কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম বলেছেন, “দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে নির্বাচন হলে কৃষক শ্রমিক জনতালীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু যদি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে বাদ দিয়ে শুধু বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত নির্বাচন করে, তাহলে ২০ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে যাবে না। সে ভোটে আমরাও অংশ নেবো না।” বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। “শেখ হাসিনার অন্যায় আওয়ামী লীগের অন্যায় নয়” — কাদের সিদ্দিকী বঙ্গবীর বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে আমি চিনতে পারিনি। আমার আগে আপনাকে চিনেছে শেখ হাসিনা, চিনেছে দেশের মানুষ। শেখ হাসিনার অন্যায় বঙ্গবন্ধুর অন্যায় নয়, আওয়ামী লীগের অন্যায়ও নয়। মুক্তিযুদ্ধের অন্যায়ও নয়।” তিনি আরও বলেন, “এই আওয়ামী লীগকে জন্ম দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শামসুল হক। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ জন্ম দেননি। তাকে রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করি না, কারণ তিনি মনে করেন দেশটা তার বাবার—আর আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু দেশের সেবক, আমিও দেশের সেবক, আমরা সবাই আল্লাহর গোলাম।” “আওয়ামী লীগের বিচার কেউ করতে পারবে না” কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, “শেখ হাসিনার বিচার করতে চাইলে করুন, কিন্তু আওয়ামী লীগের বিচার করতে পারবেন না। আইয়ুব খান পারেনি, ইয়াহিয়া খান পারেনি—আপনারাও পারবেন না। আওয়ামী লীগের যারা দোষ করেছে তাদের বিচার হোক, কিন্তু সবাই তো দোষ করেনি।” বঙ্গবন্ধু ও জিয়ার প্রসঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছি, জিয়াউর রহমানও ছিলেন। দু’জনকেই বীরোত্তম খেতাব দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু সরকার। এখানে ভিন্নতা নেই; ভিন্নতা সৃষ্টি করেই আমরা স্বাধীনতা–বিরোধী জামায়াতকে শক্তিশালী করেছি।” জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াত যে ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন করেছে—বাংলাদেশের মা–বোনের সম্মান ধ্বংস করেছে—তারা ক্ষমা না চাইলে দেশে কথা বলার সুযোগ পেত না। বঙ্গবন্ধুর মানবিকতার কারণেই তারা বেঁচে যেতে পেরেছে।” টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবস: ইতিহাস, স্মৃতি ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল পাক হানাদার মুক্ত হয়—এই ঐতিহাসিক দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছরের মতো এবারও কাদেরিয়া বাহিনী আলোচনা সভা আয়োজন করে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের স্মৃতি, তখনকার পরিস্থিতি এবং স্বাধীনতার মূল্যায়ন তুলে ধরেন। সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবীর বলেন, “বাংলাদেশ আজ যেকোনো সংকটেও টিকে আছে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কারণেই। দেশের সংকট মোকাবিলায় নতুন প্রজন্মকেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে।” সভায় বক্তারা কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন— সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল জেলা মুজিব বাহিনীর প্রধান আলমগীর খান মেনু, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীরপ্রতিক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক বীরপ্রতিক, আবুল কালাম আজাদ বীরবিক্রম, কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার কাজী হুমায়ুন বাঙ্গাল, দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, দেলদুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তহের বাবলু প্রমুখ। সভা শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে বিশেষ দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আসন্ন ২০২৬ জাতীয়সংসদ নির্বাচনে-এ বাংলাদেশে একটি নির্বাচনী ঝড় বয়ে যাচ্ছে বলা যায়, কারণ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ সরগরম এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে, এই নির্বাচনটি মূলত ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনী পরিস্থিতি ও প্রস্তুতি অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন যে, পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৫ সালের শেষের দিকে বা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সাথে নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা: নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এই রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে কিছু সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। সংস্কারের বিষয়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে প্রয়োজনীয় নির্বাচনী ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়েছে। এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে নির্বাচনও কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন করেছে এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানার পুনর্নির্ধারণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। সংক্ষেপে, যদিও নির্বাচনের তারিখ এখনও চূড়ান্তভাবে ঘোষিত হয়নি (ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর লক্ষ্যমাত্রা), নভেম্বর ২০২৫-এ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত এবং নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে।
মোস্তফা মাসুদ: মানবকল্যাণে ঐক্য সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল কালিগঞ্জ” এই প্রতিপাদ্য স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা সমিতির গঠনতন্ত্র প্রণয়ন সংক্রান্ত ও সমিতির কার্যকরী কমিটি গঠন বিষয়ে সর্বশেষ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।