দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর ফেসবুক লাইভে এসে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর–বাসাইল) আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আহমেদ আযম খানকেও দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন সখীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে প্রায় এক ঘণ্টা ২৫ মিনিট বক্তব্য দেন নাসির উদ্দিন। এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টাঙ্গাইল-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী আহমেদ আযম খানকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। লাইভ বক্তব্যে নাসির উদ্দিন বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হলেও তিনি কোনো চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি কিংবা জমি দখলের সঙ্গে জড়িত নন। বরং টাঙ্গাইল-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী আহমেদ আযম খান সখীপুর উপজেলার ঘেঁচুয়া মৌজায় প্রায় তিন একর জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ছাড়া সখীপুরে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগও তোলেন আযম খানের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের পক্ষে তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেন নাসির উদ্দিন। ফেসবুক লাইভে একাধিকবার তিনি আহমেদ আযম খানকে ‘জমি দখলবাজ’ হিসেবে আখ্যা দেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালকেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কারের দাবি জানান নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে (টুকু) মনোনয়ন দেওয়ার পর ফরহাদ ইকবাল প্রকাশ্যে ওই মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে বলে দাবি করে ফরহাদ ইকবালের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস আগে সখীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ স্থগিত করে জেলা বিএনপি। সর্বশেষ গতকাল শনিবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নাসির উদ্দিনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। দুপুরে বহিষ্কারের চিঠি পাওয়ার পরই তিনি রাতেই ফেসবুক লাইভে আসেন। নাসির উদ্দিন সখীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আহমেদ আযম খান তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সাড়ে পাঁচ মাস আগে সখীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ স্থগিত করেছিল জেলা বিএনপি। এরপর সাধারণ সম্পাদক মীর আবুল হাশেম দলের সঙ্গে থেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে কিন্তু দল বহিষ্কার করেনি। অথচ সভাপতি নাসির উদ্দিন গত সাড়ে পাঁচ মাস ধরে দলের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। জেলা কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করেছে।” তিনি আরও বলেন, “এ আসনে যখন ধানের শীষের বিজয় প্রায় নিশ্চিত, তখন একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তবে এসব ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও সখীপুরে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।”
টাঙ্গাইলের শত বছরের ঐতিহ্যে বোনা টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি এবার জায়গা করে নিয়েছে ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি তালিকায়। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে তাঁত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে আনন্দের আমেজ দেখা গেলেও এখনো বিষয়টি সম্পর্কে তেমন জানেন না প্রান্তিক তাঁত শ্রমিকরা। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি শিল্পটির জন্য যেমন গর্বের, তেমনি এর সুফল বাস্তবে তাঁতিদের জীবনে পৌঁছানো নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা ও বড় চ্যালেঞ্জ। জানা যায়, শত বছরেরও বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন এলাকায় তাঁত শিল্প বংশপরম্পরায় টিকে রয়েছে। রঙিন সিল্ক ও কটন সুতায় দক্ষ হাতের নিপুণ কারুকাজে তৈরি টাঙ্গাইল শাড়ি আজ বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শাড়ির সুতা রং করা ও নকশা তৈরির কাজ করেন পুরুষ তাঁতিরা, আর চরকিতে সুতা কাটার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন নারীরা। একটি শাড়ি তৈরি করতে লাগে দিনের পর দিন শ্রম, ধৈর্য ও নান্দনিক দক্ষতা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা সংকটে পড়েছে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, সস্তা পাওয়ার লুমে উৎপাদিত শাড়ির দাপট এবং আধুনিক পোশাকের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় কমে যাচ্ছে হাতে বোনা শাড়ির চাহিদা। এর ফলে পেশা পরিবর্তন করে অন্য কাজে চলে যাচ্ছেন অনেক তাঁতি। টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী হিসেবে পরিচিত পাথরাইলসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বছরের পর বছর ধরে তাঁত শ্রমিকদের জীবনমানের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। কম মজুরি ও অনিশ্চিত বাজার ব্যবস্থার কারণে হতাশা বাড়ছে তাঁতিদের মধ্যে। নারীদের উৎসবের পোশাক মানেই শাড়ি। বাঙালি নারীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক হিসেবে ঈদ, পূজা ও পহেলা বৈশাখে টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ির চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকলেও বছরজুড়ে তা ধারাবাহিক নয়। ফলে তাঁতিদের আয় স্থায়ীভাবে বাড়ছে না। পাথরাইল এলাকার তাঁতি লাবু বলেন, “আমি ১৩ বছর ধরে এ পেশায় আছি। আগের তুলনায় এখন হাতে বোনা তাঁত শাড়ির চাহিদা অনেক কমে গেছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে—এটা আমরা জানিই না। এ বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু বলেনি।” তিনি আরও বলেন, “মালিকপক্ষ লাভবান হলেও আমাদের আয় খুব কম। সংসার চালাতে কষ্ট হয়।” একই এলাকার তাঁতি মো. সেলিম মুক্তধ্বনি ডটকমকে বলেন, “আগে আমাদের এলাকায় অনেক হ্যান্ডলুম তাঁত ছিল। এখন পাওয়ার লুমের কারণে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হাতে বোনা শাড়ি অনেক বেশি টেকসই ও মানসম্মত হলেও বাজারে তার মূল্য পাওয়া যায় না।” ৩০ বছর ধরে এ পেশায় যুক্ত শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, “একটি শাড়ি তৈরি করলে আমরা ৪ থেকে ৫শ’ টাকা মজুরি পাই। সপ্তাহে ৭ থেকে ৯টি শাড়ি বানানো সম্ভব হয়। এই আয়ে পরিবার চালানো কঠিন। তবুও বংশের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশায় টিকে আছি।” তিনি বলেন, “ইউনেস্কোর স্বীকৃতি সম্পর্কে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের সরাসরি সহায়তা দরকার।” ৩৭ বছর ধরে তাঁত শিল্পে যুক্ত বাছেদ আলী শেখ জাগো নিউজকে বলেন, “আমাদের এখানে ১৮টি তাঁত মেশিন রয়েছে। আগের তুলনায় এখন বিক্রি অনেক কম। কোনোমতে এ পেশায় টিকে আছি।” অন্যদিকে তাঁত মালিক ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি এ শিল্পকে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিতে পারে। সরকারি সহায়তা, সহজ ঋণ, কাঁচামালে ভর্তুকি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বিপণনের সুযোগ তৈরি হলে টাঙ্গাইল শাড়ি আবারও ফিরে পেতে পারে তার হারানো জৌলুস। তবে এখনো টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব ভারতের নামে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তাদের দাবি, জিআই স্বত্ব টাঙ্গাইলের নামে হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি হতো। এক তাঁত ব্যবসায়ী মুক্তধ্বনি ডটকমকে বলেন, “ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। এর ফলে সারা বিশ্বের মানুষ টাঙ্গাইল শাড়ির ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। তবে বর্তমানে শাড়ির ব্যবসা খুব ভালো নয়। সরকারি আইন ও নীতিগত সহায়তা পেলে হস্তচালিত তাঁতের সংখ্যা বাড়তে পারতো।” আরেক ব্যবসায়ী তপু বসাক বলেন, “দিনদিন তাঁতির সংখ্যা কমছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির ফলে আশা করছি টাঙ্গাইল শাড়ির কদর আবারও বাড়বে এবং নতুন প্রজন্ম এ পেশায় আগ্রহী হবে।” এ বিষয়ে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক মুক্তধ্বনি ডটকমকে বলেন, “ইউনেস্কোর তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ফলে টাঙ্গাইল শাড়ির আন্তর্জাতিক পরিচিতি বাড়বে। নতুন বাজার তৈরি হবে। তবে প্রান্তিক তাঁতিদের মধ্যে এ স্বীকৃতি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিষয়টি তাঁতিদের জানানো প্রয়োজন।” উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল শাড়ি ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি হিসেবে সদ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মির্জাপুরে ‘অপবাদ’ দিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পরকীয়ার ‘অপবাদ’ দিয়ে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী দুইজনকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের বটটেকী গ্রামে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর বয়স আনুমানিক ২৭ বছর। তিনি একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের স্ত্রী এবং পাঁচ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনার সময় ওই গৃহবধূ তার শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় স্থানীয় দুই ব্যক্তি পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে জোরপূর্বক তার ঘরে প্রবেশ করেন। তারা তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে শিশুকে জিম্মি করা ও তার স্বামীকে হত্যা করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।গৃহবধূ কৌশলে নিজেকে রক্ষা করে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন।শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের বটটেকী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই দুইজনকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওই গৃহবধূ।প্রেসক্লাবে এসে ওই গৃহবধূ বলেন, ৫ মাস বয়সী একমাত্র সন্তানকে নিয়ে শয়নকক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। এ সময় গোড়াই এলাকার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও ময়লার ব্যবসায়ী আজাহার মিয়া (৪২) ও রাজিব মিয়া (৩৫) তার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে পরপুরুষ রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে তারা ওই নারীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। আশেপাশের লোকজন জড়ো হলে তারা তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদায় করে দেন। এরপর শিশুকে জিম্মি ও শিল্প কারখানায় কর্মরত স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে শ্লীলতাহানি ঘটান তারা। কিন্তু ওই নারী জন্মনিরোধক আবরণ আনার কথা বলে কৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে ধর্ষণের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন। পরে রাতে তিনি মির্জাপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মির্জাপুর থানার পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তরা ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে শহরের জেলা