গোপনে ভারতের হাতে মংলা বন্দরের নিয়ন্ত্রণ! বাংলাদেশের চারপাশ ঘিরে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র?

সম্প্রতি এক গবেষণাধর্মী পোস্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে—বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর মংলা পোর্ট এখন ভারতীয় এক কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে! ২০২৩ সালের জুলাই মাসে যখন দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে, ঠিক তখনই নীরবে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয় ভারতীয় কোম্পানি Indian Ports Global Limited (IPGL)-এর সঙ্গে।
এই কোম্পানি বিশ্বে মাত্র তিনটি বন্দরের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো—এই তিনটি বন্দরই কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
-
আরাকানের সিত্তা বন্দর (মায়ানমার) – বাংলাদেশকে এড়িয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য বিকল্প রুট।
-
ইরানের চাহাবার বন্দর – পাকিস্তানকে পাশ কাটিয়ে আফগানিস্তানে প্রবেশের রাস্তা।
-
এবং এখন বাংলাদেশের মংলা বন্দর – যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে অবস্থিত এবং ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা।
🔍 চুক্তির শর্তাবলী: রহস্যেই ঢাকা
ইরানের চাহাবার বন্দরের জন্য ভারত ১০ বছরের চুক্তি করেছে এবং সেটি প্রতি ৩ বছর অন্তর নবায়নযোগ্য। আরাকানের সিত্তা পোর্টের চুক্তি ৩০ বছরের জন্য। কিন্তু মংলা বন্দরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কত বছরের জন্য এই চুক্তি করেছে—সে বিষয়ে কোনো স্বচ্ছতা নেই। সরকারি দল, বিরোধী দল এমনকি চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরব রাজনীতিকরাও মংলা বন্দরের এই গোপন চুক্তি নিয়ে পুরোপুরি নীরব।
🇮🇳 ভারতের কৌশল: বাংলাদেশকে ঘিরে ফেলা?
ভারত আগে থেকেই চট্টগ্রাম ও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করছে ট্রানজিট সুবিধা হিসেবে। এখন মংলা বন্দর সরাসরি ভারতীয় কোম্পানির হাতে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর ভারতের প্রভাব অনেকাংশে বেড়ে গেল।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি ভারতের বৃহত্তর কৌশলের অংশ যেখানে তারা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব রুট তৈরি করছে—যেমন:
-
পাকিস্তানকে এড়িয়ে চাহাবার বন্দর,
-
বাংলাদেশকে এড়িয়ে সিত্তা বন্দর।
এবং এখন দেখা যাচ্ছে—বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেই একটি বন্দর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে।
⚠️ বঙ্গভূমি আন্দোলনের ছায়া?
অনেকে এই ঘটনাকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের নেতা চিত্তরঞ্জন সুতারের নেতৃত্বে চালানো ‘বঙ্গভূমি আন্দোলন’-এর পুনরুজ্জীবন বলে মনে করছেন। ঐ আন্দোলনে দাবি ছিল খুলনা, ফরিদপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে আলাদা করে ভারতের সাথে যুক্ত করার। যদিও এই দাবির কোনো বাস্তবতা নেই, তবে মংলা বন্দরের হস্তান্তরের পেছনে এমন দীর্ঘমেয়াদী ভূ-রাজনৈতিক পরিকল্পনা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।
❓ প্রশ্ন রয়ে যায়: চীন নয় কেন ভারত?
বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের অবদান স্পষ্ট। তাহলে কেন চীনের পরিবর্তে ভারতকে মংলা বন্দরের দায়িত্ব দেওয়া হলো? বিশেষ করে যখন ভারতীয় কোম্পানি IPGL-এর অতীত ইতিহাস ইঙ্গিত দেয় যে তারা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলো বেছে নিচ্ছে প্রতিবেশীদের প্রভাবমুক্ত করার লক্ষ্যে।
একটা খুব ইন্টারেস্টিং বিষয় খেয়াল করলাম, ইন্ডিয়ার কালাদান প্রজেক্ট যে বাস্তবায়ন হচ্ছে আরাকানের সিত্তা পোর্ট থেকে সেটার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশ কে এভয়েড করা এবং বাংলাদেশকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলা;
আবার মজার ব্যাপার হলো একই রকম প্রজেক্ট ইন্ডিয়া পাকিস্তান কে এভয়েড করেও… pic.twitter.com/C5YY8idO05
— Jashim (@jashim4truth) May 24, 2025
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন