ঢাকা, সোমবার, এপ্রিল ১৪, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ নিয়ে তুলসী গ্যাবার্ডের মিথ্যা প্রচার, আর নাগপুরে হিন্দু উগ্রবাদীদের তাণ্ডব

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম

বাংলাদেশ নিয়ে তুলসী গ্যাবার্ডের মিথ্যা প্রচার, আর নাগপুরে হিন্দু উগ্রবাদীদের তাণ্ডব
HTML tutorial

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাগপুর শহরে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সহিংসতায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোমবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের সমর্থকরা মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রতীকী সমাধি পুড়িয়ে দেয়ার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যায় যখন উগ্রবাদীদের একটি দল পবিত্র কোরআন পোড়ানোর চেষ্টা করে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং পাল্টা বিক্ষোভ শুরু হয়।

উগ্রবাদীদের হামলায় পুড়ল শত শত দোকান ও ঘরবাড়ি

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মীরা প্রথমে আওরঙ্গজেবের ছবি ও প্রতীকী সমাধি পোড়ায় এবং এরপর পবিত্র কোরআন পোড়ানোর গুজব ছড়িয়ে পড়লে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে নাগপুরের মহাল এলাকাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে বহু দোকানপাট ও যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ অনেক সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন।

অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করেছে এবং বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সদর দপ্তরের আশপাশের এলাকায়।

এদিকে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এই ধ্বংসযজ্ঞের সাথে কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। সংগঠনটির দাবি, তারা শুধু আওরঙ্গজেবের সমাধির পরিবর্তে মারাঠা শাসকদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছিল।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফরেন বিস এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নাগরিকদের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এই ঘটনার মধ্যেই মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড দিল্লিতে বসে ভারতীয় প্রোপাগান্ডার সাথে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করেন। ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি দাবি করেন যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চলছে। তবে বাস্তবে বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেখানে বড় কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর নেই। তুলসী গ্যাবার্ডের এমন ভিত্তিহীন মন্তব্য ভারতের উগ্রবাদী রাজনীতিকে উসকে দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

ভারতের নাগপুরে ঘটে যাওয়া এই সহিংসতার ঘটনা আবারও প্রমাণ করছে, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা কিভাবে উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে এবং সাধারণ জনগণকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Google News Icon গুগল নিউজে দেখুন
HTML tutorial