ঢাকা, বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কলেজ ছাত্র হত্যায় ধোঁয়াশা: পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন, টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম

কলেজ ছাত্র হত্যায় ধোঁয়াশা: পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন, টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্য
HTML tutorial

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এক কলেজ ছাত্র হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার ও তদন্ত নিয়ে রহস্যের জাল ছড়িয়েছে। গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোররাতে কালিহাতী থানা পুলিশ ছয়জনকে আটক করলেও, পরবর্তীতে পাঁচজনকে রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে নোমান নামের একজনকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। নোমান উপজেলার মহিষজোড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। একই সঙ্গে ঘড়িয়া গ্রামের আ. লতিফের ছেলে সাব্বিরের বাড়ি থেকে নিহত কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীমের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাব্বির ও শাকিলকে স্বাক্ষী হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের চাপে এবং মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে বাকি পাঁচজনকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় কালিহাতী থানার ওসি আবুল কালাম ভূইয়া এবং কালিহাতী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আব্দুল্লাহ আল ইমরানের নাম উঠে এসেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, সম্প্রতি এএসপি ইমরানের দেহরক্ষী কনস্টেবল নাদের খান ইয়াবা কিনতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন, যা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার, যখন কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুল আলীম নিখোঁজ হন। তিনি ঘাটাইল উপজেলার চাঁনতারা গ্রামের প্রবাসী জহিরুল ইসলামের ছেলে। প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে কালিহাতী উপজেলার দক্ষিণ সাতুটিয়া গ্রামের জামাল বাদশার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে আলীমের মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর আলীমের মা আকলিমা আক্তার অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কালিহাতী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ দক্ষিণ সাতুটিয়া গ্রামের রকিবের বাড়ি থেকে নোমান, শরিফ, জামিল, ইমরান ও শাকিলকে আটক করে। তাদের মধ্যে নোমান ছাড়া বাকি চারজন কালিহাতী নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

তদন্তে স্বচ্ছতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে এবং প্রকৃত অপরাধীরা দণ্ড থেকে রেহাই পাচ্ছে।

এ বিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূইয়া বলেন, "হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একজনকে অভিযুক্ত, দুজনকে স্বাক্ষী এবং বাকি তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে।"

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী ইতোমধ্যেই প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Google News Icon গুগল নিউজে দেখুন
HTML tutorial