সদরে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। সকালে রাষ্ট্রের পক্ষে জেলা প্রশাসক শরীফা হক শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় তিনি শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে তাঁদের আদর্শ ধারণ করে দেশ গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। এরপর ক্রমান্বয়ে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রবিউল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল খালেক মন্ডল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক গোলম মোস্তফা মিয়াসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এই দিনটি জাতির ইতিহাসে এক শোকাবহ ও কলঙ্কিত অধ্যায়। বক্তারা আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও ত্যাগ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং তাঁদের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে শহীদ মিনার চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে দমন করার একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী মত দমন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপচেষ্টা বন্ধের আহ্বান জানান নেতারা। জেলা এনসিপি’র আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান শাওনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের এনসিপি মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা এনসিপি’র সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান রাসেল। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের উপর হামলা করে জনগণের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। জাতীয় নাগরিক পার্টি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করে নেবে।” এছাড়াও বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা যুব শক্তির আহ্বায়ক মীর সায়মন ইসলাম ও টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র শক্তির আহ্বায়ক আবু আহমেদ শেরশাহ। তারা বলেন, তরুণ সমাজ আর কোনো সন্ত্রাসী রাজনীতি মেনে নেবে না এবং হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব মাহাথির খান ভাসানী। এসময় জেলা এনসিপি, যুবশক্তি ও ছাত্র শক্তির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
(সাজিদ পিয়াল)-মাওলানা ভাসানীর ১৪৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে ২ দিন ব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে দুই দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাংস্কৃতিক কর্মী কল্যাণ সংস্থা টাঙ্গাইল এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ।শুক্রবার ও শনিবার (১২ ও ১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক কর্মী কল্যাণ সংস্থা টাঙ্গাইলের সভাপতি তালহা আল মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক আলহাজ সুলতান টুকু।সংস্থার উপদেষ্টা অধ্যাপক তরুণ ইউসুফ এবং সাধারণ সম্পাদক এস. এম. রেজাউল ইসলাম সোহাগের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন টাঙ্গাইলের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব মো. মাহমুদুল হক সানু।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মী কল্যাণ সংস্থা টাঙ্গাইলের উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ সাধারণ গ্রন্থাগার টাঙ্গাইলের সদস্য সচিব কবি মাহমুদ কামাল এবং স্বকাল পরিষদের সভাপতি নুরুল ইসলাম বাদল। আলোচনা সভায় বক্তারা মাওলানা ভাসানীর সংগ্রামী জীবন শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে তার আপসহীন অবস্থান এবং এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার অবিস্মরণীয় অবদানের কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, মাওলানা ভাসানীর আদর্শ আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে তা ছড়িয়ে দেওয়া সময়ের দাবি। দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য, গান ও পুথি পাঠ পরিবেশন করা হয়। শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা এতে অংশ নেন। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যায় জাতীয় আবৃত্তি শিল্পী আরিফ আহমেদ ও তার দলের পরিবেশিত পুথি পাঠ দর্শক-শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। অনুষ্ঠানটি টাঙ্গাইলের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং মাওলানা ভাসানীর আদর্শ ও চেতনা নতুনভাবে স্মরণ করার এক অনন্য উপলক্ষ হয়ে ওঠে।
র্যাবের অভিযানে টাঙ্গাইল সদর থানায় দায়ের করা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমান (৩২)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, টাঙ্গাইল ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে—বাদী একজন বিধবা নারী। গত ২০২৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলার ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের পর সংসার করার একপর্যায়ে ভিকটিম জানতে পারেন, অভিযুক্ত তার পূর্বের স্ত্রী ও দুই সন্তানের বিষয়টি গোপন রেখে তাকে বিবাহ করেছেন। বিবাহের কিছুদিন পর অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যান। পরবর্তীতে দেশে ফিরে ব্যবসা করার কথা বলে ভিকটিমের পিতার কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভিকটিমকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম তার স্বামী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা এবং টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলা প্রত্যাহার না করলে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঘনিষ্ঠ অবস্থার আপত্তিকর স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্ত। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১২ নভেম্বর দুপুরে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান তার ব্যবহৃত ইমু আইডি থেকে ভিকটিমের ইমু নম্বরে আপত্তিকর ভিডিও পাঠান এবং ভিকটিমের বসবাসরত গোলড়া এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে ভিকটিম চরম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরবর্তীতে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকেই সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, টাঙ্গাইল ক্যাম্প ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্তের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে শনিবার বিকেলে ঘারিন্দা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পর্নোগ্রাফি মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমান (৩২)-কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামারপাড়া ও চামুটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ভাওড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য চামুটিয়া গ্রামের ফরহাদ হোসেন (৫৩) এবং ভাওড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শশধর পট্রি গ্রামের লতিফুর রহমান (৪৩)। পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কসংলগ্ন গোড়াই হাইওয়ে থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের ছররা গুলিতে গুরুতর আহত হন গোড়াই ইউনিয়নের লালবাড়ি গ্রামের হিমেল। ওই ঘটনায় হিমেলের দুই চোখ স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জেরে ভুক্তভোগী হিমেলের মা নাছিমা বেগম টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জাপুর আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ ১০০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। মির্জাপুর থানার পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে শনাক্ত হওয়ায় ফরহাদ হোসেন ও লতিফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার আলামত, সাক্ষ্য ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হবে। তদন্তের প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আরও গ্রেপ্তার হতে পারে।” স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেও আবার কেউ বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম চলবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার করটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাঁকড়ার ঝোড়া এলাকায় বংশাই নদীর শাখা টুঙ্গি নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজের কাজ দীর্ঘ পাঁচ বছরেও শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় হাজারো মানুষ। প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পিএসসি গার্ডার ব্রিজটি এলাকাবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনের কথা থাকলেও বাস্তবে তা এখন ভোগান্তির প্রতীকে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় ও এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলার কালিদাস–বহুরিয়া সড়কের করটিয়াপাড়া বাজারসংলগ্ন কাঁকড়ার ঝোড়া নামক স্থানে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেলেও এখনো তা সম্পন্ন হয়নি। কাজ চলছে থেমে থেমে—একটানা কয়েকদিন কাজ করার পর দীর্ঘ সময় ধরে পুরোপুরি বন্ধ থাকে নির্মাণ কার্যক্রম। এর ফলে ব্রিজের দুই পাড়ের মানুষের স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলা শহর কিংবা আশপাশের এলাকায় যাতায়াত করতে স্থানীয়দের বাধ্য হয়ে ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরপথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি বাড়ছে যাতায়াত ব্যয়। বিশেষ করে দিনমজুর, কৃষক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এলাকাবাসী জানান, এই একটি ব্রিজের ওপর নির্ভর করে কালিদাস, ঠকাইনাপাড়া, ফুলঝুড়িপাড়া, করটিয়াপাড়া, বেলতলী, হারিঙ্গাচালা, হতেয়া–রাজাবাড়ি, কালমেঘা, ছলংগা ও বহুরিয়া চতলবাইদসহ ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন চলাচল। ব্রিজটি অসম্পূর্ণ থাকায় স্কুল–কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে যেতে পারছে না। অনেক সময় অসুস্থ রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, রোগীদের কাঁধে করে কিংবা ঝুঁকি নিয়ে নদী পার করতে হয়, যা অত্যন্ত মানবিক সংকট তৈরি করছে। স্থানীয় কৃষকরাও পড়েছেন বিপাকে। ব্রিজ না থাকায় ফসল, শাকসবজি ও অন্যান্য কৃষিপণ্য বাজারে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, দুই পাড়ের কালিদাস ও করটিয়াপাড়া বাজারে মালামাল পরিবহন এখন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে তারা এই বাড়তি খরচ বহন করে আসছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাইন উদ্দিনবাসী কিছুদিন কাজ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য লাপাত্তা হয়ে যায়। ফলে মাসের পর মাস কোনো কাজ হয় না। সাময়িক পারাপারের জন্য সরকারি বিধান থাকলেও ঠিকাদার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে অর্থ সংগ্রহ করে ব্রিজের পশ্চিম পাশে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো তৈরি করেছেন। সখীপুর উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাইন উদ্দিনবাসী ব্রিজটির কার্যাদেশ পায়। এলজিইডির কাগজপত্রে কাজের ৮০ শতাংশ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, “পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির প্রায় ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিছু কারিগরি ও প্রশাসনিক কারণে কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। আশা করছি খুব শিগগিরই পুনরায় কাজ শুরু হবে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই ব্রিজটির কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।” তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধু আশ্বাস নয়—দীর্ঘ পাঁচ বছরের ভোগান্তির অবসান ঘটাতে এখন প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ ও কঠোর নজরদারি। তারা দ্রুত ব্রিজের কাজ সম্পন্নের পাশাপাশি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে একটি চক্র প্রতিবেশী দেশ ভারতে বসে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে দেশবাসীকে সর্বোচ্চ সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, যারা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার কায়েম করতে চায়—তারাই এসব ষড়যন্ত্রের মূল হোতা।’ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আরও বলেন, ‘যারা অতীতে এ দেশের নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, তারাই আজ নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গণতন্ত্র ধ্বংস করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার অপচেষ্টা চলছে। এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি দাবি করেন, ‘এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব একমাত্র বিএনপির হাতেই নিরাপদ। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করাই বিএনপির প্রধান লক্ষ্য।’ সমাবেশে জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল হক শাহীন, শফিকুর রহমান লিটন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ পাহেলী এবং জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম। বক্তারা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় আন্দোলন আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
(সাজিদ পিয়াল):বাসাইল শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। মহান শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক–সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহিদ হওয়া দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন শহিদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন জাতির মেধা ও মননের আলোকবর্তিকা। স্বাধীনতার প্রাক্কালে পরিকল্পিতভাবে তাঁদের হত্যা করে দেশকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের আদর্শ ও ত্যাগ আজও জাতিকে পথ দেখাচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ইতিহাস জানানো অত্যন্ত জরুরি বলে বক্তারা মত প্রকাশ করেন। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর ২০২৫) টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আহসান হাবীব মাসুদ, জেলা আমীর, টাঙ্গাইল জেলা শাখা। সভায় সভাপতিত্ব করেন মিজানুর রহমান চৌধুরী, আমীর, টাঙ্গাইল শহর শাখা। আলোচনা সভায় বক্তারা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তারা বলেন, দেশের মেধাবী সন্তানদের হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতার বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল, কিন্তু শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা আজও আমাদের পথ দেখায়। বক্তারা আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও দেশপ্রেম নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাদের চিন্তা-চেতনা ধারণ করেই একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। আলোচনা শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
(সাজিদ পিয়াল):শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে টাঙ্গাইলে গভীর শ্রদ্ধা বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর ও গৌরবময় দিন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করতে আজ শনিবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সকালে টাঙ্গাইল বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, টাঙ্গাইল জনাব শরীফা হক। এ সময় শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করা হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা পরিকল্পিতভাবে জাতির শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। এটি ছিল স্বাধীনতার প্রাক্কালে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার একটি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন জাতির বিবেক তাঁদের চিন্তা-চেতনা ও আদর্শ আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রেরণা। তিনি আরও বলেন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আমাদেরকে সত্য ন্যায় ও মানবিকতার পথে চলার শিক্ষা দেয়। নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ছড়িয়ে দেওয়া এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শে দেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।আলোচনা সভায় সম্মানিত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ তাঁদের স্মৃতিচারণায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান তুলে ধরেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ শিক্ষাবিদ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আলোচনায় অংশ নেন।এছাড়াও অনুষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত থেকে কর্মসূচির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই একটি শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। গভীর শ্রদ্ধা ভাবগাম্ভীর্য ও শোকের আবহে টাঙ্গাইলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
(সাজিদ পিয়াল)- গোপালপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। টাঙ্গাইলের গোপালপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বে আগামীর শুদ্ধতা—এই প্রতিপাদ্যে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল কার্যালয় ও গোপালপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির যৌথ আয়োজনে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে উপজেলা হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় গোপালপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নবাব আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন গোপালপুর থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন। সভা সঞ্চালনা করেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান সিকদার। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৌরভ কুমার দে, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জুবায়েরুল হক, গোপালপুর প্রেসক্লাবের সম্পাদক অটল শরিয়ত উল্লাহ, সূতী ভিএম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান, উপজেলা অবসর কল্যাণ সমিতির সভাপতি আহমেদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ উদ্দিন, লাইটহাউজ স্কুলের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান তালুকদারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। বক্তারা দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা অপরিহার্য। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করে নৈতিকতা ও স্বচ্ছতার চর্চা জোরদার করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।
শরিফ ওসমান হাদি ও এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫) টাঙ্গাইল-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র নেতৃত্বে এই প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।মিছিলটি টাঙ্গাইল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নেতাকর্মীরা হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের ওপর ধারাবাহিক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বক্তারা।প্রতিবাদ মিছিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন,নির্বাচনের মাঠে বিরোধী কণ্ঠকে দমন করতে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হচ্ছে। এসব হামলা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করব।” মিছিলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান।
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি’র ওপর হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতের দিকে টাঙ্গাইল শহরের পৌর উদ্যান থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় পুরো শহরজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করে। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর টাঙ্গাইল জেলা আমীর আহসান হাবীব মাসুদ। তিনি বলেন, “একজন রাজনৈতিক নেতার ওপর প্রকাশ্য হামলা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের জন্য চরম হুমকি। অবিলম্বে হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মাজহারুল ইসলাম এবং শহর আমীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বারবার হামলা চালানো হচ্ছে, যা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা “হামলাকারীদের গ্রেফতার চাই”, “রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ কর”, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত কর”সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। নেতাকর্মীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ছাত্রশিবিরের বিপুলসংখ্যক কর্মী অংশ নেন। মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও পুরো সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক দরবার হলে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মওলানা ভাসানীর রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “মওলানা ভাসানী ছিলেন আপসহীন রাজনীতির প্রতীক। তিনি আজীবন মজলুম মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর আদর্শ আজও আমাদের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সময়ে মওলানা ভাসানীর ন্যায় সাহসী ও জনবান্ধব নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। তাঁর দেখানো পথে দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে।” মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা প্রফেসর এ. কে. এম. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মওলানা ভাসানীর আদর্শ ও দর্শন নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিয়মিত গবেষণা, আলোচনা সভা ও স্মরণ কর্মসূচি জোরদার করা প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ বিভিন্ন সামগ্রী অপসারণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশনা ও নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে শৃঙ্খলাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে নিজেই উপস্থিত থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এসব ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এ সময় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মোড় ও জনবহুল এলাকায় টাঙানো ব্যানার, ফেস্টুন এবং দেয়ালে লাগানো পোস্টার নামিয়ে ফেলা হয়। পুরো কার্যক্রমটি সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করা হয়। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এ সময় বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে চলা আমাদের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। আমরা চাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সে লক্ষ্যেই আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রচারণার সামগ্রী অপসারণ করছি।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে শালীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রাখবে।” এ কর্মসূচিতে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের বাইরে নির্বাচনী পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ বাধ্যতামূলক।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মো. হুমায়ুন কবিরের নির্বাচনি পথসভায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অন্তত একজন জামায়াত কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ফলদা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর এলাকায় কিছু সময় উত্তেজনা বিরাজ করে। জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, মাওলানা হুমায়ুন কবিরকে সঙ্গে নিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনি পথসভা ও প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। সভা চলাকালে হঠাৎ স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জামায়াত নেতাকর্মীরা সভা শেষ করে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের দাবি, জামায়াতের নেতাকর্মীরা অন্য পথ দিয়ে সরে যাওয়ার সময় একপাশে রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয় এবং সভাস্থলে থাকা চেয়ার, টেবিল ও মাইক ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে জামায়াতের এক কর্মী আহত হন। ভূঞাপুর উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের সভার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। এটি পরিকল্পিত হামলা। এ ঘটনায় আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের হামলা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু। তিনি বলেন, “এটি কোনো পরিকল্পিত হামলা নয়। একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র, যা ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে। একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। আমরা কাউকে প্রতিহত করিনি, বরং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সহায়তা করেছি। ভবিষ্যতেও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে আমরা প্রস্তুত।” এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাব্বির রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।” এ ঘটনার পর স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।
সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় ব্যবসায়ীকে এক মাসের কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে এক ব্যবসায়ীকে এক মাসের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে একটি মাটি খননযন্ত্র জব্দ করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীর নাম আতোয়ার রহমান (৩৮)। তিনি উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার সময় আতোয়ার রহমানকে হাতেনাতে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, আতোয়ার রহমান দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছিলেন। অভিযানের সময় ঘটনাস্থলেই আদালত বসিয়ে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী তাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। দণ্ডাদেশ কার্যকরের পর বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে আতোয়ার রহমানকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা জানান, অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান রয়েছে। পরিবেশ ও কৃষিজমি রক্ষায় এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাসের চাপায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (রাত ১টার দিকে) ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাতের ওই সময়ে দীপ্ত একটি গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়ান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশ দিয়ে আসা আরেকটি বাস হঠাৎ সামনে চলে আসে। এ সময় দুই গাড়ির মাঝখানে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেও ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সদ্য স্নাতক। তিনি ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহর একমাত্র পুত্র। পরিবারের সঙ্গে তিনি মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটি কবরস্থান এলাকায় বসবাস করতেন। পড়াশোনা শেষ করে সম্প্রতি দেশের একটি খ্যাতনামা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দিনাজপুর অঞ্চলে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।পরিবারের সদস্যরা জানান, কর্মস্থল দিনাজপুর থেকে বৃহস্পতিবার মির্জাপুরে ফিরছিলেন দীপ্ত। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও তিনি মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মির্জাপুরের কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ফেরাই যে হবে তার শেষ ফেরা—তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।শুক্রবার বাদ জুমা মির্জাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় শিক্ষক, সাংবাদিক, সহপাঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।দীপ্তর অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষক সমাজ, স্থানীয় সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।