টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (রাত ১টার দিকে) ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাতের ওই সময়ে দীপ্ত একটি গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়ান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশ দিয়ে আসা আরেকটি বাস হঠাৎ সামনে চলে আসে। এ সময় দুই গাড়ির মাঝখানে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেও ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সদ্য স্নাতক। তিনি ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহর একমাত্র পুত্র। পরিবারের সঙ্গে তিনি মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটি কবরস্থান এলাকায় বসবাস করতেন। পড়াশোনা শেষ করে সম্প্রতি দেশের একটি খ্যাতনামা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দিনাজপুর অঞ্চলে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।পরিবারের সদস্যরা জানান, কর্মস্থল দিনাজপুর থেকে বৃহস্পতিবার মির্জাপুরে ফিরছিলেন দীপ্ত। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও তিনি মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মির্জাপুরের কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ফেরাই যে হবে তার শেষ ফেরা—তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।শুক্রবার বাদ জুমা মির্জাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় শিক্ষক, সাংবাদিক, সহপাঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।দীপ্তর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষক সমাজ, স্থানীয় সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে সিঙ্গার কোম্পানির এক তরুণ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক শহীদুল্লাহ খানের একমাত্র ছেলে। পারিবারিকসূত্রে জানা যায়, দীপ্ত মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটী কবরস্থান এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। পরিবার জানায়, সিঙ্গার কোম্পানিতে দিনাজপুর জেলা ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন দীপ্ত। সাপ্তাহিক ছুটিতে দিনাজপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার রাতে মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় পৌঁছে বাস থেকে নামার পাঁচ মিনিট আগেই তিনি মুঠোফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু বাস থেকে নামার পরপরই অজ্ঞাত একটি দ্রুতগামী যান তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, তারা বহুবার ফোন করেও দীপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ পাননি। পরে কিছুক্ষণ পর মির্জাপুর থানা পুলিশই ফোন করে তাদের দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে। হঠাৎ করে পরিবারের ভবিষ্যৎ ভেঙে যাওয়ায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো মির্জাপুরে। সদ্য লেখাপড়া শেষ করে স্বপ্ন নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করা এই তরুণের অকাল মৃত্যু সহপাঠী, সহকর্মী ও এলাকাবাসীর মনে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল সারোওয়ার বলেন, “দুর্ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনার যানটি শনাক্তে আমাদের তদন্ত চলছে।” এদিকে এলাকাবাসী দ্রুতগামী যানবাহনের বেপরোয়া গতিকে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে মহাসড়কে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সোনামুই উত্তরপাড়া জামে মসজিদের শুভ উদ্বোধন করলেন এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু সংবাদদাতা : এস কে শিপন টাঙ্গাইলের সোনামুই উত্তর পাড়া এলাকায় নবনির্মিত সোনামুই উত্তরপাড়া জামে মসজিদ-এর শুভ উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠিত হয়। এ শুভ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেন এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু, সাবেক উপমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানস্থলে এডভোকেট সালাম পিন্টুর সঙ্গে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় মুসল্লি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। উদ্বোধনী বক্তব্যে এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, “আমি যদি এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনতার ভালোবাসায় এমপি নির্বাচিত হতে পারি, তবে টাঙ্গাইল জেলার মানুষের কল্যাণে সর্বদা সমাজসেবার কাজে পাশে থাকব ইনশাল্লাহ।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এলাকার সার্বিক উন্নয়নকাজে তিনি কার্যকর ভূমিকা রাখতে চান। অনুষ্ঠানের শেষে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাকে ফুলের মালা পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। পরে তিনি নিজ হাতে মসজিদের উদ্বোধনী কাজের সূচনা করেন। স্থানীয়দের মতে, নতুন এই জামে মসজিদটি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করবে এবং ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় নবম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ে বন্ধ হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতি ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের ফলে বাল্য বিয়ে বন্ধ হওয়ায় এলাকাজুড়ে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলুয়া গ্রামের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে একই গ্রামের আবু সামা মিয়ার ১৭ বছর বয়সী ছেলে জিসান মিয়ার সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। বিষয়টি গোপন থাকলেও খবর পায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়। খবর পেয়ে সুপারভাইজার মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে কয়েকজন স্টাফ শিশু কন্যার বাড়িতে গিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বাল্য বিয়ে বন্ধে বাধা দেন এবং কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। স্থানীয়রা জানান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুর রহমান মাস্টার, সহ-সভাপতি মফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মোসলেম মিয়া সহ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির সহযোগিতায় বাল্য বিয়ের আয়োজন চলছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের টিম ফিরে এসে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। পরে রাতেই ইউএনও জোহরা সুলতানা যূথী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাইমিনুল ইসলামসহ প্রশাসনের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতে বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং মেয়েটির মাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ইউএনও বলেন,“উপজেলায় কোথায় বাল্য বিয়ে হচ্ছে এমন খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে নামবে প্রশাসন। বাল্য বিয়ে রোধে জড়িত যেই হোক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযান শেষে প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্থানীয়দের সচেতন করেন এবং মেয়ের পরিবারকে আইনগত ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করেন। অন্যদিকে, সামাজিকভাবে এই ঘটনায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করলেও বাল্য বিয়েতে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের অভিযানে ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত সিআর পরোয়ানায়-০১জন, সিআর পরোয়ানায়-০৩জন, জিআর পরোয়ানা-০১জন, নিয়মিত মামলায় ০২জন, পুলিশ আইন-৩৪ ধারায়-০৩জনসহ মোট-১০জন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। আজ দুপুরে অফিসার ইনচার্জ,বেগমগঞ্জ মডেল থানার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়, জেলা পুলিশের দিক নির্দেশনা ও বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আঃ বারী এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে থানার এএসআই(নিরস্ত্র) মোঃ ইলিয়াছ উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত সিআর পরোয়ানা ৬৩৪/২০২১ দায়রা-১১৩৮/১৯, এর আসামী ১।দিপক মজুমদার, পিতা-হরেরাম শীল, সিআর পরোয়ানা-৭৬২/২৫ এর আসামী ২। জাহানারা, পিতা-মোঃ মনির, মাতা-আংকুরের নেছা, উভয় সাং-গণিপুর চৌমুহনী পৌরসভা, সিআর পরোয়ানা-৭৬৪/২৫ এর আসামী ৩। বিবি উম্মে সালমা, পিতা-আবদুল মান্নান, মাতা-ছকিনা বেগম, সাং-মীরওয়ারিশপুর, এএসআই(নিঃ) মোঃ শাহাজাদা সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় সিআর পরোয়ানা ২৯০/২০ এর আসামী ৪। কবির হোসেন মিলন, পিতা-মৃত তনু মিয়া, সাং-আলাইয়ারপুর। এএসআই(নিঃ) মোঃ করিব হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় জিআর পরোয়ানা ১৯/২৫ এর আসামী ৫। জাহাঙ্গীর(৩০), পিতা-মৃত শহিদ উল্যাহ, সাং-বারইচতল। এসআই(নিঃ) মোঃ খোরশেদ আলম সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় বেগমগঞ্জ মডেল থানার নিয়মিত মামলা নং-০৪(১২)২৫ এর আসামী ৬। নিজাম উদ্দিন প্রঃ রুবেল(৩৪), পিতা-মৃত আব্দুর রব, মাতা-আঙ্কুরের নেছা, সাং-হাজীপুর, ৭। মোঃ পারভেজ(২৮), পিতা-ইমন হাওলাদার, সাং-টঙ্গীপাড়া, থানা-টঙ্গীপাড়া, জেলা-মুন্সিগঞ্জ। এসআই(নিঃ) মাহামুদুল হক সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় ৮। মহিন উদ্দিন প্রঃ নান্নু(৩০), পিতা-আব্দুল জাব্বার, মাতা-ফরিদা আক্তার, ৯। মোঃ দেলোয়ার হোসেন(৪৫), পিতা-মোঃ হানিফ, মাতা-দূরলফী বেগম, উভয় সাং-নাজিরপুর, ১নং ওয়ার্ড, চৌমুহনী পৌরসভা, ১০। মোঃ সজিব(২০), পিতা-নুরুল ইসলাম, মাতা-বিবি মরিয়ম, সাং-পশ্চিম শোলকিয়া, ৬নং ওয়ার্ড, ৯নং কালাদরাপ ইউপি, থানা-সুধারাম গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিধি মোতাবেক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বেগমগঞ্জ মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আঃ বারী জানান, পুলিশ কর্তৃক বিশেষ অভিযান এর কার্যক্রম চলমান আছে। এছাড়াও থানা এলাকায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত ও নিয়মিত মামলার আসামী গ্রেফতারসহ অবৈধ অস্ত্র ও অবৈধ মাদক উদ্ধার সংক্রান্তে অভিযান অব্যাহত থাকবে, এইসব কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য গণমাধ্যমের সহায়তা আশা করে
টাঙ্গাইলে পোষা প্রাণীসহ বিড়াল, ইঁদুর, শেয়াল ও কুকুরের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব রোগীর জন্য র্যাবিস টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও সরকারি হাসপাতালে প্রায় সারা বছরই টিকার সংকট বিরাজ করছে। এর ফলে রোগীদের বাইরে থেকে টিকা কিনতে বাধ্য হতে হচ্ছে। যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তারা টিকা না পেয়ে গুরুতর ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন। ২৫০ শয্যার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রতি মাসেই দেখা যায় জলাতঙ্ক রোগের র্যাবিস টিকা সংকট। শুধু র্যাবিস নয়, প্রায় এক বছর ধরে সরকারিভাবে আরআইজি (ইমিউনোগ্লোবুলিন) টিকার সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এতে নিম্নবিত্ত রোগীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী টিকা নিতে আসেন। কিন্তু সরকারি সরবরাহ কম থাকায় অনেক রোগী টিকা না পেয়ে বিপাকে পড়েন। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে অতিরিক্ত দামে টিকা কিনতে হচ্ছে তাদের। রোগীর স্বজনরা জানান, প্রতিটি ‘প্রাতটি’ ভ্যাকসিন (চার ডোজ) ৪৭০–৫০০ টাকায় কিনে নার্সদের দিতে হয়। র্যাবিস টিকার প্রতিটি ডোজে খরচ হয় ১২০–১২৫ টাকা। তিন ডোজ নিতে একজন রোগীর ৩৬০–৩৭৫ টাকা লাগে। ওজনভেদে এক থেকে তিনটি আরআইজি টিকা প্রয়োজন হয়, যেখানে খরচ দাঁড়ায় ৮২০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। সরকারিভাবে টিকার সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ফার্মেসিগুলোতে পর্যাপ্ত টিকা মজুদ রয়েছে। তবে সেখানেও সংকট দেখিয়ে দ্বিগুণ দাম আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অনেক রোগী র্যাবিস টিকা সংকট সম্পর্কে জানেন না; হাসপাতালে এসে যখন টিকা কিনে আনতে বলা হয়, তখন বিপাকে পড়েন। হাসপাতালের নার্স ও ওয়ার্ড বয়রা জানান, বাইরে থেকে আনতে হয় বিষয়টি রোগীদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়—না জানালে পরে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও জানিয়েছেন, “চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম।” বরাদ্দ পেলেও দুই দিনেই তা শেষ হয়ে যায়। প্রতি মাসে মাত্র ৩০০–৪০০ র্যাবিস ভ্যাকসিন আসে, যা চাহিদার তুলনায় অতি অপ্রতুল। এই চিত্র শুধু জেলা হাসপাতালেই নয়—জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই অবস্থা। উপজেলা পর্যায়ে কোনো র্যাবিস কিংবা আরআইজি টিকা মজুদ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে প্রাণীর কামড়ে আক্রান্তদের টিকা সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে, জেলার নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য জলাতঙ্ক প্রতিরোধ এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি টিকার ঘাটতি না কাটলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোকছেদুর রহমান জানান, তিন আরোহী একটি মোটরসাইকেলে করে গারোবাজার থেকে ঘাটাইলের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে অতিরিক্ত গতি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোয় মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশের একটি গাছের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই আরোহী মারা যান এবং অপরজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন প্রথমে তাদের উদ্ধার করে। পরে আহত ব্যক্তিকে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )আরও বলেন, “মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ছিলেন। অতিরিক্ত গতি এবং হেলমেট না পরার কারণে মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়েছে। পরিচয় শনাক্তের পর পরিবারকে জানানো হবে।”
সাজিদ পিয়াল:আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর চালু, অনিবন্ধিত মোবাইল নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। দেশে প্রথমবারের মতো মোবাইল ফোনের জাতীয় পরিচিতি নিবন্ধন ব্যবস্থা—ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)—আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হতে যাচ্ছে। তবে সুবিধার কথা বিবেচনা করে বর্তমানে ব্যবহৃত অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনগুলো আগামী বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,দেশে মোবাইল ফোন চোরাচালান, ক্লোনড ও রিফার্বিশড ফোনের অনুপ্রবেশ রোধ, পুরোনো বিদেশি ফোনের বাজারে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, ছিনতাই ও চুরি হওয়া ফোন শনাক্ত, অনলাইন জুয়া, এমএফএস ও ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধের জন্য এনইআইআর চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে শুল্ক ফাঁকি রোধ করাও এ ব্যবস্থার অন্যতম লক্ষ্য।ব্যবসায়ীদের দাবিতে সময় বাড়ল গত তিনদিন মোবাইল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার পর দেশজুড়ে থাকা সকল অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সময় ১৬ ডিসেম্বরের বদলে ১৫ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোবাইল আমদানিতে বাধা নেই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়— মোবাইল ফোন আমদানিতে কোনোরূপ নিষেধাজ্ঞা নেই। কত পুরোনো ফোন বা কোন মডেল আমদানি করা যাবে, তা মন্ত্রণালয় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে জানাবে।আমদানির বিষয়টি সরকারকে অবহিত করতে হবে।শুল্ক পুনর্নির্ধারণে এনবিআর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্টের প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান।বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে বলা হয়, এনইআইআর চালুর মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ ফোনের ব্যবহার বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হবে। তাই এ বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো বা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার যেকোনো অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এনইআইআর উদ্বোধন করা হবে, যেখানে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির নেতারা সমর্থন জানিয়েছেন।
