মির্জাপুরে ‘অপবাদ’ দিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পরকীয়ার ‘অপবাদ’ দিয়ে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী দুইজনকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের বটটেকী গ্রামে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর বয়স আনুমানিক ২৭ বছর। তিনি একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের স্ত্রী এবং পাঁচ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনার সময় ওই গৃহবধূ তার শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় স্থানীয় দুই ব্যক্তি পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে জোরপূর্বক তার ঘরে প্রবেশ করেন। তারা তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে শিশুকে জিম্মি করা ও তার স্বামীকে হত্যা করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।গৃহবধূ কৌশলে নিজেকে রক্ষা করে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন।শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের বটটেকী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই দুইজনকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওই গৃহবধূ।প্রেসক্লাবে এসে ওই গৃহবধূ বলেন, ৫ মাস বয়সী একমাত্র সন্তানকে নিয়ে শয়নকক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। এ সময় গোড়াই এলাকার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও ময়লার ব্যবসায়ী আজাহার মিয়া (৪২) ও রাজিব মিয়া (৩৫) তার কক্ষের দরজা খুলতে বলেন। ঘরে পরপুরুষ রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে তারা ওই নারীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। আশেপাশের লোকজন জড়ো হলে তারা তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদায় করে দেন। এরপর শিশুকে জিম্মি ও শিল্প কারখানায় কর্মরত স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে শ্লীলতাহানি ঘটান তারা। কিন্তু ওই নারী জন্মনিরোধক আবরণ আনার কথা বলে কৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে ধর্ষণের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন। পরে রাতে তিনি মির্জাপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মির্জাপুর থানার পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তরা ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম বলেছেন, “দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে নির্বাচন হলে কৃষক শ্রমিক জনতালীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু যদি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে বাদ দিয়ে শুধু বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত নির্বাচন করে, তাহলে ২০ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে যাবে না। সে ভোটে আমরাও অংশ নেবো না।” বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “শেখ হাসিনার অন্যায় আওয়ামী লীগের অন্যায় নয়” — কাদের সিদ্দিকী বঙ্গবীর বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে আমি চিনতে পারিনি। আমার আগে আপনাকে চিনেছে শেখ হাসিনা, চিনেছে দেশের মানুষ। শেখ হাসিনার অন্যায় বঙ্গবন্ধুর অন্যায় নয়, আওয়ামী লীগের অন্যায়ও নয়। মুক্তিযুদ্ধের অন্যায়ও নয়।” তিনি আরও বলেন, “এই আওয়ামী লীগকে জন্ম দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুল হক। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ জন্ম দেননি। তাকে রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করি না, কারণ তিনি মনে করেন দেশটা তার বাবার—আর আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু দেশের সেবক, আমিও দেশের সেবক, আমরা সবাই আল্লাহর গোলাম।” “আওয়ামী লীগের বিচার কেউ করতে পারবে না” কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, “শেখ হাসিনার বিচার করতে চাইলে করুন, কিন্তু আওয়ামী লীগের বিচার করতে পারবেন না। আইয়ুব খান পারেনি, ইয়াহিয়া খান পারেনি—আপনারাও পারবেন না। আওয়ামী লীগের যারা দোষ করেছে তাদের বিচার হোক, কিন্তু সবাই তো দোষ করেনি।” বঙ্গবন্ধু ও জিয়ার প্রসঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছি, জিয়াউর রহমানও ছিলেন। দু’জনকেই বীরোত্তম খেতাব দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু সরকার। এখানে ভিন্নতা নেই; ভিন্নতা সৃষ্টি করেই আমরা স্বাধীনতা–বিরোধী জামায়াতকে শক্তিশালী করেছি।” জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াত যে ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন করেছে—বাংলাদেশের মা–বোনের সম্মান ধ্বংস করেছে—তারা ক্ষমা না চাইলে দেশে কথা বলার সুযোগ পেত না। বঙ্গবন্ধুর মানবিকতার কারণেই তারা বেঁচে যেতে পেরেছে।” টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস: ইতিহাস, স্মৃতি ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল পাক হানাদার মুক্ত হয়—এই ঐতিহাসিক দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছরের মতো এবারও কাদেরিয়া বাহিনী আলোচনা সভা আয়োজন করে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের স্মৃতি, তখনকার পরিস্থিতি এবং স্বাধীনতার মূল্যায়ন তুলে ধরেন। সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবীর বলেন, “বাংলাদেশ আজ যেকোনো সংকটেও টিকে আছে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কারণেই। দেশের সংকট মোকাবিলায় নতুন প্রজন্মকেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে।” সভায় বক্তারা কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন— সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল জেলা মুজিব বাহিনীর প্রধান আলমগীর খান মেনু, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীরপ্রতিক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক বীরপ্রতিক, আবুল কালাম আজাদ বীরবিক্রম, কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার কাজী হুমায়ুন বাঙ্গাল, দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, দেলদুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তহের বাবলু প্রমুখ। সভা শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে বিশেষ দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শরীয়তপুরে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ; তদন্তে ভিন্ন তথ্য বলছে পুলিশ শরীয়তপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে এক তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন—এমন অভিযোগ সামনে এলে তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনার ভিন্ন চিত্র পেয়েছে বলে জানিয়েছে। অভিযোগকারী তরুণী নিজেকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিলেও পুলিশ বলছে—তিনি কলেজ শিক্ষার্থী নন। বরং তদন্তে জানা গেছে, ওই নারীর বিয়ে হয়েছে এবং তার দুইটি সন্তান রয়েছে। পালং মডেল থানা পুলিশ জানায়, তরুণী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও ঘুরতে গিয়ে ফেরার পথে তাকে কেউ মারধর করেছে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাবিবুর রহমান বলেছেন, তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। এছাড়া মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও ওই তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার পর স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমকে তরুণী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের বনবিভাগ কার্যালয়ের পাশের নির্জন এলাকায় কয়েকজন যুবক তাদের পথরোধ করে। এ সময় তার সহপাঠীকেও আটক রেখে মারধর করা হয় এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তরুণীর দাবি, তাকে তিন যুবক পালাক্রমে ধর্ষণ করে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখে। সহপাঠীর বর্ণনাও প্রায় একই। তিনি বলেন, বাস না পেয়ে তারা হাঁটছিলেন। দুই যুবক ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ভিতরে নিয়ে যায়। তাকে মারধর করে টাকা দাবি করা হয় এবং বান্ধবীকে আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হয়। তরুণী আরও অভিযোগ করেছেন, তাকে টেনে নেওয়ার সময় দুইজন নারী ঘটনাটি দেখলেও কোনো সহায়তা করেনি। এছাড়াও ঘটনাস্থল এলাকায় কিছু কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেননি। স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন জানান, তিনি বাসায় ফেরার সময় দেখতে পান কয়েকজন যুবক এক মেয়েকে নিয়ে বনবিভাগের দিক থেকে বের হচ্ছে। মেয়ে আতঙ্কে কিছু বলতে পারছিল না। সঙ্গী ছেলেটির ইশারায় তিনি সন্দেহ করেন। তাদের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে যুবকরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়ে ঘটনাটি খুলে বলে।ওসি শাহ আলম বলেন,ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে গেছি। কিন্তু তরুণী আমাদের কাছে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেছে। প্রাথমিক তদন্তেও ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। তারপরও বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিককে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মারধর ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের নারান্দিয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে দৈনিক নিরপেক্ষ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও কালিহাতী প্রেসক্লাবের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের স্থানীয় সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তারা দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ আগস্ট কালিহাতীতে শওকত তালুকদার নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনের খবর সংগ্রহ ও প্রকাশ করেন সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম। সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই শওকত তালুকদারের স্ত্রী সাংবাদিক জাহাঙ্গীরের প্রতি ক্ষুব্ধ হন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া শুরু করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে,১৭ নভেম্বর শওকত তালুকদারের স্ত্রী বাদী হয়ে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের দাবি—এটি পুরোপুরি হয়রানিমূলক ও সংবাদ প্রকাশের প্রতিশোধ নিতে করা মিথ্যা মামলা। পরিবারের অভিযোগ, শনিবার গভীর রাতে হঠাৎ কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাড়িতে ঢুকে কোনো ধরনের ওয়ারেন্ট বা কারণ ব্যাখ্যা ছাড়াই জাহাঙ্গীরকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের সময় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলেও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। জাহাঙ্গীরের বৃদ্ধ মা বলেন, “রাতের অন্ধকারে এত পুলিশ কেন আসলো বুঝিনি। ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় মারধরও করেছে। আমরা কিছু বলার সুযোগও পাইনি।” কালিহাতী প্রেসক্লাব, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবসহ জেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। কালিহাতী প্রেসক্লাবের সভাপতি বলেন,“একজন সাংবাদিককে মধ্যরাতে এভাবে তুলে নেওয়ান্যক্কারজনক। এটি স্পষ্টভাবে গণমাধ্যমকে ভয় দেখানো ও স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর আঘাত। আমরা দ্রুত তদন্ত এবং জাহাঙ্গীরের মুক্তি চাই।” পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী নারী প্রথমে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশনার পর টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে।সদর থানার এক কর্মকর্তা বলেন,“আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে। মারধরের অভিযোগ সত্য নয়।” ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন—মামলা তদন্তের আগেই কেন রাতের আঁধারে সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হলো? এটি কি সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর চেষ্টামানবাধিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছেন।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার তিন বছরের শিশু কন্যা ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত শিশু রায়হান (১৫) গ্রেফতার হয়েছে। র্যাব-৪, সিপিসি-১, পাইকপাড়া, মিরপুর ঢাকা ক্যাম্পের সহযোগিতায় র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্প ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন দক্ষিণ মানিকদী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্প হতে দেয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২০ অক্টোবর বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তিন বছরের শিশু কন্যাকে বাড়ির পাশে প্রতিবেশী শিশু রায়হান (১৫) ধর্ষণ করে। র্ধষনের সময় শিশুর চিৎকারে তার মা এগিয়ে আসলে ধর্ষক রায়হান পালিয়ে যায়। পরে শিশুটিকে প্রথমে মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। ধর্ষিত শিশুর মা গত ১১ নভেম্বর বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। র্যাব-৪, সিপিসি-১, পাইকপাড়া, মিরপুর ঢাকা ক্যাম্পের সহযোগিতায় র্যাব-১৪, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল ক্যাম্প ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন দক্ষিণ মানিকদী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু রায়হান (১৫)কে গ্রেফতার করে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গ্রেফতারকৃতকে টাঙ্গাইল মির্জাপুর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব-১৪ সিপিসি-৩ টাঙ্গাইল ক্যাম্পের পৃথক দুই অভিযানে নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ ও ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৪ এর সিপিসি-৩ টাঙ্গাইল ক্যাম্প পৃথক দুইটি অভিযানে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ এবং ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত টাঙ্গাইল সদর ও মধুপুরে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়। র্যাব জানায়, প্রথম অভিযানে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর পৌরসভার দৈনিক বাজার এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১৯,৪৬৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়। এ সময় পলিথিন মজুদ ও সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ পলিথিনের পাইকারি ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় অভিযানে র্যাব-১৪ এর একটি দল টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাহমুদনগর নন্দবয়রা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকা ওই