ব দেবেন বা কে হবেন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা।
বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)এর সাবেক মহাপরিচালক, খেলাফত মজলিসের আমির শাইখুল হাদিস মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী ইন্তিকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিয়ুন) আজ ১৫ রমজান (৭ এপ্রিল) শুক্রবার ইফতারের আগ মুহূর্তে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
ঝাওয়াইল প্রতিনিধি: ফিলিস্তিনে অবৈধ ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঝাওয়াইল ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামী ২৮ মার্চ, শুক্রবার, জুমার নামাজের পর নিজ নিজ মসজিদ থেকে মিছিল বের করে ভেংগুলা বাজারে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছে কওমি ওলামা পরিষদ ও ইমাম মোয়াজ্জিন পরিষদ, ঝাওয়াইল ইউনিয়ন শাখা। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিনে সাধারণ মুসলমানদের ওপর চলমান নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তারা সকল ইমাম, মোয়াজ্জিন ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের শান্তিপূর্ণভাবে এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
সাজিদ পিয়াল: টাঙ্গাইলের বাসাইলে পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই দোকান মালিককে জরিমানা করেছেন। গত ১০ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে এই অভিযান চালানো হয় এবং দুই দোকান মালিককে মোট ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাসাইল পৌর শহরে পরিচালিত এই অভিযানে অবৈধভাবে জ্বালানি তেল বিক্রির সত্যতা পাওয়ায় এই জরিমানা আদায় করা হয়। এই ধরনের দাহ্য পদার্থ যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা অনুমোদন ছাড়া বিক্রি করা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিয়েছে। উল্লেখ্য, সরকার সম্প্রতি রাস্তার পাশে অবৈধভাবে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, কারণ এই তেল দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ বা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে পারে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে।টাঙ্গাইলের বাসাইলে পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ সঠিকভাবে অনুমোদন না থাকার অপরাধে দুই দোকান মালিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে বাসাইল বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নেয়ামত উল্ল্যা। জানা গেছে, দুপুুরে বাসাইল বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নেয়ামত উল্ল্যা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় দাহ্য পদার্থ অনুমতি ব্যতীত খোলা বাজারে বিক্রি করার অপরাধে দোকান মালিক এমদাদুল হক ও আফাজ মিয়াকে ৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত খোলা বাজারে বিক্রি করায় দুজন দোকান মালিককে পেট্রোলিয়াম আইন ২০১৬ এর ৪ (ক) (খ) ধারা লঙ্ঘনে ২০ ধারায় ৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মকর্তা হত্যার পর বাড়ির পাশে জঙ্গলে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। ৫ নভেম্বর সকালে উপজেলার চারান উত্তরপাড়া গ্রামে মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। নিহত ব্যক্তি একই এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলী খানের ছেলে কামাল খান (৬৫)। স্থানীয়রা জানান, কামাল খান সরকারি একটি জাদুঘরে চাকরি করতেন। অবসরের পর পরিবারসহ ঢাকায় বসবাস করতেন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে তিনি গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে যান জমি-জমা দেখাশোনার জন্য। মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। বুধবার সকালে বাড়ির পাশের জঙ্গলে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।নিহত ব্যক্তি একই এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলী খানের ছেলে কামাল খান (৬৫)। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, মরদেহের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করে জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঘুমের মধ্যে এক মাদরাসা ছাত্রকে বিভৎসভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। এর আগে, রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের বাটরা আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখফুনুল উলুম মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো.নাজিম উদ্দিন (১৩) উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের ওবায়েদ উল্ল্যার ছেলে। অপরদিকে, আটক আবু ছায়েদ (১৬) ময়মনসিংহ জেলার টেঙ্গাপাড়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাটরা আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখফুনুল উলুম মাদরাসার আবাসিক বিভাগে থেকে নাজিম ২২ পারা ও ছায়েদ ২৩ পারা পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করে। গত ১০-১৫ দিন আগে টুপি পরা নিয়ে নাজিম ও আবু ছায়েদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে মাদরাসার এক শিক্ষক বিষয়টি জানতে পেরে তাদের মধ্যে মিটমাট করে দেয়। কিন্ত এ ঘটনার জের ধরে নাজিমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সোনাইমুড়ী বাজার থেকে ৩শত টাকা দিয়ে একটি ধারালো ছুরি কিনে নিয়ে আসে ছায়েদ। প্রতিদিনের ন্যায় রোববার রাতে মাদরাসার আবাসিক কক্ষে ঘুমিয়ে যায় ১৪জন ছাত্র ও একজন শিক্ষক। রাত আড়াইটার দিকে অন্য ছাত্রদের অগোচরে ছায়েদ ঘুম থেকে উঠে ঘুমের মধ্যে নাজিমকে জবাই করে দেয়। ওই সময় নাজিমের গলার গোঙরানির আওয়াজ শুনে একই কক্ষে থাকা ছাত্র-শিক্ষক ঘুম থেকে জেগে উঠে এ ঘটনা দেখতে পায়। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, খবর পেয়ে ভোররাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযুক্ত ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়। টুপি পরা নিয়ে দুই ছাত্রের মধ্যে বিরোধের সূত্র ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটে। লাশের সুরতহাল শেষে মরদেহ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
বুয়েটে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর দ্রুত শাস্তির দাবি জানায়। শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযোগের পর অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুয়েট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা সোচ্চার ভূমিকা রাখছে, এবং প্রশাসনও এসব ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।
মালেতে, ২৩ অক্টোবর ২০২৫: বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মালদ্বীপ সরকার। দেশটির সিটিজ, লোকাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক ওয়ার্কস মন্ত্রী আদম শরীফ উমারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এমন আগ্রহের কথা জানিয়েছেন মালদ্বীপের মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার মালেতে মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মোঃ নাজমুল ইসলাম ও মন্ত্রী আদম শরীফ উমারের মধ্যে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে দুই দেশের প্রতিনিধিরা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনখাত উন্নয়ন বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন। মন্ত্রী আদম শরীফ উমার বলেন, বাংলাদেশ মালদ্বীপের নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন সহযোগী দেশ। দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা আরও গভীর করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তিনি। মালদ্বীপ সরকারের বিকেন্দ্রীকৃত প্রশাসনিক কাঠামো শক্তিশালী করা এবং দ্বীপ কাউন্সিলগুলোর ক্ষমতায়নের প্রতি সরকারের অঙ্গীকারের কথাও তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের সম্প্রদায়ভিত্তিক উন্নয়ন, ক্ষুদ্রঋণ ও মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির সফল অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে মালদ্বীপের আগ্রহের কথা জানান। সেই সঙ্গে তিনি মালদ্বীপে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবদানের প্রশংসা করেন, যারা দেশটির অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। প্রত্যুত্তরে হাইকমিশনার ড. মোঃ নাজমুল ইসলাম মালদ্বীপ সরকারের প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য প্রদত্ত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নে কারিগরি সহায়তা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ নিকট ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়। এতে দুই দেশের মধ্যে স্থানীয় সরকার উন্নয়ন ও মানবসম্পদ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সাক্ষাৎটি বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ও ফলপ্রসূ করার পাশাপাশি পারস্পরিক শিক্ষা বিনিময় এবং টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিত করে সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
বিরতি চুক্তি কার্যকর থাকার পরও ইসরায়েলি বাহিনীর ৮০ বার লঙ্ঘন; জাতিসংঘ প্রতিনিধি গাজা শহরের ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন করেছেন গাজা সরকারী মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরও ২৩০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত ৮০ বার লঙ্ঘন করেছে বলেও তারা দাবি করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই বিমান হামলাগুলো নাকি হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় চালানো হয়েছে। তবে হামাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের গাজা অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৮ হাজার ১৫৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ২০৩ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়েছিল। জাতিসংঘের ত্রাণ সমন্বয়ক ইতিমধ্যে গাজা শহরের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন করেছেন এবং মানবিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের হামলা প্রতিহত করার দাবি করেছে তালেবান সরকার। বুধবার সকালে ঘটে যাওয়া এই সংঘর্ষে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে। তালেবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানি সেনারা বুধবার ভোরে স্পিন বোলদাক সীমান্ত এলাকায় হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায়। তিনি দাবি করেন, এ হামলায় ১২ জনেরও বেশি আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। মুজাহিদ আরও বলেন, তালেবান যোদ্ধারা পাল্টা জবাব দেয় এবং পাকিস্তানি বাহিনীর “অনেক সদস্যকে হত্যা” করার পাশাপাশি কয়েকটি সামরিক চৌকি ও অবস্থান দখল করে নেয়। এছাড়া, তালেবান বাহিনী পাকিস্তানি সেনাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও ট্যাংক দখল করে এবং তাদের কয়েকটি স্থাপনা ধ্বংস করে বলে দাবি করেন তিনি। তালেবানের দাবি অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৮টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে, ইসলামাবাদ এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা নিহত-ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে নিশ্চিত করেনি। এর আগে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছিল, স্পিন বোলদাক-চামান সীমান্ত এলাকায় তীব্র সংঘর্ষের কারণে বহু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে এবং সীমান্ত বাণিজ্য কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। বাজার ও কাস্টমস অফিসেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র: দ্য কাবুল ট্রিবিউন
কাতার, সৌদি আরব ও ইরানসহ আঞ্চলিক দেশগুলো আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত বাহিনী ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দুই দেশকে সংযম প্রদর্শন এবং সংলাপ ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমের মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করতে আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে উত্তেজনা প্রশমিত হয় এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।” ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার প্রতিবেশী পরিবেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং দুই মুসলিম প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত।” রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ কারিবুল্লাহ সাদাত বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধের অব্যাহত থাকা সকল দেশের জন্য ক্ষতিকর। সমস্যার সমাধান কূটনৈতিক বোঝাপড়া ও পুনর্মিলনের মাধ্যমে হতে পারে—আফগানিস্তানে পাকিস্তানের দূতাবাস এবং পাকিস্তানে আফগান দূতাবাসের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া উচিত।” ইসলামিক আমিরাতের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, পাকিস্তান যদি আবারও হামলা চালায়, তবে আফগানিস্তান উপযুক্ত জবাব দেবে। মুজাহিদ বলেন, “কাতার ও সৌদি আরব যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, এবং ইসলামিক আমিরাত সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ স্থগিত করেছে। তবে আজ সকালে পাকিস্তানের হামলার খবর পাওয়া গেছে। এই হামলা অব্যাহত থাকলে আফগানিস্তান তার ভূখণ্ড রক্ষার পূর্ণ অধিকার রাখে।” অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেন, “আমাদের দেশ জাতীয় স্বার্থ ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূখণ্ড থেকে ভারতের মদদপুষ্ট খারেজি সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে—এটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে নথিভুক্ত বাস্তবতা।” এছাড়া পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি দাবি করেন, আফগান বাহিনীর পাকিস্তান ভূখণ্ডে গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এদিকে ভারতের সফরে থাকা আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি বলেন, “আফগান জাতির বৈশিষ্ট্য হলো—যখন কোনো বিদেশি শক্তি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, তখন সকল আলেম, নেতা ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।” উল্লেখ্য, পাকিস্তান আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালানোর পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। এর জবাবে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দুরান্ড লাইনের পারের পাকিস্তানি পোস্টগুলোতে পাল্টা হামলা চালায়, যা চলতে থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত।
নোয়াখালীতে বিএনপি অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দল কর্তৃক জামায়াতের মহিলা বিভাগের উঠান বৈঠকে বাধা এবং নগ্ন করে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ ও সন্তানসহ জবাই করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় (৯ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার তাজ নাহার বেগম সুমি (৩৮) থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। জিডির কপি ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, নোয়াখালী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মধ্যম করিমপুর নুর আলম চৌধুরীর বাড়িতে গতকাল বুধবার বিকাল ৪ ঘটিকায় তাজ নাহার বেগম সুমির বাড়ির উঠানে জামায়াতের মহিলা শাখার উদ্যোগে নোয়াখালী-৪ (সদর সুবর্ণচর) আসনে