জন্মের পর থেকেই শ্বাসকষ্ট ও দুর্বলতায় ভুগছিল ছোট্ট ইসরাত জাহান আছিয়া। বয়স মাত্র ২ বছর ৩ মাস—কিন্তু এতটুকু বয়সেই জীবনের সঙ্গে লড়াই করছে সে। নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের রানীগাঁও গ্রামের এই নিষ্পাপ শিশুটির হৃদপিণ্ডে জন্মগত ছিদ্র ধরা পড়ে কয়েক মাস আগে। দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারটির পক্ষে এমন ব্যয়বহুল চিকিৎসা বহন করা ছিল প্রায় অসম্ভব। তখনই এগিয়ে আসেন দেশের আলোচিত মানবিক ব্যক্তিত্ব, অসহায়ের শক্ত ভরসার নাম—ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, আইন বিষয়ক সম্পাদক—কেন্দ্রীয় বিএনপি এবং মহাসচিব—জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।পরিবারটির আর্থিক অসহায় অবস্থা জানার পর তিনি দ্বিধাহীনভাবে ঘোষণা দেন, আছিয়ার সম্পূর্ণ চিকিৎসা, ভর্তি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশন ও পরবর্তী সকল খরচ আমার ব্যক্তিগত দায়িত্বে। তার এই উদ্যোগ পরিবারে ফিরিয়ে এনেছে আশার আলো ও বাঁচার সাহস। ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ব্যারিস্টার কায়সার কামালের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আছিয়াকে ভর্তি করা হয় ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। চিকিৎসক দল জানিয়েছে—আছিয়ার অপারেশনটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, তবে সময়মতো সার্জারি হলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। প্রস্তুত করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা ও সার্জিক্যাল টিম। পারিবারিক বাস্তবতা: দারিদ্র্যের মধ্যেও সন্তানের প্রতি অসীম স্নেহ, আছিয়ার বাবা আইনুল ইসলাম পেশায় দিনমজুর, মা ময়না আক্তার গৃহিণী। পরিবারের দুটি সন্তান—এক ছেলে ও এক মেয়ে। আছিয়া সবার ছোট; সবার আদর ও স্নেহের কেন্দ্রবিন্দু। শিশুটির জন্মের পর থেকেই তাদের জীবনে শুরু হয় দুঃশ্চিন্তার দিন। স্থানীয় চিকিৎসকদের ব্যাখ্যায় জানা যায়—আছিয়ার হৃদযন্ত্রে গুরুতর ছিদ্র রয়েছে, যা সময়মতো চিকিৎসা না হলে জীবন সংকট তৈরি করতে পারে। হাতে ছিল না প্রয়োজনীয় অর্থ, ছিল শুধু অসহায়ত্ব। মানবতার ফেরিওয়ালা কায়সার কামালের ধারাবাহিক সেবা, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ইতিমধ্যেই পরিচিত নাম। থেলাসেমিয়া, কিডনি বিকল, ক্যান্সার, চোখের চিকিৎসা, হার্ট সার্জারি—এমন বহু ব্যয়বহুল চিকিৎসার দায়িত্ব তিনি নিঃস্বার্থভাবে গ্রহণ করেছেন। আছিয়ার চিকিৎসা উদ্যোগটি তার পরিচালিত ৬ নম্বর ছিদ্র হার্ট অপারেশন । মানুষের কষ্ট লাঘব ও মানবতার সেবা তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। মানুষের দোয়া—আছিয়ার শক্তি ,রানীগাঁও গ্রামে এখন একটাই প্রার্থনা—আছিয়ার অপারেশন সফল হোক। পরিবার, প্রতিবেশী, আত্মীয়সহ এলাকার মানুষ ব্যারিস্টার কায়সার কামালের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। নিষ্পাপ এই শিশুটির মুখের হাসি ফিরিয়ে আনার জন্য সবার দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করেছেন তিনিও। শিশু আছিয়ার অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হোক—এই কামনাই সকলের। মানবতার কল্যাণে, অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর এই ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও আরও প্রসারিত হবে—ইনশাআল্লাহ।
‘মানবাধিকার, আমাদের নিত্যদিনের অপরিহার্য’’ এই প্রতিপাদ্যে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টারের আয়োজনে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহায়তায় নানা আয়োজনে এ দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষ্যে বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি পৌরশহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জন ক্রসওয়েল খকসি‘র সভাপতিত্বে, সংস্থার উপজেলা কোঅর্ডিনেটর পল সুকান্ত বিশ^াস এর সঞ্চালনায়, প্রধান অতিথি‘র বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সমবায় অফিসার বিজন কান্তি ধর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এডভোকেট এম এ জিন্নাহ্, প্রেসক্লাব সভাপতি তোবারক হোসেন খোকন, সাবেক সভাপতি মো: মেহান মিয়া, সংস্থার ফাইন্যান্স অফিসার পল সুকান্ত বিশ^াস প্রমুখ। এছাড়া কবি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এরপর থেকে সারাবিশ্বেই এই দিনে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। বর্তমানে বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধনের গড় হার ৫০ শতাংশ অর্থাৎ এখনো অর্ধেক মানুষকে নিবন্ধন না থাকার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক অধিকার পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। নিবন্ধনহীনতা দেশে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, মানবপাচারসহ বিভিন্ন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে ত্বরান্বিত করছে। একইভাবে, মৃত্যু নিবন্ধন না থাকায় উত্তরাধিকার প্রমাণেও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। আইন সংস্কারের মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম জনবান্ধব করতে হবে, যাতে কোনো মানুষই পরিচয়হীন না থাকে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ সকল মৌলিক অধিকার সমানভাবে ভোগ করতে পারে। এ কাজে সরকারের পাশাপাশি সকলকে সহায়তা করতে আহবান জানানো হয়।
যাদের জন্য সেতু নির্মাণ, সেই ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের হাতে উদ্বোধন; উপকৃত হবে ৬ গ্রামের হাজারো মানুষ, নেত্রকোণার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা এলাকার জনজীবনে দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় সমস্যা ছিল “বৈঠাখালি মঙ্গল শরি” নদী পারাপার। নদীতে সারা বছর পানি থাকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হতো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কৃষক, নারী ও সাধারণ পথচারীদের। সরকারি উদ্যোগের অভাবে বহু বছর ধরে এলাকা ছিল অবহেলিত। আর সেই দুর্ভোগের মধ্যেই স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত হলো ১০৫ ফুট দীর্ঘ কাঠ-বাঁশের সেতু—যা নির্মাণ করে দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। ২৯/১১/২০২৫ ইং নাজিরপুর কৃষক সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখতে পান—স্কুলের শ’খানেক ছাত্র-ছাত্রী এবং কয়েকজন শিক্ষক নদীর পাড়ে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করছেন। তিনি গাড়ি থামিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান এবং জানতে চান সমস্যার কারণ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল কে জানান, স্যার, প্রতিদিনই এই নদী পার হতে গিয়ে আমরা বহু কষ্ট করি। বর্ষায় নৌকা না পেলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকে। গ্রামবাসীর জন্যও নদী পার হওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই কথাগুলো তাঁকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নেন—এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নির্দেশনা ও আশ্বাসে স্থানীয় জনগণ, ছাত্রদের অভিভাবক, যুবসমাজ এবং দলীয় কর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসেন। মাত্র একদিনের প্রস্তুতির পরই শুরু হয় সেতু নির্মাণ। ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে শুরু হওয়া এই কাজটি দিনে-রাতে অব্যাহত থাকে। নির্মিত সেতুর বৈশিষ্ট্য—দৈর্ঘ্য: ১০৫ ফুট ,প্রস্থ: ৫ ফুট কাঠ ও বাঁশের সমন্বয়ে মজবুতভাবে তৈরি বর্ষাকালসহ সারা বছর ব্যবহারযোগ্য করে নকশা করা স্থানীয় প্রবীণ নাগরিকদের মতে, “বিগত ৩০ বছরে এমন কাজ কেউ দেখেনি। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত, এত দ্রুত কাজ—এটি এলাকার মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।” ১০ ডিসেম্বর: আবেগঘন উদ্বোধন ,মাত্র চার দিনের প্রচেষ্টায় সেতুটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে। এরপর ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, সেতুটির উদ্বোধনে ছিল অনন্য একটি দৃশ্য—কোনো রাজনৈতিক নেতা বা অতিথি নয়, সেতুটি উদ্বোধন করেন সেই শিশু-কিশোর, শিক্ষক এবং গ্রামবাসী, যাদের দৈনন্দিন জীবনের কষ্ট লাঘবের জন্যই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী মুহূর্তে উপস্থিত লোকজন বলেন, “এটি শুধু একটি সেতু নয়—এটি আমাদের বাঁচার স্বস্তি, আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা।”৬ গ্রামের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব নতুন সেতুটি চালু হওয়ায় উপকৃত হবে—২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী,পার্শ্ববর্তী জামে মসজিদের অসংখ্য মুসল্লি,কৃষক, দিনমজুর, কর্মজীবী মানুষ,এবং মোট ৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষ, যাদের প্রতিদিনের যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হয়েছে। স্থানীয় নারীরা জানান, হাসপাতাল, বাজার ও স্কুলে যেতে আর আগের মতো দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে প্রশংসা জানিয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন—মানুষের সমস্যা শুনে চুপ থাকা আমাদের কাজ নয়। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি কারণ মানুষের কষ্ট সহ্য হয় না। উন্নয়ন ও মানবসেবা—এই দুটি বিষয়ই আমার অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন,জনগণ সহযোগিতা করলে আরও অনেক এলাকায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে। এলাকার জনপ্রিয় মহল এবং প্রবীণদের মন্তব্য—ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখিয়ে দিলেন—উদ্যোগ চাই, কাজ করা সম্ভব। এটি মানুষকে সম্মান দেওয়ার নজির। আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা আজ নিশ্চিত হলো। দুর্গাপুর–কলমাকান্দা অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সক্রিয় ভূমিকা মানুষের মধ্যে নতুন আস্থা সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসা সহায়তা, রাস্তা-মেরামত, সেতু নির্মাণ, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো—সব ক্ষেত্রেই তাঁর কার্যক্রম জনমনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। এই কাঠের সেতু তাই শুধু একটি স্থাপনা নয়—এটি জনকল্যাণমুখী রাজনীতির জীবন্ত উদাহরণ।
টাঙ্গাইলে কাভার্ড ভ্যানকে ট্রাকের ধাক্কা: নিহত ২ টাঙ্গাইলের কান্দিলা এলাকায় ০৯/১২/২০২৫ ইং তারিখ রোজ মঙ্গলবার রাত প্রায় ১০টার দিকে কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত কাভার্ড ভ্যানের পিছনে দ্রুতগতির একটি ট্রাক এসে ধাক্কা দিলে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা জানান, রাতের অন্ধকারে হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে তারা ছুটে এসে মহাসড়কে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দেখতে পান। সংঘর্ষের ফলে কাভার্ড ভ্যানের পেছনের অংশ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রী মারা যান। দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধারসহ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত যান দুটি রাস্তার পাশের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলে। এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ট্রাকটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে এবং মরদেহ দুটি পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।এ দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কে দ্রুতগতির যানবাহনের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে, তাই নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
টাঙ্গাইলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় চালকসহ দুই জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিন জন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার কান্দিলা বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাতের অন্ধকারে প্রচণ্ড শব্দে দুর্ঘটনার খবর দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। নিহতরা হলেন—শেরপুর জেলার বাসিন্দা ট্রাকচালক সোহেল এবং টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মুরগি ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান। নিহত দু’জনই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান বলেন, “জামালপুর থেকে ঢাকাগামী হাঁস-মুরগি বোঝাই ট্রাকটি সামনে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই জনের মৃত্যু হয়। আহত তিন জনকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনায় মহাসড়কে সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হলেও দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কে অতিরিক্ত গতি ও অসতর্ক ড্রাইভিংয়ের কারণে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের তিনটি সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল আলম সরকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করা হয় এ মতবিনিময় সভা। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সমন্বয় জোরদার করার উদ্দেশ্যে এটি ছিল পুলিশ সুপারের প্রথম আনুষ্ঠানিক পরিচিতি সভা। সভায় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল প্রিণ্ট মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আবু জুবায়ের উজ্জল, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শামসাদুল আখতার শামীম, সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন, উত্তর টাঙ্গাইল টেলিভিশন রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।এ ছাড়া তিন সংগঠনের শতাধিক সাংবাদিক, রিপোর্টার, ক্যামেরাপার্সন ও গণমাধ্যম প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মতবিনিময় সভায় বক্তারা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সাংবাদিকদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা বলেন, টাঙ্গাইলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সাংবাদিকদের সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সমাজ ও প্রশাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল আলম সরকার তার বক্তব্যে বলেন,“পুলিশ ও সাংবাদিক একে অপরের পরিপূরক। আমরা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবো, আপনারা সঠিক সংবাদ প্রচার করে সমাজকে সহায়তা করবেন। একসঙ্গেই টাঙ্গাইলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও স্থিতিশীল ও উন্নত করা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন,“আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট টাঙ্গাইলসহ দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ যেন নিরাপদে, বাধাহীনভাবে ভোট দিতে পারে—এটাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কোনো অনিয়ম যাতে না ঘটে সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবো।” পুলিশ সুপার জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় নতুন করে পুলিশ সুপার পদায়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন,“আমি টাঙ্গাইলে দায়িত্ব নিয়েছি নির্বাচনকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ করতে। ভোটারদের যেন বিগত নির্বাচনের মতো কোনো দুর্ভোগে না পড়তে হয়। কেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা, টহল ও নজরদারির সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সভা শেষে সাংবাদিকরা পুলিশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং টাঙ্গাইলের সার্বিক নিরাপত্তা ও উন্নয়ন কাজের সঙ্গে গণমাধ্যমের অংশীদারিত্ব অব্যাহত থাকবে বলে মত দেন।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ট্রাকের চাপায় মোঃ রনি মিয়া (২০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে টাঙ্গাইল–ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্টের শাহপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘাটাইল থানার ডিউটি অফিসার এএসআই মোঃ সায়েম হোসেন। নিহত রনি মিয়া টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার জহুর আলীর ছেলে। তিনি মধুপুর তৌফিক প্লাজায় একটি দোকানে ব্যবসা করতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য হওয়ায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে রনি মোটরসাইকেলে করে মধুপুর থেকে ঘাটাইলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে শাহপুর এলাকায় পৌঁছালে পেছন দিক থেকে একটি দ্রুতগামী ট্রাক তার মোটরসাইকেলকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার পর ট্রাকটি রনিকে চাপা দিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা ছুটে এসে রনির মরদেহ সড়কের পাশেই দেখতে পান এবং পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘাটাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এএসআই মোঃ সায়েম হোসেন বলেন, “ট্রাকটি দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। অন্ধকারের কারণে গাড়ির নম্বর কিংবা পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ শনাক্ত করতে পারেনি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহসহ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।” এদিকে, আকস্মিক এই মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের পরিবার, স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও দেখা দিয়েছে। তারা ঘাতক ট্রাক ও চালককে শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন
টাংগাইলের বাসাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত। ০৯/১২/২০২৫ ইং তারিখ রোজ মঙ্গলবার বর্ণাঢ্য র্যালি, শপথ গ্রহণ ও আলোচনা সভায় দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেতনতার আহ্বান জানান।টাঙ্গাইলের বাসাইলে যথাযোগ্য মর্যাদা, নানা কর্মসূচি এবং ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০২৫। সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসন, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সকালে উপজেলা চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। র্যালির শ্লোগানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বার্তা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। পরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। বক্তারা বলেন, দুর্নীতি একটি রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। পরিবারের শিক্ষা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিটি স্তরে সততা, স্বচ্ছতা এবং নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব। তারা আরও উল্লেখ করেন, তরুণ প্রজন্মকে সঠিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করে দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করাই দীর্ঘমেয়াদী সমাধান। সভা শেষে সকল উপস্থিতির অংশগ্রহণে দুর্নীতি বিরোধী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শপথে নৈতিকতা চর্চা, দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আচরণ এবং যেকোনো ধরণের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অঙ্গীকার করেন সবাই।দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা, পোস্টার প্রদর্শনী, রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পরে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দিবসটি উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে বাসাইলবাসীর মাঝে দুর্নীতি প্রতিরোধে নতুন সচেতনতা সৃষ্টি হয়, যা স্বচ্ছ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
সাজিদ পিয়াল: নাগরপুর–টাঙ্গাইল সড়কের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন। নাগরপুর থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত সড়কের অবর্ণনীয় ভোগান্তি, দীর্ঘদিনের খানা-খন্দক, এবং চলাচলের চরম দুরবস্থার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও পরিবহনচালকদের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ১১টার দিকে নাগরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েক শতাধিক মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন। হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে তারা দ্রুত সড়ক সংস্কার ও কাজের গতি বাড়ানোর দাবি জানান। অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নাগরপুর–টাঙ্গাইল প্রধান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েক কিলোমিটারজুড়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, খানাখন্দে যাত্রীবাহী বাস, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে যানবাহন, আর ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বক্তারা আরো বলেন, বিভিন্ন সময় সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। তাই অবিলম্বে রাস্তার কাজ শুরু করে দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তারা। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন সংগঠনগুলো। মানববন্ধনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, পরিবহন শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
ওয়াজের মঞ্চে স্ট্রোক, হাসপাতালে বক্তার মৃত্যু তাফসির মাহফিলের মঞ্চে তখন ছিল এক গভীর, নিবিড় নীরবতা। মঞ্চ জুড়ে বসে থাকা হাজারো মানুষ প্রিয় বক্তার বক্তব্যে ডুবে ছিলেন। তাঁর কণ্ঠের মাধুর্য, হৃদয়ছোঁয়া উপস্থাপনা, তিলাওয়াত ও ব্যাখ্যা—সবকিছুতেই মুগ্ধ হয়ে শ্রোতারা মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন। ঠিক এমন সময়ই ঘটে যায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা, যা মুহূর্তেই পুরো মাহফিলস্থলকে স্তব্ধ করে দেয়। বয়ানরত অবস্থায় হঠাৎ করেই বক্তার ব্রেন স্ট্রোক হয়। তিনি হাতের মাইক্রোফোনসহ মঞ্চে লুটিয়ে পড়েন। প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি হয়তো অসুস্থ বোধ করায় বসে পড়েছেন; কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। মঞ্চের পাশে থাকা আয়োজকরা ছুটে গিয়ে তাঁকে ধরার চেষ্টা করেন, শ্রোতারা দাঁড়িয়ে যান, অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তৎক্ষণাৎ আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে তাঁকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই জানান, তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবার পরও তাঁকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এই আকস্মিক মৃত্যুর খবরে মাহফিল, এলাকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। বহু মানুষের জীবনে ছোঁয়া রেখে যাওয়া এই বক্তার মৃত্যু সবাইকে ব্যথিত করেছে। তাঁর বয়ান, ইসলামের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের মন জয়ের ক্ষমতা—সবকিছুই মানুষ স্মরণ করছে গভীর আবেগে। স্থানীয় ধর্মীয় অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাই এই ক্ষতিকে অপূরণীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসায় দোয়ার আয়োজন করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কাকুয়া হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এই মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন কাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদত হোসেন সাহা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল সদর আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম রাশেদ, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সচিব এডভোকেট আজিমুদ্দিন বিপ্লব, জেলা মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মমতাজ করিম, কাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম এবং কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে স্থানীয় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিতরা সকলেই দেশরত্ন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্রের সুরক্ষা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, বিএনপির নেত্রী দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশের মানুষের জন্য আবারও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। মাহফিলের শেষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালিত হয়, যেখানে উপস্থিত সকল নেতা-কর্মী দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করেন।