সন্ধ্যায় ঢাকার উত্তরা, বাড়ি নং ৩ রোড নম্বর ১০ এবং ৭ সেক্টরে ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেম এর বাসভবনে কালিগঞ্জ উপজেলা সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুৃষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন কালিগঞ্জ উপজেলা প্রস্তাবিত সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা বকুলুজ্জামান, এ্যাডঃ মরিয়ম মনসুর, স ম মেহেদী হাসান, মুন্সি আব্দুর রাশেদ, এস এম ইমদাদ হোসেন, মোহাম্মদ রুবায়েত, শেখ সাইফুল বারী সফু, সুকুমার দাশ বাচ্চু, নুর আহমেদ প্রমুখ। এ সভায় উপজেলা সমিতির গঠনতন্ত্র অনুমোদন, সদস্য অন্তর্ভুক্তি সিদ্ধান্ত, জানুয়ারিতে সাধারণ সভা, ও পিকনিক অনুষ্ঠিত হবে। কার্যকরী কমিটির ব্লেজার সহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: বিষয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক বকুলুজ্জামান জানান, ঢাকা মহানগরীতে নিয়মিতভাবে বসবাসরত উপজেলার অধিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কল্যাণ সাধন এবং সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা,পরস্পারিস সৌহার্দ্য ও ঐক্য স্থাপন, তাদের কল্যাণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং একই সাথে কালিগঞ্জ উপজেলা সার্বিক উন্নয়নকে সক্রিয়ভাবে উদ্বুদ্ধকরণ করা। এছাড়া ঢাকা সহ অবস্থানরত কালিগঞ্জ উপজেলার অধিবাসীদের কর্মসংস্থান, চিকিৎসা, সহায়তা, অস্থায়ী আশ্রয় প্রদান এবং মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা, উপজেলার ইতিহাস ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক ধারা উপস্থাপন এবং সার্বিক উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালানো। কালিগঞ্জ উপজেলা সমিতির ঢাকা ও কালিগঞ্জে লাইব্রেরীতে একটি কার্যালয় প্রাথমিক পর্যায়ে থাকবে। কালিগঞ্জ উপজেলা প্রস্তাবিত সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেমকে প্রধান উপদেষ্টা করে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট পৃষ্ঠপোষক, ১৫ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ ও মোঃ আবু মাসুদকে সভাপতি ও মোস্তফা বকুলুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে মোট ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়।
শিশু-কিশোর প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি’র সংগীত বিভাগের ক গ্রুপে দেশসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে টাঙ্গাইলের প্রেয়সী চক্রবর্তী। মাত্র আট বছর বয়সেই সংগীতে জাতীয় সেরা হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে পুরো টাঙ্গাইলকে গর্বিত করেছে সে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা মিলনায়তনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও ৩ লাখ টাকার পুরস্কার গ্রহণ করে প্রেয়সী। আকুর টাকুর পাড়া এলাকার সঞ্জয় চক্রবর্তী বাবুল ও রাখী চক্রবর্তী দম্পতির কনিষ্ঠ মেয়ে প্রেয়সী বর্তমানে শাহীন ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। সংগীতশিল্পে প্রেয়সীর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে একটি সম্পূর্ণ সংগীত পরিবার। তার বড় বোন শ্রেয়সী চক্রবর্তী পাঁচবার জাতীয় সংগীত পুরস্কার জয় করে বর্তমানে আইসিসিআর স্কলারশিপে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা করছে। বাবা সঞ্জয় চক্রবর্তী বাবুল নিয়মিত বিভিন্ন চ্যানেলে সংগীত পরিবেশন করেন এবং মা রাখী চক্রবর্তীও একজন দক্ষ সংগীতশিল্পী। প্রেয়সীর অর্জনে টাঙ্গাইলের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আনন্দের জোয়ার বইছে। কন্যাদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবা সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “আমার মেয়েরা একদিন সংগীতের মাধ্যমে সবার মন জয় করে কালজয়ী শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে—এটাই আমার স্বপ্ন।”
সাজিদ পিয়াল: কৃষকদের সুবিধার্থে একই দোকানে সার ও বীজ বিক্রয়ের অনুমতি প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে টাংগাইল জেলা (BADC) বীজ ডিলাররা। ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (BADC) বীজ ডিলার টাঙ্গাইল জেলা শাখার উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এই মানববন্ধনে অংশ নেন টাংগাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলার বীজ ডিলাররা। বক্তব্য রাখেন জেলা বীজ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মো. আরিফুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব হোসেন এবং সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি এবং তাঁদের দাবি পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন। উক্ত অনুষ্ঠানটিতে বক্তারা উল্লেখ্য করেন ২০১০ সালের নীতিমালা অনুযায়ী বীজ ডিলাররা এক বছর পর সার ডিলারে রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেই ডিলারশিপ না পাওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একই দোকান থেকে যেন সার ও বীজ বিক্রির সুযোগ পেলে কৃষকরা এক জায়গায় সব কৃষি উপকরণ সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে সময় ও খরচ দুইটিই বাঁচবে। আরও বলেন, ‘কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী আমরা বিএডিসির মানসম্মত বীজ সরবরাহ করে আসছি। কৃষকের সুবিধার্থে বীজ ডিলারদের সার ডিলারশিপ দ্রুত বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানানো হয়।
[জুমার বয়ান : ২৬-১০-১৪৪৬ হি., ২৫-৪-২০২৫ ঈ.] [বয়ানটি আলোচকের নযরে সানী ও সম্পাদনার পর পাঠকের সামনে পেশ করা হল। প্রসঙ্গের প্রয়োজনে এতে কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে। –সম্পাদক] গত জুমায় হজ্ব সম্পর্কে কিছু কথা হয়েছিল। আজকের আলোচনাও হজ্বের প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু হবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সামনে আসায় সেটি নিয়ে কিছু আলোচনা করার ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ। কুরআন কারীমে সূরা বাকারায় হজ্ব প্রসঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, যখন তোমরা হজ্বের কাজসমূহ সমাপ্ত করবে তখন আল্লাহর যিকির করবে। হজ্ব পালনকারী ব্যক্তি ইহরাম বেঁধে মিনা হয়ে আরাফায় যাবে। আরাফা থেকে মুযদালিফায় আসবে। মুযদালিফা থেকে আবার মিনায় গিয়ে ১১-১২ যিলহজ্ব পর্যন্ত (দুই দিন বা ১৩ যিলহজ্বসহ তিন দিন) অবস্থান করবে। সেখানে জামারায় পাথর নিক্ষেপ করবে। এই পবিত্র স্থানগুলো দুআ কবুলের জায়গা। এসব স্থানে কী দুআ করবে– সেটিও আল্লাহ তাআলা আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। দুআটি আমাদের বর্তমান অবস্থার সঙ্গেও খুব সামঞ্জস্যপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা বলেছেন– فَاِذَا قَضَیْتُمْ مَّنَاسِكَكُمْ فَاذْكُرُوا اللهَ كَذِكْرِكُمْ اٰبَآءَكُمْ اَوْ اَشَدَّ ذِكْرًا فَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا وَمَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ، وَمِنْهُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّفِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ، اُولٰٓىِٕكَ لَهُمْ نَصِیْبٌ مِّمَّا كَسَبُوْا وَاللهُ سَرِیْعُ الْحِسَابِ. তোমরা যখন হজ্বের কার্যাবলি শেষ করবে, তখন আল্লাহকে সেভাবে স্মরণ করবে, যেভাবে নিজেদের বাপ-দাদাকে স্মরণ করে থাক; বরং তার চেয়েও বেশি স্মরণ করবে। কিছু লোক তো এমন আছে, যারা (দুআয় কেবল) বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়ায় দান করুন। আখেরাতে কিন্তু তাদের কোনো অংশ নেই। আবার তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে, যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দান করুন, দুনিয়ায়ও কল্যাণ এবং আখেরাতেও কল্যাণ এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। এরা এমন লোক, যারা তাদের অর্জিত কর্মের অংশ (সওয়াবরূপে) লাভ করবে। আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। –সূরা বাকারা (০২) : ২০০-২০২ হজ্বের কাজগুলো সমাপ্ত করে মিনায় অবস্থানকালে আল্লাহর যিকির করবে। যেমন তাকবীরে তাশরীক– اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ. এই সময় তাকবীরে তাশরীকের যিকিরসহ অন্যান্য যিকিরও করবে। আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহর যিকির কর এবং আল্লাহকে স্মরণ কর, তোমাদের বাপ-দাদা ও পূর্বপুরুষদের স্মরণের মতো। ইসলামপূর্ব যুগে মক্কার মুশরিকসহ অন্যান্য বেদ্বীনরাও হজ্ব করার জন্য মক্কা মুকাররমায় যেত। বলার অপেক্ষা রাখে না, তারা যেহেতু তাওহীদের শিক্ষা হারিয়ে ফেলেছিল, সেহেতু তাদের হজ্ব তাওহীদের হজ্ব ছিল না; ছিল শিরকের হজ্ব। এমনকি হজ্বের মধ্যে তাওহীদের যে তালবিয়া– لَبَّيْكَ اَللّٰهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيكَ لَكَ. –সেটি পর্যন্ত তারা পরিবর্তন করে ফেলেছিল। ওই সময় তারা নিজেদের মতো করে হজ্ব সম্পন্ন করার পর নিজেদের পূর্ব পুরুষদের বাস্তব-অবাস্তব যাবতীয় গুণকীর্তন ও প্রশংসা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের তাওহীদের হজ্ব শেখাচ্ছেন। সেখানে এ নির্দেশনাও দিচ্ছেন যে, হজ্ব সমাপ্ত করার পর কেবল আল্লাহর যিকির কর। আগে যেমন পূর্বপুরুষ ও বাপ-দাদার চর্চা করতে, অন্তত ততটুকু যিকির তো আল্লাহর জন্য করবে; বরং তার চেয়ে বেশি কর– اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ. মুমিন ও কাফেরের প্রার্থনার পার্থক্য যিকিরের প্রধান ও প্রথম সারির প্রকারগুলোর মধ্যে দুআ অন্যতম। সেই দুআর ধরন কেমন হবে, তা-ও আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন। কিছু লোক আছে, যাদের চিন্তা, স্বপ্ন, প্রার্থনা সবকিছু কেবল দুনিয়া ও ইহজগতকে কেন্দ্র করে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেন– فَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا. কিছু লোক তো বলে, মালিক, আমাদের কেবল দুনিয়া দান করুন! দুনিয়াতে সুখে রাখুন! ইহজগতের সকল সুখ দান করুন! ব্যস, আখেরাতের কোনো আলাপ নেই। আখেরাতের জন্য তাদের কোনো প্রার্থনা নেই। আল্লাহ বলছেন– وَ مَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ. ‘আখেরাতে তার কোনো অংশ নেই।’ অর্থাৎ তার নিজেরই যেহেতু আখেরাত নিয়ে কোনো ভাবনা নেই, তাই আখেরাতে তার কোনো অংশও নেই। পক্ষান্তরে তাওহীদে বিশ্বাসী মুমিন বান্দাদের দুআ কেমন সেটাও আল্লাহ তাআলা বলেছেন– رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّفِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ. অর্থাৎ আল্লাহ, আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দান করুন! আখেরাতেও কল্যান দান করুন! দুনিয়াতেও যেন আমরা সুখে-শান্তিতে থাকতে পারি! আপনার নেক বান্দা হয়ে থাকতে পারি! আর আখেরাতেও যেন শান্তি ও নিরাপদে থাকতে পারি! এককথায় আমরা আপনার নিকট দুনিয়া-আখেরাত উভয় জগতের কল্যাণ কামনা করি এবং দোযখের আগুন থেকে পানাহ চাই! আল্লাহ তাআলা বলছেন– اُولٰٓىِٕكَ لَهُمْ نَصِیْبٌ مِّمَّا كَسَبُوْا وَ اللهُ سَرِیْعُ الْحِسَابِ. তাদের আমল অনুযায়ী তাদের জন্য আখেরাতে বড় অংশ থাকবে। আর আল্লাহ অনেক দ্রুত হিসাব নিতে পারেন। কোটি কোটি মানুষের মধ্যে কে আল্লাহর কাছে কেবল ইহজগতের কল্যাণ চেয়েছিল আর কে ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের কল্যাণ চেয়েছিল– সেই হিসাব নিতে আল্লাহর কোনো সময় লাগবে না। তিনি অনেক দ্রুত সমস্ত হিসাব সম্পন্ন করতে সক্ষম। আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং দেখেন। ভাইয়েরা আমার! আমরা মুমিন, মুসলিম। আমরা তো আল্লাহর নিকট দুনিয়া-আখেরাত উভয়টাই চাই। বরং আমাদের দুনিয়াও নিছক দুনিয়া নয়, মূলত তা আখেরাতের প্রস্তুতির জন্য। আখেরাতের প্রতি অবিশ্বাস ও উদাসীনতা জাহান্নামে যাওয়ার কারণ সূরা ইউনুসেও আল্লাহ তাআলা বলেন– اِنَّ الَّذِیْنَ لَا یَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا وَرَضُوْا بِالْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَاطْمَاَنُّوْا بِهَا وَالَّذِیْنَ هُمْ عَنْ اٰیٰتِنَا غٰفِلُوْنَ، اُولٰٓىِٕكَ مَاْوٰىهُمُ النَّارُ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ، اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَهْدِیْهِمْ رَبُّهُمْ بِاِیْمَانِهِمْ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهِمُ الْاَنْهٰرُ فِیْ جَنّٰتِ النَّعِیْمِ، دَعْوٰىهُمْ فِیْهَا سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ وَتَحِیَّتُهُمْ فِیْهَا سَلٰمٌ وَاٰخِرُ دَعْوٰىهُمْ اَنِ الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ. নিশ্চয়ই যারা (আখেরাতে) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আশা রাখে না এবং পার্থিব জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট ও তাতেই নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে এবং যারা আমার নিদর্শনাবলি সম্পর্কে উদাসীন— নিজেদের কৃতকর্মের কারণে তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। (অপরদিকে) যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের ঈমানের কারণে তাদের প্রতিপালক তাদেরকে এমন স্থানে পৌঁছাবেন যে, প্রাচুর্যময় উদ্যানরাজিতে তাদের তলদেশ দিয়ে নহর বহমান থাকবে। তাতে (প্রবেশকালে) তাদের ধ্বনি হবে এই যে, হে আল্লাহ! সকল দোষ-ত্রুটি থেকে আপনি পবিত্র এবং সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’। আর তাদের শেষ ধ্বনি হবে এই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। –সূরা ইউনুস (১০) : ৭-১০ এখানে আল্লাহ তাআলা বলেন, যাদের আমার সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো আশা নেই বা বিশ্বাস নেই এবং তারা দুনিয়ার জীবনকেই সবকিছু মনে করে, মৃত্যুর পরে কবর থেকে যে জগৎ শুরু হয়, হাশর-নশর, আল্লাহর দরবারে দাঁড়ানো ইত্যাদি বিষয়ে যাদের বিশ্বাস নেই, তাদের পরিণতি জাহান্নাম। তেমনিভাবে যাদের বিশ্বাস আছে, কিন্তু মনোযোগ ও গুরুত্ব নেই। অর্থাৎ আরেকটা জগতের বিষয়ে জানা আছে, কিন্তু সেই জগতের বিষয়ে কোনো তৎপরতা ও প্রস্তুতি নেই, ভাবখানা এমন, সবাই যেহেতু বলছে মৃত্যুর পরের জগতের কথা, কিছু একটা না থাকলে তো আর বলার কথা না! এভাবে একধরনের জানা আছে, কিন্তু তার জন্য প্রস্তুতি ও তৎপরতা নেই। তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। আয়াতের উপস্থাপনায় যারা পরকালকে বিশ্বাসই করে না এবং যারা মোটামুটি একধরনের বিশ্বাস হয়তো করে, কিন্তু আচরণে তার কোনো প্রকাশ নেই, উভয় শ্রেণির লোকদের কথাই এসে যায়। তারপর বলা হয়েছে– وَرَضُوْا بِالْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ اطْمَاَنُّوْا بِهَا. অর্থাৎ দুনিয়া নিয়েই তারা সন্তুষ্ট এবং মনটাও তার ওপর স্থির ও প্রশান্ত। অর্থাৎ দুনিয়া ঠিক তো সব ঠিক! দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে মত্ত, আখেরাতের কোনো ভাবনা নেই। وَ الَّذِیْنَ هُمْ عَنْ اٰیٰتِنَا غٰفِلُوْنَ. আর তারা আল্লাহর দেওয়া কুরআনের আয়াত সম্পর্কে গাফেল। তাঁর স্থাপনকৃত কুদরত ও হেদায়েতের বিভিন্ন নিদর্শন সম্পর্কে উদাসীন। তাদের ঠিকানা ও পরিণতির কথা আল্লাহ বলছেন– اُولٰٓىِٕكَ مَاْوٰىهُمُ النَّارُ بِمَا كَانُوْا یَكْسِبُوْنَ. অর্থাৎ তাদের হাতের কামাই অনুযায়ী তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। কারণ আখেরাত বিষয়ে তাদের কোনো গুরুত্বই ছিল না। আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে, হিসাব দিতে হবে, এই ভাবনাই তাদের ছিল না; বরং দুনিয়া নিয়েই ছিল ব্যস্ত। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলছেন– اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَهْدِیْهِمْ رَبُّهُمْ بِاِیْمَانِهِمْ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهِمُ الْاَنْهٰرُ فِیْ جَنّٰتِ النَّعِیْمِ. অর্থাৎ যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তাদের ঈমানের বরকতে আল্লাহ তাআলা তাদের সঠিক পথ দেখাবেন। ফলে দুনিয়ায় থেকে তারা আখেরাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। আর আখেরাতে গেলে জান্নাত পাবে। এখানে আল্লাহ তাআলা ভাগ করে দিয়েছেন। যার ভাবনা কেবল ইহজগৎ তার ঠিকানা ও পরিণতি কী। আর যার ভাবনা দুনিয়া ও আখেরাত উভয়টা এবং সে দুনিয়ার কল্যাণও চায় আখেরাতের লক্ষ্যে, যেখানে দুনিয়া পেতে হলে আখেরাত ছাড়তে হয়– সে সেখানে কখনো দুনিয়ার দিকে ধাবিত হয় না; বরং আখেরাতকে প্রাধান্য দেয়– তার ঠিকানা ও পরিণতি কী– তাও আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন : স্পষ্ট আল্লাহদ্রোহিতা ও শরীয়তদ্রোহিতা কুরআনের এই শিক্ষা এবং ইসলাম ও ইসলামী শরীয়তের এই মৌলিক আকীদা মাথায় রেখে একটু ভাবতে পারি, আমাদের বর্তমান অবস্থা কী? সবাই ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি, আমাদের প্রধান উপদেষ্টার নিকট নারী বিষয়ক সংস্কারের প্রতিবেদন জমা হয়েছে। যারা এই প্রতিবেদন ও প্রস্তাবনা পেশ করেছেন, তারা একদিক থেকে তো ধন্যবাদ পাওয়ার উপযুক্ত যে, তারা স্পষ্টভাষী। কারণ কোনো রাখঢাক করেননি তারা; বরং তাদের ভেতরে যা আছে তা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন। কোনো মুসলিম রাষ্ট্র কি কেবল ইহজাগতিক হতে পারে? একটি দৃষ্টান্ত দেখুন। প্রতিবেদনের ৩৫নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘যেহেতু রাষ্ট্র একটি ইহজাগতিক সত্তা, সেহেতু কোনো ধর্মীয় বিধান অনুসরণ করে সংবিধান শুরু হওয়া উচিত নয়। তা ছাড়া, একটি ধর্মকে প্রাধান্য দেওয়া ধর্মনিরপেক্ষতা নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। তাই অনুচ্ছেদ ২ক বাতিল করা প্রয়োজন।’ তাদেরকে বলা হয়েছে, নারী বিষয়ক সংস্কারের প্রস্তাবনা, মতামত ও পরামর্শ জমা দেওয়ার জন্য, তারা সেখানে দিয়ে বসল রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের মূলনীতি সম্পর্কে প্রস্তাবনা! বলল, আমাদের রাষ্ট্র হল ইহজাগতিক! নাউযুবিল্লাহ! কোনো মুসলিম দেশ কি কেবল ইহজাগতিক হতে পারে? হওয়া সম্ভব? আমাদের দেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং তা যুগ যুগ ধরেই আছে। যাদেরকে এদেশ থেকে সবাই মিলে বের করে দিয়েছে তারাও এটা বাদ দেয়নি বা দিতে পারেনি; কিন্তু এই কমিশন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এটা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করছে! এই রাষ্ট্র নাকি ইহজাগতিক, নাউযুবিল্লাহ! একথা একাধিক জায়গায়ই বলেছে। ২৪০নং পৃষ্ঠায় আছে, ‘রাষ্ট্র হবে ইহজাগতিক এবং মানবিক!’ অর্থাৎ রাষ্ট্র হবে কেবল দুনিয়াকেন্দ্রিক, যেখানে আখেরাত সংক্রান্ত কিছুই থাকবে না। যাদের সবকিছু দুনিয়া কেন্দ্রিক, তাদের ঠিকানা কোথায় হবে– একটু আগেই আমরা কুরআনে দেখলাম। সুতরাং আমরা কি আমাদের দেশ ও সমাজের জন্য এমন কিছু চাই? চাইতে পারি? কখনোই না। আরও বলছে ‘মানবিক’! আরে, যেটা কেবল ইহজাগতিক হয়, সেটা মানবিক হওয়া কখনো সম্ভব নয়। মানবতা কোত্থেকে আসবে? আপনাকে ‘মানবিক’ হতে হলে তো আপনার মধ্যে সর্বপ্রথম আখেরাতমুখিতা ও পরকাল ভাবনা থাকতে হবে। আখেরাতের ফিকির যার নেই, সে কখনো মানবতা বাস্তবায়ন করতে পারে না এবং পারবেও না। এই যে দুই কথাকে একসঙ্গে মিলিয়ে দিল যে ‘রাষ্ট্র হবে ইহজাগতিক এবং মানবিক’ এটা কি পরস্পর সাংঘর্ষিক নয়? ইহজাগতিক হলে সেটি কখনোই মানবিক হতে পারে না; বরং সম্পূর্ণ অমানবিক। মানবিক বানাতে হলে সেটিকে অবশ্যই আখেরাতমুখী ও আল্লাহমুখী বানাতে হবে। বলতে হবে– لَبَّيْكَ اَللّٰهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيكَ لَكَ. اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، لَا إِلهَ إِلّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلهِ الْحَمْدُ. একজন মুমিনের ন্যায় বলতে হবে– سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا. আল্লাহ, আমরা আপনার বিধান শুনেছি, তা গ্রহণ করেছি এবং মেনে নিয়েছি। আবারো বলছি, তারা কিন্তু স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তাদের কাছে রাষ্ট্র হল সম্পূর্ণ ইহজাগতিক ও দুনিয়াকেন্দ্রিক! এর মধ্যে আখেরাত, ঈমান-আমল ও দ্বীন-শরীয়তের কিছু পাওয়া যাবে না। সুতরাং যার কাছে ঈমান-আমল ও আখেরাতের গুরুত্ব নেই, সে এটা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু যার কাছে কুরআন-হাদীস, ঈমান-আমল, ইসলামী শরীয়ত ও আখেরাতের গুরুত্ব আছে, সে এটা কখনো গ্রহণ করতে পারে না। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বার্তা : ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে নবীজীর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ্ই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় আপনাদের জানার কথা, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরীতে জগনণের উদ্দেশে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লামের সীরাত বিষয়ক একটি বাণী ও বার্তা দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তওহিদের মহান বাণী নিয়ে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তি, শান্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনিন্দ্য সুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, যা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারি হিসেবে পথ দেখাবে। আজকের দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে মহানবী (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, তাঁর সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং (আল্লাহর) ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে বলে আমি মনে করি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ, উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং এর মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।’ আমি আমাদের সরকারকে অনুরোধ করব, যেহেতু নবীজীর এই সীরাতই হল সবকিছুর সমাধান, তাই নারী উন্নয়ন চান আর নারী অধিকার চান, সবই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত থেকে গ্রহণ করুন! কুরআন ও হাদীস থেকে গ্রহণ করুন। তার জন্য আপনাকে আলাদা কোনো কমিশন বানাতে হবে না। ধর্মমন্ত্রণালয়ের অধীনে আমাদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন আছে, ফাউন্ডেশনকে বলুন। আপনাকে সর্বোচ্চ সুন্দর ও চমৎকার নারী উন্নয়ন নীতিমালা পেশ করে দিতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ; বরং পেশ করা আছেও। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে সীরাত বিষয়ক যেমন বই লেখা আছে, নারী বিষয়েও যাবতীয় বিধিবিধান বই আকারে ছাপা আছে। আর কুরআন-সুন্নাহ ও নবীজীর সীরাত থেকে আপনাদেরকে যে কোনো সময়ই প্রস্তুত করে পেশ করা সম্ভব! সেটাকে বাস্তবায়ন করে দিন! দেখবেন, পুরো বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শান্তিতে ও সম্মানে থাকবে আমাদের দেশের মা-বোনেরা! কিন্তু সরকার যাদেরকে এই কমিশনের দায়িত্ব দিয়েছেন, তারা কি আসলে এসব সূত্র থেকে নারী উন্নয়নের নীতি খোঁজ করেছেন? এদেশের নারীরা আসলে কী চান? তারা কীভাবে থাকতে সম্মানবোধ করেন? তারা তাদের কোন্ অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করতে চান? সর্বপ্রকার জুলুম-নির্যাতন ও বঞ্চনা থেকে তাদেরকে মুক্ত করার জন্য কোন্ পন্থাটি আসলে সঠিকভাবে কার্যকর– এই কমিশনের সদস্যগণ কি সত্যিই সেটি অনুধাবন করার ক্ষমতা বা যোগ্যতা রাখেন? তাদের প্রতিবেদনটি দেখলে তো অন্তত তা বোঝা যায় না। পশ্চিমাদের পার্থিব উন্নতি অশ্লীলতা ও আল্লাহবিমুখতার কারণে নয় পশ্চিমাদের দাপট দেখে অনেকে মনে করে, সেখান থেকে আমাদের সবকিছু নিতে হবে। অথচ বোঝে না যে, পশ্চিমাদের জাগতিক উন্নতি ও অগ্রগতি তাদের অশ্লীলতা ও খোদাবিমুখতার কারণে নয়। যে কারণে তাদের জাগতিক অগ্রগতি, বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সে বিষয়ে তাদের থেকে আমাদের নেওয়ার কিছু নেই; বরং আমাদের কাছেই আছে তাদের চেয়ে অনেক উন্নত পথ ও পন্থা। আসলে আমাদেরগুলোই তারা গ্রহণ করেছে; ফলে তারা জাগতিক উন্নতি করছে। কাজেই নিজের ঘরেরটাই বাস্তবায়ন করে দেখুন, জাগতিক উন্নতি কীভাবে সাধিত হতে থাকে! তাদের জাগতিক উন্নতি দেখে ভাববার কোনো প্রয়োজন নেই যে, বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার কারণে তারা উন্নতি করছে! বা তাদের জাহেলী সভ্যতার কারণে তারা উন্নতি করছে। আচ্ছা, তারা কি সুদের কারণে উন্নতি করছে? সেক্যুলারিজমের কারণে উন্নতি করছে? লিবারেলিজমের কারণে উন্নতি করেছে? সেক্যুলার শিক্ষা ও সেক্যুলার রাষ্ট্রব্যবস্থার কারণে অথবা নারী উন্নয়নের নামে যতসব বেহায়াপনা রয়েছে, সেগুলোর কারণে কিংবা লিবারেলিজমের অবাধ উশৃঙ্খল উন্মত্ত চাল-চলনের কারণে উন্নতি করছে তারা? কখনোই নয়। বরং বেহায়াপনা বিস্তার করে নিজেরা যেমন বরবাদ হয়েছে, অন্যদেরও বরবাদ করতে চাচ্ছে। পশ্চিমাদের পার্থিব উন্নতির মৌলিক দুটি কারণ আবারো বলছি, এগুলো পশ্চিমা বিশ্বের উন্নতির চালিকাশক্তি নয়! তাদের সামরিক শক্তি ও পার্থিব উন্নতির কারণ এসব নয়। বরং তার কারণ অন্য কিছু। মৌলিকভাবে দুটি : প্রথমত, মুসলিম উম্মাহর মাঝে ব্যাপকভাবে তাকওয়ার অভাব এবং শরীয়ত পালনে উদাসীনতা বেড়ে গেছে, যার কারণে আল্লাহ তাআলা এদের শক্তি তাদেরকে দিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, আমাদের নবীজীর সীরাতের মধ্যে যেসব শিক্ষা রয়েছে, যেমন দুর্নীতি না করা, ধোঁকা ও প্রতারণা না করা, সততা ও সত্যবাদিতা গ্রহণ করা ইত্যাদি; তারা তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নিজেদের বিশেষ কিছু গণ্ডিতে এই নীতিগুলোর চর্চা ধরে রেখেছে। এর পাশাপাশি তাদের মধ্যে রয়েছে পরিশ্রম, উদ্যম, পরিকল্পনা মাফিক কাজ, টিমওয়ার্ক, সময়ানুবর্তিতা, নিয়মানুবর্তিতা এবং জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের পারদর্শিতা, যা আমাদের খোলাফায়ে রাশেদীন ও খাইরুল কুরুনের যামানার বৈশিষ্ট্য ছিল। ফলে তারা জাগতিক উন্নতি লাভ করছে। তাদের জাগতিক উন্নতি এজন্য নয় যে, তারা সকল অশ্লীলতা ও বেহায়াপনাকে গ্রহণ করে নিয়েছে। তাদের জাগতিক উন্নতি এজন্যও নয় যে, তারা খোদাবিমুখতা ও আখেরাত বিমুখতা প্রদর্শন করে। সেজন্য আমাদের অনুরোধ, আল্লাহর ওয়াস্তে সেখান থেকে কোনো কিছু ধার নিতে না যাই! বরং আমাদের নবীজীর সীরাত ও শরীয়তের মধ্যেই সব আছে। সেখান থেকেই আমাদের গ্রহণ করতে হবে। এই প্রতিবেদন জুলাই-আগস্টের শহীদদের সঙ্গে স্পষ্ট গাদ্দারি মনে রাখবেন, যদি এক্ষেত্রে আমরা ভুল করি এবং এই ধরনের অহেতুক ও পঁচা-গান্দা জিনিস এদেশে বাস্তবায়নের চিন্তা করা হয়, এটা হবে সবচেয়ে বড় জুলুম! এটা হবে সবচেয়ে বড় বেঈমানী! সবচেয়ে বড় খেয়ানত! জুলাই-আগস্টের শহীদদের সঙ্গে সবচেয়ে বড় গাদ্দারি! জুলাই-আগস্টের শহীদদের কথা বিশেষভাবে এজন্য বললাম, এই প্রতিবেদন পেশ করার সময় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেছেন, “জুলাইতে যারা প্রাণ দিয়েছে তাদের স্মরণার্থে এমন কিছু করতে চেয়েছি, যা মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে, সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে”। নাউযুবিল্লাহ! আরে, যে জিনিসের মধ্যে জুলাই-আগস্টের শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা হয়েছে, সেখানে বলছে, এটা নাকি তাদের স্মরণার্থে করা হয়েছে! এটা মুনাফেকী নয় কি? খবরদার, যে জিনিস শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি, সেটি তাদের স্মরণে করতে যাবেন না! বলেছেন ‘মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে, সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।’ অথচ এই প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে, সেটা মানুষের জন্যও অকল্যাণকর, সমাজের জন্যও অকল্যাণকর। দেশের জন্যও অকল্যাণকর, সর্বোপরি এটি নারীদের জন্যও অকল্যাণকর। এর মধ্যে কল্যাণের কিছু নেই। সমতা নয়, চাই নারীর ন্যায্য অধিকার আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি ঈমান আছে এমন কোনো নারী এ প্রতিবেদন মেনে নিবে না; মেনে নিতে পারে না। যদিও প্রতিবেদনে বারবার সমতা ও সমান অধিকারের জিগির তোলা হয়েছে। কিন্তু সুস্থ বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন পুরুষ-মহিলা সকলেই বোঝেন, যেখানে ভিন্নতা প্রযোজ্য ও ন্যায়সংগত সেখানে সমতার দাবি অন্যায়। বরং যে বিষয়টি সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং ন্যায়সংগত তা হল ন্যায্য অধিকার। সেটা ক্ষেত্র বিশেষে দুই শ্রেণির জন্য সমানও হতে পারে, কম বেশিও হতে পারে। সব জায়গায় সমান করার দাবি যেমন অবাস্তব তেমনি অন্যায়। নারীর প্রতিও অন্যায়। যারই আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান আছে, সেই বুঝতে সক্ষম– অধিকার তো যিনি খালেক, মালেক, রাব্বুল আলামীন, তিনিই নির্ধারণ করতে পারেন। কাজেই অধিকারের নাম ব্যবহার করে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করার অধিকার কারও নেই। অথচ এ প্রতিবেদনে এ কাজটিই হয়েছে। এই প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু যেমন কুরআন-সুন্নাহ ও শরীয়ত বিরোধী, তেমনি এটি বাস্তবতা বিরোধীও। এটি সাধারণ বিবেক-বুদ্ধি ও সুস্থ রুচি বিরোধী। সর্বোপরি এটি হায়া-লজ্জা বিরোধী! মানুষের মধ্যে তো ন্যূনতম লজ্জাবোধ বলতে কিছু থাকে– সেই বিবেচনায়ও এই প্রতিবেদন প্রত্যাহারযোগ্য। এই প্রতিবেদনের দাবি হল, হায়া-শরম, লজ্জা জাতীয় শব্দগুলোই সমাজ থেকে বের করে দাও! নাউযুবিল্লাহ! এরা ‘শালীনতা’ ও ‘নৈতিকতা’ শব্দগুলোকেই বাদ দিতে চাচ্ছে আমাদের সংবিধানের ৩৯।(২) অনুচ্ছেদে শালীনতা ও নৈতিকতার কথা আছে। তারা বলে কী– এই অনুচ্ছেদ থেকে শালীনতা ও নৈতিকতার বিষয়টি বাদ দিয়ে দিতে হবে। অথচ আমাদের সংবিধান সংস্কার করা প্রয়োজন এজন্য যে, যদিও সেখানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, একথা লেখা আছে, কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনুচ্ছেদে ইসলামবিরোধী বিভিন্ন কথাও আছে; সেজন্য এর সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু এরা এসে সংবিধান থেকে ইসলামই বাদ দিয়ে দিতে চাচ্ছে! শালীনতা আর নৈতিকতার যা কিছু অবশিষ্ট আছে, সেটাও বাদ দিতে চাচ্ছে! শালীনতা ও নৈতিকতা যারা বাদ দিতে চায়, তারা কি আসলে নারীর উন্নয়ন চায়? প্রতিবেদনের ৩৫নং পৃষ্ঠায় প্রস্তাব করেছে– ‘(সংবিধানে) শব্দ প্রয়োগে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা। ... ‘গণিকাবৃত্তি’, ... শালীনতা, নৈতিকতা–’ শব্দসমূহের ব্যবহার পরিহার করা।’ তারা আরও বলেছে, অস্পষ্ট কোনো শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। ১৬২নং পৃষ্ঠায় তারা অস্পষ্ট পরিভাষা পরিহার করতে বলেছে এবং টীকায় অস্পষ্ট পরিভাষার উদাহরণ দিয়ে বলেছে, ‘অস্পষ্ট পরিভাষা যেমন, ‘নৈতিক অবক্ষয়’, ‘সুস্থ বিনোদন’, ‘জনস্বার্থ বিরোধী’, ‘অশ্লীল’, ‘ধর্মীয় অনুভূতি’। ‘রাজনৈতিক অনুভূতি’। ‘শালীনতাপূর্ণ পোশাক’।’ তারা বলছে, এসব পরিভাষা বিলুপ্ত করে দিতে! এতদিন আমাদের অভিযোগ ছিল, আপনারা ইসলামী শরীয়ত ও নবীজীর শিক্ষা পরিপূর্ণ গ্রহণ করুন। এই ধরনের অস্পষ্ট ভাষা ব্যবহার করে কিছু মানবেন আর কিছু মানবেন না– এমনটা হয় না। কিন্তু এরা এসে প্রস্তাব করছে যে, এই শব্দগুলোই সংবিধান থেকে মুছে দাও! এই যে ‘নৈতিক অবক্ষয়’– এটা কত বড় আফসোসের বিষয়! এখন তারা শব্দটাই বাদ দিয়ে দিতে বলছে! ‘সুস্থ বিনোদন’ বলার দরকার কী? বরং যে কোনো বিনোদনের জন্য রাস্তা খুলে দাও! ‘জনস্বার্থ বিরোধী’ আবার কী জিনিস? মানুষের ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ ‘রাজনৈতিক অনুভূতিতে আঘাত’ শব্দগুলো আমাদের দেশে খুব প্রচলিত। এই ভাষাগুলোর মাধ্যমে কিছুটা হলেও আমরা নৈতিকতা ও শালীনতার বার্তা পেতাম এবং বিভিন্ন অপরাধকে এসব শব্দের আওতায় এনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাকড়াও বা প্রতিবাদ করার একটা সুযোগ থাকত। কিন্তু এখন এরা এসে বলে, এগুলোই বাদ দিয়ে দাও! দেখুন, কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে এরা! এরা শালীনতা ও নৈতিকতার শেষ চিহ্নটুকুও মুছে দিতে চায়! এরা ‘শালীনতা’ আর ‘নৈতিকতা’কে বাদ দিতে বলে। অথচ এই হালকা হালকা শব্দগুলো দিয়ে কোনোরকমে একটু হলেও আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল, সেই কথাগুলোকেই তারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করছে! এর মানে এরা শালীনতা ও নৈতিকতার শেষ চিহ্নটুকুও মুছে দিতে চায়! কতটা জঘন্য দেখুন! কতটা কঠিন দুর্গন্ধযুক্ত এই প্রতিবেদন! এসবের পরেও পৃথকভাবে বলার প্রয়োজন আছে কি যে, এই প্রতিবেদনের কোন্ কোন্ অনুচ্ছেদ কুরআনবিরোধী, হাদীসবিরোধী? ইসলামী শরীয়তে চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা, দৃষ্টির হেফাজত, সব ধরনের অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকার যত নির্দেশনা এবং বিবাহ ও তালাক বিষয়ক, মিরাস, নসব তথা বংশ বিষয়ক, হিযানাহ তথা সন্তান লালন-পালন বিষয়ক যত বিধান ইসলামী শরীয়তে রয়েছে, তাদের প্রস্তাব হল এ সবকিছু বাদ দিয়ে দাও! এর মানে, তারা মুসলিম উম্মতকে দ্বীন-শরীয়ত, ঈমান-আখলাক এবং তাকওয়া-তাহারাত সবকিছু থেকে হাত ধুয়ে ফেলতে বলছে। আল্লাহর শরীয়তের পরিবর্তে আল্লাহদ্রোহী ও আখেরাত বিমুখ সমাজের কৃষ্টি-কালচার গ্রহণ করতে বলছে। ঈমানের পরিবর্তে কুফুর, পবিত্রতার পরিবর্তে কলুষতা, পারিবারিক বন্ধনের পরিবর্তে লাগামহীনতা, হায়া-লজ্জার পরিবর্তে নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা এবং জান্নাতের পরিবর্তে জাহান্নাম খরিদ করতে বলছে। কাজেই যারা এই প্রতিবেদন সমর্থন করতে চায়, তাদের এর পরিণতি বুঝে-শুনে সমর্থন করা উচিত। মনে রাখতে হবে, তাওহীদের এই যমীনে ঈমান-আখলাক বরবাদকারী এমন প্রস্তাবনা কখনো বাস্তবায়ন হবে না ইনশাআল্লাহ! বরং যারা বাস্তবায়ন করতে যাবে, তারাই বরবাদ হয়ে যাবে! তাদের দাবি হল, কেবল ইসলাম ধর্মই নয়, অন্য যতসব ধর্ম রয়েছে, সকল ধর্মের সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন করে সবার জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন বানাও! নাউযুবিল্লাহ! এদেরকে শরীয়ত পরিবর্তনের অধিকার কে দিল? প্রশ্ন হল, আপনাদেরকে শরীয়ত পরিবর্তন করে বিভিন্ন নিয়ম-নীতি বানাবার দায়িত্ব কে দিয়েছে? ইসলামী শরীয়তে অন্য সকল বিষয়ের মতো এই বিষয়েও প্রয়োজনীয় হেদায়েত ও নির্দেশনা তো দেওয়াই আছে। শরীয়ত দেওয়ার মালিক তো একমাত্র আল্লাহ তাআলা। কোনো মাখলুক অপর মাখলুকের জন্য শরীয়ত দিতে পারে না। আপনাকে শরীয়ত বানানোর দায়িত্ব তো দেওয়া হয়নি! আপনাকে একথা বলার জন্য তো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি যে, মুসলিমরা তাদের পারিবারিক আইন বাদ দেবে। হিন্দুরা তাদের পারিবারিক আইন বাদ দেবে, খ্রিস্টানরা নিজেদের পারিবারিক আইন বাদ দেবে! ব্যভিচার ও পতিতাবৃত্তিকে আইনি বৈধতা দেওয়ার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা যেটা করার কাজ সেটার খবর নেই, উল্টো পতিতাবৃত্তি, বিবাহ বহির্ভূত অবাধ যৌনতা, এলজিবিটির কর্মকাণ্ড কীভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা যায়– সেই ধান্দায় আছে তারা। যৌনকর্মীদের কি ওভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন, না তাদেরকে পাপাচারের ঘৃণ্য পথ থেকে সরিয়ে সঠিক পথে এনে সম্মানজনক স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনবেন? তাদের জন্য যেটা করণীয়, সেটা না বলে তারা বলছে, ওরা পতিতালয়ে আছে, সেখানেই তাদের রাখা হোক এবং সেভাবেই তাদেরকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে দেওয়া হোক! বিষয়টা কি তাদের প্রতি ইনসাফ হল? বরং এটি তাদের প্রতিও না-ইনসাফী নয় কি? আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অধ্যায়ে অনুচ্ছেদ ১৮।