ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ৯, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিমস্টেকে মোদি-ইউনূস বৈঠক: শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনলাইন ডেক্স

প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম

বিমস্টেকে মোদি-ইউনূস বৈঠক: শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ দাবি
HTML tutorial

বিমস্টেক সম্মেলনের মঞ্চে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ৪০ মিনিট স্থায়ী এই বৈঠকে উঠে আসে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার পটভূমিতে এই বৈঠক ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

বৈঠকে অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ। ড. ইউনূস বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে সরাসরি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানান। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হয়নি, তবে এই ইস্যুটি বৈঠকের গুরুত্ব অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে।

বৈঠকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়। উত্তরবঙ্গের কৃষি ও জনজীবনে এই পানির সংকট গভীর প্রভাব ফেলছে। বর্ষাকালে বন্যা ও শুষ্ক মৌসুমে খরার কারণে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার। এই ইস্যুতে ভারতের পক্ষ থেকে আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ আশা করছে বাংলাদেশ।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনা। ড. ইউনূস এই ইস্যুতে মোদিকে কঠোর ভাষায় জানান, যেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে এবং সীমান্তে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সরকারের প্রেস সচিব জানান, এই বৈঠক অত্যন্ত সফল ও ইতিবাচক ছিল। দুই দেশের মধ্যে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও নিরসনের পথে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও জানান, এই আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বিমস্টেক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য ছয় দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গেও ড. ইউনূস ধাপে ধাপে বৈঠক করছেন। এসব বৈঠকের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়ানো এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করা।


ড. ইউনূস ও মোদির এই বৈঠক শুধু বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কেই নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতিতেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করতে পারে। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের মতো স্পর্শকাতর ইস্যু এবং দীর্ঘদিনের সীমান্ত ও পানিসম্পর্কিত সমস্যা আলোচনায় স্থান পাওয়ায় দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের দিকনির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে খুব শিগগিরই।

মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Google News Icon গুগল নিউজে দেখুন
HTML tutorial