র্যাবের অভিযানে টাঙ্গাইল সদর থানায় দায়ের করা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমান (৩২)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, টাঙ্গাইল ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে—বাদী একজন বিধবা নারী। গত ২০২৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলার ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের পর সংসার করার একপর্যায়ে ভিকটিম জানতে পারেন, অভিযুক্ত তার পূর্বের স্ত্রী ও দুই সন্তানের বিষয়টি গোপন রেখে তাকে বিবাহ করেছেন। বিবাহের কিছুদিন পর অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যান। পরবর্তীতে দেশে ফিরে ব্যবসা করার কথা বলে ভিকটিমের পিতার কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভিকটিমকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম তার স্বামী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা এবং টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলা প্রত্যাহার না করলে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঘনিষ্ঠ অবস্থার আপত্তিকর স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্ত। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১২ নভেম্বর দুপুরে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান তার ব্যবহৃত ইমু আইডি থেকে ভিকটিমের ইমু নম্বরে আপত্তিকর ভিডিও পাঠান এবং ভিকটিমের বসবাসরত গোলড়া এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে ভিকটিম চরম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরবর্তীতে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকেই সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, টাঙ্গাইল ক্যাম্প ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপরতা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্তের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে শনিবার বিকেলে ঘারিন্দা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পর্নোগ্রাফি মামলার প্রধান আসামি হাবিবুর রহমান (৩২)-কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় ইউকে জিয়া পরিষদের উদ্বেগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত। ••••••••••••••••• বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল/ বিএনপির চেয়ারপার্সন ও তিনবারের নির্বাচিত সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী, মাদার অফ ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় জিয়া পরিষদ যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এর আয়োজন করা হয়, ১লা ডিসেম্বর ২০২৫, সমবার লন্ডন সময় বিকাল ৫ টায় ও বাংলাদেশ সময় রাত ১১ টায় জুম লিংকে ও 172 Cranbrook road ilford IG1 4LX । সভাপতিত্ব করেন ,বাংলাদেশ থেকে জুম লিংকের মাধ্যমে প্রফেসর ড. সাইফুল আলম চৌধুরী। দোয়া পরিচালনা করেন : কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের সদস্য, ও সর্ব ইউরোপের সমন্বয়ক,কবি-কাওসার হোসাইন ,পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত-এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। জুম লিংকের এর মাধ্যমে ,বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ গ্রহণ করেছেন ,সৌদি আরব ,দুবাই , ইউকে ,ইতালি স্পেন ,সুইডেন ,নেদারল্যান্ড,বাংলাদেশ সহ- আরো অন্যান্য দেশের নেতৃবৃন্দ , এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, এম এ জলিল খান ,আন্তর্জাতিক সম্পাদক জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় নিবার্হী কমিটি , জনাব মঞ্জুর হাসান পল্টু সাধারণ সম্পাদক ইউকে জিয়া পরিষদ। এ ছাড়াও উপস্থপিত ছিলেন ইউকে জিয়া পরিষদের সহ- -সভাপতি ,মোল্লা ফিরোজ, রানা সাগর, ব্যারিস্টার রেজাউল করিম, মনোয়ার হোসেন ক্লার্ক ,আবুবক্কর পটুয়াখালী মো: ইয়াকুব মিয়া, সভাপতি গাজীপুর জেলা জিয়া পরিষদ,জয় ইসলাম ,, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহবুবুর রহমান, নুর রহমান, মুহিবুর রহমান , শেখ এমদাদুর রহমান অপু,, মনোয়ার হুসেন কাজল, মো: রাইভেন, মান্নান খান , সাব্বীর চৌধুরী, শেখ ফকরুল ইসলাম, রিপন মজুমদার, শাহরিয়ার ,সাবেক ছাত্রনেতা এম আর পিতম প্রমুখ । দোয়া মাহফিলে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করেন,আহসান উদ্দিন মানিক হাই,সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়া পরিষদ ইউকে । যুগ্ম সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি প্রাণ ও প্রানভিক্ষা চেয়ে ,মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বিশেষ দোয়া করা হয়। উপস্থিত সবাই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করেন মেডাম মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। মহান আল্লাহ যেন সেই গনতন্ত্রের প্রথম সূর্যোদয় ,নেক হায়াতের মধ্য দিয়েদেখে যেতে পারেন ।