আসামির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় গুরুতর অভিযোগ ছিল। র্যাব জানায়, গ্রেফতারের পর তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব-১৪ সিপিসি-৩ টাঙ্গাইল ক্যাম্পের অধিনায়ক জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ১৩ বছরের এক মেয়েকে ধ-র্ষণ চেষ্টার অভিযোগে রেল ক্রসিংয়ের গেটম্যান হানিফকে (২৮) গণপি-টুনি দেওয়া হয়েছে। পরে তাকে মির্জাপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের স্বল্পমহেড়া গ্রামের রেল স্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। হানিফ ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার রাগুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। এলাকাবাসী এবং প্রত্যক্ষদর্শী থেকে জানা গেছে হানিফ জয়দেবপুর-যমুনা সেতু রেল সড়কের মহেড়া রেল স্টেশনের আগের ৩৬ নম্বর রেল ক্রসিংয়ের গেটম্যানের চাকরি করেন। বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে তিনি এলাকার ১৩ বছরের এক মেয়েকে ফুসলিয়ে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে রেল স্টেশনের আবাসিক ভবনে নিয়ে ধ-র্ষণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন দেখে আবাসিক ভবনে যান। সেখানে অনেক খুঁজাখুঁজির পর মেয়েটিকে না পেয়ে লোকজন রেল সড়কে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় ওই শিশুটি আবাসিক ভবন থেকে বেরিয়ে নিচ দিয়ে দৌঁড়ে বাড়ি চলে যায়। পরে সে আত্মীয়স্বজন নিয়ে আবার ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের কাছে তাকে টাকার প্রলোভন দিয়ে ঘরে নিয়ে ধ-র্ষণের চেষ্টা চালায় বলে জানায়। লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে গেটম্যান ‘কথা বললে মে-রে ফেলার হু-মকি’ দেয় বলে মেয়েটি অভিযোগ করে। ভয়ে তখন সে কথা বলেনি বলে জানায়। পরে স্থানীয় লোকজন হানিফকে পি-টুনি দিয়ে বিকেলে মির্জাপুর থানা পুলিশে খবর দিয়ে ধরিয়ে দেন। মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদ ফজল জানান রেল সড়কের ৩৬ নম্বর ক্রসিংয়ের গেটম্যান হানিফ স্থানীয় ১৩ বছরের এক মেয়েকে রেল স্টেশনের আবাসিক ভবনে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে হানিফকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় মা-মলার প্রস্তুতি চলছে এবং আসামী তাঁর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসি এবং সারাদেশের মানুষ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয়ে সালিশ বৈঠকের নামে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সরিষাবাড়ী থানার ওসি মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ জানান, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা ফরিদা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১২ বছর বয়সী ওই কিশোরী সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কুমারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৪ জুন দুপুর ২টার দিকে প্রতিবেশী শাহিন (৩৫) প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে তাকে নিজের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরবর্তী চার দিনেও শাহিন একাধিকবার একইভাবে তাকে নির্যাতন করে। ১৭ জুন বিকেলে প্রতিবেশী পারভেজ (৪০) বিষয়টি জানতে পেরে কিশোরীকে নিজের ঘরে নিয়ে যায় এবং ঘটনা প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে তাকেও ধর্ষণ করে। এরপর প্রতিবেশী লাভলু (৩২) একইভাবে কিশোরীকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে, কিন্তু কিশোরীর চিৎকারে সে পালিয়ে যায়। ঘটনা এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে, গত রবিবার রাতে আওনা ইউনিয়নের কুমারপাড়া (করিমদহ) মোড়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয়ে সাবেক ইউপি সদস্য লিটন তালুকদারের (৫৫) নেতৃত্বে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে লিটন তালুকদার, সেলিম (২৩), কবির মিয়া (২৮)সহ আরও কয়েকজন মিলে ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং আপস মীমাংসার নামে কিশোরী ও তার মাকে ভয়-ভীতি দেখায়। ফরিদা বেগম থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সত্যতা পায়। এ সময় লিটন তালুকদারের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হলে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। পরে সেনা সদস্যরা লিটন তালুকদার, সেলিম ও কবির মিয়াকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। এদিকে মূল ধর্ষণকারী শাহিন, পারভেজ ও লাভলু পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সরিষাবাড়ী থানার ওসি মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। ফরিদা বেগম বলেন, “আমার মেয়ের সাথে যারা এমন করেছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় এক ১৩ বছরের মাদ্রাসাছাত্রীকে তিন দিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে জয় কুমার দাস ও লোকনাথ চন্দ্র দাশকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ভুক্তভোগীর পরিবার জানিয়েছে, অভিযুক্তরা মেয়েটিকে মেলায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফুঁসলিয়ে অপহরণ করে এবং একটি বাসায় আটকে রেখে তিন দিন ধরে যৌন নির্যাতন চালায়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা অপরাধ স্বীকার করেছে। মামলার তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশে শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন এলাকায় নাবালিকা ও শিশু ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী পরিবার সামাজিক চাপ বা হুমকির কারণে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মানবাধিকার ও শিশু অধিকার সংস্থাগুলো বলছে, অপরাধীদের দ্রুত বিচার, ভুক্তভোগী শিশুদের মানসিক ও আইনি সহায়তা, এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। তারা গণমাধ্যমকেও আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে উৎসাহিত করছে, যাতে এই ধরনের অপরাধের খবর দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছায়। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অভিযুক্তরা যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পান এবং এই ধরনের অপরাধ প্রতিহত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এক বাক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইসমাইল হোসেন (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার সৃষ্টি হয়েছে। মামলার পর থেকে পলাতক থাকা ইসমাইলকে শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইল র্যাব-১২ এর সিপিসি-৩ সদস্যরা মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে নাছির গ্রুপ কোম্পানি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাক প্রতিবন্ধী ১৮ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গত মার্চ মাসে একাধিকবার ধর্ষণ করে ইসমাইল। ভয়ে কিশোরী বিষয়টি কাউকে জানায়নি। পরবর্তীতে শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলে পরিবার সন্দেহ করে এবং লিখে ও ইশারায় মেয়েটি ঘটনার বিস্তারিত জানায়। ভুক্তভোগীর বাবা জানান, আমাদের বোবা মেয়েটি এসএসসি পাস করেছে। বড় হয়ে কিছু করার স্বপ্ন ছিল তার। সেই স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে ইসমাইল। সে আমাদের সম্মানও নষ্ট করেছে। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন। কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, মামলার পর মেয়েটির মেডিকেল পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সহপাঠী, প্রতিবেশী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। কালিহাতী উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক নীরু ব্যানার্জি ও সদস্য সচিব মানিক ভট্টাচার্য বলেন,এ ধরনের জঘন্য অপরাধ সমাজে ভয়াবহ বার্তা দেয়। তাই আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। গ্রেফতারে সন্তোষ প্রকাশ করে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের কেন্দ্রীয় নেতা গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন, অবশেষে আইন তার নিজস্ব গতিতে কাজ করছে দেখে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। এই ঘটনার ন্যায়বিচার যেন দ্রুত নিশ্চিত হয়, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কালিহাতী উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাংবাদিক শাহ আলম বলেন, একজন প্রতিবন্ধী কিশোরীর প্রতি এমন পাশবিক আচরণ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আমরা চাই, এই মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হোক এবং অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। ইসমাইলের গ্রেফতারের খবরে নারান্দিয়া এলাকায় স্বস্তি ও আনন্দের বন্যা বইছে। স্থানীয়রা মিষ্টি বিতরণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন— ন্যায়বিচার পেলে সমাজে শান্তি ফিরবে। যেন আর কোনো মেয়ে এমন নির্যাতনের শিকার না হয়।
নোয়াখালীতে বিএনপি অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দল কর্তৃক জামায়াতের মহিলা বিভাগের উঠান বৈঠকে বাধা এবং নগ্ন করে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ ও সন্তানসহ জবাই করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় (৯ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার তাজ নাহার বেগম সুমি (৩৮) থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। জিডির কপি ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, নোয়াখালী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মধ্যম করিমপুর নুর আলম চৌধুরীর বাড়িতে গতকাল বুধবার বিকাল ৪ ঘটিকায় তাজ নাহার বেগম সুমির বাড়ির উঠানে জামায়াতের মহিলা শাখার উদ্যোগে নোয়াখালী-৪ (সদর সুবর্ণচর) আসনে