টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির আয়োজনে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্ত কামনায় বলেছেন,“বেশ কিছু দিন ধরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। তার জন্য দেশের মানুষ নামাজ পড়ে, রোজা রেখে দোয়া করছেন। মানুষের স্বার্থেই তার সুস্থতা অত্যন্ত প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবর দেশে-বিদেশে কোটি মানুষের মনে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই তার সুস্থতার জন্য কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ দান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। “এশিয়া মহাদেশে এমন আর কোনো নেত্রী নেই যার সুস্থতার জন্য এত বিশাল সংখ্যক মানুষ দোয়া করছেন।” তার মতে, বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রী নন, বরং বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি প্রাঙ্গণে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, টাঙ্গাইল সদরকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ এলাকায় পরিণত করতে আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটই হবে তার শক্তি। তিনি কর্মী–সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের ধৈর্য, শৃঙ্খলা, ঐক্য ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে মাঠে থাকতে হবে। আমরা যেমন দেশনেত্রীর মুক্তি ও সুস্থতার জন্য দোয়া করছি, তেমনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামেও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।” সভায় সভাপতিত্ব করেন সকাল-সন্ধ্যা পরিবহনের চেয়ারম্যান সৈয়দ জাদিদুল হক জাদিদ।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন—টাঙ্গাইল বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি খন্দকার নাজিম উদ্দিন আহমেদ,সাবেক সভাপতি খঃ ইকবাল হোসেন,মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি খঃ আতিকুজ্জামান টুটুল,জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু,সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী শফিকুর রহমান লিটন,সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মালিক সমিতির সদস্য শফিকুর রহমান খান শফিক,জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মমিনুল হক খান নিকছন,জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খঃ রাশেদুল আলম,মালিক সমিতির সদস্য বাসুদেব,জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম লাবু প্রমুখ। সভায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মালিক–শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে দলীয় মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, “এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। দেশের অসংখ্য মানুষ নামাজ পড়ে, রোজা রেখে তার সুস্থতা কামনা করছেন। শুধু দলীয় নয়, দেশের মানুষের স্বার্থেই তার সুস্থতা অত্যন্ত জরুরি।” বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে আয়োজিত খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। টুকু আরও বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া শুধু রাজনৈতিক নেত্রী নন, তিনি বাংলাদেশের মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তার সুস্থতার জন্য দেশ-বিদেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। অনেকেই কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ দানের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক তার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করছেন। এশিয়া মহাদেশে সম্ভবত তিনিই একমাত্র নেত্রী যার জন্য এত পরিমাণ মানুষ একযোগে দোয়া করছেন।” তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, “আল্লাহর রহমত ও জনগণের দোয়া থাকলে দেশনেত্রী অবশ্যই দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশের মানুষের মাঝে ফিরে আসবেন।” দোয়া মাহফিলে নিজের মনোনয়ন প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে টুকু বলেন, “টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এটি শুধু একটি প্রার্থীতা নয়—এটি মানুষের নিরাপত্তা, অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। আমি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দুঃশাসনমুক্ত একটি সমাজ গড়তে কাজ করতে চাই। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগণের মূল্যবান ভোট প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক এলাকা, এখানে মানুষ গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের প্রতি অনুগত। তাই জনগণের সমর্থন নিয়ে আগামীর নির্বাচনকে তিনি শান্তিপূর্ণ ও অর্থবহ করতে চান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন— জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু,সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকেরুল মওলা,সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান,প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন,আতোয়ার রহমান আজাদসহ স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। অনুষ্ঠানে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা, দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় টাঙ্গাইলে দোয়া মাহফিল বিএনপি চেয়ারপার্সন ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি এবং দ্রুত সুস্থতা কামনায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাসাখানপুর দাইন্যা ইউনিয়নে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকেলে দাইন্যা ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এই দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী খন্দকার আহমেদুল হক সাতিল। স্থানীয় নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সাধারণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণে দেশনেত্রীর সুস্থতা কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। আজ তিনি অসুস্থ—তাই তার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া করা পুরো জাতির দায়িত্ব। এই আয়োজনের মাধ্যমে নেতাকর্মীরা ঐক্য, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। প্রধান অতিথি খন্দকার আহমেদুল হক সাতিল আবেগভরা কণ্ঠে বলেন— “গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন — তিনি এই দেশের মানুষের বুকের স্পন্দন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকা এই সাহসী নেত্রী আজ অসুস্থ—এটা ভাবতেই বুকটা ভারী হয়ে আসে। আমরা তার সুস্থতার জন্য আল্লাহর দরবারে মিনতি জানিয়েছি। তিনি ফিরে এলে দেশে নতুন আলো জ্বলবে। আমি প্রতিটি মানুষের কাছে অনুরোধ করছি—নামাজের পর তার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমাদের প্রিয় নেত্রীকে সুস্থ করে আবার মানুষের মাঝে ফিরিয়ে দেন।” দোয়া মাহফিল শেষে দেশ, জাতি এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি মাঠে নেমে কাজ করছে। টাঙ্গাইল সদরের প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও এলাকায় মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘‘জনগণ ধানের শীষের পক্ষে রয়েছে। ইনশাআল্লাহ আগামী নির্বাচনে আমরা বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হবো।” শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) জুমার নামাজ শেষে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। টুকু আরও বলেন, ‘‘বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষের অধিকার রক্ষায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজ সেই জনপ্রিয় নেত্রী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বহু বছর ধরে তিনি অন্যায়ভাবে কারাবন্দী ছিলেন এবং নানা ধরনের অমানবিক আচরণের শিকার হয়েছেন—এ অভিযোগ আমরা বহুবার জানিয়েছি।” তিনি বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার দাবিতে দলীয়ভাবে আন্দোলন চলছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি সবসময় মাঠে থাকবে।’ এ সময় বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দোয়া মাহফিলে খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা, দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
মাগুরা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে বিশাল গণমিছিল ও নির্বাচনী জনসভা ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে শ্রীপুর মিনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাদ আছর উক্ত স্টেডিয়ামে জনসভা শেষে সুশৃঙ্খল বিশাল গণমিছিল শ্রীপুর ও খামারপাড়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শ্রীপুর মিনি স্টেডিয়ামে এসে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে জামায়াত নেতা আব্দুল মতিন নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য, যশোর–কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য এবং মাগুরা-১ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুল মতিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার অন্যতম সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা সহকারী অধ্যাপক মাওলানা এম বি বাকের, জেলা জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর সহকারী অধ্যাপক মাওলানা সাইদ আহমেদ বাচ্চু। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর সহকারী অধ্যাপক মাওলানা ফখরুদ্দিন মিজানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সেক্রেটারী মোল্লা মিজানুর রহমান সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা মোঃ আনিস উদ্দিন, মাগুরা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আমিন উদ্দিন আশিকসহ অন্যরা। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুর রহমান, জেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মাওলানা রবিউল ইসলাম, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম বিশ্বাস, মাগুরা সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর সহকারী অধ্যাপক ফারুক হুসাইন, মাগুরা পৌর আমীর সহকারী অধ্যাপক আশরাফুল আলম, শ্রীপুর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর কাজী আব্দুল আউয়াল সবুর,সাবেক উপজেলা সেক্রেটারী মাওলানা মোঃ আমিরুল ইসলাম,সদর ইউনিয়ন আমীর মাওলানা মোঃ ইনছান আলীসহজেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে জনগণের সমর্থন অর্জনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান
মোস্তফা মাসুদ: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে পুকুরের পানিতে ডুবে সুস্মিতা দেবনাথ (৭) ও রিয়া দাশ (৭) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ২ টার দিকে উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের নামাজগড় গ্রামে। নিহত রিয়া দাশ নামাজগড় গ্রামের প্রয়াত উত্তম দাশের মেয়ে এবং সুস্মিতা দেবনাথ একই এলাকার রাম প্রসাদ দেবনাথের মেয়ে। তারা নামাজগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। নিহত রিয়া দাশের কাকাতো ভাই সুদর্শন দাশ ও দীপঙ্কর দাশ জানান, তাদের বৌদি ভারতী দাশ দুপুরে রিয়া ও সুস্মিতাকে নিয়ে প্রতিবেশী আনন্দ চক্রবর্তীর পুকুরে গোসলের উদ্দেশ্যে বের হন। তিনি শিশু দু’টিকে পুকুরপাড়ে রেখে বাড়িতে কাপড় আনতে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে ফিরে এসে রিয়া ও সুস্মিতাকে দেখতে না পেয়ে পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুকুর থেকে দুই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন। কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তাদের মরদেহ সমাধি দেয়ার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
টাংগাইল-২ আসনে জামায়াত প্রার্থী মাওলানা হুমায়ুন কবীরের নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাংগাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে ব্যাপক গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা হুমায়ুন কবীর। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৬ নভেম্বর) ইশা নামাজের পর গোপালপুর উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সওদাগর পাড়া এলাকায় একটি নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এলাকার সাধারণ মানুষ ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। শুরুতেই স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ প্রার্থীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তাকে স্বাগত জানান। মাওলানা হুমায়ুন কবীর তার বক্তব্যে বলেন, “আমি রাজনীতি করি মানুষের অধিকার, ন্যায়নীতি ও সেবার জন্য। যদি এলাকাবাসী আমাকে সুযোগ দেন, তবে টাংগাইল-২ আসনকে একটি উন্নত, শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক পরিবেশের মডেল হিসেবে গড়ে তুলব।” তিনি এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি, যুব সমাজের দক্ষতা বৃদ্ধি, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, জনসেবার মাধ্যমে জনগণের পাশে দাঁড়ানোই তার প্রধান লক্ষ্য, এবং তিনি সকলের মতামতকে মূল্য দিতেই এই ধরনের উঠান বৈঠকের আয়োজন করছেন। বৈঠকে উপস্থিত স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, এলাকাবাসী পরিবর্তন ও উন্নয়নের প্রত্যাশায় আছে, এবং সেই প্রত্যাশার প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম প্রার্থী হিসেবে মাওলানা হুমায়ুন কবীরকে তারা সমর্থন জানাচ্ছেন। তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের আরও সক্রিয় হয়ে নির্বাচনী মাঠে কাজ করার আহ্বান জানান। অংশগ্রহণকারীরা জানান, দীর্ঘদিন অবহেলিত অনেক সমস্যার সমাধানে তারা নতুন নেতৃত্ব চান, এবং এই ধরনের মতবিনিময় তাদের আরও আশাবাদী করে তুলছে। বৈঠকটি দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা যুবদলের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার রেজওয়ানুল ইসলাম রনি আর নেই। মরহুম রনি টাঙ্গাইল শহরের গ্রীন রোড পাডদিঘুলীয়া এলাকার মৃত জাহাঙ্গীর আলমের পুত্র। টাঙ্গাইল জেলা শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে রনি ব্রেন স্ট্রোক করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি টাঙ্গাইল শহরের পারদিঘুলীয়া এলাকার মৃত জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। মৃত্যুকালে রনি স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। রনির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে রনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করে। শনিবার বাদ এশা পারদিঘুলীয়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর নামাজের জানাজা শেষে বেবিস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হবে। খন্দকার রেজওয়ানুল ইসলাম রনির মৃত্যুতে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপি’র সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিন, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, টাঙ্গাইল জেলা যুবদলের আহবায়ক খন্দকার রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলাম বাবু, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি হাদিউজ্জামান সোহেলসহ জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ২০ অক্টোবর ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় টাঙ্গাইল বিন্দুবাসীনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি ও উপজেলার সর্বোচ্চ নেতা-কর্মী, স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ। বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান এড. মো: আব্দুস সালাম পিন্টু সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর দেশ ও দলের প্রতি অবদানের প্রশংসা করেন। বিএনপি'র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মরহুমের সুনাম, নেতৃত্ব ও মহানুভবতা স্মরণ করেন। মরহুমকে টাঙ্গাইলবাসী স্মরণ করবে ৪২ লক্ষ মানুষের প্রাণের নেতা হিসেবে। জানাজার নামাজ শেষে নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে কুশলবিনিময় করেন এবং মরহুমের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। মরহুম হামিদুল হক মোহন টাঙ্গাইল জেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপি ও এলাকাবাসীর মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মসজিদের দরজা বন্ধের শব্দে বিরক্ত হয়ে মুয়াজ্জিনের গালে চড় মারেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও মসজিদ কমিটির সদস্য জয়নাল চৌধুরী। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার জোহরের নামাজের পর শ্রীমঙ্গল উপজেলা জামে মসজিদে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নামাজ শেষে মুয়াজ্জিন আব্দুল লতিফ মসজিদের দরজা বন্ধ করছিলেন। এ সময় দরজার শব্দে ক্ষিপ্ত হয়ে জয়নাল চৌধুরী তার গালে চড় মারেন ও ধমক দেন। এই ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার এশার নামাজের পর সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদ ও স্থানীয় মুসল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরবর্তীতে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মসজিদ কমিটির এক জরুরি বৈঠকে অভিযুক্ত জয়নাল চৌধুরীকে মসজিদ কমিটির সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মসজিদ কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মহসিন মিয়া মধু, উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী, ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস নিজামীসহ অন্যরা। জেলা বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধু জানান, “আমি শুরু থেকেই জয়নালকে মসজিদ কমিটিতে রাখার বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু ইউএনও বলেন, সে বিএনপির লোক, উপর থেকে চাপ আছে। তাই কমিটিতে রাখা হয়।” মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস নিজামী বলেন, “একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল। এই ভুলের কারণে শ্রীমঙ্গলের মুসল্লিদের মনে আঘাত লেগেছে। তবে জয়নাল চৌধুরী সকলের সামনে তার ভুল স্বীকার করেছেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন।” এদিকে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা জয়নাল চৌধুরী জানান, “খাদিমদারের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ঘটনাটি ঘটার পর আমারও খারাপ লেগেছে। মুয়াজ্জিনও আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।”
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কানপুর শহরের সাইয়্যেদ নগর এলাকায় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মদিন উপলক্ষে মুসলমানরা “I ❤️ Muhammad” লেখা একটি আলোকিত সাইনবোর্ড টানান। কিন্তু এ নিরীহ ধর্মীয় ভালোবাসার প্রকাশই এখন অনেক মুসলমানের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাইনবোর্ডটি লাগানোর পরপরই স্থানীয় কয়েকজন হিন্দু যুবক আপত্তি জানিয়ে পুলিশের সহায়তায় তা খুলে ফেলে। পরে ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ নয়জন মুসলমানের বিরুদ্ধে মামলা করে, অভিযোগ করে তারা “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা” করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ২৬ সেপ্টেম্বর বেরেলি শহরে মুসলিম সংগঠন ইত্তেহাদে মিল্লাত কাউন্সিলের (IMC) পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসন অনুমতি না দিলে শুক্রবার নামাজের পর হাজারো মানুষ “I love Muhammad” লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নামে। প্রশাসনের দাবি—বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর ইট-পাথর নিক্ষেপ করেছে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও মাওলানা তৌকির রাজা খানসহ বহুজনকে গ্রেপ্তার করে। শহরের ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ রাখা হয়। মাওলানা তৌকির রাজা খান এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি দমন করা হচ্ছে। কিন্তু এই দমননীতি উল্টো প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে।” উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাকে “সমাজে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র” বলে উল্লেখ করেন। তার বক্তব্যের পরই অভিযুক্তদের একজনের মালিকানাধীন একটি ভবন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মুসলমানদের সম্পত্তি ধ্বংস এখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে ‘অঘোষিত শাস্তি’। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সম্প্রতি এমন ধ্বংসযজ্ঞকে বেআইনি ঘোষণা করলেও এ প্রক্রিয়া চলছে প্রকাশ্যে। সুমাইয়া রানা, বিখ্যাত কবি মুন্নাওয়ার রানা’র কন্যা, বলেন — “সরকার মুসলমানদের ভয় দেখাতে চায় যাতে তারা ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কথা না বলে।” অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব সিভিল রাইটস (APCR) জানিয়েছে, “I love Muhammad” ক্যাম্পেইন নিয়ে অন্তত ২২টি মামলা হয়েছে, যেখানে ২,৫০০ মুসলমানের নাম এসেছে এবং শুধু বেরেলিতেই ৮৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। APCR সচিব নাদিম খান বলেন, “নবীপ্রেমকে অপরাধ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এতে মুসলিম সমাজ মারাত্মক অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির মুখে পড়ছে।” অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সদস্য সিকিউআর ইলিয়াসি বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে নবীপ্রেম প্রকাশ করা মুসলমানদের অধিকার। এটি কোনো অপরাধ নয়।” বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি অভিযোগ করেছে, সরকার গণতন্ত্রের নামে দমননীতি চালাচ্ছে। দলটির নেতা মাতাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “সরকার গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু আচরণে তা একনায়কতন্ত্র।” আইনজীবী জিয়া জিল্লানি জানান, “অধিকাংশ অভিযুক্ত দরিদ্র দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। তাদের পক্ষে এমন মামলা চালানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য।” তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের ঘৃণার রাজনীতি দরিদ্র মুসলমানদের লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে, যাতে তারা সহজেই নিপীড়নের শিকার হয়।” সূত্র: আল জাজিরা |
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে অবস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে নির্মিত বিশ্বের সর্বাধিক গম্বুজবিশিষ্ট “২০১ গম্বুজ মসজিদ”-সংলগ্ন নির্মাণাধীন মার্কেট ভবনে রবিবার গভীর রাতে পরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য মাওলানা হুমায়ূন কবির জানান, রাতের কোনো একসময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পরিকল্পিতভাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। নির্মাণাধীন মার্কেট ভবনের দোতলায় কাপড়ের ছাউনি বেঁধে চা–কফি বিক্রি করা হতো। ভবনের পূর্ব পাশে ডাল চাষাবাদের ভুষির বস্তা রাখা ছিল। রাতের আঁধারে কে বা কারা ভুষির বস্তাগুলো ছাউনির পাশে সারি করে রেখে কাঠ ও বাঁশ জড়ো করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে ভুষির বস্তাগুলোতে আগুন ধরে দ্রুত উত্তর দিকে ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের চোখে আগুন ধরা পড়লে তারা দ্রুত এগিয়ে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। মুসল্লিদের মতে, তখন আগুনটি দেখতে না পেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও ২০১ গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমার ধারণা, শত্রুতাবশত কেউ এই আগুন লাগিয়েছে। মহান আল্লাহ সব দেখছেন। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন তাদের নিজের গুণে ক্ষমা করে দেন।
ময়মনসিংহ রেল স্টেশন থেকে যাএীর চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার সহ ব্যাগ ও ২জন চুরকে ৩০ঘন্টার মধ্য গ্রেপ্তার ও অপর আরেক অভিযানে অবৈধ ৯৬০পিস মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাব উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বাদী মোঃ আতিকুর রহমান(৪৭), পিতা-মৃতঃ নুরুল ইসলাম, সাং-হাটশিরা, থানা-কলমাকান্দা, জেলা-নেত্রকোনা এর দেয়া তথ্যমতে জানা যায় যে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫খ্রি: তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন হতে নেত্রকোনাগামী আন্তঃনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে অনুমান ১৩:৪৫ ঘটিকায় যাত্রা করেন। তার সাথে থাকা ব্যাগের ভিতরে জমির মূল দলিলপত্র ও ০৮ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ব্যাগটি তার সিটের উপরে বাংকারে রেখে দেন। একই তারিখ ১৬:৩০ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে ট্রেনটি যাত্রা বিরতি করার সময় স্ত্রী সন্তানদের সিটে রেখে তিনি জিআরপি মসজিদে নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে এসে দেখেন বাংকারে রাখা ব্যাগটি কৌশলে অজ্ঞাতনামা চোর/চোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে। উক্ত ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানা’য় মামলা নং-০১, তারিখ-২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫খ্রিঃ, ধারা-৩৭৯ পেনাল কোড দায়ের করেন। উক্ত চুরির ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয। বিষয়টিকে গুরুত্বারোপ করে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে তৎপর হয়। এরই প্রেক্ষিতে সদর কোম্পানী, র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ এর একটি চৌকস দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫খ্রিঃ সময় আনুমানিক রাত ২৩:০০ ঘটিকায় ময়মনসিংহ সদর থানার ডিবি রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত চোর ১। মোঃ বাবুল (৩২), পিতা-মোঃ আবুল কালাম, সাং-শেওড়া ধোপাখোলা এবং ২। রনি বনিক(৩৫), পিতা-প্রশন্ন বনিক, সাং-শেওড়া ডিবি রোড, উভয় থানা-কোতোয়ালী, জেলা-ময়মনসিং’দের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত চোরদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চুরি যাওয়া ব্যাগসহ জমির মূল দলিলপত্র, পরিবারের ব্যবহৃত প্রায় ০৭ ভরি স্বর্ণালংকার এবং নগদ ১৭,০০০/-টাকা র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়াও পৃথক একটি অভিযানে অদ্য ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০:১০ ঘটিকায় র্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল ময়মনসিংহ রেলস্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯৬০(নয়শত ষাট) পিস অবৈধ মাদক দ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ইসকন নিষিদ্ধের দাবি এবং তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। বৈঠকে হেফাজত নেতারা বলেন, দেশের কিছু পরাজিত শক্তি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশকে ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। এরই অংশ হিসেবে ইসকন দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি জানান এবং দেশবাসীকে সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে পা না দিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। হেফাজত নেতারা এই হত্যাকাণ্ডকে “গৃহযুদ্ধ বাধানোর অপপ্রয়াস” হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, এই ঘটনা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করার ষড়যন্ত্রের অংশ। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন (২৬ নভেম্বর) তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আটকে দেয় তার অনুসারীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। হেফাজতে ইসলাম নেতারা শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির ষড়যন্ত্র থেকে দেশ রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
ঝাওয়াইল প্রতিনিধি: ফিলিস্তিনে অবৈধ ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঝাওয়াইল ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামী ২৮ মার্চ, শুক্রবার, জুমার নামাজের পর নিজ নিজ মসজিদ থেকে মিছিল বের করে ভেংগুলা বাজারে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছে কওমি ওলামা পরিষদ ও ইমাম মোয়াজ্জিন পরিষদ, ঝাওয়াইল ইউনিয়ন শাখা। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিনে সাধারণ মুসলমানদের ওপর চলমান নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তারা সকল ইমাম, মোয়াজ্জিন ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের শান্তিপূর্ণভাবে এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
বাংলাদেশে চলতি বছরের (১৪৪৬ হিজরি/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ) ফিতরার হার নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সভায় এ হার নির্ধারণ করা হয়। নতুন ফিতরার হার ঘোষণা সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরার হার ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর (২০২৪) সর্বনিম্ন ফিতরা ছিল ১১৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ২৯৭০ টাকা। জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের নতুন ফিতরার হার ঘোষণা করেন। ফিতরার হার নির্ধারণের ভিত্তি ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী, ফিতরা নির্ধারণ করা হয় গম, আটা, যব, খেজুর, কিশমিশ ও পনিরের নির্দিষ্ট পরিমাণের বাজারমূল্যের ভিত্তিতে। একজন মুসলমান সামর্থ্য অনুযায়ী এসব পণ্যের যে কোনো একটি বা তার সমপরিমাণ বাজারমূল্য ফিতরা হিসেবে প্রদান করতে পারবেন। এই বছর ফিতরার হার নির্ধারণে যে পরিমাণ খাদ্যশস্যের মূল্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে তা হলো: গম বা আটা: ১.৬৩ কেজি যব: ৩.২৫ কেজি খেজুর: ৩.২৫ কেজি কিশমিশ: ৩.২৫ কেজি পনির: ৩.২৫ কেজি ফিতরা আদায়ের গুরুত্ব সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। এটি ঈদের দিন গরিব ও দুস্থদের জন্য সাহায্য হিসেবে দেওয়া হয়, যাতে তারা ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। ইসলামি পণ্ডিতরা পরামর্শ দেন, ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করা উত্তম। যাদের ওপর ফিতরা ওয়াজিব, তারা যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি বিতরণ করেন এবং গরিবদের সহযোগিতা করেন। প্রতিবছরের মতো এবারও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত ফিতরার হার মুসলিম উম্মাহকে শরিয়াহ নির্দেশিত পন্থায় এই ইবাদত সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে। সামর্থ্য অনুযায়ী ফিতরা প্রদান করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ইসলামের শিক্ষা।
আল্লাহ তাআলা মানব জাতির জন্য কিছু দিন ও রাতকে বিশেষ বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তেমনই একটি বিশেষ সময় হলো জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন। এই দিনগুলোতে নেক আমলের ফজিলত এত বেশি যে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে বছরের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। 🔹 হাদীসে জিলহজ্জের প্রথম দশ দিনের ফজিলত রাসুল (সা.) বলেন: “আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় দিন হলো জিলহজ্জের প্রথম দশ দিন। এ দিনগুলোর যে কোনো এক দিনে করা নেক আমল আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়।” (বুখারি: ৯৬৯) 🔸 এই দশ দিনে যে আমলগুলো করা উচিৎ নিচে এই দশ দিনের সর্বোত্তম আমলগুলো ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো: ইসলাম ও ধর্ম রিলেটেড নিউজ ১. তওবা ও আত্মশুদ্ধি এই বরকতময় সময়ের শুরুতেই আমাদের উচিত নিজ গুনাহর জন্য খাঁটি অন্তরে তওবা করা এবং আল্লাহর দরবারে ফিরে আসা। কারণ এই দিনগুলোতে আল্লাহর রহমত বহুগুণে নাজিল হয়। ২. নফল রোজা রাখা (বিশেষ করে ৯ জিলহজ্জ - আরাফার দিন) জিলহজ্জের প্রথম নয় দিনে নফল রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। বিশেষ করে ৯ জিলহজ্জ (আরাফার দিন) রোজা রাখলে: “এক বছরের আগের ও পরের গুনাহ মাফ হয়।” (সহীহ মুসলিম: ১১৬২) ৩. তাকবির, তাহলিল ও তাহমিদ পাঠ জিলহজ্জের প্রথম দশ দিনে এবং ঈদের দিনগুলোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো জিকির করা: 📌 যে জিকিরগুলো বেশি করা উচিত: তাকবির: الله أكبر الله أكبر لا إله إلا الله، والله أكبر الله أكبر ولله الحمد তাহলিল: لا إله إلا الله তাহমিদ: الحمد لله 📅 সময়সীমা: ৯ জিলহজ্জ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ্জ আসর পর্যন্ত ফরজ নামাজের পর তাকবির বলা ওয়াজিব (তাকবিরে তাশরিক)। ৪. নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত ও অধিক ইবাদত এই সময়ে বেশি করে নফল নামাজ (তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত) পড়া কুরআন তিলাওয়াত দরূদ পাঠ সারা দিন জিকির ও আল্লাহর প্রশংসা করা ৫. সদকা ও দান খয়রাত অসহায়, দরিদ্র, এতিম, মিসকিনদের মাঝে সাহায্য বিতরণ করা এই আমলের ফজিলত বরকতময় দিনে বহুগুণ বৃদ্ধি পায় ৬. কোরবানির নিয়ত থাকলে চুল ও নখ না কাটা রাসুল (সা.) বলেন: “তোমাদের কেউ যদি কোরবানির ইচ্ছা করে, তবে সে যেন জিলহজ্জের চাঁদ দেখা থেকে শুরু করে কোরবানি না করা পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে।” (সহীহ মুসলিম: ১৯৭৭) 📌 এটি কোরবানিদাতার জন্য মুস্তাহাব (হানাফি মতে) এবং অন্য মাযহাবে কিছুটা ভিন্ন। ৭. আরাফার দিনের দোয়া ও ইবাদতে ব্যস্ত থাকা (৯ জিলহজ্জ) আরাফার দিনকে রাসুল (সা.) বছরের শ্রেষ্ঠ দিন বলেছেন এই দিন দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময় 📌 সর্বোত্তম দোয়া: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ (তিরমিযী: ৩৫৮৫) ৮. কোরবানি করা (১০ জিলহজ্জ) ঈদুল আযহার দিন পশু কোরবানি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আর্থিকভাবে সক্ষম মুসলমানদের জন্য এটি ওয়াজিব (হানাফি মতে) 📌 হাদীস: “কোরবানির দিনে আল্লাহর কাছে কোরবানির চেয়ে প্রিয় কোনো আমল নেই।” (তিরমিযী) ✅ সংক্ষিপ্ত চেকলিস্ট: জিলহজ্জের প্রথম দশ দিনের আমল দিন করণীয় ফজিলত ১-৮ জিলহজ্জ রোজা, জিকির, তওবা, কুরআন তিলাওয়াত বহু সওয়াব ৯ জিলহজ্জ আরাফার রোজা, দোয়া, তাকবির ২ বছরের গুনাহ মাফ ১০ জিলহজ্জ ঈদের নামাজ, কোরবানি, দান আল্লাহর প্রিয় আমল 🔚 উপসংহার: এই দশ দিন হলো এমন একটি সময় যা আমাদের ঈমান ও আমলকে পরিশুদ্ধ করে, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সুযোগ এনে দেয়। আসুন, এই বরকতময় সময়কে আমরা হেলাফেলা না করে পূর্ণভাবে কাজে লাগাই।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।