ঢাকা, শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস: ইতিহাস, তাৎপর্য ও উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ০১:৩৫ পিএম

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস: ইতিহাস, তাৎপর্য ও উদযাপন

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস প্রতি বছর ২১শে নভেম্বর উদযাপিত হয়। এই দিনটি বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস ও সেবা স্মরণ করার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্ববহন করে। দিবসটি জাতীয়ভাবে পালিত হয় এবং দেশের প্রতিটি সেনানিবাস, নৌঘাঁটি ও বিমানঘাঁটিতে বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের পটভূমি

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পথে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী যৌথভাবে অপারেশন চালিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আক্রমণ শুরু করে। সেই সময় থেকেই এই দিনটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ঐতিহাসিক গৌরবের প্রতীক হয়ে ওঠে।

দিবসটির উদযাপন

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  1. শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন:
    দিবসটি শুরু হয় ঢাকার শিখা অনির্বাণে (শহীদ বীরদের স্মৃতিস্তম্ভ) রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানগণের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে।

  2. প্যারেড ও কুচকাওয়াজ:
    ঢাকা সেনানিবাসসহ অন্যান্য অঞ্চলে সশস্ত্র বাহিনীর একটি বিশেষ প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। প্যারেডে সামরিক দক্ষতা প্রদর্শন এবং আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের প্রদর্শনী হয়।

  3. সামরিক হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বিশেষ সেবা:
    সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সামরিক হাসপাতালে রোগীদের জন্য বিশেষ সেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়।

  4. সম্মাননা প্রদান:
    জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অসামান্য অবদানের জন্য এই দিনে বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।

  5. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোজসভা:
    সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ও তাদের পরিবারবর্গের জন্য বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ভোজসভা আয়োজন করা হয়।

সশস্ত্র বাহিনীর অবদান

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দেশের স্বাধীনতা রক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও সশস্ত্র বাহিনী অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অংশীদার।

দিবসটির তাৎপর্য

সশস্ত্র বাহিনী দিবস শুধু একটি স্মারক দিবস নয়, এটি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের আত্মত্যাগ, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেমের প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। একইসঙ্গে এটি দেশের যুবসমাজকে দেশপ্রেম ও সাহসিকতার শিক্ষা দেয়।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস জাতীয় জীবনে বিশেষ গুরুত্ববাহী। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় সশস্ত্র বাহিনীর ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের নিরলস প্রচেষ্টা। তাই, এই দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সম্মান জানাই।

HTML tutorial