টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় শাফিউল মুজনবীন দীপ্ত (২৫) নামে সিঙ্গার কোম্পানির এক তরুণ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দীপ্ত মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক শহীদুল্লাহ খানের একমাত্র ছেলে। পারিবারিকসূত্রে জানা যায়, দীপ্ত মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটী কবরস্থান এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। পরিবার জানায়, সিঙ্গার কোম্পানিতে দিনাজপুর জেলা ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন দীপ্ত। সাপ্তাহিক ছুটিতে দিনাজপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার রাতে মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মির্জাপুর বাইপাস এলাকায় পৌঁছে বাস থেকে নামার পাঁচ মিনিট আগেই তিনি মুঠোফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু বাস থেকে নামার পরপরই অজ্ঞাত একটি দ্রুতগামী যান তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, তারা বহুবার ফোন করেও দীপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ পাননি। পরে কিছুক্ষণ পর মির্জাপুর থানা পুলিশই ফোন করে তাদের দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে। হঠাৎ করে পরিবারের ভবিষ্যৎ ভেঙে যাওয়ায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো মির্জাপুরে। সদ্য লেখাপড়া শেষ করে স্বপ্ন নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করা এই তরুণের অকাল মৃত্যু সহপাঠী, সহকর্মী ও এলাকাবাসীর মনে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল সারোওয়ার বলেন, “দুর্ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনার যানটি শনাক্তে আমাদের তদন্ত চলছে।” এদিকে এলাকাবাসী দ্রুতগামী যানবাহনের বেপরোয়া গতিকে এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে মহাসড়কে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সড়ক দুর্ঘটনা — মোটরসাইকেল চালক নিহত টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর–তারাকান্দী সড়কের টেপিবাড়ী মলাদহ এলাকায় মিনি ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। শনিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য হলে যোগ করা যাবে) দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মোটরসাইকেল চালক ভূঞাপুর থেকে তারাকান্দীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথে টেপিবাড়ী মলাদহ এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী মিনি ট্রাকের সঙ্গে তার মোটরসাইকেলের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভূঞাপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর মিনি ট্রাকটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, অতিরিক্ত গতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ জানায়, প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির পাইন্দং আমতল (বড় খইয়ে) এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি ভয়াবহ সংঘর্ষে নয়াবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এক পুলিশ সদস্যসহ দু’জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অবস্থাও সঙ্কটজনক বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরের দিকে দ্রুতগতির দুই মোটরসাইকেল মুখোমুখি ধাক্কা খেলে ঘটনাস্থলেই দু’জন প্রাণ হারান। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ও স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার কাজে অংশ নেন এবং আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুঃখজনক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মহান সৃষ্টিকর্তা নিহতদের ক্ষমা ও মাগফিরাত দান করুন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মানিক মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ওই ছাত্রীর মা। রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার ঘড়িয়া এলাকায় সংঘটিত বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কৃষক দলের এক নেতা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রী ঘড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং অভিযুক্ত মানিক মিয়া একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে। যৌন নিগ্রহের শিকার ওই স্কুলছাত্রী ও থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তার ভ্যানচালক বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। তার মা অতি কষ্টে ধার-দেনা করে তার বাবার চিকিৎসা ও মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ওই শিক্ষার্থী বাড়ির পাশে পূর্বচড়ায় (ক্ষেতে) শাক তুলতে গেলে একা পেয়ে মুখ চেপে ধরে পাশের ডিপ মেশিন ঘরে নিয়ে যায় এবং তার উপর যৌন নিগ্রহ চালায়। পরে কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। অসহায় অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রী বাড়িতে গিয়ে জানালে মা তাকে নিয়ে অভিযুক্তের বাড়িতে অভিযোগ দিতে যায়। ওই সময় মানিকের ছেলে ও পরিবারের লোকজন তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার সময় তাদের বহনকারী সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালককে ফোন দিয়ে অটোরিকশা ঘুরিয়ে থানায় না গিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেন। এদিকে নারান্দিয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মাসুম। তিনি অভিযুক্তের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও দাবি করে ভুক্তভোগী। পরে স্থানীয়রা ও ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানানোর পর গ্রাম্যসালিশী বৈঠক পন্ড হয়ে যায়। ওই ছাত্রী আরো অভিযোগ করেন, তার সাথে যা হয়েছে তা যেনো আর অন্য কারো সাথে না হয়- এজন্য তিনি যৌন নিগ্রহকারী মানিক মিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। ভুক্তভোগীর মা জানান, যৌন নিগ্রহের ঘটনা জানাতে গেলে অভিযুক্ত ও তার সহযোগীরা তাদেরকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। পরে থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। নারান্দিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের (ঘড়িয়া) সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নারান্দিয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মাসুম সিএনজি চালকের মাধ্যমে তাদেরকে ‘দরবার’ করে বিষয়টি সমাধানের জন্য ডেকে আনেন। পরে সাবেক মেম্বার ও তার ছেলে কৌশলে অভিযুক্ত মানিক মিয়াকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। নারান্দিয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মাসুম জানান, সামাজিকভাবে তাদের অনেক দ্বায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে তিনি ফোন দিয়ে তাদেরকে থানায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। সামাজিকভাবে অনেক কিছুরই মিমাংসা হয়ে থাকে। পরে তিনি বিভিন্ন মহল থেকে সাংবাদিকদের সংবাদ না করার অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওই স্কুলছাত্রীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বেড়াতে এসে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টেলকি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ঘাটাইল উপজেলার পশ্চিম পাকুটিয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমান মুকুলের ছেলে ইয়াসিন হোসেন (২৭) এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার রাকিব (২৫)। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার পর মোটরসাইকেলটি মধুপুর বনাঞ্চলের টেলকি রসুলপুর মোড় এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলের দুই আরোহীর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমরানুল কবির জানান, নিহতরা মধুপুর বনে বেড়াতে এসেছিলেন। নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সাজিদ পিয়াল:টাঙ্গাইলের মধুপুরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা নিহত দুই যুবকের স্বপ্ন থেমে গেল মুহূর্তে টাঙ্গাইলের মধুপুরে গত রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঘটে গেল হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনা। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের টেলকি সাইনবোর্ড রসুলপুর মোড় এলাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন দুই তরুণ। মুহূর্তেই নিভে গেল দুটি সম্ভাবনাময় জীবনের প্রদীপ। নিহত দুইজন হলেন—ঘাটাইল উপজেলার পশ্চিম পাকুটিয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমান মুকুলের ছেলে মো. ইয়াসিন হোসেন (২৭) এবং বরিশাল জেলার চর ফ্যাশন উপজেলার মো. রাকিব (২৫)। পরিবার ও স্বজনদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, ভেঙে পড়েছে দুই পরিবারই। পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যার পর মোটরসাইকেলটি মধুপুর বনাঞ্চলের টেলকি রসুলপুর মোড় এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি শক্ত পিলারের সঙ্গে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা লাগে। ধাক্কার তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী। স্থানীয়রা দ্রুত ছুটে গিয়ে অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমরানুল কবির বলেন, "প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মোটরসাইকেলটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের লাশ অরণখোলা ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। একদিকে ঘাটাইলের পশ্চিম পাকুটিয়া গ্রামে, অন্যদিকে বরিশালের চর ফ্যাশনের জনপদে নেমেছে গভীর শোক। তরুণ দুইজনের অকাল মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবার ও স্বজনরা বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন, কেউ কেউ বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে কিছুক্ষণ আগেও হাসিমুখে থাকা দুই তরুণ এমন করেই চলে গেলেন চিরতরে স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, টেলকি সাইনবোর্ড রসুলপুর মোড় এলাকায় দুর্ঘটনা নতুন নয়। বারবার এমন দুর্ঘটনা ঘটলেও এখনো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারা দ্রুত গতিনিরোধক ও সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড স্থাপনের দাবি জানান। দুর্ঘটনার পর বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত মহাসড়কে আতঙ্ক বিরাজ করে। যান চলাচলও কিছুক্ষণ ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মোস্তফা মাসুদ: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্র। রবিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দুটি মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম ফাইমুন রাজিব তূর্য (১৬)। সে উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের পুলিশ সদস্য মৃত রবিউল ইসলামের পুত্র এবং মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে পরিবার, সহপাঠী ও এলাকাবাসীর মাঝে নেমে এসেছে গভীর শোক।একই ঘটনায় আহত হয়েছে অপর মোটরসাইকেল আরোহী সিয়াম হোসেন, পশ্চিম নারায়নপুর গ্রামের জাহিদ হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে দুটি মোটরসাইকেল দ্রুত গতিতে বিপরীত দিক থেকে আসার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সঙ্গে সঙ্গে তূর্য গুরুতরভাবে আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় মানুষ, শিক্ষক ও সহপাঠীরা হাসপাতালে ভিড় করেন এবং তূর্যের অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। তার মৃত্যুতে বিদ্যালয় ও এলাকায় নেমে এসেছে মাতম। কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে।
সাজিদ পিয়াল: টাংগাইলের কালিহাতী উপজেলার নগরবাড়ী তারাকান্দি মহাসড়কে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর, ২০২৫), বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। একটি মাইক্রোবাস সিএনজি চালিত অটোরিকশার পিছনে ধাক্কা দিলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে এবং সিএনজিটি আগুনে পুড়ে যায়।এই ঘটনায় সিএনজির এক যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, যার পরিচয় এখনও জানা যায়নি। আহত সিএনজি চালক শান্তকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রফেসর সোহরাব উদ্দিন আই এম টি এন্ড ম্যাটস এর ল্যাব ডিপার্টমেন্ট এর ১৩ তম ব্যাচ ২০১৯ -২০ সেশনের (আল আমিন) নামের ব্যাক্তি শরীর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আহত সিএনজি চালক শান্তকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, একজন যাত্রী নিয়ে টাঙ্গাইল থেকে ছড়ে আসা একটি সিএনজি ভূঞাপুরের দিকে যাচ্ছিলো। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সিএনজিটি কালিহাতী উপজেলার নগরবাড়ি এলাকায় পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাস পিছনে ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজিটির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। চালক শান্ত বাইরে বের হয়ে আসলেও ভিতরে আগুনে পুড়ে মারা যায় এক যাত্রী। খবর পেয়ে ভূঞাপুর ও এলেঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ভূঞাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মো. স্বপন আলী বলেন, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। আগুনে সিএনজিটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাইক্রোবাসের ধাক্কার পরপরই সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কালিহাতী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে মাইক্রোবাসের চালককে আটক করা হয়েছে। মাইক্রোবাসটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। একটি যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃ/ত্যু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্রুতগামী বাসটি বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিটিকে ধাক্কা দিলে সেটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বিপরীত দিক থেকে আসা বাস এবং সিএনজি মুখোমুখী ধাক্কা লেগে সাথে সাথেই মৃত্যু হয় এবং আহত বাকি যাত্রীদের টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনা স্থলে টাঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে খতিয়ে দেখছে।
টাংগাইল পাকুন্দিয়া বাইপাস এলাকায় একই মোটর সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ভাই হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের মুখোমুখি ধাক্কা লেগে ঘটনা স্থলেই একজন মারা যায়। অপরজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে টাঙ্গাইলের পাকুন্দিয়া বাইপাস এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভাইয়ের একজন নিহত হয়েছেন এবং অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,৩০/১০/২০২৫ সন্ধ্যার দিকে বাইপাস এলাকায় একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান এবং অন্যজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়, তবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করছে এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনকরা হবে।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।