সৌদি আরবের যাকাত, ট্যাক্স ও কাস্টমস অথরিটি দুটি পৃথক অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক চোরা–চালানের চেষ্টা ব্যর্থ করেছে। আলদুরা এবং এমটি কোয়ার্টার—এই দুই গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংয়ে অভিযানে মোট ৩ হাজার ৩৫৪টি ক্যাপটাগন পিল এবং ২১ কেজির বেশি মেথামফিটামিন (সাবু) জব্দ করা হয়। অথরিটির মুখপাত্র হামুদ আল হারবি জানান, প্রথম ঘটনাটি ঘটে আলদুরা ক্রসিংয়ে। সেখানে একটি গাড়ির জ্বালানি ট্যাংকের ভেতরে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে লুকানো অবস্থায় ক্যাপটাগন পিলগুলো পাওয়া যায়। দ্বিতীয় অভিযানটি পরিচালিত হয় এমটি কোয়ার্টার ক্রসিংয়ে, যেখানে রাজ্যে প্রবেশকারী একটি ট্রাক থেকে জব্দ করা হয় ২১ কেজিরও বেশি সাবু। তিনি বলেন, মাদক ও অন্যান্য নিষিদ্ধ পদার্থের প্রবেশ ঠেকাতে সংস্থাটি সর্বোচ্চ সতর্ক আছে এবং কাস্টমস নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। চোরা–চালান দমন ও জাতীয় অর্থনীতি রক্ষায় জনসাধারণের সহযোগিতাও কামনা করেছে কর্তৃপক্ষ। যে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ নিরাপত্তা হটলাইন বা ইমেইলে জানানো হলে তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে। সঠিক তথ্য প্রমাণিত হলে দেওয়া হবে আর্থিক পুরস্কারও।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কানকাটা কাদিরাকে (৩৫) পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনার সাতদিন পর এক সৌদি প্রবাসীসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের আব্দুল কাদের চেরাং বাড়ির বাসিন্দা সৌদি আরব প্রবাসী মো. ইদ্রিস ওরফে মানিক (৩৪), মোহাম্মদ রাকিব(২৬) ও একই বাড়ির মো.জাফর (২৮)। বিকেলে আসামিদের নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে। এর আগে, একই দিন ভোরে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চেরাং বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জিলানী ওই উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. গোফরানের ছেলে। পুলিশ জানায়, এক মাস আগে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চেরাং বাড়ির সৌদি আরব প্রবাসী মানিক দেশে ফিরেন। দেশে আসার পর তার থেকে ইয়াবা সেবনের জন্য টাকা দাবি করেন ভিকটিম চার মামলার আসামি কানকাটা কাদিরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একটা বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই সুযোগে কাদিরার প্রতিপক্ষ গ্রুপের রাকিব ও জাফরসহ একাধিক অস্ত্রধারী কাদিরাকে হত্যার মিশনে নামেন। পরবর্তীতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ১০-১৫জন সন্ত্রাসী উপজেলার হাজীপুর গ্রামের মুন্নার দোকানের সামনে তাকে পিটিয়ে এবং উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার পর মরদেহ ডোবায় ফেলে দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক কুতুব উদ্দিন লিয়ন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের পরিবার বেগমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ৭দিন পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিন আসামির মধ্যে দুইজন দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন
মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের মাননীয় হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম, দেশটিতে অবস্থিত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত মি. ইয়াহিয়া হাসান আলকাহতানির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে দুই রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও মালদ্বীপের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। তারা পরিবহন, আবাসন, স্বাস্থ্য, মৎস্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনকূটনীতি ও অবকাঠামো উন্নয়নের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম মালদ্বীপ ও সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের পরিশ্রম, দক্ষতা ও সততার প্রশংসা করে বলেন, “তারা বাংলাদেশের গর্ব।” জবাবে রাষ্ট্রদূত আলকাহতানি সৌদি আরবের উন্নয়নে বাংলাদেশের অবদান এবং প্রবাসীদের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আলোচনার শেষে দুই পক্ষ ভবিষ্যতে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের বন্ধন আরও মজবুত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন
কাতার, সৌদি আরব ও ইরানসহ আঞ্চলিক দেশগুলো আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত বাহিনী ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দুই দেশকে সংযম প্রদর্শন এবং সংলাপ ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমের মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করতে আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে উত্তেজনা প্রশমিত হয় এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।” ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার প্রতিবেশী পরিবেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং দুই মুসলিম প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত।” রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ কারিবুল্লাহ সাদাত বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধের অব্যাহত থাকা সকল দেশের জন্য ক্ষতিকর। সমস্যার সমাধান কূটনৈতিক বোঝাপড়া ও পুনর্মিলনের মাধ্যমে হতে পারে—আফগানিস্তানে পাকিস্তানের দূতাবাস এবং পাকিস্তানে আফগান দূতাবাসের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া উচিত।” ইসলামিক আমিরাতের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, পাকিস্তান যদি আবারও হামলা চালায়, তবে আফগানিস্তান উপযুক্ত জবাব দেবে। মুজাহিদ বলেন, “কাতার ও সৌদি আরব যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, এবং ইসলামিক আমিরাত সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ স্থগিত করেছে। তবে আজ সকালে পাকিস্তানের হামলার খবর পাওয়া গেছে। এই হামলা অব্যাহত থাকলে আফগানিস্তান তার ভূখণ্ড রক্ষার পূর্ণ অধিকার রাখে।” অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেন, “আমাদের দেশ জাতীয় স্বার্থ ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূখণ্ড থেকে ভারতের মদদপুষ্ট খারেজি সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে—এটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে নথিভুক্ত বাস্তবতা।” এছাড়া পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি দাবি করেন, আফগান বাহিনীর পাকিস্তান ভূখণ্ডে গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এদিকে ভারতের সফরে থাকা আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি বলেন, “আফগান জাতির বৈশিষ্ট্য হলো—যখন কোনো বিদেশি শক্তি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, তখন সকল আলেম, নেতা ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়।” উল্লেখ্য, পাকিস্তান আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালানোর পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। এর জবাবে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দুরান্ড লাইনের পারের পাকিস্তানি পোস্টগুলোতে পাল্টা হামলা চালায়, যা চলতে থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত।
আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, শনিবার রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো পাল্টা অভিযানে অন্তত ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। মুজাহিদ বলেন, “কাল্পনিক ডিউরান্ড লাইনের ওপারে পরিচালিত এই প্রতিশোধমূলক অভিযানে বেশ কিছু অস্ত্রও অস্থায়ীভাবে জব্দ করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এই অভিযানে ৯ জন আফগান সেনা শাহাদত বরণ করেছেন এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন, পাশাপাশি ২০টি পাকিস্তানি নিরাপত্তা পোস্ট সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। মধ্যরাতে অভিযান স্থগিত: মুজাহিদ জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে শনিবার মধ্যরাতে অভিযান স্থগিত করা হয়। আইএসআইএস-খোরাসান নিয়ে অভিযোগ: মুজাহিদ দাবি করেন, আইএসআইএস-কে আফগানিস্তানে পরাজিত করার পর সংগঠনটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে ঘাঁটি গেড়েছে। তার ভাষায়, “খাইবার পাখতুনখাওয়ায় আইএসআইএস-খোরাসানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর হয়ে সেখানে সদস্যদের আনা হচ্ছে। আমাদের তথ্যে জানা গেছে, ইরান ও মস্কোর সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পরিকল্পনাও সেখান থেকেই করা হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তনে সংঘটিত আইএসআইএস-খোরাসানের হামলাগুলো এই ঘাঁটিগুলো থেকেই পরিকল্পিত হয়েছে। তাই পাকিস্তান সরকার যেন এই গোষ্ঠীর মূল সদস্যদের ইসলামিক আমিরাতের কাছে হস্তান্তর করে। পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান: মুজাহিদ জানান, পাকিস্তান আফগানিস্তানে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে চেয়েছিল, তবে বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানি বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসলামিক আমিরাত সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের হুঁশিয়ারি: আফগান বাহিনী শনিবার রাতে ডিউরান্ড লাইনের বিভিন্ন আফগান প্রদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান চালায়। মুজাহিদ সতর্ক করে বলেন, “আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের যে কোনো প্রচেষ্টা অবশ্যই জবাব দেওয়া হবে।”
হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম সৌদি আরবকে আহ্বান জানিয়েছেন সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করতে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে। শুক্রবার এক ভাষণে তিনি বলেন, ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে হামলা বাড়িয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। নাইম কাসেম তিনটি মূল নীতির ভিত্তিতে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের আহ্বান জানান: ১. সংলাপের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব ও উদ্বেগ সমাধান। ২. স্বীকার করা যে ইসরায়েলই মূল শত্রু, প্রতিরোধ নয়। ৩. অতীতের বিরোধগুলোকে স্থগিত রাখা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, হিজবুল্লাহর অস্ত্র শুধু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে, “লেবানন, সৌদি আরব বা অন্য কারও বিরুদ্ধে নয়।” ‘চাপ শুধুই ইসরায়েলের উপকারে আসবে’ কাসেম সতর্ক করেন, প্রতিরোধে চাপ সৃষ্টি করা মানে শুধু ইসরায়েলকে শক্তিশালী করা। তিনি বলেন, “যদি প্রতিরোধ ভেঙে ফেলা হয়, তাহলে পরবর্তী লক্ষ্য হবে অন্যান্য রাষ্ট্র।” সৌদি আরব ও হিজবুল্লাহর মধ্যে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে। ২০১৬ সালে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) হিজবুল্লাহকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে, সিরিয়া ও ইয়েমেনে তাদের ভূমিকার কারণে। ‘গণহত্যা হয়ে গেল সমাধান’ নাইম কাসেম ইসরায়েলকে “ঔপনিবেশিক ঘাঁটি” আখ্যা দিয়ে বলেন, ব্রিটেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় এটি দাঁড়িয়ে আছে। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনে আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে নৃশংসতা চালাচ্ছে। তার ভাষায়, “নরম যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, আব্রাহাম চুক্তি—কোনো কিছুই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দ্রুত বিজয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনি। তাই তাদের কাছে এখন গণহত্যাই সমাধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলের হামলার পর থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন মোড় নিয়েছে। মার্কিন প্রস্তাবে অনাস্থা কাসেম বলেন, “যখন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ঘোষণা করে যে তারা ইসরায়েলের স্বার্থেই কাজ করছে, তখন কিভাবে তাদের কোনো প্রস্তাবে আস্থা রাখা যায়?” মার্কিন চাপের মুখে লেবাননকে ২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে বলা হয়েছিল। তবে কাসেম জানান, হিজবুল্লাহ সংলাপের জন্য প্রস্তুত, তবে সেটা হবে “শক্তির অবস্থান থেকে”—ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অটল থাকবে। সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তির পর আহ্বান এই আহ্বান এমন সময়ে এলো, যখন মাত্র দুই দিন আগে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান ইসরায়েলের কাতার হামলার প্রেক্ষিতে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ইসরায়েলি হামলায় দুই নিহত শুক্রবার লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের দুটি হামলায় দুইজন নিহত ও অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। একটি হামলা তিবনিন শহরের একটি সরকারি হাসপাতালের বাইরে গাড়িকে লক্ষ্য করে, আরেকটি আঘাত হানে আনসার এলাকায়। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, এতে হিজবুল্লাহর এক কমান্ডার এবং রাদওয়ান বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া নাকুরায় হিজবুল্লাহর নজরদারি কাজে ব্যবহৃত একটি নৌযানও ধ্বংস করা হয়েছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম ইসরায়েলের এই হামলাকে “ভীতি প্রদর্শন ও আগ্রাসন” বলে আখ্যা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ ২০২৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহকে লিতানি নদীর উত্তরে সরে যেতে এবং নিরস্ত্র হতে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে ইসরায়েলেরও লেবাননের দখলকৃত এলাকা ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও দক্ষিণ লেবাননের অন্তত পাঁচটি স্থানে ইসরায়েলি সেনা অবস্থান করছে এবং প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে।
মাওলানা মুমতাযুল করীম [বাবা হুযুর] আমার জানা মতে ১৯৪২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাদাসিধে আল্লাহওয়ালা এবং দরবেশ সিফাতের মানুষ ছিলেন। দ্বীনের প্রতি তার দরদ অপরিসীম। বাংলাদেশের প্রায় সকল মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে এবং বড় বড় ইসলামী সম্মেলনে তিনি আলোচনার জন্য আমন্ত্রিত হতেন। ধর্মপ্রাণ মানুষ তার সারগর্ভ আলোচনা শোনার জন্য আগ্রহভরে অপেক্ষা করতেন। তাঁর আলোচনা ছিল সংক্ষিপ্ত এবং ব্যাপক অর্থবোধক। মাওলানা মুমতাযুল করীম (বাবা হুযুর) নিজ এলাকার বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান 'বটোগ্রাম হামীদিয়া মাদরাসা'য় শিক্ষা-জীবন শুরু করেন অতঃপর ফেনী শর্শদী মাদরাসায় কিছুদিন পড়াশোনা করে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উম্মুল মাদারিস দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি হন। হাটহাজারী মাদরাসায় কয়েক বছর লেখাপড়া করার পর জামি'আ ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন। দাওরায়ে হাদীস সমাপ্ত করে উচ্চ শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ১৯৬৩ ঈ. সালে পাকিস্তান গমন করেন। পাকিস্তানের বিখ্যাত মাদরাসা 'জামিয়া আশরাফিয়া লাহোর' থেকে তাফসীর এবং আদব (আরবী সাহিত্য) বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণ করেন। দেশে ফিরে এসে সর্বপ্রথম ময়মনসিংহের 'কাতলাসেন কাদেরীয়া কামিল মাদরাসা'য় মুহাদ্দিস হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তবে বেশিদিন সেখানে ছিলেন না। একই বছর ১৯৬৫ ঈ. সনে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন এবং সেখানে মুসলিম শরীফের দারস প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকা আশরাফুল উলূম বড়কাটারা মাদরাসায় সাত বছর মুহাদ্দিস হিসেবে খেদমত করে চট্টগ্রামের আল-জামি'আতুল ইসলামীয়া পটিয়া মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পটিয়া মাদরাসায় তিনি টানা সাত বছর কৃতিত্বের সাথে পাঠদান করেন। ১৯৮৪ ঈ. সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে তিনি যোগদান করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অত্যন্ত সুনাম ও সুখ্যাতির সঙ্গে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অধ্যাপনাকালে শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বাবা হুযুর নামে পরিচিত হওয়া ও বাবা হুযুর নামের উৎপত্তি: তিনি বাবা হুযুর নামে পরিচিত। বাবা নামে তাঁকে সবাই ডাকে। তবে এই নামের উৎপত্তি কোথায়, কীভাবে তিনি 'বাবা হুযুর' নামে প্রসিদ্ধ হলেন—অনেকেরই অজানা। ১৯৮৫ ঈ. সন। হুযুরের নিকট আমাদের দারছে নিযামীর আরবী সাহিত্য ও শে'র এর কিতাব—'নাফহাতুল আরব' ও 'ক্বাসীদাহ বুরদাহ' পড়ার সুযোগ হয়েছিল। মাওলানা মাহমুদ বাঁশখালী (যিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন), মাওলানা আতাউল্লাহ (বর্তমান মুহতামিম: হেমায়েতুল ইসলাম কৈগ্রাম, পটিয়া, চট্টগ্রাম), মাওলানা মুহাম্মদ গড়দুয়ারী (বর্তমান শিক্ষক: দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা), মাওলানা মুহাম্মদ আলী চারিয়া এবং আমি লেখক এক জামাতের ছাত্র। বাবা হুযুরের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিল গভীর। ছাত্র ও শিক্ষকের সম্পর্ক। বাপ-বেটার সম্পর্ক। আমাদের 'ক্বাসীদাহ বুরদাহ' দারছ দেয়ার সময় তিনি এক ছাত্রকে বেত্রাঘাত করলে এক পর্যায় ঐ ছাত্র 'ও বাবা, ও বাবা' করে চিৎকার করতে থাকে। তখন বাবা হুযুর বেত্রাঘাত না করে হাসতে থাকেন এবং পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে ঐ ছাত্রকে হাদিয়া দেন। সেদিন থেকে যখন তিনি কোনো ছাত্রকে বেত্রাঘাত করতেন ছাত্ররা 'বাবা' বলে ডাক দিলে তিনি আর মারতেন না। এভাবে শুরু হয়ে গেল বাবা ডাকা-ডাকি। বাবা হুযুর নামের প্রসিদ্ধ হওয়ার আরো কাহিনী আছে— হাটহাজারী মাদরাসার বড় মসজিদে ফজরের নামাযের পর শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. জামি'আর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় জরুরী কথাবার্তা বলতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ নাসিহা পেশ করতেন। অনেকসময় নাসিহা শুরু করার পূর্বে চট্টগ্রামের ভাষায় বলতেন—'ওয়া! মৌলভী মুমতায আছোনি?' তিনি জানতেন আর কেউ না থাকলেও বাবা হুযুর প্রথম কাতারে আছেন। উত্তরে বাবা হুযুর বলতেন—'লাব্বাইক, আছি হুযুর'। প্রায় সময় এরকম দৃশ্য আমরা দেখতে পেতাম। একদিনের ঘটনা—ফজরের নামাযের পর অন্যান্য দিনের ন্যায় শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. বলে উঠলেন— 'বাবা হুযুর আছোনি?' উস্তাযের মুখে বাবা ডাকা