সাজিদ পিয়াল: টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল, সমন্বিত ও জনবান্ধব করতে রিজার্ভ অফিস এবং পুলিশ লাইন্সের বিভিন্ন ইউনিটের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার জনাব মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি পুলিশ লাইন্স, টাঙ্গাইলের আরআই অফিস, মেজর অফিস, ডি-ষ্টোর, সি-স্টোর, মেস, ব্যারাক, যানবাহন শাখা, রেশন স্টোরসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব দপ্তরের স্থাপনা, অবকাঠামো এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেন। পরিদর্শন চলাকালে পুলিশ সুপার মহোদয় প্রতিটি ইউনিটের সার্বিক শৃঙ্খলা, কার্যক্ষমতা, জনসেবা প্রদানের প্রস্তুতি, ফোর্সের কল্যাণব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা গভীরভাবে মূল্যায়ন করেন। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ, দপ্তরপ্রধান, কর্মকর্তা ও ফোর্স সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদের কর্মপরিবেশ, চ্যালেঞ্জ ও প্রয়োজনীয় উন্নয়নসংক্রান্ত তথ্য শুনে তা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, পুলিশের প্রতিটি ইউনিটই জননিরাপত্তা ও জনসেবার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই দাপ্তরিক কার্যক্রমে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্ব অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জনই পুলিশের মূল শক্তি—এই লক্ষ্য সামনে রেখে সকল কার্যক্রম আরও দ্রুত, দক্ষ ও জনবান্ধবভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি। পুলিশ সুপার মেস ও ব্যারাকে অবস্থানরত ফোর্সদের খাবার ব্যবস্থা, আবাসন, স্বাস্থ্যবিধি, বিশ্রামাগার, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক সুবিধা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দেন। যানবাহন শাখার কার্যক্রম, রক্ষণাবেক্ষণ, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং জরুরি সেবা প্রদানের প্রস্তুতি মূল্যায়ন করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্টোর ও দপ্তরের নথিপত্র ব্যবস্থাপনা, উপকরণ সংরক্ষণ এবং কার্যপ্রবাহ আরও উন্নত করার পরিকল্পনা নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরিদর্শনকালে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ লাইন্সে কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের ইনচার্জ, কর্মকর্তা ও ফোর্স সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সামগ্রিকভাবে এই পরিদর্শনকে পুলিশ সদস্যরা একটি উৎসাহব্যঞ্জক দিকনির্দেশনা হিসেবে দেখছেন, যা ভবিষ্যতে জেলা পুলিশের সেবা ও কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী ও জনমুখী করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে—মাদক সেবনের সময় হাতেনাতে চার যুবককে আটক করা হলেও রহস্যজনকভাবে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মাত্র একজনকে মাদক মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার রায়ের বাশালিয়া এলাকায়। চারজনকে আটকের পরের দিন শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রিপন শেখ নামে এক যুবককে ২০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে চরবামনহাটা এলাকায় এসআই শরীফ হায়দার আলী ও এএসআই অন্তর কুমার দাসের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় চারজনকে মাদক সেবনের অবস্থায় হাতেনাতে ধরা হলেও তিনজনকে বিভিন্ন তদবিরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাস্থলে পাওয়া মাদকের পরিমাণ ও মামলায় উল্লেখিত পরিমাণ নিয়েও দেখা দিয়েছে অসঙ্গতি। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভূঞাপুর থানার ফেসবুক পেজে ‘মাদকসহ একজন আটক’ শিরোনামে পোস্ট দেওয়ার পর নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন নেটিজেনরা—“হাতেনাতে ধরার পরও তিনজনকে ছেড়ে দিল কেন?”“আইন কি সবার জন্য সমান নয়?”“কার নির্দেশে বা কী বিনিময়ে এ সিদ্ধান্ত?” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বলেন, “মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কঠোর ভূমিকা আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু এমন ঘটনা মানুষের আস্থা নষ্ট করছে।” এ বিষয়ে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এসআই শরীফ হায়দার আলী বলেন, “একসঙ্গে চারজন ছিল ঠিকই, কিন্তু মাদক পাওয়া গেছে কেবল একজনের কাছ থেকে। তাই রিপন শেখের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অন্য তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” ভূঞাপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য দেখার পর এসআইকে জিজ্ঞেস করি। তিনি জানান, তিনজনের কাছে মাদক পাওয়া যায়নি। থানা থেকে মাদকের বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করা হয়। তদবিরের কোনো সুযোগ নেই।”তিনি আরও বলেন, “আমি কীভাবে কাজ করি, টাঙ্গাইলের সব সাংবাদিকরা জানেন।” এদিকে পুরো ঘটনাই এখন স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে—চারজন আটক হয়ে তিনজন মুক্ত, আর একজনের বিরুদ্ধে মামলা—এসব প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব জানতে আগ্রহী এলাকাবাসী।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।