দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।
টাঙ্গাইলে শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বিজয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। বিজয় উৎসবে সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের আহ্বায়ক শ্যামল হোড়। অনুষ্ঠানে বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শ্রমিক সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। একই সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও ভবিষ্যৎ আন্দোলনের দিকনির্দেশনা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক সানু, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এ কে এম মনিরুল হক (ভিপি) মুনীর, টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কাজী শফিকুর রহমান লিটন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ পাহেলী, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল হক শাহীন, টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক লাভলুসহ শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। বিজয় উৎসব উপলক্ষে আলোচনা সভার পাশাপাশি দেশাত্মবোধক স্লোগান, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। বিপুল সংখ্যক শ্রমিক, নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
গোপালপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ১৬ ডিসেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। গোপালপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সকাল ৮টায় সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, শহীদদের ত্যাগ ও দেশের মুক্তিসংগ্রামের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। উপজেলা প্রশাসক জানান, এই দিবস আমাদের জন্য শুধু উদযাপনের নয়, বরং দেশের স্বাধীনতা ও জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ শক্ত করার দিন। সকলেই দেশ ও জাতির উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান
টাঙ্গাইলের শত বছরের ঐতিহ্যে বোনা টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি এবার জায়গা করে নিয়েছে ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি তালিকায়। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে তাঁত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে আনন্দের আমেজ দেখা গেলেও এখনো বিষয়টি সম্পর্কে তেমন জানেন না প্রান্তিক তাঁত শ্রমিকরা। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি শিল্পটির জন্য যেমন গর্বের, তেমনি এর সুফল বাস্তবে তাঁতিদের জীবনে পৌঁছানো নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা ও বড় চ্যালেঞ্জ। জানা যায়, শত বছরেরও বেশি সময় ধরে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন এলাকায় তাঁত শিল্প বংশপরম্পরায় টিকে রয়েছে। রঙিন সিল্ক ও কটন সুতায় দক্ষ হাতের নিপুণ কারুকাজে তৈরি টাঙ্গাইল শাড়ি আজ বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শাড়ির সুতা রং করা ও নকশা তৈরির কাজ করেন পুরুষ তাঁতিরা, আর চরকিতে সুতা কাটার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন নারীরা। একটি শাড়ি তৈরি করতে লাগে দিনের পর দিন শ্রম, ধৈর্য ও নান্দনিক দক্ষতা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা সংকটে পড়েছে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, সস্তা পাওয়ার লুমে উৎপাদিত শাড়ির দাপট এবং আধুনিক পোশাকের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় কমে যাচ্ছে হাতে বোনা শাড়ির চাহিদা। এর ফলে পেশা পরিবর্তন করে অন্য কাজে চলে যাচ্ছেন অনেক তাঁতি। টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী হিসেবে পরিচিত পাথরাইলসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বছরের পর বছর ধরে তাঁত শ্রমিকদের জীবনমানের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। কম মজুরি ও অনিশ্চিত বাজার ব্যবস্থার কারণে হতাশা বাড়ছে তাঁতিদের মধ্যে। নারীদের উৎসবের পোশাক মানেই শাড়ি। বাঙালি নারীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক হিসেবে ঈদ, পূজা ও পহেলা বৈশাখে টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ির চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকলেও বছরজুড়ে তা ধারাবাহিক নয়। ফলে তাঁতিদের আয় স্থায়ীভাবে বাড়ছে না। পাথরাইল এলাকার তাঁতি লাবু বলেন, “আমি ১৩ বছর ধরে এ পেশায় আছি। আগের তুলনায় এখন হাতে বোনা তাঁত শাড়ির চাহিদা অনেক কমে গেছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে—এটা আমরা জানিই না। এ বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু বলেনি।” তিনি আরও বলেন, “মালিকপক্ষ লাভবান হলেও আমাদের আয় খুব কম। সংসার চালাতে কষ্ট হয়।” একই এলাকার তাঁতি মো. সেলিম মুক্তধ্বনি ডটকমকে বলেন, “আগে আমাদের এলাকায় অনেক হ্যান্ডলুম তাঁত ছিল। এখন পাওয়ার লুমের কারণে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হাতে বোনা শাড়ি অনেক বেশি টেকসই ও মানসম্মত হলেও বাজারে তার মূল্য পাওয়া যায় না।” ৩০ বছর ধরে এ পেশায় যুক্ত শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, “একটি শাড়ি তৈরি করলে আমরা ৪ থেকে ৫শ’ টাকা মজুরি পাই। সপ্তাহে ৭ থেকে ৯টি শাড়ি বানানো সম্ভব হয়। এই আয়ে পরিবার চালানো কঠিন। তবুও বংশের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশায় টিকে আছি।” তিনি বলেন, “ইউনেস্কোর স্বীকৃতি সম্পর্কে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের সরাসরি সহায়তা দরকার।” ৩৭ বছর ধরে তাঁত শিল্পে যুক্ত বাছেদ আলী শেখ জাগো নিউজকে বলেন, “আমাদের এখানে ১৮টি তাঁত মেশিন রয়েছে। আগের তুলনায় এখন বিক্রি অনেক কম। কোনোমতে এ পেশায় টিকে আছি।” অন্যদিকে তাঁত মালিক ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি এ শিল্পকে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিতে পারে। সরকারি সহায়তা, সহজ ঋণ, কাঁচামালে ভর্তুকি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বিপণনের সুযোগ তৈরি হলে টাঙ্গাইল শাড়ি আবারও ফিরে পেতে পারে তার হারানো জৌলুস। তবে এখনো টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব ভারতের নামে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তাদের দাবি, জিআই স্বত্ব টাঙ্গাইলের নামে হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি হতো। এক তাঁত ব্যবসায়ী মুক্তধ্বনি ডটকমকে বলেন, “ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। এর ফলে সারা বিশ্বের মানুষ টাঙ্গাইল শাড়ির ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। তবে বর্তমানে শাড়ির ব্যবসা খুব ভালো নয়। সরকারি আইন ও নীতিগত সহায়তা পেলে হস্তচালিত তাঁতের সংখ্যা বাড়তে পারতো।” আরেক ব্যবসায়ী তপু বসাক বলেন, “দিনদিন তাঁতির সংখ্যা কমছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির ফলে আশা করছি টাঙ্গাইল শাড়ির কদর আবারও বাড়বে এবং নতুন প্রজন্ম এ পেশায় আগ্রহী হবে।” এ বিষয়ে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক মুক্তধ্বনি ডটকমকে বলেন, “ইউনেস্কোর তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ফলে টাঙ্গাইল শাড়ির আন্তর্জাতিক পরিচিতি বাড়বে। নতুন বাজার তৈরি হবে। তবে প্রান্তিক তাঁতিদের মধ্যে এ স্বীকৃতি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিষয়টি তাঁতিদের জানানো প্রয়োজন।” উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল শাড়ি ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি হিসেবে সদ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২০তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।