ঢাকা, বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১০, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল্লাহ কেন মহাবিশ্ব সৃষ্টির আড়াই (২.৫) লক্ষ বছর পর মানুষ সৃষ্টি করেছেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:১৬ পিএম

আল্লাহ কেন মহাবিশ্ব সৃষ্টির আড়াই (২.৫) লক্ষ বছর পর মানুষ সৃষ্টি করেছেন?
HTML tutorial

ভূমিকা

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন তাঁর অপার জ্ঞানের মাধ্যমে। কুরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা জানতে পারি, পৃথিবী ও মহাবিশ্বের প্রতিটি সৃষ্টি একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ। কিন্তু প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন আল্লাহ মহাবিশ্ব সৃষ্টি করার এত দীর্ঘ সময় পর মানুষ সৃষ্টি করলেন? আসুন, কুরআন ও হাদিসের আলোকে এই বিষয়ে আলোচনা করি।

মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময়কাল

আধুনিক বিজ্ঞান অনুযায়ী, মহাবিশ্বের বয়স প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর। তবে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, আল্লাহ তাআলা সময় ও স্থানের ঊর্ধ্বে এবং তাঁর জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় কাঠামো প্রযোজ্য নয়। আল্লাহ বলেন:

"আমি তো আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং উহাদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছি এবং আমাদের কোন ক্লান্তি স্পর্শ করে নাই।"
(সুরা ক্বাফ ৫০:৩৮)

এই ছয় দিনের ব্যাখ্যা সম্পর্কে ব্যাখ্যাকারগণ বলেন, এটি মানুষের দিন নয়, বরং আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী এক দীর্ঘ সময়কাল।

মানুষের সৃষ্টি: কুরআনের বর্ণনা

কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে মানুষের সৃষ্টির ব্যাপারে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন:

"আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি উত্তম গঠনে।"
(সুরা তীন ৯৫:৪)

এছাড়াও, আদম (আ.)-এর সৃষ্টি সম্পর্কে বলা হয়েছে:

"আমি তো তাকে (আদমকে) সৃষ্টি করেছি মৃত্তিকা থেকে।"
(সুরা সাদ ৩৮:৭১)

কেন দেরিতে সৃষ্টি?

১. মহাবিশ্ব ও পৃথিবী প্রস্তুত করা

আল্লাহ মানুষকে এমন এক পৃথিবীতে পাঠাতে চেয়েছিলেন যেখানে তার জন্য জীবনযাপন সহজ হবে। পৃথিবী ধীরে ধীরে এমনভাবে প্রস্তুত হয়েছিল যাতে মানুষ বসবাস করতে পারে।

২. আল্লাহর পরিকল্পনা অনুযায়ী সময় নির্ধারণ

আল্লাহর ইলম ও হিকমত অনুযায়ী, মানুষকে সঠিক সময়ে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। কুরআনে বলা হয়েছে:

"তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর রাজত্বের মালিক। তিনি যা চান, সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন কন্যাসন্তান এবং যাকে ইচ্ছা দান করেন পুত্রসন্তান।"
(সুরা আশ-শুরা ৪২:৪৯)

৩. মানুষের পরীক্ষা ও খিলাফতের দায়িত্ব

আল্লাহ তাআলা মানুষকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি বা খলিফা হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। যখন পৃথিবী মানুষের বসবাসের উপযোগী হলো, তখনই আল্লাহ আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করলেন।

"আমি পৃথিবীতে এক খলিফা সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।"
(সুরা বাকারা ২:৩০)

উপসংহার

আল্লাহ তাআলা অসীম জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী। তিনি যখন যা সৃষ্টি করেছেন, তা তাঁর নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও হিকমতের অংশ। মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং এরপর মানুষের সৃষ্টি – সবকিছুই একটি নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ। কুরআন ও হাদিসের আলোকে বোঝা যায়, আল্লাহ ধীরে ধীরে পৃথিবীকে মানুষের জন্য প্রস্তুত করেছেন এবং পরে মানুষকে তাঁর খলিফা হিসেবে পাঠিয়েছেন।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক জ্ঞান ও বুঝ দান করুন। আমিন। HTML tutorial

মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Google News Icon গুগল নিউজে দেখুন
HTML tutorial