শুনে পকেট থেকে ৫০০ টাকার দুটি নোট বের করে উস্তাদের হাতে তুলে দিলেন বাবা হুযুর। তখন শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী রাহ. মজা করে পুনরায় বাবা হুযুর বলে ডাক দিলে বাবা হুযুর আরও দুটি ৫০০ টাকার নোট হুযুরের হাতে দিয়ে বলতে লাগলেন—'আজকে আর বাবা ডাকবেন না, পকেটে আর টাকা নেই'। মসজিদে উপস্থিত ছাত্র ও মুসল্লিদের মধ্যে ছাত্র ওস্তাদের এই দৃশ্য দেখে আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। মূলত ওদিন থেকেই বাবা হুযুর নামটি সব ছাত্রদের মুখে মুখে হয়ে গেল। বাবা ডেকে আমরা তাঁর কাছ থেকে কত টাকা ছিনিয়ে নিয়েছি তার কোনো হিসেব নেই। এ ঘটনার পর থেকে তিনি বেত্রাঘাত ছাড়াও বাবা ডাকলে খুশী হতেন এবং কিছু টাকা হাদিয়া দিতেন। যেহেতু হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন তাই তিনি দেশব্যাপী ‘বাবা হুযুর’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। একজন শিক্ষকের জন্য এর চেয়ে পরম পাওয়া আর কী আছে! ১৯৮৪ ঈ. সাল থেকে টানা ৩৫ বছর (২০১৯ ঈ.পর্যন্ত) তিনি হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষকতা করেছেন। হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষক থাকাকালীন ঢাকা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন মাদরাসায় খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন এবং 'বুখারী শরীফ' সহ বিভিন্ন হাদীসের কিতাবের দারছ প্রদান করেছেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তিনি দারছ প্রদান থেকে অনেকটা অক্ষম হয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে হাটহাজারী মাদরাসা ছেড়ে ঢাকা নিজ বাসভবনে অবস্থান করতে থাকেন। কিন্তু হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষকদের তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তাঁর নির্ধারিত বেতন-ভাতা যথারীতি অব্যাহত ছিল। চরমোনাই মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের কিছুদিনের মধ্যেই চরমোনাই পীর মরহুম মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক রাহ. মাওলানা মুমতাজুল কারিমকে অত্যাধিক স্নেহ ও ভালোবাসার পাত্রে পরিণত করে মেয়ে সাইয়্যিদা হূরুন্নিছা বেগমকে তার সথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। দীর্ঘ ৩০ বছর সংসার জীবন শেষে বাবা হুযুরের প্রিয়তমা স্ত্রী (মাওলানা মাহমুদুল হাসান মুমতাযীর মুহতারামা মা) ১৯৯৫ ঈ.তে ইন্তিকাল করেন। অতপর ১৯৯৬ ঈ.তে বাবা হুযুর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সদা সুন্নতের ওপর অটল, বিশিষ্ট বুযুর্গের আমল-আখলাকের কথা সর্বজনবিদিত। অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায়ও কেউ তাকে দেখতে গেলে হাদিয়া দেওয়ার কথা ভুলতেন না। গত ২৯.১১.'২১ঈ. তারিখে আমি অধম তাঁর সাথে সাক্ষাত ও দু'আ নেয়ার জন্য তার ঢাকাস্ত বাসায় গেলে মুমূর্ষু অবস্থায়ও তিনি আমার হাতের মুঠোয় পাঁচশত টাকার কচকচে একটি নোট গুঁজে দেন। তার দেয়া হাদিয়ার টাকা আজও আমি আলমিরাতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। তিনি সুন্নতের খেলাফ কোনো কিছু দেখলে খুব রেগে যেতেন। সুন্নাহর উপর আমল করা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছিল। দুনিয়ার বুকে আমরা অনেক দরবেশ-বুযুর্গ, পীর-মাশাইখ ও জ্ঞানী-গুণীর দেখা পাই। কিন্তু কথা ও কাজে মিল রেখে জীবন পরিচালনা করেছেন এমন ব্যক্তি পাওয়া সত্যিই দূর্লভ। মাওলানা মুমতাযুল করীম বাবা হুযুর ছিলেন সম্পুর্ণ এর বিপরীত। ইসলামের প্রচার-প্রসার, কুরআনের তাফসীর, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদসহ নানা দ্বীনী কাজে তিনি দেশের আনাচে-কানাচে চষে বেড়িয়েছেন। অংশ নিয়েছেন সভা-সমিতি, ওয়ায মাহফিল, জনসভা ও ইসলামী সম্মেলনে। একাধিক দেশও ভ্রমণ করেছেন। তন্মধ্যে তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, লন্ডন, থাইল্যান্ড, চীন, হংকং, কুয়েত, কাতার, বাহারাইন, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ভারত ও মায়ানমার অন্যতম। শেষ জীবনে শারিরীকভাবে অসুস্থ হলেও উম্মাহর চিন্তায় সদা ব্যাকুল ছিলেন তিনি। উম্মাহর কল্যাণে তিনি অনেক কাজ করেছেন। শুধু হাদীসের খিদমাত ও ওয়ায মাহফিল নয়, লেখালেখির ময়দানেও মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুর রাহ.র অবদান রয়েছে। সুলুক ও তাসাউ্উফের মেহনতও তিনি করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম হাকীমুল ইসলাম মাওলানা কারী তায়্যিব রাহ.