পিবিআই তদন্তে তারাকান্দায় সেপটিক ট্যাংকে নারীর লাশের পরিচয় শনাক্ত, আলামত উদ্ধার ও ১ জন গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানাধীন দাদরা গ্রামে পরিত্যক্ত একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ৩ জুলাই ২০২৫ ইং তারিখ সকালে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, র্যাব, সিআইডির পাশাপাশি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ময়মনসিংহ জেলার একটি টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তদন্তে অগ্রগতি ও আসামি গ্রেপ্তার:
অ্যাডিশনাল আইজিপি মোঃ মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে এবং পুলিশ সুপার, পিবিআই মোঃ রকিবুল আক্তারের সার্বিক সহযোগিতায়, তদন্ত কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন আহমেদ (পুলিশ পরিদর্শক, নিঃ) এর নেতৃত্বে একটি টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
বাংলাদেশ রিলেটেড নিউজ
গত ৫ জুলাই রাত আনুমানিক ৩:৩০টায় ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানাধীন বেপারীপাড়া এলাকা থেকে আসামি রোহান মিয়া (২৫), পিতা: মোঃ আলাল মিয়া, মাতা: সেলিনা খাতুন, সাং: দাদরা, থানা: তারাকান্দা—কে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে, নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পিবিআই মামলাটি স্বউদ্যোগে গ্রহণ করেছে।
নিহতের পরিচয় ও ঘটনার বিবরণ:
নিহতের নাম সুফিয়া খাতুন (৩৪), পিতা: কেরামত আলী, সাং: পাতিলগাঁও, থানা: ফুলপুর, জেলা: ময়মনসিংহ। তিনি গত ২৯ জুন ছাগল বিক্রির উদ্দেশ্যে তারাকান্দা বাজারে যান এবং তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। তার ছোট ভাই ইলিয়াস এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
পিবিআই তদন্তে জানা যায়, আসামি রোহান তার এক বন্ধুর কাছ থেকে সুফিয়ার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রেমের অভিনয় শুরু করে। ২৯ জুন তারা দেখা করলে, আসামি সুফিয়াকে ঘোরাঘুরির নামে তার নিজ এলাকায় নিয়ে যায়। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আসামি সুফিয়ার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া শুরু হলে, সুফিয়া রোহানকে চড় মারেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রোহান তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং পাশের সেপটিক ট্যাংকে লাশ ফেলে দেয়। এরপর সে তার মোবাইল ফোন ও সাথে থাকা ৪,০০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
পিবিআইয়ের সফলতা:
পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার জানান, পিবিআই-এর আভিযানিক টিমের নিরলস প্রচেষ্টা ও হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার সহায়তায় মাত্র ১ দিনের মধ্যেই ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভব হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত রোহান পূর্বেও হত্যাকাণ্ড-সংক্রান্ত মামলায় জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
বর্তমানে আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে—এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন