গাজা সিটিতে হামাস নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র দঘমুশ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বৃহৎ সামরিক অভিযান শেষ হওয়ার পর এটি গাজার সবচেয়ে ভয়াবহ অভ্যন্তরীণ সহিংসতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চোখো দেখা সাক্ষীরা জানান, গাজা সিটির জর্ডানিয়ান হাসপাতালের কাছে মুখোশধারী হামাস যোদ্ধারা দঘমুশ গোত্রের যোদ্ধাদের সঙ্গে গুলি বিনিময় করেন। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং সশস্ত্র সদস্যদের আটক করতে তীব্র লড়াই শুরু করে। মন্ত্রণালয় জানায়, “একটি সশস্ত্র মিলিশিয়ার হামলায়” তাদের আট সদস্য নিহত হয়েছেন। চিকিৎসা সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে, শনিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে দঘমুশ পরিবারের ১৯ সদস্য ও হামাসের আট যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। চোখো দেখা সাক্ষীরা বলেন, দক্ষিণ গাজা সিটির তেল আল-হাওয়া এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়, যখন ৩০০-র বেশি হামাস যোদ্ধা একটি আবাসিক ভবন ঘিরে ফেলে, যেখানে দঘমুশ পরিবারের সশস্ত্র সদস্যরা অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ভারী গুলিবর্ষণের মধ্যে বহু পরিবার ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় — যাদের অনেকেই যুদ্ধ চলাকালীন একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। একজন বাসিন্দা বলেন, “এইবার মানুষ ইসরায়েলি হামলা থেকে নয়, নিজেদের লোকের কাছ থেকে পালাচ্ছিল।” দঘমুশ পরিবার গাজার অন্যতম প্রভাবশালী গোত্র, যাদের সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। এর আগেও তাদের মধ্যে একাধিকবার সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করছে এবং সতর্ক করেছে যে “প্রতিরোধের কাঠামোর বাইরে কোনো সশস্ত্র কর্মকাণ্ড” কঠোরভাবে দমন করা হবে। উভয় পক্ষ একে অপরকে সংঘর্ষ শুরু করার দায়ে অভিযুক্ত করেছে। হামাসের দাবি, দঘমুশ পরিবারের বন্দুকধারীরা তাদের দুই সদস্যকে হত্যা ও পাঁচজনকে আহত করার পর তারা অভিযান চালাতে বাধ্য হয়। তবে দঘমুশ পরিবারের এক সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, হামাস বাহিনী গাজা সিটির প্রাক্তন জর্ডানিয়ান হাসপাতাল ভবনে আসে, যেখানে দঘমুশ পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল— কারণ তাদের আল-সাবরা এলাকার বাড়িগুলো সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। ওই সূত্রের দাবি, হামাস ওই ভবনটি নিজেদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য পরিবারটিকে উচ্ছেদ করতে চেয়েছিল। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনারা সরে যাওয়ার পর হামাস প্রায় ৭,০০০ নিরাপত্তা সদস্যকে আবার মোতায়েন করেছে নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। খবরে আরও জানা গেছে, হামাসের সশস্ত্র ইউনিটগুলো ইতোমধ্যে কয়েকটি এলাকায় মোতায়েন হয়েছে— কেউ বেসামরিক পোশাকে, আবার কেউ গাজা পুলিশের নীল ইউনিফর্মে। তবে হামাসের গণমাধ্যম দপ্তর দাবি করেছে, “রাস্তায় কোনো যোদ্ধা মোতায়েন করা হয়নি।”
কাতার, সৌদি আরব ও ইরানসহ আঞ্চলিক দেশগুলো আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত বাহিনী ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দুই দেশকে সংযম প্রদর্শন এবং সংলাপ ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমের মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করতে আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে উত্তেজনা প্রশমিত হয় এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।” ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার প্রতিবেশী পরিবেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং দুই মুসলিম প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত।” রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ কারিবুল্লাহ সাদাত বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধের অব্যাহত থাকা সকল দেশের জন্য ক্ষতিকর। সমস্যার সমাধান কূটনৈতিক বোঝাপড়া ও পুনর্মিলনের মাধ্যমে হতে পারে—আফগানিস্তানে পাকিস্তানের দূতাবাস এবং পাকিস্তানে আফগান দূতাবাসের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া উচিত।” ইসলামিক আমিরাতের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, পাকিস্তান যদি আবারও হামলা চালায়, তবে আফগানিস্তান উপযুক্ত জবাব দেবে। মুজাহিদ বলেন, “কাতার ও সৌদি আরব যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, এবং ইসলামিক আমিরাত সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ স্থগিত করেছে। তবে আজ সকালে পাকিস্তানের হামলার খবর পাওয়া গেছে। এই হামলা অব্যাহত থাকলে আফগানিস্তান তার ভূখণ্ড রক্ষার পূর্ণ অধিকার রাখে।” অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেন, “আমাদের দেশ জাতীয় স্বার্থ ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূখণ্ড থেকে ভারতের মদদপুষ্ট খারেজি সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে—এটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে নথিভুক্ত বাস্তবতা।” এছাড়া পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি দাবি করেন, আফগান বাহিনীর পাকিস্তান ভূখণ্ডে গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এদিকে ভারতের সফরে থাকা আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি বলেন, “আফগান জাতির বৈশিষ্ট্য হলো—যখন কোনো বিদেশি শক্তি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, তখন সকল আলেম, নেতা ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।” উল্লেখ্য, পাকিস্তান আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালানোর পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। এর জবাবে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দুরান্ড লাইনের পারের পাকিস্তানি পোস্টগুলোতে পাল্টা হামলা চালায়, যা চলতে থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত।
আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, শনিবার রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো পাল্টা অভিযানে অন্তত ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। মুজাহিদ বলেন, “কাল্পনিক ডিউরান্ড লাইনের ওপারে পরিচালিত এই প্রতিশোধমূলক অভিযানে বেশ কিছু অস্ত্রও অস্থায়ীভাবে জব্দ করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এই অভিযানে ৯ জন আফগান সেনা শাহাদত বরণ করেছেন এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন, পাশাপাশি ২০টি পাকিস্তানি নিরাপত্তা পোস্ট সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। মধ্যরাতে অভিযান স্থগিত: মুজাহিদ জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে শনিবার মধ্যরাতে অভিযান স্থগিত করা হয়। আইএসআইএস-খোরাসান নিয়ে অভিযোগ: মুজাহিদ দাবি করেন, আইএসআইএস-কে আফগানিস্তানে পরাজিত করার পর সংগঠনটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে ঘাঁটি গেড়েছে। তার ভাষায়, “খাইবার পাখতুনখাওয়ায় আইএসআইএস-খোরাসানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর হয়ে সেখানে সদস্যদের আনা হচ্ছে। আমাদের তথ্যে জানা গেছে, ইরান ও মস্কোর সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পরিকল্পনাও সেখান থেকেই করা হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তনে সংঘটিত আইএসআইএস-খোরাসানের হামলাগুলো এই ঘাঁটিগুলো থেকেই পরিকল্পিত হয়েছে। তাই পাকিস্তান সরকার যেন এই গোষ্ঠীর মূল সদস্যদের ইসলামিক আমিরাতের কাছে হস্তান্তর করে। পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান: মুজাহিদ জানান, পাকিস্তান আফগানিস্তানে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে চেয়েছিল, তবে বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানি বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসলামিক আমিরাত সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের হুঁশিয়ারি: আফগান বাহিনী শনিবার রাতে ডিউরান্ড লাইনের বিভিন্ন আফগান প্রদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান চালায়। মুজাহিদ সতর্ক করে বলেন, “আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের যে কোনো প্রচেষ্টা অবশ্যই জবাব দেওয়া হবে।”
ইসরায়েল সরকার গাজা যুদ্ধবিরতির “প্রথম ধাপ” অনুমোদন করেছে, যার অংশ হিসেবে বন্দি বিনিময় ও গাজার কিছু অংশ থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু হবে। হামাসের প্রধান আলোচক খালিল আল-হাইয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত গ্যারান্টির ভিত্তিতে এই সমঝোতার প্রথম ধাপ মানেই “গাজার যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে শেষ”—এমনটাই তাদের অবস্থান। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার মধ্যরাতের বৈঠকে শুক্রবার ভোরে (১০ অক্টোবর) যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী— লড়াই থামানো: অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় লড়াই থামানোর পথ তৈরি হবে। বন্দি বিনিময়: হামাসকে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দিতে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, বিনিময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তির কথা রয়েছে। সেনা প্রত্যাহার: ইসরায়েল গাজার কিছু অঞ্চল থেকে ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং নির্ধারিত লাইনে সরে যাবে। হামাসের আলোচক খালিল আল-হাইয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া আশ্বাসে তাদের বিশ্বাস—এই সমঝোতা যুদ্ধের সমাপ্তি টানবে। তবে সমঝোতাটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তির বিস্তৃত রূপরেখায় কীভাবে বসানো হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইসরায়েলের ডানপন্থী শরিকরা চুক্তির বিরোধিতা করেছে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির আগে থেকেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন—“গাজায় হামাসের শাসন চলতে দিলে” তিনি এমন সরকারের অংশ থাকবেন না। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নিহত: অন্তত ৬৭,১৯৪ জন আহত: ১,৬৯,৮৯০ জনের বেশি ধ্বংসস্তূপে চাপা: আরও বহু মানুষ থাকার আশঙ্কা ইসরায়েলে নিহত (৭ অক্টোবর ২০২৩ হামলা): ১,১৩৯ জন; প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়েছিল যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন শুরু হলে গাজায় ত্রাণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার হওয়ার আশা করা হচ্ছে। আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল এলাকায় শিশুদের আনন্দ উদ্যাপনের দৃশ্য ধরা পড়েছে, তবে পর্যবেক্ষকদের মতে—সত্যিকারের স্বস্তির জন্য টেকসই রাজনৈতিক সমাধান অপরিহার্য।
কাবুল, আফগানিস্তান (এপি): বৃহস্পতিবার আফগান রাজধানী কাবুলে এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। একাধিক সূত্র দাবি করেছে যে পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) নেতা নূর ওয়ালী মেহসুদ-এর বহনকারী একটি গাড়ি লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়। ঘটনাস্থল ছিল কাবুলের আবদুলহক স্কয়ারের কাছাকাছি এলাকা। তবে এই দাবির কোনো স্বতন্ত্রভাবে যাচাইযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি, এবং নূর ওয়ালী মেহসুদের অবস্থান বা নিরাপত্তা সম্পর্কেও এখনো কোনো সরকারি নিশ্চয়তা বা বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ঘটনাটিকে “উদ্বেগজনক নয়” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এক্স (X)-এ পোস্ট করে বলেন, “পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।” এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা দ্য কাবুল ট্রিবিউন-কে জানিয়েছেন, ঘোষণার কিছু সময় আগে কাবুল বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। তালেবান কর্তৃপক্ষ এখনো বিস্ফোরণের কারণ বা লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা বিস্তারিত জানাতে বিরত রয়েছে। সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপ: বিস্ফোরণ: কাবুলের আবদুলহক স্কয়ারের কাছে সম্ভাব্য লক্ষ্য: পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) নেতা নূর ওয়ালী মেহসুদ সরকারি নিশ্চিতকরণ: এখনো পাওয়া যায়নি তালেবান মুখপাত্রের বক্তব্য: “উদ্বেগের কিছু নেই, তদন্ত চলছে” হতাহতের খবর: এখনো পাওয়া যায়নি সূত্র: দ্য কাবুল ট্রিবিউন / এপি নিউজ
নোয়াখালীতে বিএনপি অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দল কর্তৃক জামায়াতের মহিলা বিভাগের উঠান বৈঠকে বাধা এবং নগ্ন করে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ ও সন্তানসহ জবাই করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় (৯ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার তাজ নাহার বেগম সুমি (৩৮) থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। জিডির কপি ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, নোয়াখালী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মধ্যম করিমপুর নুর আলম চৌধুরীর বাড়িতে গতকাল বুধবার বিকাল ৪ ঘটিকায় তাজ নাহার বেগম সুমির বাড়ির উঠানে জামায়াতের মহিলা শাখার উদ্যোগে নোয়াখালী-৪ (সদর সুবর্ণচর) আসনে জামায়াত মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী এএসএম ইসহাক খন্দকারের নির্বাচনী উঠান বৈঠক চলছিল। এ সময় একই এলাকার গোলাপ নূর রোমান, মোঃ হোসেন বাবলু, রুবেলসহ ১০-১১ জনের একটি গ্ৰুপ মোটরসাইকেল চোখে যোগে এসে উঠান বৈঠক চলাকালীন বাধা দেয়। বৈঠকে উপস্থিত ৩০-৩৫ জন নারীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার হুমকি দিয়ে বৈঠক থেকে বের করে দেয়। ২নং আসামী হঠাৎ আমার ঘরে এসে জিজ্ঞেস করে এখানে কিসের মিটিং? এখানে যদি আর জামায়াতের কোন মিটিং হয় তাহলে আমি ও আমার সন্তানসহ জবাই করে এমন ভাবে রাখব জামায়াতের লোক কেন, কোন মশা মাছি পর্যন্ত টের পাবে না। ৩নং আসামী আমাকে বলে যে, তোদেরকে মোবাইলে ছবি তুলে ও ভিডিও করে ইণ্টারনেটে ছাড়িয়ে দিব। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আজ সকাল ১১ ঘটিকার সময় ১নং আসামী গোলাম নুর রোমান সহ অজ্ঞাতনামা একজন আসামী আমার বাসার সামনে মটর সাইকেল যোগে এসে আমাকে পূনরায় এই বলে হুমকি দেয় যে, আমি যদি জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী কোন মিটিং করি কিংবা কোন প্রকার আইনগত পদক্ষেপ নিই তাহলে সুযোগমতো আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে জবাই করে খুন করিয়া ফেলিবে। গোলাপ নুর রোমান কে অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি নোয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবের আহমেদ ভাইয়ের রাজনীতি করি। যার বাড়িতে গিয়েছি তার মামাতো ভাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো। বিগত সময়ে ওই বাড়ির কিছু লোক আমাদের বিএনপির উপর হামলা চালিয়েছিল। জামায়াতের বৈঠক নিয়ে আমার আপত্তি ছিল না। আপত্তি ছিল ওই বাড়ির উঠানে কেন জামায়াত মিটিং করবে? এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জামায়াতের নোয়াখালী জেলা আমির এএসএম ইসহাক খন্দকার বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এ ধরনের বাধা ও হুমকি পতিত স্বৈরাচারের সময়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ভোটের দিন রাতে সংঘবদ্ধ নারি ধর্ষণের ঘটনা ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক নারীকে উলঙ্গ করে টর্চ লাইট দিয়ে লজ্জাস্থানে আঘাত করে, সেই ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়াকে মনে করিয়ে দেয়। তিনি আরো বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার ও জামায়াতের আইনজীরা দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে থানায় অভিযোগ করেছে। আমরা আশা করব দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে। অতীতেও ফ্যাসিবাদ দমন করা হয়েছে বর্তমানেও কেউ ফ্যাসিবাদী আচরণ করলে তা শক্ত হাতে দমন করতে জামায়াত পদক্ষেপ নিবে। এ বিষয় নিয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলোকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এরকম ঘটনা যদি কেউ করে থাকে কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। সবার রাজনৈতিক প্রোগ্ৰাম করার অধিকার আছে। এসবের প্রশ্রয় দেয়া হবে না। নোয়াখালী সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলামকে জিডির বিষয়ে কয়েকবার ফোন করলে ফোন রিসিভ করেননি
গাজা উপত্যকায় বৃহস্পতিবার সকালে নতুন করে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, যদিও এর আগেই মধ্যস্থতাকারীরা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, দুই বছরের বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতভর গাজা সিটি ও খান ইউনুসে ভয়াবহ বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ হয়। এমনকি ইসরায়েলি ড্রোন থেকেও সাধারণ মানুষের উপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়। অন্তত একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানান, চুক্তির প্রথম ধাপে যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধের অবসান, দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহার, সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা এবং বন্দি বিনিময়ের পথ প্রশস্ত করবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে একে “ইসরায়েলের জন্য এক মহান দিন” বলে মন্তব্য করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার তার সরকার এই চুক্তি অনুমোদনের জন্য বৈঠকে বসবে এবং “জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনবে।” গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর নাগাদ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, রবিবার বা সোমবারের মধ্যে হামাস প্রায় ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে, বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। একইসাথে ইসরায়েলি সেনারা ধাপে ধাপে গাজা থেকে প্রত্যাহার শুরু করবে। তবে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারের সীমারেখা এখনও পরিষ্কার নয়। চুক্তি কার্যকর হলে অবিলম্বে অন্তত ৪০০টি সাহায্যবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চুক্তির অন্যান্য ধাপ—যেমন ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন—পরে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। গাজায় এই যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, হামাসের আকস্মিক ইসরায়েল আক্রমণের পর। হামাস জানিয়েছিল, ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের দখলনীতি, আল-আকসা মসজিদে হামলা, গাজা অবরোধ ও বন্দিদের প্রতি অমানবিক আচরণের প্রতিবাদেই তারা এই পদক্ষেপ নেয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড হামাসের প্রথম আক্রমণের পরপরই ভেঙে পড়ে, ফলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম দফায় হামাসের আক্রমণে অন্তত ১,১৮০ জন ইসরায়েলি নিহত হয় এবং পরবর্তী লড়াইয়ে আরও ৭০০ জন মারা যায়। এদের অর্ধেকের বেশি ছিল বেসামরিক নাগরিক। এর প্রতিশোধে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালায়, যা দুই বছর ধরে চলে এবং প্রায় পুরো গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। ইসরায়েলি সামরিক সূত্রে ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা যায়, এই দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক। গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ, ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো এবং অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয় চলছে। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ, গির্জা—সবই ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশ ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে “গণহত্যা” হিসেবে ঘোষণা করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার গভীর রাতে ঘোষণা করেছেন যে, ইসরায়েল ও হামাস গাজা যুদ্ধের অবসানে তাঁর প্রস্তাবিত “২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার” প্রথম ধাপে একমত হয়েছে। ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যম “ট্রুথ সোশ্যাল”-এ লিখেছেন— “এর মানে হলো খুব শিগগিরই সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা নির্ধারিত সীমারেখা পর্যন্ত প্রত্যাহার করবে। এটি একটি শক্তিশালী, টেকসই এবং স্থায়ী শান্তির প্রথম পদক্ষেপ। সকল পক্ষ ন্যায়সঙ্গত আচরণ পাবে।” তিনি আরও বলেন, “আজ আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, প্রতিবেশী দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি মহৎ দিন। আমরা কাতার, মিসর ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানাই যারা এই ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন ঘটনাটিতে মধ্যস্থতা করেছেন।” কাতারের নিশ্চয়তা: ঘোষণার অল্প সময় পরেই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপের “সব শর্ত ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া” নিয়ে চুক্তি হয়েছে। তিনি জানান— “এই চুক্তি যুদ্ধের অবসান ঘটাবে, বন্দি বিনিময় সম্পন্ন করবে এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেবে।” বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি। ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিক্রিয়া: ইসরায়েল সরকারের এক মুখপাত্র জানান, শনিবারের মধ্যেই বন্দিদের মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে হামাস একটি বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল নিশ্চয়তা প্রদানকারী রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় যেন ইসরায়েল এই চুক্তি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক্স (X)-এ লিখেছেন— “এটি ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন। আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর দলকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের বন্দিদের মুক্ত করার এই পবিত্র মিশনে তাঁদের ভূমিকার জন্য।” তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর মন্ত্রিসভাকে ডেকে এই চুক্তি অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন এবং “বন্দিদের ঘরে ফিরিয়ে আনবেন।” হামাসের অবস্থান: বুধবারের শুরুতে হামাসের আলোচক দলের প্রধান খালিল আল-হায়া জানান, তাদের প্রতিনিধিদল মিশরের শার্ম আল-শেখ শহরে এসেছে “দায়িত্বশীল ও গঠনমূলক আলোচনার জন্য”। তিনি বলেন, তাদের লক্ষ্য হলো— 1️⃣ যুদ্ধের অবসান, 2️⃣ গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, 3️⃣ সকল ইসরায়েলি বন্দির (জীবিত বা মৃত) বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি। জাতিসংঘে প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের উপ-রাষ্ট্রদূত মাজেদ বামিয়া এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে এক্স-এ এক শব্দে লিখেছেন— “Finally…” (অবশেষে...)। চুক্তির পটভূমি ও সমালোচনা: গত সপ্তাহে ট্রাম্প তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন করেন, যা অনেকেই “ইসরায়েল-কেন্দ্রিক” বলে সমালোচনা করেছেন। প্রথম দফায় বলা হয়— “গাজাকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত ও প্রতিবেশী-বান্ধব অঞ্চল হিসেবে পুনর্গঠন করা হবে।” এই পরিকল্পনায় আরও বলা হয় যে, ট্রাম্প ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার একটি অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধান কমিটিতে নেতৃত্ব দেবেন, যা গাজা পরিচালনা করবে। এছাড়াও একটি “আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী” গঠনের প্রস্তাব রয়েছে, যারা গাজায় নিরাপত্তা রক্ষা করবে। তবে সমালোচকরা একে “নতুন ঔপনিবেশিক পরিকল্পনা” হিসেবে দেখছেন, যেখানে ট্রাম্প নিজেকে “Board of Peace”-এর প্রধান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। যুদ্ধের ভয়াবহ চিত্র: ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। গাজার বাড়িঘর, মসজিদ, গির্জা, হাসপাতাল, স্কুল ও অবকাঠামোর অধিকাংশই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একাধিক জাতিসংঘ তদন্ত কমিটি ও মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে— ইসরায়েলের গাজা অভিযান গণহত্যা (Genocide) হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ইসরায়েলি সেনা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের ৮০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক। সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপ: 📍 চুক্তি: গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ 📍 মধ্যস্থতাকারী: যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর, তুরস্ক 📍 মূল বিষয়: যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময়, সেনা প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা 📍 সম্ভাব্য সময়সীমা: বন্দি মুক্তি শনিবারের মধ্যে শুরু হতে পারে 📍 উক্তি: ট্রাম্প – “Blessed are the Peacemakers!
নেত্রকোনা দুর্গাপুরে কুরআন অবমাননাকারি অপূর্ব পালের ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল ধর্ম নিয়ে কটূক্তি এবং পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (০৮ অক্টোবর) বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলার সর্বস্তরের যুবসমাজের আয়োজনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে বক্তারা বলেন, আমরা ৯০ শতাংশ মুসলমানদের দেশে বসবাস করি। এর পরও এই দেশে সম্প্রীতি নস্ট করার জন্য, বারবার অন্য ধর্মের লোকেরাই আল কুরআন অবমাননার ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা কুরআন অবমাননাকারী অপুর্ব পালের ফাঁসি চাই। এই দেশে আর কেউ পবিত্র কুরআন অবমাননা করুক আমরা তা চাই না, কুরআনকে নিয়ে কটুক্তি করুক আমরা আর শুনতে চাইনা। সমাবেশে মুফতি নুরে আলমের সভাপতিত্বে এবং জামাল উদ্দীন কারিমী‘র সঞ্চালনায়, অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, মুফতি সাব্বির আহমেদ, যুবদল নেতা আল ইমরান সম্রাট গণি, মুফতি রেজাউল করীম, মুফতি বরকত উল্লাহ্, মাওলানা ইমরান। আলোচনা শেষে দোয়া পরিচালনা করেন, মাওলানা মঞ্জুরুল হক।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজামুখী একাধিক জাহাজে অভিযান চালিয়ে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (Freedom Flotilla Coalition - FFC) এর নৌযানগুলো আটক করেছে বলে জানা গেছে। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন জানায়, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রথমে “দ্য কনসায়েন্স” নামের একটি জাহাজে আক্রমণ চালায়। এই জাহাজে ৯৩ জন সাংবাদিক, চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মী ছিলেন। এরপর আরও তিনটি ছোট নৌযানেও অভিযান চালানো হয় ও সেগুলো আটক করা হয়। সংগঠনটি জানিয়েছে, যাত্রীদের “অজানা স্থানে আটক রাখা হয়েছে।” ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (X)-এ এক বিবৃতিতে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, “আইনসম্মত নৌ অবরোধ ভেঙে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের আরেকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা। সকল যাত্রীকে ইসরায়েলের একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা নিরাপদে ও সুস্থ আছেন এবং দ্রুতই তাদের দেশগুলিতে ফেরত পাঠানো হবে।” অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানান এবং অভিযানে অংশ নেওয়া মালয়েশিয়ান কর্মীদের মুক্তি দাবি করেন। আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স ও ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশের কর্মীরাও এই নৌযানে ছিলেন বলে জানা গেছে। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন জানায়, তাদের নৌবহরটি গাজার হাসপাতালগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, শ্বাসযন্ত্র এবং পুষ্টি সরঞ্জামসহ ১ লক্ষ ১০ হাজার ডলারের বেশি মূল্যের মানবিক সহায়তা বহন করছিল। তারা আরও বলে, “ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় কোনো আইনি এখতিয়ার নেই। আমাদের নৌবহর সম্পূর্ণভাবে শান্তিপূর্ণ এবং মানবিক সহায়তা মিশন।” এর আগে কয়েক দিন আগে আরেকটি মানবিক বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (Global Sumud Flotilla) আটক করে ইসরায়েল। সেই অভিযানে প্রায় ৪০টি নৌযান এবং ৪৫০ জনের বেশি কর্মীকে আটক করা হয়, যার মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থানবার্গও ছিলেন। পরবর্তীতে অধিকাংশ কর্মীকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে কয়েকজন কর্মী অভিযোগ করেছেন, আটকাবস্থায় তারা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ফরাসি-ফিলিস্তিনি কর্মী রিমা হাসান জানান, তাকে ইসরায়েলি পুলিশ মারধর করেছে। অন্যদিকে মার্কিন কর্মী ডেভিড অ্যাডলার জানান, তাকে “নগ্ন করে,” “হাত বেঁধে,” “চোখে পট্টি বেঁধে” আটকে রাখা হয় এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রী ইটামার বেন-গভিরের সঙ্গে জোর করে ছবি তোলা হয়। ⚓ উল্লেখ্য, ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক, যা গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য বেসামরিক নৌ অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
মিশরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় অংশ নেওয়া হামাস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসানের নিশ্চয়তা চান— যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার অন্যতম শর্ত। মিশরের পর্যটন শহর শার্ম আল-শেখে অনুষ্ঠিত আলোচনার দ্বিতীয় দিন শেষে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা বন্দিমুক্তির প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে চায়, যা ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। “বাস্তব নিশ্চয়তা চাই” — হামাস হামাসের শীর্ষ আলোচক খালিল আল-হাইয়া মিশরীয় গণমাধ্যম আল কাহেরা নিউজকে বলেন, “আমরা দখলদার শক্তির ওপর এক মুহূর্তের জন্যও ভরসা করি না। আমরা চাই বাস্তব নিশ্চয়তা যে যুদ্ধ সত্যিই শেষ হবে এবং পুনরায় শুরু হবে না।” তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল পূর্বে দুটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ট্রাম্পের বক্তব্য হোয়াইট হাউসে যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “একটি বাস্তব চুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।” তিনি জানান, আলোচনায় যুক্ত হতে বুধবার কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রতিনিধিরা শার্ম আল-শেখে পৌঁছাবেন। কাতার, মিসর ও তুরকির মধ্যস্থতা কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি আল জাজিরাকে বলেন, “আমরা পূর্বনির্ধারিত কোনো সূত্র ধরে এগোচ্ছি না। আলোচনার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তাবগুলো তৈরি হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি বুধবার আলোচনায় যোগ দেবেন, যা মধ্যস্থতাকারীদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতীক। বন্দিমুক্তি ও সেনা প্রত্যাহার একসঙ্গে হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানান, “বন্দিমুক্তির প্রতিটি ধাপ ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। শেষ বন্দি মুক্তির সময়ই চূড়ান্তভাবে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে সরে যাবে।” ইসরায়েলের অবস্থান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি আমাদের অস্তিত্ব ও ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ।” তিনি ইঙ্গিত দেন, ইসরায়েল তার লক্ষ্যে অবিচল থাকবে— বন্দিমুক্তি, হামাসের শাসনের অবসান এবং গাজা যেন আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয় তা নিশ্চিত করা। যুদ্ধবিরতির আশায় গাজায় মৃত্যু থামছে না আলোচনার মাঝেও ইসরায়েলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান গাজায় অভিযান চালাচ্ছে। মঙ্গলবার গাজার সাবরা ও তল আল-হাওয়া এলাকায় অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ‘ওয়াফা’। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৬৬ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন করে ১০৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় গাজার আজ-জুয়াইদা এলাকা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানান, “সবাই একটি শান্তিচুক্তির অপেক্ষায়, অথচ বোমা বর্ষণ অব্যাহত। ইসরায়েলি বাহিনী পুরো আবাসিক এলাকা ধ্বংস করে দিচ্ছে যেখানে মানুষ ভেবেছিল তারা ফিরে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করবে।” অবকাঠামো ধ্বংস ও প্রাণহানির ভয়াবহ চিত্র যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংঘর্ষ পর্যবেক্ষক সংস্থা ACLED-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় এ পর্যন্ত ১১,১১০টি বিমান ও ড্রোন হামলা এবং ৬,২৫০টি গোলাবর্ষণ সংঘটিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী গত দুই বছরে সংঘর্ষজনিত মোট মৃত্যুর ১৪ শতাংশই গাজায় ঘটেছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ যুদ্ধে ১,৭০১ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে গাজা উপত্যকায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনের হিসেবে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৭,১৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৬৯,৬৭৯ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষের লাশ আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুই বছর আগে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলের ওপর আকস্মিক হামলা চালায়। এর পরপরই ইসরাইল গাজার ওপর ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে, যা এখনও অব্যাহত আছে। আল জাজিরার তথ্যমতে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার দুই বছর পূর্তির প্রাক্কালে গত শুক্রবার থেকে অন্তত ১০৪ জন গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন—যদিও একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলকে বোমাবর্ষণ স্থগিতের আহ্বান জানান। ইসরাইলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে, যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় নিয়ে মিশরের শারম আল-শেইখে ইসরাইল ও হামাসের প্রতিনিধিদল মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে।
গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় জানায়, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী একটি পরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৯,৪৫০ শিশুর মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। একই সময়ে অন্তত ১২,৫০০ নারী নিহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে প্রায় ১০,১৬০ জনের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে, যা গাজার ৯০ শতাংশ এলাকা ধ্বংস করে দিয়েছে এবং ৮০ শতাংশের বেশি অঞ্চল দখল করে রেখেছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ১,৬৭০ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ১৪০ জন সিভিল ডিফেন্স সদস্য এবং ২৫৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গাজা সরকারের তথ্যমতে, চলমান হামলা ও অবরোধের কারণে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় গর্ভবতী নারীদের মধ্যে প্রায় ১২,০০০টি গর্ভপাত ঘটেছে। তারা আরও জানিয়েছে, ইসরায়েল পদ্ধতিগতভাবে গাজার স্বাস্থ্য খাতকে ধ্বংস করছে—এ পর্যন্ত ৩৮টি হাসপাতাল, ৯৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ১৯৭টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস বা অচল করে দেওয়া হয়েছে। ধ্বংসের তালিকায় ধর্মীয় স্থাপনাও রয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় ৮৩৫টি মসজিদ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, আরও ১৮০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। তিনটি চার্চেও হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া ৪০টি কবরস্থান ধ্বংস এবং ২,৪৫০টিরও বেশি মরদেহ কবরস্থান থেকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ২,৬৮,০০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, ১,৪৮,০০০টি গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১,৫৩,০০০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। এতে করে ২,৮৮,০০০ পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এছাড়া ১,২৫,০০০টি তাবুর মধ্যে বেশিরভাগই এখন বসবাসের অনুপযোগী। ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে প্রায় দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনি ঘরছাড়া হয়েছে। ২৯৩টি আশ্রয়কেন্দ্র ও বাস্তুচ্যুত মানুষের শিবিরেও হামলা চালানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন প্রস্তাবিত গাজা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আলোচনার প্রাক্কালে ডানপন্থী ইসরায়েলি নেতারা তুলনামূলকভাবে নীরব থাকলেও, তারা মনে করেন পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ইসরায়েলি বাহিনী দীর্ঘসময় “সামরিকভাবে স্বাধীনভাবে” অভিযান চালাতে পারবে—এমন মন্তব্য করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ ইসরায়েল বিশ্লেষক মাইরাভ জোনসাইন। আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পরিকল্পনায় ইসরায়েলের জন্য “বহু ফাঁকফোকর” রয়ে গেছে, যা সহজেই প্রক্রিয়াটি ভেস্তে দিতে পারে। জোনসাইনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জিম্মিদের মুক্তি আদায় করা গেলে পরিকল্পনার মূল অংশ—হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজার ‘ডে-আফটার’ কাঠামো—এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। ফলে ইসরায়েলি বাহিনী “ফ্রিডম অব অপারেশন” বজায় রেখে সামরিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সুযোগ পাবে। তার ভাষায়, পরিকল্পনা টিকিয়ে রাখতে ট্রাম্প প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে ইসরায়েলকে একটি টেকসই যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে “অত্যন্ত কঠোর” ভূমিকা নিতে হবে। “বর্তমান ইসরায়েলি নেতৃত্বের বেশিরভাগই মনে করে, কোনো এক পর্যায়ে এটি ভেঙে পড়বে,” বলেছেন তিনি। জোনসাইন আরও জানান, পরিকল্পনার বড় একটি অন্তরায় হলো ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারকে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের সঙ্গে যুক্ত করা—যা এখনো হামাসের পক্ষ থেকে গৃহীত হয়নি। ফলে মাঠে বাস্তব অগ্রগতি থমকে যাওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসব অনিশ্চয়তা ও পূর্বশর্তের জটিলতা পরিকল্পনার রাজনৈতিক সমর্থন ক্ষয় করতে পারে এবং মাটিতে সংঘাতের তীব্রতা কমানোর বদলে স্থিতাবস্থাকে দীর্ঘায়িত করতে পারে। মূল পয়েন্টসমূহ আলোচনার মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনীর “সামরিক স্বাধীনতা” বজায় থাকার সম্ভাবনা পরিকল্পনায় বহু “ফাঁকফোকর”—সহজে ভেস্তে যেতে পারে প্রক্রিয়া জিম্মি মুক্তি অগ্রাধিকার পেলেও নিরস্ত্রীকরণ ও ‘ডে-আফটার’ কাঠামো দ্রুত সম্ভব নয় ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার হামাসের নিরস্ত্রীকরণের সঙ্গে শর্তযুক্ত—হামাস এখনো রাজি নয় টেকসই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োজন
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির লক্ষ্যে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিদল সোমবার (৬ অক্টোবর) মিশরের শার্ম আল-শেখে মুখোমুখি আলোচনায় বসছে বলে কায়রোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। আলোচনায় মূল এজেন্ডা হবে জিম্মি–বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নির্ধারণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার জানান, হামাস প্রস্তাবটি গ্রহণের নিশ্চিতবার্তা দিলে সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং বন্দি বিনিময়ের ধাপ শুরু হবে। তিনি এ উদ্যোগকে “রক্তপাত থামানো ও স্থিতিশীলতা ফেরানোর” গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ বলে অভিহিত করেন। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে মোসাদ ও শিন বেতের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কৌশলবিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার নেতৃত্বে আলোচনা টিম কায়রো/শার্ম আল-শেখে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানা যায়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আশা প্রকাশ করেছেন, দ্রুত অগ্রগতি হলে “কয়েক দিনের মধ্যে” জিম্মিদের মুক্তির ঘোষণা দেওয়া সম্ভব হবে। অন্যদিকে, হামাস রবিবার নতুন ফুটেজ প্রকাশ করেছে যেখানে রাজনৈতিক ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ নেতা খালিল আল-হাইয়া প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বক্তব্য দেন—দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার পর এটিই তার প্রথম উপস্থিতি। তবে তিনি শীর্ষ আলোচক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দেবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর ভাষ্য, প্রথম দফায় জিম্মি–বন্দি বিনিময় ও গাজায় সামরিক অভিযান থামানোর কাঠামো নিয়ে আলোচনা হবে। পরবর্তী ধাপে মানবিক সহায়তা, পুনর্গঠন এবং সীমান্তব্যবস্থা নিয়ে টেকসই সমাধানের ফ্রেমওয়ার্ক আনার চেষ্টা চলবে। যুক্তরাষ্ট্রের দূতদল ইতিমধ্যে মিশরে পৌঁছেছে এবং ওয়াশিংটন বলছে, চুক্তি “খুব কাছাকাছি”—তবে বিলম্ব হলে পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হামাসকে সতর্ক করা হয়েছে। ইসরায়েল ও হামাস—দুই পক্ষই ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা চুক্তির দিকে অগ্রসর হতে আগ্রহী। সোমবারের বৈঠক সফল হলে যুদ্ধবিরতি বাস্তবে রূপ নিতে পারে, গাজায় মানবিক সঙ্কট কিছুটা লাঘব হতে পারে এবং আঞ্চলিক সংলাপের নতুন পথ খুলে যেতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের মত।
গাজা সিটির বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর রাতভর বিমান ও আর্টিলারি হামলায় আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোর থেকে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলা “অবিলম্বে বন্ধ” করার কথা বলার পরও এই বোমাবর্ষণ থামেনি। Al Jazeera গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাস্সাল এএফপিকে বলেন, “এটা ছিল অত্যন্ত সহিংস একটি রাত; (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) গাজা সিটি ও উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ডজন ডজন বিমান হামলা ও আর্টিলারি শেলিং চালিয়েছে,” এবং রাতের বোমাবর্ষণে কমপক্ষে ২০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। Dawn স্থানীয় হাসপাতালগুলো হতাহতদের তথ্য দিচ্ছে: গাজা সিটির ব্যাপটিস্ট হাসপাতাল জানিয়েছে, শহরের তুফ্ফাহ মহল্লায় একটি বাড়িতে হামলার পর তাদের কাছে হতাহত আনা হয়—এর মধ্যে চারজন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত। Al Jazeera খানইউনিসের নাসের হাসপাতাল জানিয়েছে, বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবুতে ড্রোন হামলায় দুই শিশু নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন। Al Jazeera ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জবাবে হামাস আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়ে কিছু বিষয়ে সম্মতি দিলেও, ইসরায়েলি বাহিনী হামলা অব্যাহত রেখেছে বলে আল জাজিরার লাইভ আপডেটে জানানো হয়েছে। Al Jazeera
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটিতে আবারও মার্কিন সেনা ফেরানোর পরিকল্পনার। তার এ বক্তব্য ঘিরে ইতোমধ্যে চীন কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ শুধুমাত্র আফগান জনগণের হাতে থাকা উচিত। কোনো ধরনের উত্তেজনা বা সংঘাতের বৃদ্ধি অঞ্চলের জন্য “অকাঙ্ক্ষিত” হবে বলেও তিনি সতর্ক করেন। এর আগে ট্রাম্প দাবি করেন, বাগরাম ঘাঁটির কৌশলগত গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বলেন, “এটি চীনের পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনস্থল থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে।” তার এ মন্তব্যের পর তালেবানের প্রতিক্রিয়াও আসে। তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা জাকির জালালি বলেন, ট্রাম্প একজন “সফল ব্যবসায়ী” এবং বাগরাম নিয়ে তার মন্তব্য আসলে একটি সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হতে পারে। সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প গত কয়েক মাস ধরে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের চাপ দিয়ে যাচ্ছেন আফগানিস্তানে পুনরায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়ে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বিতর্ক প্রমাণ করছে যে আফগানিস্তান এখনো ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে ব্যস্ত। চীন আবারও সবাইকে গঠনমূলক ভূমিকা নিতে আহ্বান জানিয়ে বলেছে, আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠাই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য।
কাবুল: ইসলামী আমিরাতের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আফগানিস্তানে নারীদের সম্পর্কিত পদক্ষেপগুলোকে “মূর্খতা” বলে মন্তব্য করেছিলেন। মুজাহিদ বলেন, “আমরা এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অনুপযুক্ত বক্তব্য দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা জানাই।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জাতিসংঘের মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানকে তার কথার গুরুত্ব ও প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং বেপরোয়া ভাষা ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।” মুজাহিদ আরও উল্লেখ করেন যে, আফগানিস্তানে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য প্রণীত সকল নীতি ও বিধিবিধান ইসলামী শরীয়াহ আইনের ভিত্তিতে নির্ধারিত। তিনি বলেন, “যদি কারও শরীয়াহ সম্পর্কে জ্ঞান বা বোঝাপড়া না থাকে, তবে সেটি তাদের নিজস্ব ঘাটতি। ভিত্তিহীন অভিযোগ করার পরিবর্তে তাদের উচিত যথাযথভাবে শিক্ষা গ্রহণ করা।” বিবৃতির শেষাংশে আফগানিস্তান আন্তর্জাতিক মহল ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় যেন তারা ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং অপমানজনক বা অজ্ঞতাপূর্ণ মন্তব্য থেকে বিরত থাকে।
গাজা সিটিতে ইসরায়েলের টানা ধ্বংসযজ্ঞে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে স্থায়ী উচ্ছেদের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৫ সেপ্টেম্বরের হামলায় ১৫ তলা মুশতাহা টাওয়ার মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে। এক দশক ধরে ঋণ শোধ করে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা শাদি সালামা আল-রাইয়েস। কিন্তু সেই ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন তিনি পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অস্থায়ী তাঁবুতে। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করছে, এসব বহুতল ভবন হামাসের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। গত দুই সপ্তাহে অন্তত ২০টি টাওয়ার ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে তাদের দাবি। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৫০টি “সন্ত্রাসী টাওয়ার” ধ্বংস করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ—এটি আসলে জনগণকে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনার অংশ। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর (OHCHR) বলেছে, জনসংখ্যা উচ্ছেদ করার এ ধরনের পরিকল্পনা জাতিগত নিধনযজ্ঞের শামিল হতে পারে। তবে ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র নাদাভ শোশানি বলেছেন, গাজাকে সমতল করার কোনো কৌশল নেই। তাদের লক্ষ্য কেবল হামাসকে ধ্বংস করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা। সাক্ষীদের দাবি, হামলার আগে ফোনে কয়েক মিনিট সময় দিয়ে ভবন খালি করতে বলা হয়। আতঙ্কে বাসিন্দারা খালি হাতে বের হয়ে আসেন। এরপর মুহূর্তের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনে মুশতাহা টাওয়ারকে ধুলিস্যাৎ করে দেয়। ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশের শরণার্থী শিবিরেও। শুধু টাওয়ার ধ্বংসই নয়, গাজা সিটির প্রান্তিক এলাকায় প্রতিদিন ডজন ডজন বাড়ি উড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল। স্থানীয় এনজিও নেটওয়ার্কের হিসাবে, ইতোমধ্যেই গাজা সিটির ৬৫ শতাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ স্যাটেলাইট সেন্টারের তথ্য বলছে, গাজার মোট ভবনের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২১৩টি হাসপাতাল এবং ১,০২৯টি স্কুল। মানবিক সহায়তাকারী সংস্থা অক্সফাম জানিয়েছে, বহুতল টাওয়ারগুলো ছিল ফিলিস্তিনিদের শেষ আশ্রয়। এগুলো ধ্বংস হলে দক্ষিণাঞ্চলে অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। ২৩ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি তরুণ তারেক আবদেল-আল বলেন, “আমাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে তারা ফেরার শেষ আশা পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে।”
হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম সৌদি আরবকে আহ্বান জানিয়েছেন সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করতে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে। শুক্রবার এক ভাষণে তিনি বলেন, ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে হামলা বাড়িয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। নাইম কাসেম তিনটি মূল নীতির ভিত্তিতে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের আহ্বান জানান: ১. সংলাপের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব ও উদ্বেগ সমাধান। ২. স্বীকার করা যে ইসরায়েলই মূল শত্রু, প্রতিরোধ নয়। ৩. অতীতের বিরোধগুলোকে স্থগিত রাখা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, হিজবুল্লাহর অস্ত্র শুধু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে, “লেবানন, সৌদি আরব বা অন্য কারও বিরুদ্ধে নয়।” ‘চাপ শুধুই ইসরায়েলের উপকারে আসবে’ কাসেম সতর্ক করেন, প্রতিরোধে চাপ সৃষ্টি করা মানে শুধু ইসরায়েলকে শক্তিশালী করা। তিনি বলেন, “যদি প্রতিরোধ ভেঙে ফেলা হয়, তাহলে পরবর্তী লক্ষ্য হবে অন্যান্য রাষ্ট্র।” সৌদি আরব ও হিজবুল্লাহর মধ্যে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে। ২০১৬ সালে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) হিজবুল্লাহকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে, সিরিয়া ও ইয়েমেনে তাদের ভূমিকার কারণে। ‘গণহত্যা হয়ে গেল সমাধান’ নাইম কাসেম ইসরায়েলকে “ঔপনিবেশিক ঘাঁটি” আখ্যা দিয়ে বলেন, ব্রিটেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় এটি দাঁড়িয়ে আছে। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনে আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে নৃশংসতা চালাচ্ছে। তার ভাষায়, “নরম যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, আব্রাহাম চুক্তি—কোনো কিছুই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দ্রুত বিজয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনি। তাই তাদের কাছে এখন গণহত্যাই সমাধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলের হামলার পর থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন মোড় নিয়েছে। মার্কিন প্রস্তাবে অনাস্থা কাসেম বলেন, “যখন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ঘোষণা করে যে তারা ইসরায়েলের স্বার্থেই কাজ করছে, তখন কিভাবে তাদের কোনো প্রস্তাবে আস্থা রাখা যায়?” মার্কিন চাপের মুখে লেবাননকে ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে বলা হয়েছিল। তবে কাসেম জানান, হিজবুল্লাহ সংলাপের জন্য প্রস্তুত, তবে সেটা হবে “শক্তির অবস্থান থেকে”—ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অটল থাকবে। সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তির পর আহ্বান এই আহ্বান এমন সময়ে এলো, যখন মাত্র দুই দিন আগে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান ইসরায়েলের কাতার হামলার প্রেক্ষিতে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ইসরায়েলি হামলায় দুই নিহত শুক্রবার লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের দুটি হামলায় দুইজন নিহত ও অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। একটি হামলা তিবনিন শহরের একটি সরকারি হাসপাতালের বাইরে গাড়িকে লক্ষ্য করে, আরেকটি আঘাত হানে আনসার এলাকায়। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, এতে হিজবুল্লাহর এক কমান্ডার এবং রাদওয়ান বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া নাকুরায় হিজবুল্লাহর নজরদারি কাজে ব্যবহৃত একটি নৌযানও ধ্বংস করা হয়েছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম ইসরায়েলের এই হামলাকে “ভীতি প্রদর্শন ও আগ্রাসন” বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ ২০২৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহকে লিতানি নদীর উত্তরে সরে যেতে এবং নিরস্ত্র হতে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে ইসরায়েলেরও লেবাননের দখলকৃত এলাকা ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও দক্ষিণ লেবাননের অন্তত পাঁচটি স্থানে ইসরায়েলি সেনা অবস্থান করছে এবং প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে।
মিসর জানিয়েছে, দেশটির ভূখণ্ডে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে কোনো ধরনের হামলা হলে তা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সমান বিবেচিত হবে। মিস্রীয় শীর্ষ নিরাপত্তা সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে কায়রোতে থাকা হামাস নেতাদের টার্গেট করতে পরিকল্পনা করেছে এবং একাধিক চেষ্টা মিসর প্রতিহত করেছে। সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, “মিসরের ভেতরে হামলার যে কোনো প্রচেষ্টা আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন। সেই অনুযায়ী আমরা এটিকে যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে গণ্য করব এবং প্রতিশোধ নিতে পিছপা হব না।” এই ঘোষণা এমন সময় আসে যখন গত সপ্তাহে কাতারের রাজধানী দোহায় হামলা চালিয়ে হামাস নেতৃত্বকে টার্গেট করার খবরregional উত্তেজনা বাড়িয়েছে। দোহা আক্রমণের পরে মিসর–ইসরায়েল যোগাযোগ শীতল হয়ে পড়েছে এবং কায়রো এখন ইসরায়েলকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। মিসর কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে যে, সিনাই সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে — প্রাসঙ্গিক খবরে বলা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে যাতে গাজার পরিস্থিতির জেরে প্যালেস্টাইনির সম্ভাব্য তীব্র অবিলম্বে প্রবেশ ঠেকানো যায়। একই সঙ্গে মিসর বলেছে, দোহা হামলায় তাদের কোনো ভূমিকা বা সমন্বয় ছিল না। দেশটির এক সেনা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে ওই হামলায় কোনো ইসরায়েলি বিমান মিসরের আকাশপথ ব্যবহার করেনি এবং মিসরের পূর্ব সীমান্তে একটি চালু চীনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের কারণে অনুমতি ছাড়া কোনো বিমান প্রবেশ করা কঠিন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী Benjamin Netanyahu যে হুমকি উচ্চারণ করেছিলেন—“হামাসকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে টার্গেট করা হবে”—তার প্রেক্ষিতে কায়রোর বক্তব্য স্পষ্ট: মিসর নিজস্ব সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনও আপস করবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলছেন, মিসরের উদ্বেগ কেবল হামাসের প্রতি সিম্প্যাথি নয়; বিষয়টি দেশটির আঞ্চলিক মর্যাদা এবং মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাকে কেন্দ্র করে। কায়রো কোনোভাবেই 자신의 রাজধানীতে অপমান সহ্য করবে না, এবং এমন কোনো হামলা দেশটির কূটনৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করবে। ইতিহাসগতভাবে মিসর ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করা প্রথম আরব দেশ। তবু জনমানসে ইসরায়েলবিরোধী অনুভূতি রয়েছে এবং কায়রোকে মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত সমরূপতা বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকতে দেখা যায়। মিসর কর্তৃপক্ষ এখন তার প্রতিবেশী দেশগুলোকে সতর্ক করেছে যে খোলা সংঘাতের ঝুঁকি বাড়লে আঞ্চলিক সমীকরণ দ্রুত বদলে যেতে পারে। কায়রো জোর দিয়ে বলছে: উথিত কূটনৈতিক পথেই গাজার সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব। এই ঘোষণার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা বলছেন, যদি ঘটনাপ্রবাহ শig হয় তবে তা শীঘ্রই আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অনিশ্চিত করে তুলবে।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলার স্থানীয় বেতগঞ্জ বাজাএই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবুল কাশেম দুলু সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এডভোকেট দীপংঙ্কর বনিক সুজিতের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মনাজ্জির হোসেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সুহেল মিয়া, শাহজাহান মিয়া, এডভোকেট আব্দুল আহাদ জুয়েল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মুজাব্বির হোসেন অপু, ইমরান হোসেন শ্যামল, বিপ্লব খান, মো:শামিম আহমদ, সেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক সাদিকুর রহমান চৌধুরী, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতাউর চৌধুরী শাহীন প্রমুখ। এ ছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার আলম, লিয়াকত আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতহাব চৌধুরী হাসান, শাখাওয়াত হোসেন পলাশ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমন আহমেদ, ফয়সাল আহমেদ, মিছবাহ হোসেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মহিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মঈনুদ্দিন আহমেদ রিপন,সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম সৌরভ, বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম, ময়না মিয়া,স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুজেল আহমেদ, আবুল হাসনাত, জেলা ছাত্রদল নেতা ইয়াহিয়া হাসান প্রমুখ। এ সময় সদর উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন,বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের দুঃসময়ে যারা রাজপথে নির্যাতিত ও নিপিিতড় হয়েছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ভবিষ্যতের ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঘেঁষা বা ফ্যাসিস্টদের সাথে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে কমিটিতে রাখা যাবে না বলেও তারা দাবি জানান। দুর্দিনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন তাদেরকে কমিটিতে মুল্যায়ন করা হবে। তারা বলেন,সুনামগঞ্জে জাতীয়তাবাদি শক্তির প্রাণপূরুষ এবং বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জেল জুলুম,হুলিয়া মাথায় নিয়ে এই সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা কেবল জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তূমান জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৪(সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে ছিলাম এবং আগামী নির্বাচনে এই আসনে জনপ্রিয় ধানের শীষের প্রার্থী একমাত্র নুরুল ইসলাম নুরুলকে বিএনপির প্রার্থী করতে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া,ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট তৃণমূলের নেতৃবৃন্দরা জোর দাবী জানান।
সুনামগঞ্জে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর কোন সুযোগ নেই। অবাধ,সুষ্ঠ সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সরকারের পাশাপাশি সকল বাহিনী ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার লাউরেরঘর এলাকায় শ্রী শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভুর মন্দির কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এসব কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সরকার নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে এবং নির্বাচন কমিশন সেই অনুযায়ী কাজ করবে। সেই সাথে ইতিমধ্যে পুলিশের ট্রেনিং, সেনাবাহিনীর কতজন লোক থাকবে সেই কাজও শুরু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা নির্ধারিত তারিখে এই সরকার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎস উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ করতে পারবে সেই প্রস্তুুতি সরকারের আছে। এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা আমাদের পুরোনো ঠিকানায় চলে যাবো। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক ডাঃ মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক ,শ্রী শ্রী অদ্বৈত ধাম পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক অদ্বৈত রায় ও সুরঞ্জিত চৌধুরী টপ্পা প্রমুখ।
“মিস এন্ড মিসেস এলিগেন্স বাংলাদেশ সিজন ওয়ান”–এ প্রথম রানার্সআপ আদ্রিজা আফরিন সিনথিয়া দেশের আয়োজিত বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতা “মিস এন্ড মিসেস এলিগেন্স বাংলাদেশ সিজন ওয়ান”-এ প্রথম রানার্সআপের মুকুট জয় করলেন তরুণ ফ্যাশন মডেল আদ্রিজা আফরিন সিনথিয়া। ফ্যাশন জগতে ইতিমধ্যেই তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কাজ করে। শুধু মডেলিং নয়, সিনথিয়া অভিনয়ের ক্ষেত্রেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন বুকে লালন করছেন। ইতোমধ্যে তিনি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সাদেক সিদ্দিকীর পরিচালনায় “দেনা পাওনা” সিনেমায় অভিনয় করছেন। রানার্সআপের মুকুট মাথায় পরার পর আবেগে আপ্লুত সিনথিয়া জানান—ঢালিউড কুইন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস আমাকে মুকুট পড়িয়ে দিয়েছেন এই আনন্দ আমি বুঝাতে পারবো না। “এই সাফল্য আমার জন্য অনেক বড় অর্জন। তবে আমি শুধু এখানেই থেমে থাকতে চাই না। আমি চাই নিজেকে মিডিয়া অঙ্গনে আরও দূর, বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে। দেশবাসীর কাছে আমি দোয়া চাই।” আজকের এই অর্জন আমি আবার মা বাবা পরিবার এবং আমাকে যারা সাপোর্ট করেছেন তাদেরকে উৎসর্গ করতে চাই। বহু বাধা ও প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছেছেন সিনথিয়া। তাঁর অদম্য চেষ্টা, আত্মবিশ্বাস আর স্বপ্নই তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাশন থেকে চলচ্চিত্র—সব জায়গাতেই আলো ছড়ানোর ইচ্ছে তার। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে সিনথিয়া এখন এক অনুপ্রেরণার নাম। তাঁর কথায়— “এই মুকুট আমার স্বপ্নযাত্রার প্রথম ধাপ মাত্র। সামনে আরও অনেক পথ, আরও অনেক লড়াই।”
স্বামীর অতিরিক্ত লোভের কারনে আত্মহত্যার পথ বেচে নিল চট্টগ্রামের মেয়ে আবিদা তাসমিন ঘটনাটি ঘটে জিইসির মোর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ইসমাইল টাওয়ারের (২য়) তলায় তথ্য সুত্রে জানাযায় গত ১৬/০৯/২০১৯ সালে সাইফুদ্দিন মাহমুদ মারুফ (৩৮) এর সাথে আবিদা তাসমিন (৩২) এর সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পরবর্তী কিছু বছর তাদের দাম্পত্য জীবন স্বভাবিক ছিল। কিন্তু ইসমাইল টাওয়ারের ফ্ল্যাট টি ছিল আবিদা তাসমিন (৩২) এর নামে। উক্ত ফ্ল্যাটটি তাহার স্বামির নামে লিখে দেওয়ার জন্য তাসমিনকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু তাসমিন উক্ত ফ্লাটটি স্বামীর নামে লিখে না দেওয়ায় গত ২ বছর যাবৎ তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি ও পারিবারিক কলহে লিপ্ত হইয়া তাসমিনকে মারধর ও মানসিক অত্যাচার করতে লাগলো। তার স্বমীর এসব কর্মকান্ডে তাসমিন মানসিক ভাবে প্রচন্ড বিপর্যস্ত এবং নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করিছিল। এই বিষয়ে বিভিন্ন সময় তাসমিনকে হুমকি ও দিত। ০২/১০/২০২৫ ইং তারিখআনুমানিক ০৭:০০ ঘটিকার সময় আবিদা তাসমিন (৩২) তাহার স্বামী সাইফুদ্দিন মাহমুদ মারুফ এর সঙ্গে প্রতিবেশীর ফ্ল্যাটে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। কিছুক্ষণ পর অর্থাৎ ০২/১০/২০২৫ ইং তারিখ অনুমানিক সন্ধ্যা ০৭:৩০ হতে অনুমান ০৭:৪০ মিনিটের মধ্যে হঠাৎ বিল্ডিং এর নীচ থেকে লোকজনের চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাই। শোরগোলের আওয়াজ শুনে প্রতিবেশীরা বিল্ডিং এর নীচে গিয়ে দেখতে পাই আবিদা তাসমিন (৩২) রক্তাক্ত অবস্থায় বিল্ডিং এর মূল গেইটের সামনে রাস্তায় পরে আছে। তথ্য সুত্রে জনা যায় তাসমিন ৯ তলা ভবনের ছাদের উপর থেকে আত্মহত্যার জন্য লাফ দিয়ে নীচে পড়ে যায়। তৎক্ষণাৎ তাহার স্বামী সাইফুদ্দিন মাহমুদ মারুফ ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাসমিনকে প্রথমে চট্টগ্রাম চকবাজার থানাধীন মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ও পরবর্তীতে পার্কভিও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পার্কভিও হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাসনিমের অবস্থা আশংকা জনক দেখে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। ০২/১০/২০২৫ ইং তারিখ আনুমানিক ০৯:০০ ঘটিকার সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আবিদা তাসমিন (৩২) কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ০২/১০/২০২৫ ইং তারিখ ১০ ঘটিকার সময় মৃত ঘোষনা করেন। ডাক্তার আবিদা তাসমিন (৩২) এর মৃত্যুর কারণ Brought in Dead/Fall from height বলে উল্লেখ করেন। উক্ত ঘটনা নিয়েঐ এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্দেশে চকবাজার থানার একটি চৌকশ টিমের সহায়তায় ঘাতক স্বামী মারুফকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাই এলাকার জনগণের একটাই দাবি আর কত মেয়ে স্বামীর লোভের কারণে তার পথ বেছে নেবে তাই দ্রুত এই লোভী নরঘাতক পাষন্ড স্বামীকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করার প্রশাসনের কাছে করার জন্য অনুরোধ জানান।