বাংলাদেশের ধর্ম উপদেষ্টা ফ. ম. খালিদ হোসাইন বলেছেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং নৈতিক মূল্যবোধ পুনঃস্থাপনে আলেম-ওলামাদের ভূমিকা অপরিসীম। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, অন্তত ৩০ জন আলেম যদি জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন, তবে দেশের আইনপ্রণয়ন এবং নৈতিকতার চেহারা বদলে যাবে। তিনি আলেমদের জনগণের আরও কাছাকাছি যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তাদেরকে সামাজিক সংযোগ (কানেক্টিভিটি) বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের সুখ-দুঃখের ভাগীদার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ফ. ম. খালিদ হোসাইন উল্লেখ করেছেন, দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো জনগণের সহায়তায় পরিচালিত হয়, যা আলেমদের জনগণের সঙ্গে প্রাকৃতিকভাবে সংযুক্ত করেছে। তবে এই সংযোগ আরও বেগবান করা দরকার। তিনি বলেন, “যদি আলেমরা জনগণের পাশে থাকে এবং তাদের নেতৃত্ব দেয়, তবে একদিন ইসলামপন্থীরা এই দেশ পরিচালনা করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন। একে অপরের হাত ধরে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যদি ইসলামের আদর্শ লালনকারী সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে আগামী দিনের ইতিহাস বদলে যাবে।”
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ ওয়াজ শুনতে আসে, কিন্তু তারা কেন ভোট দেয় না? অতীতের ৫৩ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আমাদের ভোট পাওয়ার হার খুবই কম। তাই জনগণের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত হতে হবে। আলেমরা যদি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তবে সমাজের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ পুনর্নির্মাণ সম্ভব।”
তিনি ইসলামের ইতিহাসের বিভিন্ন যুগে আলেমদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। যেমন, ভারতের মুজাদ্দেদ আলফেসানী, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শাইখুল হিন্দ, এবং তুরস্কের ইসলামী পুনর্জাগরণের কারিগরদের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান যেভাবে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করেছেন, তা আলেমদের মেহনতের ফল। বাংলাদেশেও একদিন এমন নেতৃত্ব আসবে ইনশাআল্লাহ।”
খালিদ হোসাইন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “দেশে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক রায়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে অবমাননার শাস্তি কঠোর করার বিষয়ে যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, তা প্রমাণ করে যে ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়ছে।”
ফ. ম. খালিদ হোসাইন আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন আমরা আমাদের ঐক্য শক্তিশালী করি। আলেমরা যুগে যুগে সমাজ পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছে। আগামী দিনেও তারা নেতৃত্ব দেবে। আমাদের লক্ষ্য হলো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আদর্শে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠন করা।”
তিনি আলেমদের জন্য দোয়া করেন এবং বলেন, “আল্লাহ আমাদের সবাইকে দ্বীনের খেদমত করার তৌফিক দিন। আমাদের স্বপ্ন একটি ইসলামিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যা রসূলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নাহর ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হবে। ইনশাআল্লাহ।”