জামায়াত মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী এএসএম ইসহাক খন্দকারের নির্বাচনী উঠান বৈঠক চলছিল। এ সময় একই এলাকার গোলাপ নূর রোমান, মোঃ হোসেন বাবলু, রুবেলসহ ১০-১১ জনের একটি গ্ৰুপ মোটরসাইকেল চোখে যোগে এসে উঠান বৈঠক চলাকালীন বাধা দেয়। বৈঠকে উপস্থিত ৩০-৩৫ জন নারীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার হুমকি দিয়ে বৈঠক থেকে বের করে দেয়। ২নং আসামী হঠাৎ আমার ঘরে এসে জিজ্ঞেস করে এখানে কিসের মিটিং? এখানে যদি আর জামায়াতের কোন মিটিং হয় তাহলে আমি ও আমার সন্তানসহ জবাই করে এমন ভাবে রাখব জামায়াতের লোক কেন, কোন মশা মাছি পর্যন্ত টের পাবে না। ৩নং আসামী আমাকে বলে যে, তোদেরকে মোবাইলে ছবি তুলে ও ভিডিও করে ইণ্টারনেটে ছাড়িয়ে দিব। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আজ সকাল ১১ ঘটিকার সময় ১নং আসামী গোলাম নুর রোমান সহ অজ্ঞাতনামা একজন আসামী আমার বাসার সামনে মটর সাইকেল যোগে এসে আমাকে পূনরায় এই বলে হুমকি দেয় যে, আমি যদি জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী কোন মিটিং করি কিংবা কোন প্রকার আইনগত পদক্ষেপ নিই তাহলে সুযোগমতো আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে জবাই করে খুন করিয়া ফেলিবে। গোলাপ নুর রোমান কে অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি নোয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবের আহমেদ ভাইয়ের রাজনীতি করি। যার বাড়িতে গিয়েছি তার মামাতো ভাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো। বিগত সময়ে ওই বাড়ির কিছু লোক আমাদের বিএনপির উপর হামলা চালিয়েছিল। জামায়াতের বৈঠক নিয়ে আমার আপত্তি ছিল না। আপত্তি ছিল ওই বাড়ির উঠানে কেন জামায়াত মিটিং করবে? এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জামায়াতের নোয়াখালী জেলা আমির এএসএম ইসহাক খন্দকার বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এ ধরনের বাধা ও হুমকি পতিত স্বৈরাচারের সময়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ভোটের দিন রাতে সংঘবদ্ধ নারি ধর্ষণের ঘটনা ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক নারীকে উলঙ্গ করে টর্চ লাইট দিয়ে লজ্জাস্থানে আঘাত করে, সেই ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়াকে মনে করিয়ে দেয়। তিনি আরো বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার ও জামায়াতের আইনজীরা দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে থানায় অভিযোগ করেছে। আমরা আশা করব দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে। অতীতেও ফ্যাসিবাদ দমন করা হয়েছে বর্তমানেও কেউ ফ্যাসিবাদী আচরণ করলে তা শক্ত হাতে দমন করতে জামায়াত পদক্ষেপ নিবে। এ বিষয় নিয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলোকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এরকম ঘটনা যদি কেউ করে থাকে কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। সবার রাজনৈতিক প্রোগ্ৰাম করার অধিকার আছে। এসবের প্রশ্রয় দেয়া হবে না। নোয়াখালী সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলামকে জিডির বিষয়ে কয়েকবার ফোন করলে ফোন রিসিভ করেননি
ময়মনসিংহ সিপিএসসি র্যাব ১৪ কর্তৃক ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার অপহরণ করতঃ ধর্ষণ মামলার ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারী ভবন চন্দ্র দাস( ২০)কে নরসিংদী জেলার মাধবদী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করছে সক্ষম হয়। এজাহার সূত্রে জানা যায় যে, ভিকটিম(১৪) গত ১১ আগস্ট ২০২৫খ্রি. সকাল ১০:০০ ঘটিকায় প্রতিদিনের ন্যায় স্কুলে যাওয়ার পথে ধৃত অপহরণকারী ভবেন চন্দ্র দাস(২০) সহ এজাহার নামীয় অপহরণকারীরা জোরপূর্বক সিএনজিতে তুলে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের মাতা বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতের আদেশে ভালুকা থানায় মামলা নং-৩৫, তারিখ-১৯ আগস্ট ২০২৫খ্রি: ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ (সংশোধনী-২০১৮) এর ৯(১)/৭/৩০ রুজু হয়। মামলা রুজুর পর র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং ভিকটিম উদ্ধার সহ অপহরণকারীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে তৎপর হয়। এরই প্রেক্ষিতে, সিপিএসসি, র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ এর একটি আভিযানিক দল ধৃত অপহরণকারী ও ভিকটিমের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র্যাব-১১, সিপিএসসি, নরসিংদী এর সহায়তায় ০১ অক্টোবর ২০২৫খ্রিঃ আনুমানিক ২৩:৩০ ঘটিকায় নরসিংদী জেলার মাধবধী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধারপূর্বক অপহরণকারী ভবেন চন্দ্র দাস(২০) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং ভিকটিমকে নিরাপদ হেফাজতে প্রদানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।