প্রকাশিত; ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৩:২৫ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বাংলাদেশের মানুষ। শনিবার রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ১ লক্ষ বিক্ষোভকারী একত্রিত হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো আওয়াজ তোলেন। “ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন”, “ইসরায়েল নিপাত যাক”, “গাজার শিশুরা কাঁদে, বিবেকহীন দুনিয়া কেন?”—এমন সব স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল শত শত ফিলিস্তিনের পতাকা, পোস্টার, ব্যানার এবং প্রতীকী কফিন ও শিশুর পুতুল, যা গাজায় হতাহত বেসামরিক নাগরিকদের স্মরণে বহন করা হ
অনেক বিক্ষোভকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি পুড়িয়ে এবং জুতা মেরে তাঁদের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তাঁদের অভিযোগ, এই নেতারা ইসরায়েলকে নানাভাবে সমর্থন জানিয়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা চালানোর সুযোগ করে দিচ্ছেন।
এই ঐতিহাসিক বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন—
ড. মিজানুর রহমান আজহারী, আন্তর্জাতিক ইসলামি বক্তা
মুফতি আহমাদুল্লাহ, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান
হাফেজ মাওলানা মামুনুল হক, সাবেক হেফাজতে ইসলাম নেতা
হাসনাত আব্দুল্লাহ
খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
তাঁরা প্রত্যেকেই মঞ্চে বক্তব্য প্রদান করে ফিলিস্তিনের পক্ষে জোরালো সংহতি জানান এবং মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
এই বিক্ষোভে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বিভিন্ন ইসলামি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সরাসরি সমর্থন জানায়। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, “এই হত্যাযজ্ঞে বিশ্ব নিশ্চুপ থাকলেও আমরা, মুসলিম বিশ্ব ও মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছি।”
বাংলাদেশ, একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে বরাবরই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেনি। বাংলাদেশ সরকার সবসময় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে মান্যতা দিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলেছে।
বিশ্বের নানা দেশে ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলেও বাংলাদেশের বিক্ষোভ ছিল অন্যতম বড় এবং প্রভাবশালী। এদেশের মানুষ শুধু কথায় নয়, কর্মে ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। গণমানুষের এই জাগরণ বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিতে বাধ্য।
এই বিক্ষোভ স্পষ্ট করে দিয়েছে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং তারা আর নীরব থাকবে না। গাজার শিশুদের কান্না, মা-বোনদের আহাজারি এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানবতার প্রতিচ্ছবি যেন ঢাকার রাস্তায় প্রাণ ফিরে পেয়েছিল।