(২) -এ বলা আছে, ‘গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ এই কমিশন দাবি করেছে, এই অনুচ্ছেদের ‘গণিকাবৃত্তির বিষয়টি বাদ দিতে হবে। কারণ জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার নামে যৌনকর্মীদের পেশাকে নিরোধ করা মানবাধিকার লঙ্ঘন।’ আপনারা কী বলেন, যারা পতিতাবৃত্তির মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িয়ে গেছে, তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসাটা মানবাধিকার, নাকি তাদেরকে সেই ঘৃণ্য কাজে রেখে দেওয়াটা মানবাধিকার? তাদেরকে সেই পথ থেকে ফিরিয়ে এনে সুস্থ ধারায় পুনর্বাসন করা সরকারের দায়িত্ব, সমাজের দায়িত্ব। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন উল্টো পতিতাবৃত্তিকেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে। কোনো শব্দও যদি এর পথে অন্তরায় হয় সেই ‘শব্দ’কেও দেশছাড়া করতে চাচ্ছে। ‘শালীনতা’ ‘নৈতিকতা’র মতো শব্দকেও সংবিধান থেকে বাদ দিতে বলছে। আর এটাও লক্ষণীয় বিষয় যে, ‘যিনা-ব্যভিচার’, ‘গণিকাবৃত্তি’, ‘ব্যভিচারিণী’ শব্দ বাদ দিয়ে ‘যৌনকর্ম’ ‘যৌনকর্মী’ শব্দ আমদানি করা হচ্ছে। যেন শব্দ থেকে এসমস্ত ঘৃণ্য কাজের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি না হয়। এটাও এই ধরনের লোকদের একটি প্রতারণা। একদিকে এই নোংরা কাজকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করছে, সেইসাথে শালীনতা, নৈতিকতা, হায়া-লজ্জাকে বাদ দিতে বলছে– এভাবে তারা এই সমাজকে কী পরিমাণ বরবাদ করতে চাচ্ছে– তা কি আর বোঝার বাকি থাকে? আরেকটি বিষয় দেখুন, প্রতিবেদনের দশম অধ্যায়ের শিরোনামটি লক্ষ করুন– ‘শরীর আমার, সিদ্ধান্ত আমার’ একথা কারা বলে, কী মতলবে বলে, সেটা যারা বোঝেন, তাদেরকে তো কিছু বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। এরা শিক্ষা-পাঠ্যক্রমেও অশ্লীলতা ঢোকাতে চায় প্রতিবেদনের পৃষ্ঠা ৭৪-এ বলা হয়েছে, ‘শিক্ষা-পাঠ্যক্রম সংস্কারের মাধ্যমে সম্মতি বিষয়ে ধারণা, যৌন নির্যাতন ও হয়রানি কী... সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।’ হুবহু একই কথা পৃষ্ঠা ২০৬-এও বলা হয়েছে। বুঝতেই পারছেন ইসলামের বিয়ের বিধান এবং যিনা-ব্যভিচার হারাম হওয়ার বিধানের জায়গায় তারা পশ্চিমা কুফরী কালচার ঢুকাচ্ছে। শব্দের মারপ্যাঁচে ট্রান্সজেন্ডারের বৈধতার অপচেষ্টা আরও শুনুন, এর মধ্যে ট্রান্সজেন্ডারের সবকিছু আছে; শব্দের মারপ্যাঁচে। আজকাল ট্রান্সজেন্ডারের যে ফেতনা চলছে, তার পুরোটাই এখানে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে; কেবল শব্দটা ব্যবহার করেনি। তদ্রূপ শব্দের মারপ্যাঁচে এলজিবিটি, সমকামিতা বলতে যা আছে এবং যত প্রকারের আছে, সবকিছুকে আইনি কাঠামোর মধ্যে এনে বৈধতা দেওয়া, বরং প্রতিষ্ঠিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মোটকথা, অশ্লীলতার কোনো কিছুই বাদ রাখেনি। এজন্যই তারা চাচ্ছে যে ‘অশ্লীলতা’ শব্দই বিলুপ্ত করে দেওয়া হোক! যেন আপনি অভিযোগ করতে না পারেন যে, ছি ছি, এমন অশ্লীল প্রস্তাব তারা কীভাবে দিল? যেন আমাদের অভিধান থেকেই শব্দগুলোকে বিদায় করে দিতে চাচ্ছে! অর্থাৎ পুরো ইসলামী শরীয়তের বিপরীতে একটা জিনিস দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং এটা মুসলিম উম্মতের ফয়সালা করার বিষয়। তারা কি ইসলামের শরীয়ত চায়? জান্নাত চায়? যদি চায়, তাহলে প্রস্তাবিত এই নীতিমালাকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। এটি বাস্তবায়নের চিন্তা হবে আত্মঘাতী! আর এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, একটি মুসলিম দেশে তাওহীদের যমীনে আমাদেরকে দেখতে হল সংস্কারের নামে আল্লাহর নাযিলকৃত কুরআন-সুন্নাহ ও আল্লাহর দেওয়া শরীয়তের সম্পূর্ণ বিপরীত একটি প্রতিবেদন এবং তা জাতির সামনে পেশও করা হল। আমাদের কাছে আফসোস প্রকাশেরও ভাষা নেই, নিন্দা জানানোরও ভাষা নেই। অন্য ধর্মের লোকদেরও চিন্তা করা উচিত। যদিও আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য ধর্ম কেবল ইসলাম, কিন্তু অন্য ধর্মের লোকেরাও তো তাদের ধর্ম পালন করে থাকে। তাদেরকেও বলা হচ্ছে, তোমাদের ধর্ম নয়, বরং এখানে যে নীতিমালা প্রদান করা হবে, সেটাই মানবে! সুতরাং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা কী করবে, না করবে– সেটা তাদের বিষয়। যেসব ধর্মের কোনো গোড়া নেই এবং বাতিল ধর্ম, তারা তাদের ধর্মের বিষয়ে বিভিন্ন কম্প্রোমাইজ ও সমঝোতা করলে তা তাদের বিষয়; কিন্তু মুসলিম উম্মতের জন্য কম্প্রোমাইজ বা সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। আমরা কি একথা বলতে পারি যে, কুরআনের এই বিধানগুলো আমরা পশ্চিমাদের খাতিরে বাদ দিয়ে দিব? এটা কি সম্ভব? কখনো নয়। কাজেই ঠান্ডা মাথায় আমাদেরকে ভাবতে হবে, তাওহীদের এই যমীনে ইসলামী শরীয়ত বিরোধী এই ধরনের কোনো নীতিমালা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়! এটা দেশের জন্য হুমকি। আমরা দুআ করি, আল্লাহ তাআলা আমাদের রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলদের হাতকে শক্তিশালী করুন দেশ ও জাতির কল্যাণে! সমস্ত অকল্যাণ থেকে তাদেরকে হেফাজত করুন! এই ধরনের বিষয়গুলো উপস্থাপন করা এবং সেগুলো বাস্তবায়নের চিন্তা থেকে আল্লাহ তাআলা তাদের সবাইকে দূরে রাখুন! আর এটা অনুভব করার তাওফীক দান করুন যে, এটা বাস্তবায়ন করার চিন্তা করতে গেলেই আত্মঘাতী হবে! এই কমিশনের আসল কাজ কিন্তু বাকিই রয়ে গেল আরেকটি কথা, এই কমিশনের আসল যে কাজ ছিল, তা কিন্তু বাকিই রয়ে গেল। তারা যা করেছেন তা হল, আগাগোড়া অনধিকার চর্চা, আল্লাহদ্রোহিতা এবং আল্লাহর দেওয়া কুরআন-সুন্নাহ ও শরীয়তদ্রোহিতা। যেটা দরকার ছিল তা হল, নারী বিষয়ে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নের অভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা যে অধিকার বঞ্চিত হয়, সেটার জন্য বাস্তবমুখী একটি প্রস্তাবনা পেশ করা, যাতে নারীরা আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধান মেনে আল্লাহর নেক বান্দি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধান অনুযায়ী নিজেদের সমস্ত অধিকার লাভ করতে পারে। এ কমিশনের সংস্কার করার মতো আরেকটি কাজ ছিল– ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে শরীয়তের স্পষ্ট বিরোধী অনেকগুলো ধারা রয়েছে। উলামায়ে কেরামের সহায়তা নিয়ে এই ধারাগুলোকে শরীয়তসম্মত করে দেওয়া। তা তো করেইনি, উল্টো আরও কুফরী মতবাদ এবং জাহেলী রীতি-নীতি অবলম্বনের প্রস্তাব করেছে। সরকার যদি আসলেই দেশ ও জনগণের কল্যাণ চায়, তাহলে এই প্রতিবেদনকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে ইসলামী শরীয়ত ও নবীজীর সীরাত থেকে নারী বিষয়ে নীতিমালা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা কর্তব্য। ব্যস, ভাই! বলার আরও অনেক কিছুই আছে। এতটুকুতে আমি শেষ করলাম। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাজত করুন।