র নিকট বাই'আত গ্ৰহণ করেন। পরবর্তীতে পীরে কামেল মাওলানা মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান এলাহাবাদী (বখশিবাজারী) তাকে চিঠির মাধ্যমে চার তরিকায় খেলাফত প্রদান এবং বায়াত করার অনুমতি দেন। এছাড়া দারুল মা‘আরিফ চট্টগ্রামের তদানীন্তন শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা ইহসানুল হক রাহ. তাকে লিখিতভাবে খেলাফত প্রদান করেন এবং খানকায়ে এহসানিয়া প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেন। ২০১৭ সালে মাহবুবুল উলামা হযরত মাওলানা পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী মুজাদ্দেদীও তাকে খেলাফত প্রদান করেন। তার রচিত গ্রন্থাবলীর অন্যতম হলো— • বোখারি শরিফের উর্দূ ব্যাখ্যাগ্রন্থ হাবিবুল বারী শরহিল বোখারি, • আরবী কাওয়াইদে ফিকহিল হানাফি • তারিখুত তাফসির, • কোরআন-হাদিসের অমূল্য রত্ন, • পরকালে মুক্তি কিসে? (অনুবাদ), • উলুমুল কুরআন, • এসো কোরআনের অর্থ শিখি, • আকিদায়ে খতমে নবুওয়ত, • রায়বেন্ডের দশদিন (অনুবাদ) ও • আল্লাহকে পাওয়ার রাস্তা। এছাড়া বিভিন্ন মাসিক পত্রিকা, স্মরণিকা ও স্মারকগ্রন্থে তার অনেক লেখা প্রকাশ হয়েছে। মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুরের উস্তাযদের অন্যতম হলেন— শায়খুত তাফসীর ওয়াল ফুনুন আল্লামা ইদরীস কান্ধলভী রাহি., শাইখুল হাদীস আল্লামা মুহাম্মদ সরফরায খান সফদর রাহ., উস্তাযুল-কুল শাইখুল মাশায়েখ আল্লামা রাসূল খান রাহ. ও শাইখুল ফালসাফা মাওলানা গোলাম গাওছ হাজারভী রাহ., বাংলাদেশের মীর সাহেব হুযুরখ্যাত শাইখুল উলূম ওয়াল ফুনূন, রঈসুল মুহাদ্দিসিন আল্লামা আমীর হুসাইন রাহ., শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহ., আল্লামা আনওয়ারুল আযীম রাহ., শাইখুল হাদীস মাওলানা নূরুল ইসলাম শর্শদীর হুযুর রাহ.। বাবা হুযুর বাংলদেশের সদর সাহেব হুযুরখ্যাত মুজাহিদে আযম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রাহ. এর সান্নিধ্যও পেয়েছেন। ১৯৬৭ ঈ.র দিকে তিনি গওহরডাঙ্গা মাদরাসায় গেলে সদর সাহেব হুযুর তাকে সাথে করে নিয়ে পুরো মাদরাসা ঘুরিয়ে দেখান এবং ছাত্রদের দরস দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বাংলাদেশের বড় বড় আলেমদের সান্নিধ্য তিনি পেয়েছেন। তিনি যাদের সান্নিধ্য পেয়েছেন তাদের অন্যতম হলেন— মুফতীয়ে আযম মুফতী ফয়যুল্লাহ রাহ. ও পটিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুফতী আযীযুল হক রাহ.। তিনি সারাজীবন দ্বীনের আলো, হাদীসের বাণী, সুন্নতের দাওয়াত ও কুরআনের আওয়াজকে বুলন্দ করার মিশন নিয়ে কাজ করেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন নিজ হাতে গড়া ছাত্রদের নিয়ে, তারা যেন প্রকৃত আলিম ও দ্বীনের দা'ঈ হয়ে ইসলামের প্রচার-প্রসারে আত্মনিয়োগ করতে পারেন। হাটহাজারী মাদরাসায় আমার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হওয়ার ব্যপারে যাদের পরামর্শ ও অবদান রয়েছে মাওলানা মুমতাযুল কারীম বাবা হুযুরও তাদের একজন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। সাদাসিধে যিন্দেগি ও সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। সত্য-সুন্দরের পথে, আল্লাহ নির্দেশিত ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লামের প্রদর্শিত জীবনের পথে জীবনের লক্ষ্য স্থির করেছিলেন।পার্থিব কোনো লোভ-লালসা তাকে কখনো বিন্দুমাত্র স্পর্শ করতে পারেনি, তার স্বচ্ছতা ও সততার বিষয়টি শত্রু-মিত্র, পক্ষ-বিপক্ষ নির্বিশেষে সর্বমহলে প্রশংসিত। সততার এই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সবার জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। রাব্বে কাইনাতের দরবারে আমাদের বিনীত প্রার্থনা—মহান আল্লাহ তা'আলা তার জীবনের খাত্বা-কসূর ক্ষমা করে তাকে যেন জান্নাতের আ'লা মাকাম দান করেন! আমীন ! বাবা হুযুরের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল সুগভীর। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা, বহির্বিশ্বের সিঙ্গাপুর থাইল্যান্ড সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে বাবা হুযুরের সফরসঙ্গী হওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। তার সাথে রয়েছে অনেক স্মৃতি; কিছু স্মৃতি মজার, কিছু স্মৃতি শিক্ষার। এসব লিখতে গেলে একটি ভলিয়ম হয়ে যাবে। তবে এতটুকু আজকের এই সংক্ষিপ্ত লেখায় বলা যায়— সফরে-হযরে দেশে-বিদেশে বাবা হুযুরের কোনোদিন তাহাজ্জুদ ক্বাযা হয়েছে বলে অন্তত আমার জানা নেই। বাসে-বিমানে-রেলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায প্রথম ওয়াক্তে তিনি আদায় করতে ভুলে যাননি কখনো। আজ ২৮ মার্চ ২০২৩ ঈ. হাটহাজারী মাদরাসার মাঠে হাজার হাজার মুসল্লিদের উপস্থিতিতে এবং মারহূমের সাহেবযাদা মাওলানা মাহমুদুল হাসান মুমতাযীর ইমামতিতে তাঁর নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে মারহূমের দু' সহকর্মী হযরত মাওলানা শামছুল আলম (মুহাদ্দিস: হাটহাজারী মাদরাসা) ও মাওলানা হারূন যফর রাহ. (মুহাদ্দিস: হাটহাজারী মাদরাসা) এর পাশে বাবা হুযুরকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল বিরাশি বছর। — আশরাফ আলী নিজামপুরী (বারাকাল্লাহু ফি হায়াতীহি)
প্রয়োজনীয় সংস্কারের মধ্যেই নির্বাচনের কাজে মনোযোগ দিতে হবে, জনগনের প্রত্যাশিত নির্বাচন যথাসময়ে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহবান জানান সৌদি আরব বিএনপির পশ্চিমাঞ্চল সভাপতি ও নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের বিএনপির থেকে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আবদুল মান্নান। তিনি আজ দুপুরে সোনাইমুড়ী অম্বরনগর নিজ বাড়িতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তির জন্য দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানের সময় সাংবাদিকদের এই কথা বলেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি আগামীতে জাতীয়তাবাদী শক্তি সবাই হাতে-হাত কাঁধে-কাধ মিলিয়ে কাজ করার সহযোগিতা চান। দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে অমনগর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল্লাহ মাসুদ। অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্মআহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ইন্জিনিয়ার সলিমউল্লাহ সেলিম। অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান শাহজালাল অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি মোঃ সোবহান সহ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলকে শীর্ষস্থানীয় উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে রূপান্তরের লক্ষ্যে মাতারবাড়ী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোর উন্নয়নে দ্রুততা আনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (MIDI)-এর অগ্রগতি পর্যালোচনা শেষে তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা মাতারবাড়িকে দেশের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর, পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ এবং জ্বালানি উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রয়োজন, যা আকর্ষণ করতে আমাদের মাস্টারপ্ল্যান ও কাঠামোগত প্রস্তুতি দ্রুত শেষ করতে হবে।” তিনি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কথা তুলে ধরে বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ করে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, গভীর সমুদ্র বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ এবং শ্রমিকদের জন্য একটি পরিকল্পিত আবাসিক শহর গড়ে তোলার নির্দেশনা দেন তিনি। প্রফেসর ইউনূস জানান, আগামী ২৮ মে শুরু হওয়া জাপান সফরে MIDI অঞ্চলের উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে উপস্থাপন করা হবে। সফরের অংশ হিসেবে ৩০ মে টোকিওতে আয়োজিত “৩০তম নিক্কেই ফিউচার অব এশিয়া” সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। এই সফরে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে। বৈঠকে জানানো হয়, জাপান মহেশখালী-মাতারবাড়ী অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর আগে তারা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলে, যা ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। এছাড়া, MIDI অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে সৌদি আরবের পেট্রোকেমিক্যাল জায়ান্ট আরামকো, আবুধাবি পোর্টস, রেড সি গেটওয়ে, জাপানি বিদ্যুৎ কোম্পানি জেরা, এবং মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস। মাতারবাড়িতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে জাপানি সংস্থা পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও টোয়া কর্পোরেশন-এর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই প্রকল্পটি জাইকার সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং এটি MIDI উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করবে। উল্লেখ্য, মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন (MIDI) হলো বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ একটি উদ্যোগ, যা সরবরাহ ব্যবস্থা, জ্বালানি ও শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলকে একটি কৌশলগত অর্থনৈতিক করিডোরে রূপান্তর করার লক্ষ্যে কাজ করছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। উপস্থিত ছিলেন এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদসহ সড়ক পরিবহন, নৌপরিবহন, জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ। MIDI সেলের মহাপরিচালক সারওয়ার আলম চলমান প্রকল্পগুলোর একটি বিশদ পর্যালোচনা সভায় উপস্থাপন করেন।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।