গাজার সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলার পর, জাতিসংঘের এক নতুন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে, গাজায় নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এই পরিসংখ্যান বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, যেহেতু এটি গাজার জনগণের ওপর অত্যন্ত মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (UNHR) এই তথ্য প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলা, বিমান হামলা এবং স্থল অভিযানগুলোর মধ্যে গাজার হাজার হাজার নিরপরাধ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে এবং হাজার হাজার শিশু, নারী নিহত হয়েছে। এ পরিস্থিতি একেবারে মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে, যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে যেখানে সাধারণ জনগণ একেবারে অসহায়, সেখানে বিশেষভাবে নারী ও শিশুদের ওপর এই সহিংসতার পরিমাণ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবিক সাহায্য পাঠানোর জন্য এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, এবং তাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং মা-ছেলেসহ বহু পরিবার পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। যুদ্ধের প্রথম থেকে, আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলি বাহিনীর কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং তাদের দাবি, ইসরায়েলী বাহিনী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে। এর বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত চালানোর আহ্বান জানিয়েছে তারা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মুসলিম বিশ্ব ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল বলছে যে, তাদের লক্ষ্য গাজার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা এবং তারা নির্দোষ মানুষের ক্ষতির জন্য দুঃখিত।
এখন গাজার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে, এবং এখানকার সাধারণ জনগণের জন্য পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হয়ে উঠছে। জাতিসংঘের মতে, গাজায় মানবিক সাহায্য পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রয়োজন, কিন্তু এর জন্য একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং নিরাপদ পথ নিশ্চিত করতে হবে।
এই প্রতিবেদনটি আল-জাজিরা থেকে সংগৃহীত হয়েছে