Search : কাতার

মুসলিম বিশ্ব
ট্রাম্প ও আঞ্চলিক নেতারা শার্মুশ শেইখে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর; বন্দি-হোস্টেজ বিনিময় বাস্তবায়িত

জীবিত শেষ ২০ ইসরায়েলি বন্দি মুক্ত—ইসরায়েল প্রায় ১,৭০০–২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দি রিলিজ শুরু করেছে; হামাস বলেছে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দিদের বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিবাদী' নির্যাতনের প্রমাণ আছে। মিশরের পর্যটন শহর শার্মুশ শেইখে অনুষ্ঠিত ‘শান্তি সম্মেলনে’ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আঞ্চলিক নেতৃত্ব—মিশরের আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও তুরস্কের রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান—একটি মধ্যস্থতাবিহীন চুক্তির নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। ট্রাম্প ওই চুক্তিকে 'ঐতিহাসিক' আখ্যা দেন এবং বলেন, গাজায় যুদ্ধ শেষ হয়েছে।  চুক্তির প্রথম ধাপে হামাস গৃহীত করেছে শেষ জীবিত ২০ ইসরায়েলি হোস্টেজের মুক্তি এবং বদলে ইসরায়েল প্রায় ১,৭০০–২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দি ও আটককারীদের মুক্তি কার্যক্রম শুরু করেছে—যাদের মধ্যে বিভিন্ন আইনি স্থিতি বা অভিযোগবিহীন বন্দিরা রয়েছেন। একই সাথে মৃত বন্দিদের দেহাবশেষযুক্ত কফিন তুলে দেওয়ার ঘটনাও সংঘটিত হয়। চুক্তির সময় ট্রাম্প উল্লেখ করেন যে এখন মানবিক সহায়তার প্রবাহ বাড়ানো হবে—শত শত ট্রাক খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম গাজায় পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে এবং পুনর্গঠনের জন্য আরব ও আন্তর্জাতিক অর্থায়নের প্রস্তাব প্রস্তুত। সম্মেলনে ভবিষ্যতে গাজার প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত দ্বিতীয় ধাপের কাঠামো নিয়ে আলোচনা শুরু করার কথাও স্থির করা হয়েছে।  হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, মুক্ত হওয়া বন্দিরা "দুই বছর ধরে তারা যে ভয়াবহ মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তা আধুনিক যুগে নিমর্ম ও ফ্যাসিবাদের চিত্র তুলে ধরে" এবং তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে। পার্সটুডে খবর অনুযায়ী হামাস এ ধরনের অভিযোগ তোলেছে এবং ইসরায়েলের কারাগারে বন্দিদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত অপরাধের কথা তুলে ধরেছে। চুক্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত একটি সূত্র বলেছে, এরপরের ধাপে গাজায় একটি নতুন শাসন কাঠামো, আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বাহিনী এবং বৈদেশিক অর্থায়নে পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হবে—কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখনও বহু কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা জটিলতা থেকে যায়। বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা ও পুনরুদ্ধার কাজের চ্যালেঞ্জ এখনই স্পষ্ট।  বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্দি-হোস্টেজ বিনিময় ও সাময়িক যুদ্ধবিরতি অঞ্চলকে স্বস্তির নিঃশ্বাস দিলেও গাজার দীর্ঘমেয়াদি প্রশাসন, দায়িত্বশিয়োগ ও মানবিক পুনর্গঠন কিভাবে হবে—এবং হামাসের ভবিষ্যত ভূমিকা কী হবে—এসবই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। সম্মেলনে ইরানসহ কিছু দেশকে আমন্ত্রণ বা অংশগ্রহণ নিয়ে মিশ্র তথ্যও রিপোর্ট হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক আলোচনায় প্রভাব ফেলতে পারে। 

মুক্তধ্বনি ডেক্স অক্টোবর ১৪, ২০২৫ 0
মুসলিম বিশ্ব
কাতার ও সৌদি মধ্যস্থতায় আফগানিস্তান–পাকিস্তান সংঘর্ষ স্থগিত

কাতার, সৌদি আরব ও ইরানসহ আঞ্চলিক দেশগুলো আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত বাহিনী ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দুই দেশকে সংযম প্রদর্শন এবং সংলাপ ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমের মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করতে আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে উত্তেজনা প্রশমিত হয় এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।” ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার প্রতিবেশী পরিবেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং দুই মুসলিম প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত।” রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ কারিবুল্লাহ সাদাত বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধের অব্যাহত থাকা সকল দেশের জন্য ক্ষতিকর। সমস্যার সমাধান কূটনৈতিক বোঝাপড়া ও পুনর্মিলনের মাধ্যমে হতে পারে—আফগানিস্তানে পাকিস্তানের দূতাবাস এবং পাকিস্তানে আফগান দূতাবাসের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া উচিত।” ইসলামিক আমিরাতের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, পাকিস্তান যদি আবারও হামলা চালায়, তবে আফগানিস্তান উপযুক্ত জবাব দেবে। মুজাহিদ বলেন, “কাতার ও সৌদি আরব যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, এবং ইসলামিক আমিরাত সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ স্থগিত করেছে। তবে আজ সকালে পাকিস্তানের হামলার খবর পাওয়া গেছে। এই হামলা অব্যাহত থাকলে আফগানিস্তান তার ভূখণ্ড রক্ষার পূর্ণ অধিকার রাখে।” অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেন, “আমাদের দেশ জাতীয় স্বার্থ ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূখণ্ড থেকে ভারতের মদদপুষ্ট খারেজি সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে—এটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে নথিভুক্ত বাস্তবতা।” এছাড়া পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি দাবি করেন, আফগান বাহিনীর পাকিস্তান ভূখণ্ডে গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এদিকে ভারতের সফরে থাকা আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি বলেন, “আফগান জাতির বৈশিষ্ট্য হলো—যখন কোনো বিদেশি শক্তি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, তখন সকল আলেম, নেতা ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।” উল্লেখ্য, পাকিস্তান আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালানোর পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। এর জবাবে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দুরান্ড লাইনের পারের পাকিস্তানি পোস্টগুলোতে পাল্টা হামলা চালায়, যা চলতে থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত।

মুক্তধ্বনি ডেক্স অক্টোবর ১২, ২০২৫ 0
মুসলিম বিশ্ব
আফগান প্রতিরোধে ধ্বংস ২০টি পাকিস্তানি নিরাপত্তা পোস্ট, ৯ আফগান সেনা শাহাদত বরণ

আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, শনিবার রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো পাল্টা অভিযানে অন্তত ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। মুজাহিদ বলেন, “কাল্পনিক ডিউরান্ড লাইনের ওপারে পরিচালিত এই প্রতিশোধমূলক অভিযানে বেশ কিছু অস্ত্রও অস্থায়ীভাবে জব্দ করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এই অভিযানে ৯ জন আফগান সেনা শাহাদত বরণ করেছেন এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন, পাশাপাশি ২০টি পাকিস্তানি নিরাপত্তা পোস্ট সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। মধ্যরাতে অভিযান স্থগিত: মুজাহিদ জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে শনিবার মধ্যরাতে অভিযান স্থগিত করা হয়। আইএসআইএস-খোরাসান নিয়ে অভিযোগ: মুজাহিদ দাবি করেন, আইএসআইএস-কে আফগানিস্তানে পরাজিত করার পর সংগঠনটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে ঘাঁটি গেড়েছে। তার ভাষায়, “খাইবার পাখতুনখাওয়ায় আইএসআইএস-খোরাসানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর হয়ে সেখানে সদস্যদের আনা হচ্ছে। আমাদের তথ্যে জানা গেছে, ইরান ও মস্কোর সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পরিকল্পনাও সেখান থেকেই করা হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তনে সংঘটিত আইএসআইএস-খোরাসানের হামলাগুলো এই ঘাঁটিগুলো থেকেই পরিকল্পিত হয়েছে। তাই পাকিস্তান সরকার যেন এই গোষ্ঠীর মূল সদস্যদের ইসলামিক আমিরাতের কাছে হস্তান্তর করে। পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান: মুজাহিদ জানান, পাকিস্তান আফগানিস্তানে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে চেয়েছিল, তবে বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানি বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসলামিক আমিরাত সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের হুঁশিয়ারি: আফগান বাহিনী শনিবার রাতে ডিউরান্ড লাইনের বিভিন্ন আফগান প্রদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান চালায়। মুজাহিদ সতর্ক করে বলেন, “আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের যে কোনো প্রচেষ্টা অবশ্যই জবাব দেওয়া হবে।”

মুক্তধ্বনি ডেক্স অক্টোবর ১২, ২০২৫ 0
সূত্রঃ মিডল ইস্ট আই
মুসলিম বিশ্ব
ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত গাজায়, যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণার পরও ভয়াবহ বোমাবর্ষণ

গাজা উপত্যকায় বৃহস্পতিবার সকালে নতুন করে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, যদিও এর আগেই মধ্যস্থতাকারীরা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, দুই বছরের বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতভর গাজা সিটি ও খান ইউনুসে ভয়াবহ বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ হয়। এমনকি ইসরায়েলি ড্রোন থেকেও সাধারণ মানুষের উপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়। অন্তত একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানান, চুক্তির প্রথম ধাপে যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধের অবসান, দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহার, সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা এবং বন্দি বিনিময়ের পথ প্রশস্ত করবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে একে “ইসরায়েলের জন্য এক মহান দিন” বলে মন্তব্য করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার তার সরকার এই চুক্তি অনুমোদনের জন্য বৈঠকে বসবে এবং “জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনবে।” গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর নাগাদ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, রবিবার বা সোমবারের মধ্যে হামাস প্রায় ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে, বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। একইসাথে ইসরায়েলি সেনারা ধাপে ধাপে গাজা থেকে প্রত্যাহার শুরু করবে। তবে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারের সীমারেখা এখনও পরিষ্কার নয়। চুক্তি কার্যকর হলে অবিলম্বে অন্তত ৪০০টি সাহায্যবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চুক্তির অন্যান্য ধাপ—যেমন ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন—পরে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। গাজায় এই যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, হামাসের আকস্মিক ইসরায়েল আক্রমণের পর। হামাস জানিয়েছিল, ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের দখলনীতি, আল-আকসা মসজিদে হামলা, গাজা অবরোধ ও বন্দিদের প্রতি অমানবিক আচরণের প্রতিবাদেই তারা এই পদক্ষেপ নেয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড হামাসের প্রথম আক্রমণের পরপরই ভেঙে পড়ে, ফলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম দফায় হামাসের আক্রমণে অন্তত ১,১৮০ জন ইসরায়েলি নিহত হয় এবং পরবর্তী লড়াইয়ে আরও ৭০০ জন মারা যায়। এদের অর্ধেকের বেশি ছিল বেসামরিক নাগরিক। এর প্রতিশোধে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালায়, যা দুই বছর ধরে চলে এবং প্রায় পুরো গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। ইসরায়েলি সামরিক সূত্রে ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা যায়, এই দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক। গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ, ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো এবং অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয় চলছে। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ, গির্জা—সবই ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশ ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে “গণহত্যা” হিসেবে ঘোষণা করেছে।

মুক্তধ্বনি ডেক্স অক্টোবর ৯, ২০২৫ 0
মুসলিম বিশ্ব
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল ও হামাসের ঐকমত্য: গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার গভীর রাতে ঘোষণা করেছেন যে, ইসরায়েল ও হামাস গাজা যুদ্ধের অবসানে তাঁর প্রস্তাবিত “২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার” প্রথম ধাপে একমত হয়েছে। ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যম “ট্রুথ সোশ্যাল”-এ লিখেছেন— “এর মানে হলো খুব শিগগিরই সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা নির্ধারিত সীমারেখা পর্যন্ত প্রত্যাহার করবে। এটি একটি শক্তিশালী, টেকসই এবং স্থায়ী শান্তির প্রথম পদক্ষেপ। সকল পক্ষ ন্যায়সঙ্গত আচরণ পাবে।” তিনি আরও বলেন, “আজ আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, প্রতিবেশী দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি মহৎ দিন। আমরা কাতার, মিসর ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানাই যারা এই ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন ঘটনাটিতে মধ্যস্থতা করেছেন।” কাতারের নিশ্চয়তা: ঘোষণার অল্প সময় পরেই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপের “সব শর্ত ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া” নিয়ে চুক্তি হয়েছে। তিনি জানান— “এই চুক্তি যুদ্ধের অবসান ঘটাবে, বন্দি বিনিময় সম্পন্ন করবে এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেবে।” বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি। ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিক্রিয়া: ইসরায়েল সরকারের এক মুখপাত্র জানান, শনিবারের মধ্যেই বন্দিদের মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে হামাস একটি বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল নিশ্চয়তা প্রদানকারী রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় যেন ইসরায়েল এই চুক্তি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক্স (X)-এ লিখেছেন— “এটি ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন। আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর দলকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের বন্দিদের মুক্ত করার এই পবিত্র মিশনে তাঁদের ভূমিকার জন্য।” তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর মন্ত্রিসভাকে ডেকে এই চুক্তি অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন এবং “বন্দিদের ঘরে ফিরিয়ে আনবেন।” হামাসের অবস্থান: বুধবারের শুরুতে হামাসের আলোচক দলের প্রধান খালিল আল-হায়া জানান, তাদের প্রতিনিধিদল মিশরের শার্ম আল-শেখ শহরে এসেছে “দায়িত্বশীল ও গঠনমূলক আলোচনার জন্য”। তিনি বলেন, তাদের লক্ষ্য হলো— 1️⃣ যুদ্ধের অবসান, 2️⃣ গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, 3️⃣ সকল ইসরায়েলি বন্দির (জীবিত বা মৃত) বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি। জাতিসংঘে প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের উপ-রাষ্ট্রদূত মাজেদ বামিয়া এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে এক্স-এ এক শব্দে লিখেছেন— “Finally…” (অবশেষে...)। চুক্তির পটভূমি ও সমালোচনা: গত সপ্তাহে ট্রাম্প তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন করেন, যা অনেকেই “ইসরায়েল-কেন্দ্রিক” বলে সমালোচনা করেছেন। প্রথম দফায় বলা হয়— “গাজাকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত ও প্রতিবেশী-বান্ধব অঞ্চল হিসেবে পুনর্গঠন করা হবে।” এই পরিকল্পনায় আরও বলা হয় যে, ট্রাম্প ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার একটি অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধান কমিটিতে নেতৃত্ব দেবেন, যা গাজা পরিচালনা করবে। এছাড়াও একটি “আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী” গঠনের প্রস্তাব রয়েছে, যারা গাজায় নিরাপত্তা রক্ষা করবে। তবে সমালোচকরা একে “নতুন ঔপনিবেশিক পরিকল্পনা” হিসেবে দেখছেন, যেখানে ট্রাম্প নিজেকে “Board of Peace”-এর প্রধান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। যুদ্ধের ভয়াবহ চিত্র: ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। গাজার বাড়িঘর, মসজিদ, গির্জা, হাসপাতাল, স্কুল ও অবকাঠামোর অধিকাংশই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একাধিক জাতিসংঘ তদন্ত কমিটি ও মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে— ইসরায়েলের গাজা অভিযান গণহত্যা (Genocide) হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ইসরায়েলি সেনা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের ৮০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক। সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপ: 📍 চুক্তি: গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ 📍 মধ্যস্থতাকারী: যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর, তুরস্ক 📍 মূল বিষয়: যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময়, সেনা প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা 📍 সম্ভাব্য সময়সীমা: বন্দি মুক্তি শনিবারের মধ্যে শুরু হতে পারে 📍 উক্তি: ট্রাম্প – “Blessed are the Peacemakers!

মুক্তধ্বনি ডেক্স অক্টোবর ৯, ২০২৫ 0
মুসলিম বিশ্ব
হামাস চায় গাজা যুদ্ধের অবসানের নিশ্চয়তা; দ্বিতীয় দিনের আলোচনার পর সমাপ্তি ঘোষণা

মিশরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় অংশ নেওয়া হামাস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসানের নিশ্চয়তা চান— যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার অন্যতম শর্ত। মিশরের পর্যটন শহর শার্ম আল-শেখে অনুষ্ঠিত আলোচনার দ্বিতীয় দিন শেষে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা বন্দিমুক্তির প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে চায়, যা ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। “বাস্তব নিশ্চয়তা চাই” — হামাস হামাসের শীর্ষ আলোচক খালিল আল-হাইয়া মিশরীয় গণমাধ্যম আল কাহেরা নিউজকে বলেন, “আমরা দখলদার শক্তির ওপর এক মুহূর্তের জন্যও ভরসা করি না। আমরা চাই বাস্তব নিশ্চয়তা যে যুদ্ধ সত্যিই শেষ হবে এবং পুনরায় শুরু হবে না।” তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল পূর্বে দুটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ট্রাম্পের বক্তব্য হোয়াইট হাউসে যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “একটি বাস্তব চুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।” তিনি জানান, আলোচনায় যুক্ত হতে বুধবার কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রতিনিধিরা শার্ম আল-শেখে পৌঁছাবেন। কাতার, মিসর ও তুরকির মধ্যস্থতা কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি আল জাজিরাকে বলেন, “আমরা পূর্বনির্ধারিত কোনো সূত্র ধরে এগোচ্ছি না। আলোচনার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তাবগুলো তৈরি হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি বুধবার আলোচনায় যোগ দেবেন, যা মধ্যস্থতাকারীদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতীক। বন্দিমুক্তি ও সেনা প্রত্যাহার একসঙ্গে হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানান, “বন্দিমুক্তির প্রতিটি ধাপ ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। শেষ বন্দি মুক্তির সময়ই চূড়ান্তভাবে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে সরে যাবে।” ইসরায়েলের অবস্থান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি আমাদের অস্তিত্ব ও ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ।” তিনি ইঙ্গিত দেন, ইসরায়েল তার লক্ষ্যে অবিচল থাকবে— বন্দিমুক্তি, হামাসের শাসনের অবসান এবং গাজা যেন আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয় তা নিশ্চিত করা। যুদ্ধবিরতির আশায় গাজায় মৃত্যু থামছে না আলোচনার মাঝেও ইসরায়েলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান গাজায় অভিযান চালাচ্ছে। মঙ্গলবার গাজার সাবরা ও তল আল-হাওয়া এলাকায় অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ‘ওয়াফা’। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৬৬ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন করে ১০৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় গাজার আজ-জুয়াইদা এলাকা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানান, “সবাই একটি শান্তিচুক্তির অপেক্ষায়, অথচ বোমা বর্ষণ অব্যাহত। ইসরায়েলি বাহিনী পুরো আবাসিক এলাকা ধ্বংস করে দিচ্ছে যেখানে মানুষ ভেবেছিল তারা ফিরে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করবে।” অবকাঠামো ধ্বংস ও প্রাণহানির ভয়াবহ চিত্র যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংঘর্ষ পর্যবেক্ষক সংস্থা ACLED-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় এ পর্যন্ত ১১,১১০টি বিমান ও ড্রোন হামলা এবং ৬,২৫০টি গোলাবর্ষণ সংঘটিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী গত দুই বছরে সংঘর্ষজনিত মোট মৃত্যুর ১৪ শতাংশই গাজায় ঘটেছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ যুদ্ধে ১,৭০১ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন।

মুক্তধ্বনি ডেক্স অক্টোবর ৮, ২০২৫ 0
মুসলিম বিশ্ব
হিজবুল্লাহ নেতা সৌদি আরবকে আহ্বান জানালেন ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে

হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম সৌদি আরবকে আহ্বান জানিয়েছেন সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করতে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে। শুক্রবার এক ভাষণে তিনি বলেন, ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে হামলা বাড়িয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। নাইম কাসেম তিনটি মূল নীতির ভিত্তিতে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের আহ্বান জানান: ১. সংলাপের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব ও উদ্বেগ সমাধান। ২. স্বীকার করা যে ইসরায়েলই মূল শত্রু, প্রতিরোধ নয়। ৩. অতীতের বিরোধগুলোকে স্থগিত রাখা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, হিজবুল্লাহর অস্ত্র শুধু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে, “লেবানন, সৌদি আরব বা অন্য কারও বিরুদ্ধে নয়।” ‘চাপ শুধুই ইসরায়েলের উপকারে আসবে’ কাসেম সতর্ক করেন, প্রতিরোধে চাপ সৃষ্টি করা মানে শুধু ইসরায়েলকে শক্তিশালী করা। তিনি বলেন, “যদি প্রতিরোধ ভেঙে ফেলা হয়, তাহলে পরবর্তী লক্ষ্য হবে অন্যান্য রাষ্ট্র।” সৌদি আরব ও হিজবুল্লাহর মধ্যে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে। ২০১৬ সালে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) হিজবুল্লাহকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে, সিরিয়া ও ইয়েমেনে তাদের ভূমিকার কারণে। ‘গণহত্যা হয়ে গেল সমাধান’ নাইম কাসেম ইসরায়েলকে “ঔপনিবেশিক ঘাঁটি” আখ্যা দিয়ে বলেন, ব্রিটেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় এটি দাঁড়িয়ে আছে। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনে আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে নৃশংসতা চালাচ্ছে। তার ভাষায়, “নরম যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, আব্রাহাম চুক্তি—কোনো কিছুই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দ্রুত বিজয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনি। তাই তাদের কাছে এখন গণহত্যাই সমাধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলের হামলার পর থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন মোড় নিয়েছে। মার্কিন প্রস্তাবে অনাস্থা কাসেম বলেন, “যখন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ঘোষণা করে যে তারা ইসরায়েলের স্বার্থেই কাজ করছে, তখন কিভাবে তাদের কোনো প্রস্তাবে আস্থা রাখা যায়?” মার্কিন চাপের মুখে লেবাননকে ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে বলা হয়েছিল। তবে কাসেম জানান, হিজবুল্লাহ সংলাপের জন্য প্রস্তুত, তবে সেটা হবে “শক্তির অবস্থান থেকে”—ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অটল থাকবে। সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তির পর আহ্বান এই আহ্বান এমন সময়ে এলো, যখন মাত্র দুই দিন আগে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান ইসরায়েলের কাতার হামলার প্রেক্ষিতে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ইসরায়েলি হামলায় দুই নিহত শুক্রবার লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের দুটি হামলায় দুইজন নিহত ও অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। একটি হামলা তিবনিন শহরের একটি সরকারি হাসপাতালের বাইরে গাড়িকে লক্ষ্য করে, আরেকটি আঘাত হানে আনসার এলাকায়। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, এতে হিজবুল্লাহর এক কমান্ডার এবং রাদওয়ান বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া নাকুরায় হিজবুল্লাহর নজরদারি কাজে ব্যবহৃত একটি নৌযানও ধ্বংস করা হয়েছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম ইসরায়েলের এই হামলাকে “ভীতি প্রদর্শন ও আগ্রাসন” বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ ২০২৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহকে লিতানি নদীর উত্তরে সরে যেতে এবং নিরস্ত্র হতে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে ইসরায়েলেরও লেবাননের দখলকৃত এলাকা ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও দক্ষিণ লেবাননের অন্তত পাঁচটি স্থানে ইসরায়েলি সেনা অবস্থান করছে এবং প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে।

মুক্তধ্বনি ডেক্স সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫ 0
মুসলিম বিশ্ব
হামাস নেতাদের টার্গেট করে মিসরের ভেতরে এ ধরনের কোনো হামলা হলে সেটি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে গণ্য হবে

মিসর জানিয়েছে, দেশটির ভূখণ্ডে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে কোনো ধরনের হামলা হলে তা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সমান বিবেচিত হবে। মিস্রীয় শীর্ষ নিরাপত্তা সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে কায়রোতে থাকা হামাস নেতাদের টার্গেট করতে পরিকল্পনা করেছে এবং একাধিক চেষ্টা মিসর প্রতিহত করেছে। সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, “মিসরের ভেতরে হামলার যে কোনো প্রচেষ্টা আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন। সেই অনুযায়ী আমরা এটিকে যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে গণ্য করব এবং প্রতিশোধ নিতে পিছপা হব না।” এই ঘোষণা এমন সময় আসে যখন গত সপ্তাহে কাতারের রাজধানী দোহায় হামলা চালিয়ে হামাস নেতৃত্বকে টার্গেট করার খবরregional উত্তেজনা বাড়িয়েছে। দোহা আক্রমণের পরে মিসর–ইসরায়েল যোগাযোগ শীতল হয়ে পড়েছে এবং কায়রো এখন ইসরায়েলকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। মিসর কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে যে, সিনাই সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে — প্রাসঙ্গিক খবরে বলা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে যাতে গাজার পরিস্থিতির জেরে প্যালেস্টাইনির সম্ভাব্য তীব্র অবিলম্বে প্রবেশ ঠেকানো যায়। একই সঙ্গে মিসর বলেছে, দোহা হামলায় তাদের কোনো ভূমিকা বা সমন্বয় ছিল না। দেশটির এক সেনা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে ওই হামলায় কোনো ইসরায়েলি বিমান মিসরের আকাশপথ ব্যবহার করেনি এবং মিসরের পূর্ব সীমান্তে একটি চালু চীনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের কারণে অনুমতি ছাড়া কোনো বিমান প্রবেশ করা কঠিন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী Benjamin Netanyahu যে হুমকি উচ্চারণ করেছিলেন—“হামাসকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে টার্গেট করা হবে”—তার প্রেক্ষিতে কায়রোর বক্তব্য স্পষ্ট: মিসর নিজস্ব সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনও আপস করবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলছেন, মিসরের উদ্বেগ কেবল হামাসের প্রতি সিম্প্যাথি নয়; বিষয়টি দেশটির আঞ্চলিক মর্যাদা এবং মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাকে কেন্দ্র করে। কায়রো কোনোভাবেই 자신의 রাজধানীতে অপমান সহ্য করবে না, এবং এমন কোনো হামলা দেশটির কূটনৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করবে। ইতিহাসগতভাবে মিসর ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করা প্রথম আরব দেশ। তবু জনমানসে ইসরায়েলবিরোধী অনুভূতি রয়েছে এবং কায়রোকে মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত সমরূপতা বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকতে দেখা যায়। মিসর কর্তৃপক্ষ এখন তার প্রতিবেশী দেশগুলোকে সতর্ক করেছে যে খোলা সংঘাতের ঝুঁকি বাড়লে আঞ্চলিক সমীকরণ দ্রুত বদলে যেতে পারে। কায়রো জোর দিয়ে বলছে: উথিত কূটনৈতিক পথেই গাজার সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব। এই ঘোষণার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা বলছেন, যদি ঘটনাপ্রবাহ শig হয় তবে তা শীঘ্রই আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অনিশ্চিত করে তুলবে।

মুক্তধ্বনি ডেক্স সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫ 0
কওমী অঙ্গন
হাটহাজারীর বাবা হুজুর : বাবা নামের উৎপত্তি ও তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী

মাওলানা মুমতাযুল করীম [বাবা হুযুর] আমার জানা মতে ১৯৪২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাদাসিধে আল্লাহওয়ালা এবং দরবেশ সিফাতের মানুষ ছিলেন। দ্বীনের প্রতি তার দরদ অপরিসীম। বাংলাদেশের প্রায় সকল মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে এবং বড় বড় ইসলামী সম্মেলনে তিনি আলোচনার জন্য আমন্ত্রিত হতেন। ধর্মপ্রাণ মানুষ তার সারগর্ভ আলোচনা শোনার জন্য আগ্রহভরে অপেক্ষা করতেন। তাঁর আলোচনা ছিল সংক্ষিপ্ত এবং ব্যাপক অর্থবোধক। মাওলানা মুমতাযুল করীম (বাবা হুযুর) নিজ এলাকার বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান 'বটোগ্রাম হামীদিয়া মাদরাসা'য় শিক্ষা-জীবন শুরু করেন অতঃপর ফেনী শর্শদী মাদরাসায় কিছুদিন পড়াশোনা করে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উম্মুল মাদারিস দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি হন। হাটহাজারী মাদরাসায় কয়েক বছর লেখাপড়া করার পর জামি'আ ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন। দাওরায়ে হাদীস সমাপ্ত করে উচ্চ শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ১৯৬৩ ঈ. সালে পাকিস্তান গমন করেন। পাকিস্তানের বিখ্যাত মাদরাসা 'জামিয়া আশরাফিয়া লাহোর' থেকে তাফসীর এবং আদব (আরবী সাহিত্য) বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণ করেন। দেশে ফিরে এসে সর্বপ্রথম ময়মনসিংহের 'কাতলাসেন কাদেরীয়া কামিল মাদরাসা'য় মুহাদ্দিস হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তবে বেশিদিন সেখানে ছিলেন না। একই বছর ১৯৬৫ ঈ. সনে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন এবং সেখানে মুসলিম শরীফের দারস প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকা আশরাফুল উলূম বড়কাটারা মাদরাসায় সাত বছর মুহাদ্দিস হিসেবে খেদমত করে চট্টগ্রামের আল-জামি'আতুল ইসলামীয়া পটিয়া মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পটিয়া মাদরাসায় তিনি টানা সাত বছর কৃতিত্বের সাথে পাঠদান করেন। ১৯৮৪ ঈ. সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে তিনি যোগদান করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অত্যন্ত সুনাম ও সুখ্যাতির সঙ্গে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অধ্যাপনাকালে শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বাবা হুযুর নামে পরিচিত হওয়া ও বাবা হুযুর নামের উৎপত্তি: তিনি বাবা হুযুর নামে পরিচিত। বাবা নামে তাঁকে সবাই ডাকে। তবে এই নামের উৎপত্তি কোথায়, কীভাবে তিনি 'বাবা হুযুর' নামে প্রসিদ্ধ হলেন—অনেকেরই অজানা। ১৯৮৫ ঈ. সন। হুযুরের নিকট আমাদের দারছে নিযামীর আরবী সাহিত্য ও শে'র এর কিতাব—'নাফহাতুল আরব' ও 'ক্বাসীদাহ বুরদাহ' পড়ার সুযোগ হয়েছিল। মাওলানা মাহমুদ বাঁশখালী (যিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন), মাওলানা আতাউল্লাহ (বর্তমান মুহতামিম: হেমায়েতুল ইসলাম কৈগ্রাম, পটিয়া, চট্টগ্রাম), মাওলানা মুহাম্মদ গড়দুয়ারী (বর্তমান শিক্ষক: দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা), মাওলানা মুহাম্মদ আলী চারিয়া এবং আমি লেখক এক জামাতের ছাত্র। বাবা হুযুরের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিল গভীর। ছাত্র ও শিক্ষকের সম্পর্ক। বাপ-বেটার সম্পর্ক। আমাদের 'ক্বাসীদাহ বুরদাহ' দারছ দেয়ার সময় তিনি এক ছাত্রকে বেত্রাঘাত করলে এক পর্যায় ঐ ছাত্র 'ও বাবা, ও বাবা' করে চিৎকার করতে থাকে। তখন বাবা হুযুর বেত্রাঘাত না করে হাসতে থাকেন এবং পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে ঐ ছাত্রকে হাদিয়া দেন। সেদিন থেকে যখন তিনি কোনো ছাত্রকে বেত্রাঘাত করতেন ছাত্ররা 'বাবা' বলে ডাক দিলে তিনি আর মারতেন না। এভাবে শুরু হয়ে গেল বাবা ডাকা-ডাকি। বাবা হুযুর নামের প্রসিদ্ধ হওয়ার আরো কাহিনী আছে— হাটহাজারী মাদরাসার বড় মসজিদে ফজরের নামাযের পর শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. জামি'আর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় জরুরী কথাবার্তা বলতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ নাসিহা পেশ করতেন। অনেকসময় নাসিহা শুরু করার পূর্বে চট্টগ্রামের ভাষায় বলতেন—'ওয়া! মৌলভী মুমতায আছোনি?' তিনি জানতেন আর কেউ না থাকলেও বাবা হুযুর প্রথম কাতারে আছেন। উত্তরে বাবা হুযুর বলতেন—'লাব্বাইক, আছি হুযুর'। প্রায় সময় এরকম দৃশ্য আমরা দেখতে পেতাম। একদিনের ঘটনা—ফজরের নামাযের পর অন্যান্য দিনের ন্যায় শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. বলে উঠলেন— 'বাবা হুযুর আছোনি?' উস্তাযের মুখে বাবা ডাকা শুনে পকেট থেকে ৫০০ টাকার দুটি নোট বের করে উস্তাদের হাতে তুলে দিলেন বাবা হুযুর। তখন শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. মজা করে পুনরায় বাবা হুযুর বলে ডাক দিলে বাবা হুযুর আরও দুটি ৫০০ টাকার নোট হুযুরের হাতে দিয়ে বলতে লাগলেন—'আজকে আর বাবা ডাকবেন না, পকেটে আর টাকা নেই'। মসজিদে উপস্থিত ছাত্র ও মুসল্লিদের মধ্যে ছাত্র ওস্তাদের এই দৃশ্য দেখে আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। মূলত ওদিন থেকেই বাবা হুযুর নামটি সব ছাত্রদের মুখে মুখে হয়ে গেল। বাবা ডেকে আমরা তাঁর কাছ থেকে কত টাকা ছিনিয়ে নিয়েছি তার কোনো হিসেব নেই। এ ঘটনার পর থেকে তিনি বেত্রাঘাত ছাড়াও বাবা ডাকলে খুশী হতেন এবং কিছু টাকা হাদিয়া দিতেন। যেহেতু হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন তাই তিনি দেশব্যাপী ‘বাবা হুযুর’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। একজন শিক্ষকের জন্য এর চেয়ে পরম পাওয়া আর কী আছে! ১৯৮৪ ঈ. সাল থেকে টানা ৩৫ বছর (২০১৯ ঈ.পর্যন্ত) তিনি হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন। হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষক থাকাকালীন ঢাকা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন মাদরাসায় খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন এবং 'বুখারী শরীফ' সহ বিভিন্ন হাদীসের কিতাবের দারছ প্রদান করেছেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তিনি দারছ প্রদান থেকে অনেকটা অক্ষম হয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে হাটহাজারী মাদরাসা ছেড়ে ঢাকা নিজ বাসভবনে অবস্থান করতে থাকেন। কিন্তু হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষকদের তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তাঁর নির্ধারিত বেতন-ভাতা যথারীতি অব্যাহত ছিল। চরমোনাই মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের কিছুদিনের মধ্যেই চরমোনাই পীর মরহুম মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক রাহ. মাওলানা মুমতাজুল কারিমকে অত্যাধিক স্নেহ ও ভালোবাসার পাত্রে পরিণত করে মেয়ে সাইয়্যিদা হূরুন্নিছা বেগমকে তার সথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। দীর্ঘ ৩০ বছর সংসার জীবন শেষে বাবা হুযুরের প্রিয়তমা স্ত্রী (মাওলানা মাহমুদুল হাসান মুমতাযীর মুহতারামা মা) ১৯৯৫ ঈ.তে ইন্তিকাল করেন। অতপর ১৯৯৬ ঈ.তে বাবা হুযুর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সদা সুন্নতের ওপর অটল, বিশিষ্ট বুযুর্গের আমল-আখলাকের কথা সর্বজনবিদিত। অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায়ও কেউ তাকে দেখতে গেলে হাদিয়া দেওয়ার কথা ভুলতেন না। গত ২৯.১১.'২১ঈ. তারিখে আমি অধম তাঁর সাথে সাক্ষাত ও দু'আ নেয়ার জন্য তার ঢাকাস্ত বাসায় গেলে মুমূর্ষু অবস্থায়ও তিনি আমার হাতের মুঠোয় পাঁচশত টাকার কচকচে একটি নোট গুঁজে দেন। তার দেয়া হাদিয়ার টাকা আজও আমি আলমিরাতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। তিনি সুন্নতের খেলাফ কোনো কিছু দেখলে খুব রেগে যেতেন। সুন্নাহর উপর আমল করা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছিল। দুনিয়ার বুকে আমরা অনেক দরবেশ-বুযুর্গ, পীর-মাশাইখ ও জ্ঞানী-গুণীর দেখা পাই। কিন্তু কথা ও কাজে মিল রেখে জীবন পরিচালনা করেছেন এমন ব্যক্তি পাওয়া সত্যিই দূর্লভ। মাওলানা মুমতাযুল করীম বাবা হুযুর ছিলেন সম্পুর্ণ এর বিপরীত। ইসলামের প্রচার-প্রসার, কুরআনের তাফসীর, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদসহ নানা দ্বীনী কাজে তিনি দেশের আনাচে-কানাচে চষে বেড়িয়েছেন। অংশ নিয়েছেন সভা-সমিতি, ওয়ায মাহফিল, জনসভা ও ইসলামী সম্মেলনে। একাধিক দেশও ভ্রমণ করেছেন। তন্মধ্যে তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, লন্ডন, থাইল্যান্ড, চীন, হংকং, কুয়েত, কাতার, বাহারাইন, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ভারত ও মায়ানমার অন্যতম। শেষ জীবনে শারিরীকভাবে অসুস্থ হলেও উম্মাহর চিন্তায় সদা ব্যাকুল ছিলেন তিনি। উম্মাহর কল্যাণে তিনি অনেক কাজ করেছেন। শুধু হাদীসের খিদমাত ও ওয়ায মাহফিল নয়, লেখালেখির ময়দানেও মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুর রাহ.র অবদান রয়েছে। সুলুক ও তাসাউ্উফের মেহনতও তিনি করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম হাকীমুল ইসলাম মাওলানা কারী তায়্যিব রাহ.র নিকট বাই'আত গ্ৰহণ করেন। পরবর্তীতে পীরে কামেল মাওলানা মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান এলাহাবাদী (বখশিবাজারী) তাকে চিঠির মাধ্যমে চার তরিকায় খেলাফত প্রদান এবং বায়াত করার অনুমতি দেন। এছাড়া দারুল মা‘আরিফ চট্টগ্রামের তদানীন্তন শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা ইহসানুল হক রাহ. তাকে লিখিতভাবে খেলাফত প্রদান করেন এবং খানকায়ে এহসানিয়া প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেন। ২০১৭ সালে মাহবুবুল উলামা হযরত মাওলানা পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী মুজাদ্দেদীও তাকে খেলাফত প্রদান করেন। তার রচিত গ্রন্থাবলীর অন্যতম হলো— • বোখারি শরিফের উর্দূ ব্যাখ্যাগ্রন্থ হাবিবুল বারী শরহিল বোখারি, • আরবী কাওয়াইদে ফিকহিল হানাফি • তারিখুত তাফসির, • কোরআন-হাদিসের অমূল্য রত্ন, • পরকালে মুক্তি কিসে? (অনুবাদ), • উলুমুল কুরআন, • এসো কোরআনের অর্থ শিখি, • আকিদায়ে খতমে নবুওয়ত, • রায়বেন্ডের দশদিন (অনুবাদ) ও • আল্লাহকে পাওয়ার রাস্তা। এছাড়া বিভিন্ন মাসিক পত্রিকা, স্মরণিকা ও স্মারকগ্রন্থে তার অনেক লেখা প্রকাশ হয়েছে। মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুরের উস্তাযদের অন্যতম হলেন— শায়খুত তাফসীর ওয়াল ফুনুন আল্লামা ইদরীস কান্ধলভী রাহি., শাইখুল হাদীস আল্লামা মুহাম্মদ সরফরায খান সফদর রাহ., উস্তাযুল-কুল শাইখুল মাশায়েখ আল্লামা রাসূল খান রাহ. ও শাইখুল ফালসাফা মাওলানা গোলাম গাওছ হাজারভী রাহ., বাংলাদেশের মীর সাহেব হুযুরখ্যাত শাইখুল উলূম ওয়াল ফুনূন, রঈসুল মুহাদ্দিসিন আল্লামা আমীর হুসাইন রাহ., শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহ., আল্লামা আনওয়ারুল আযীম রাহ., শাইখুল হাদীস মাওলানা নূরুল ইসলাম শর্শদীর হুযুর রাহ.। বাবা হুযুর বাংলদেশের সদর সাহেব হুযুরখ্যাত মুজাহিদে আযম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রাহ. এর সান্নিধ্যও পেয়েছেন। ১৯৬৭ ঈ.র দিকে তিনি গওহরডাঙ্গা মাদরাসায় গেলে সদর সাহেব হুযুর তাকে সাথে করে নিয়ে পুরো মাদরাসা ঘুরিয়ে দেখান এবং ছাত্রদের দরস দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশের বড় বড় আলেমদের সান্নিধ্য তিনি পেয়েছেন। তিনি যাদের সান্নিধ্য পেয়েছেন তাদের অন্যতম হলেন— মুফতীয়ে আযম মুফতী ফয়যুল্লাহ রাহ. ও পটিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুফতী আযীযুল হক রাহ.। তিনি সারাজীবন দ্বীনের আলো, হাদীসের বাণী, সুন্নতের দাওয়াত ও কুরআনের আওয়াজকে বুলন্দ করার মিশন নিয়ে কাজ করেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন নিজ হাতে গড়া ছাত্রদের নিয়ে, তারা যেন প্রকৃত আলিম ও দ্বীনের দা'ঈ হয়ে ইসলামের প্রচার-প্রসারে আত্মনিয়োগ করতে পারেন। হাটহাজারী মাদরাসায় আমার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হওয়ার ব্যপারে যাদের পরামর্শ ও অবদান রয়েছে মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুরও তাদের একজন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। সাদাসিধে যিন্দেগি ও সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। সত্য-সুন্দরের পথে, আল্লাহ নির্দেশিত ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লামের প্রদর্শিত জীবনের পথে জীবনের লক্ষ্য স্থির করেছিলেন।পার্থিব কোনো লোভ-লালসা তাকে কখনো বিন্দুমাত্র স্পর্শ করতে পারেনি, তার স্বচ্ছতা ও সততার বিষয়টি শত্রু-মিত্র, পক্ষ-বিপক্ষ নির্বিশেষে সর্বমহলে প্রশংসিত। সততার এই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সবার জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। রাব্বে কাইনাতের দরবারে আমাদের বিনীত প্রার্থনা—মহান আল্লাহ তা'আলা তার জীবনের খাত্বা-কসূর ক্ষমা করে তাকে যেন জান্নাতের আ'লা মাকাম দান করেন! আমীন ! বাবা হুযুরের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল সুগভীর। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা, বহির্বিশ্বের সিঙ্গাপুর থাইল্যান্ড সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে বাবা হুযুরের সফরসঙ্গী হওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। তার সাথে রয়েছে অনেক স্মৃতি; কিছু স্মৃতি মজার, কিছু স্মৃতি শিক্ষার। এসব লিখতে গেলে একটি ভলিয়ম হয়ে যাবে। তবে এতটুকু আজকের এই সংক্ষিপ্ত লেখায় বলা যায়— সফরে-হযরে দেশে-বিদেশে বাবা হুযুরের কোনোদিন তাহাজ্জুদ ক্বাযা হয়েছে বলে অন্তত আমার জানা নেই। বাসে-বিমানে-রেলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায প্রথম ওয়াক্তে তিনি আদায় করতে ভুলে যাননি কখনো। আজ ২৮ মার্চ ২০২৩ ঈ. হাটহাজারী মাদরাসার মাঠে হাজার হাজার মুসল্লিদের উপস্থিতিতে এবং মারহূমের সাহেবযাদা মাওলানা মাহমুদুল হাসান মুমতাযীর ইমামতিতে তাঁর নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে মারহূমের দু' সহকর্মী হযরত মাওলানা শামছুল আলম (মুহাদ্দিস: হাটহাজারী মাদরাসা) ও মাওলানা হারূন যফর রাহ. (মুহাদ্দিস: হাটহাজারী মাদরাসা) এর পাশে বাবা হুযুরকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল বিরাশি বছর। — আশরাফ আলী নিজামপুরী (বারাকাল্লাহু ফি হায়াতীহি)

মুক্তধ্বনি ডেক্স মার্চ ৩০, ২০২৩ 0
মোদি বিরোধী আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েছে, আতঙ্কে শুভেন্দু অধিকারী
আন্তর্জাতিক
মোদি বিরোধী আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েছে, আতঙ্কে শুভেন্দু অধিকারী

ভারতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। “বিজেপি হটাও, সংবিধান বাঁচাও” স্লোগানে রাজপথ কাঁপছে, বিশেষ করে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় লক্ষাধিক মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মোদি সরকারের ভুল নীতির কারণে দেশে ভয়াবহ বেকারত্ব সৃষ্টি হয়েছে, ব্যবসায়ী সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়েছে এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরমভাবে টালমাটাল হয়ে পড়েছে। সরকার যেখানে জনগণের দুঃখ-কষ্টের প্রতি উদাসীন, সেখানে মোদি সরকার সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিন্দু-মুসলিম ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করে সরকার জনদৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদকারীরা বলছে, পাকিস্তানের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা তৈরি করে ভারত ৮৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই আন্দোলনের উত্তাপ থেকে রক্ষা পাননি বিজেপির শীর্ষ নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তার উগ্র সাম্প্রদায়িক মন্তব্যে দেশটির হিন্দু জনগণের মধ্যেও প্রবল ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। কলকাতায় জনরোষের মুখে পড়েন তিনি এবং নিরাপত্তার স্বার্থে পালাতে বাধ্য হন। এক আন্দোলনকারী বলেন, “আমরা গাড়ির ভিতরে ছিলাম, বাইরে থাকলে মেরে ফেলত।” শুভেন্দুর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক হিন্দু নাগরিক বলছেন, "যেখানেই শুভেন্দুকে পাওয়া যাবে, সেখানেই গণধোলাই দেওয়া হবে।" শুভেন্দুর বক্তব্যে তিনি বলেন, “দাড়িওয়ালা টুপিওয়ালাদের গাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেব।” তার এই বক্তব্যে দেশটির হিন্দু সমাজ এবং ব্যবসায়ী মহল তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের মতে, এর ফলে শুধু মুসলিমরাই নয়, হিন্দু ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ভারতের এক হিন্দু নেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “শুভেন্দুর মতো মূর্খ নেতা শুধু ধর্মবিদ্বেষ ছড়িয়ে রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করছে। ও বলছে বাংলাদেশিরা যেন করাচি বা লাহোরে গিয়ে চিকিৎসা করায়। অথচ ওর কথায় হিন্দু-মুসলিম উভয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে।” এই অবস্থায় ভারতের সংবাদমাধ্যমেও প্রশ্ন উঠেছে। জনপ্রিয় এক বিজেপি ঘনিষ্ঠ টিভি চ্যানেল রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিক ময়ুক রঞ্জন ঘোষকে নিয়েও উঠেছে বিতর্ক। কলকাতার মানুষ তাকে সাংবাদিক হিসেবে মানতে নারাজ। তারা বলেন, "সে তো মাছ বিক্রেতা, সাংবাদিক না!" সবমিলিয়ে আন্দোলনের এই ঢেউ যেন থামছেই না। বরং তা ছড়িয়ে পড়ছে সারা ভারতে। প্রতিবাদকারীরা বলছেন, মোদি সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই জনগণের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু তাতেও আন্দোলনের আগুন নিভছে না।

মুক্তধ্বনি ডেক্স জুলাই ৩১, ২০২৫ 0
সর্বাধিক পঠিত
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির ঢাকা বিভাগীয় ব্যুরো চীফ হলেন সাংবাদিক মোঃ মনিরুজ্জামান।

দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”

শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে?

মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।

নবী মুহাম্মদ (সাঃ) - নিষ্পাপ চরিত্রের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ

তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।

মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি?

নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতা: চ্যাটজিপিটি বনাম ডিপসিক?

র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।

শীর্ষ সপ্তাহ

টাঙ্গাইলের কাকুয়া ইউনিয়নে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল
সারা দেশ

টাঙ্গাইলের কাকুয়া ইউনিয়নে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল

ডিসেম্বর ৯, ২০২৫ 0

ভোট জরিপ

আমাদের নতুন ওয়েবসাইট আপনাদের কাছে কেমন লাগছে