জামায়াত মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী এএসএম ইসহাক খন্দকারের নির্বাচনী উঠান বৈঠক চলছিল। এ সময় একই এলাকার গোলাপ নূর রোমান, মোঃ হোসেন বাবলু, রুবেলসহ ১০-১১ জনের একটি গ্ৰুপ মোটরসাইকেল চোখে যোগে এসে উঠান বৈঠক চলাকালীন বাধা দেয়। বৈঠকে উপস্থিত ৩০-৩৫ জন নারীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার হুমকি দিয়ে বৈঠক থেকে বের করে দেয়। ২নং আসামী হঠাৎ আমার ঘরে এসে জিজ্ঞেস করে এখানে কিসের মিটিং? এখানে যদি আর জামায়াতের কোন মিটিং হয় তাহলে আমি ও আমার সন্তানসহ জবাই করে এমন ভাবে রাখব জামায়াতের লোক কেন, কোন মশা মাছি পর্যন্ত টের পাবে না। ৩নং আসামী আমাকে বলে যে, তোদেরকে মোবাইলে ছবি তুলে ও ভিডিও করে ইণ্টারনেটে ছাড়িয়ে দিব। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আজ সকাল ১১ ঘটিকার সময় ১নং আসামী গোলাম নুর রোমান সহ অজ্ঞাতনামা একজন আসামী আমার বাসার সামনে মটর সাইকেল যোগে এসে আমাকে পূনরায় এই বলে হুমকি দেয় যে, আমি যদি জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী কোন মিটিং করি কিংবা কোন প্রকার আইনগত পদক্ষেপ নিই তাহলে সুযোগমতো আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে জবাই করে খুন করিয়া ফেলিবে। গোলাপ নুর রোমান কে অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি নোয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবের আহমেদ ভাইয়ের রাজনীতি করি। যার বাড়িতে গিয়েছি তার মামাতো ভাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো। বিগত সময়ে ওই বাড়ির কিছু লোক আমাদের বিএনপির উপর হামলা চালিয়েছিল। জামায়াতের বৈঠক নিয়ে আমার আপত্তি ছিল না। আপত্তি ছিল ওই বাড়ির উঠানে কেন জামায়াত মিটিং করবে? এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জামায়াতের নোয়াখালী জেলা আমির এএসএম ইসহাক খন্দকার বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এ ধরনের বাধা ও হুমকি পতিত স্বৈরাচারের সময়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ভোটের দিন রাতে সংঘবদ্ধ নারি ধর্ষণের ঘটনা ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক নারীকে উলঙ্গ করে টর্চ লাইট দিয়ে লজ্জাস্থানে আঘাত করে, সেই ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়াকে মনে করিয়ে দেয়। তিনি আরো বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার ও জামায়াতের আইনজীরা দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে থানায় অভিযোগ করেছে। আমরা আশা করব দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে। অতীতেও ফ্যাসিবাদ দমন করা হয়েছে বর্তমানেও কেউ ফ্যাসিবাদী আচরণ করলে তা শক্ত হাতে দমন করতে জামায়াত পদক্ষেপ নিবে। এ বিষয় নিয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলোকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এরকম ঘটনা যদি কেউ করে থাকে কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। সবার রাজনৈতিক প্রোগ্ৰাম করার অধিকার আছে। এসবের প্রশ্রয় দেয়া হবে না। নোয়াখালী সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলামকে জিডির বিষয়ে কয়েকবার ফোন করলে ফোন রিসিভ করেননি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ইতিমধ্যেই সরগরম হলেও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে এখনো বিএনপি তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এতে করে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা ও উদ্বেগ। এই আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল এবং জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আহমেদুল হক সতিল। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্র এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। মাঠপর্যায়ের তৃণমূল নেতাদের মতামত, সাংগঠনিক শক্তি, এবং বিগত দিনের ভূমিকার ওপর ভিত্তি করেই প্রার্থী বাছাই করবে কেন্দ্র। স্থানীয় নেতারা মনে করছেন, প্রার্থী ঘোষণা বিলম্বিত হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের প্রচারণা ও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম কিছুটা ধীর হয়েছে। তারা দ্রুত প্রার্থী ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, টাঙ্গাইল-৫ আসনটি বিএনপির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই দলটি এই আসনে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও প্রভাবশালী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে চায়। এ কারণেই প্রার্থী চূড়ান্ত করতে সময় নিচ্ছে দলটি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইলের ৮টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনে বিএনপি’র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তালিকা প্রকাশ করেন। তবে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের প্রার্থী এখনও ঘোষণা করা হয়নি। মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা: টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী): ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর): আব্দুস ছালাম পিন্টু, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল): ওবায়দুল হক নাসির টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী): লুৎফর রহমান মতিন, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ারে): রবিউল আউয়াল লাভলু, উপজেলা বিএনপি সদস্য টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর): আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশুবিষয়ক সম্পাদক টাঙ্গাইল-৮: আহমেদ আযম খান, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন না দেওয়া হলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল উভয়ই ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের ধারণা, এ আসন থেকে কেউ একজন নির্বাচিত মনোনয়ন পাবেন।
টাঙ্গাইল জেলায় আসন্ন ২০২৬ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর ৫ আসন জুলাই সনদ এবং নানাবিধ কার্যকলাপ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে জেলা জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (২৭ অক্টোবর ২০২৬ ইং) তারিখে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশ করে তারা। দাবিগুলো হলো, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনে PR পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। সমাবেশে টাঙ্গাইল জেলা আমির আহসান হাবীব মাসুদের সভাপতিত্ব করেন। টাঙ্গাইল জেলার জামায়াতী ইসলামে সদর ৫ আসনের প্রার্থী আহসান হাবীব মাসুদ বলেন,দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। হাজারো ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জাতিকে সঠিক গন্তব্যে নিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। সদর উপজেলা আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন বাদলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি মাওলানা হুমায়ুন কবির, সহকারী সেক্রেটারি হোসনে মোবারক বাবুল, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান, খেলাফত মজলিসের জেলা সহসভাপতি মুফতি আব্দুর রহমান মাদানি, খেলাফত মজলিসের জেলা সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান কোরায়েশী, শহর আমির অধ্যাপক মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ। এই বিক্ষোভ সমাবেশে সবাইকে ধৈর্য এবং শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানান এবং দেশের সকল নেতাকর্মীদের সঠিকভাবে কার্যকলাপ অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানান।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় ডিপ্লোমেটিক এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় সাক্ষাৎপ্রার্থীদের অনুসারীসহ সেখানে না আসার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঁচ সাংগঠনিক বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাথে বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তারেক রহমান। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রংপুর, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাথে বৈঠক করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থিতা চূড়ান্তে ৫টি জরিপ ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রতিবেদনের পর দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাথে সরাসরি বৈঠক শুরু করেছেন তিনি। তারেক রহমানের সাথে এই সাক্ষাৎকার ঘিরে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের অনেকে শোডাউন করে অনেক অনুসারীসহ গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান। এতে করে কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে নেতাকর্মীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনারা কেউ অনুসারীদের নিয়ে এখানে আসবেন না। এই এলাকা ডিপ্লোমেটিক জোন। তাই এখানে অহেতুক ভিড় করা যাবে না। সোমবার (২৭ অক্টোবর) একই স্থানে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাথে বৈঠক করবেন তারেক রহমান। বিএনপি অক্টোবর মাসের মধ্যেই ২০০ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে গ্রিন সিগন্যাল (সবুজ সংকেত) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেটি দলের একটি বড় অংশ দল গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
আপনার মোবাইলের চার্জার কি বার বার খারাপ হচ্ছে ? কী সমস্যা বুঝতে পারছেন ?
বিহারে ফের ক্ষমতায় গেরুয়া ব্রিগেড, এক্সিট পোল দেখেই ছুটল বাজার, এবার কী হবে ?
আপনার পুরনো বন্ধ মোবাইল নম্বর গেছে অন্যের হাতে ? কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন ব্যাঙ্কের ডেটা ?
৫ বছরে ১১,০০০ শতাংশ রিটার্ন, ডিভিডেন্ড ঘোষণা করল এই মাল্টিব্যাগার স্টক
বেশি মিউচুয়াল ফান্ড করলেই বিপুল রিটার্ন ? ভুল ধারণা ! জানুন বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন ?
পাহাড়ের গায়ে পর পর ফাটল, ওজন সইতে পারল না আর, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল সেতু, ধুলোয় ঢাকল চারিদিক
বান্ধবীর বাড়িতে টাকার পাহাড় থেকে শিক্ষা দুর্নীতি, বাড়ি ফিরে মুখ খুললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়
বিহারের ক্ষমতায় কে ? দ্বিতীয় পর্বে সবথেকে বেশি ভোট, ৬৭.১৪ শতাংশ ভোট দিলেন বিহারবাসী