স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক বাংলাদেশে তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০ মে তারিখে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯ মে বিকেলে স্টারলিংক থেকে ফোন করে তাকে জানানো হয় যে, বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। একইসাথে স্টারলিংক তাদের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মেও এই ঘোষণা দিয়েছে। ফয়েজ আহমেদ জানান, প্রাথমিকভাবে দুটি ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করা হয়েছে— Starlink Residence এবং Residence Lite। প্রথমটির মাসিক খরচ ৬,০০০ টাকা এবং দ্বিতীয়টির খরচ ৪,২০০ টাকা। তবে উভয় প্যাকেজের জন্য এককালীন সেটআপ যন্ত্রপাতির খরচ প্রায় ৪৭,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই প্যাকেজগুলোর কোন স্পিড বা ডেটা লিমিট নেই। গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস গতিতে আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। ফয়েজ আহমেদ বলেন, যদিও এটি কিছুটা ব্যয়বহুল, তবে এটি প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য একটি উচ্চমান ও উচ্চগতির টেকসই ইন্টারনেট সেবার বিকল্প তৈরি করেছে। পাশাপাশি যেসব প্রত্যন্ত এলাকায় এখনো ফাইবার অপটিক বা দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছেনি, সেখানে স্টারলিংক কার্যক্রম শুরু হওয়ায় নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি হবে। এনজিও, ফ্রিল্যান্সার এবং উদ্যোক্তারা বছরব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পেয়ে উপকৃত হবেন। উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এবং সেটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে বলে তার বিশেষ সহকারী জানিয়েছেন।
প্রয়োজনীয় সংস্কারের মধ্যেই নির্বাচনের কাজে মনোযোগ দিতে হবে, জনগনের প্রত্যাশিত নির্বাচন যথাসময়ে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহবান জানান সৌদি আরব বিএনপির পশ্চিমাঞ্চল সভাপতি ও নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের বিএনপির থেকে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আবদুল মান্নান। তিনি আজ দুপুরে সোনাইমুড়ী অম্বরনগর নিজ বাড়িতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তির জন্য দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানের সময় সাংবাদিকদের এই কথা বলেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি আগামীতে জাতীয়তাবাদী শক্তি সবাই হাতে-হাত কাঁধে-কাধ মিলিয়ে কাজ করার সহযোগিতা চান। দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে অমনগর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল্লাহ মাসুদ। অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্মআহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ইন্জিনিয়ার সলিমউল্লাহ সেলিম। অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান শাহজালাল অম্বরনগর ইউনিয়ন বিএনপির ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি মোঃ সোবহান সহ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা, ২০২৫ – ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশি তৈরি পোশাকসহ কয়েকটি নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে তাৎক্ষণিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের এসব পণ্য এখন শুধুমাত্র নহবা সেবা (Nhava Sheva) ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতে পাঠানো যাবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার ফলে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্যের শুল্কপয়েন্ট, এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, তুলার পণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী এবং কাঠের আসবাব আমদানি বন্ধ করা হয়েছে। তবে, মাছ, ভোজ্য তেল, এলপিজি এবং চূর্ণ পাথরের মতো কিছু পণ্যের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়। 🟨 রপ্তানির খরচ বাড়বে: ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শুধুমাত্র নৌ ও বিমানপথ ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে। এর ফলে দেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান দুর্বল হতে পারে। 🔁 বাণিজ্যিক উত্তেজনার ধারাবাহিকতা: বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা মূলত সাম্প্রতিক কিছু রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের প্রতিফলন। এর আগে গত মার্চে চীনের বেইজিংয়ে এক বক্তৃতায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল স্থলবেষ্টিত এবং সেসব অঞ্চলের একমাত্র ‘সমুদ্র অভিভাবক’ বাংলাদেশ। এরপর ভারত হঠাৎ করে বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এছাড়া, গত মাসে বাংলাদেশ ভারত থেকে তুলা আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে, যা দেশের স্থানীয় শিল্পকে সস্তা আমদানির চক্র থেকে বের করে আনার কৌশলের অংশ বলে উল্লেখ করা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪ সালে ভারত বাংলাদেশে ১.৬ বিলিয়ন ডলারের তুলা রপ্তানি করেছিল, যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এসেছিল স্থলপথে। 📉 রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: গত বছর ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং বর্তমানে ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। এই রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে উত্তেজনা ও আস্থাহীনতা বেড়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। 🧵 আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও রপ্তানি বিপন্ন: বিশ্বের নামীদামি ব্র্যান্ডের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়, যার একটি বড় অংশ স্থলপথে ভারতে প্রবেশ করত এবং সেখান থেকে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ইউরোপ ও আমেরিকায় পৌঁছে যেত। নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে এই চেইনে বড় ধরণের বিঘ্ন ঘটবে।
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলকে শীর্ষস্থানীয় উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে রূপান্তরের লক্ষ্যে মাতারবাড়ী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোর উন্নয়নে দ্রুততা আনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (MIDI)-এর অগ্রগতি পর্যালোচনা শেষে তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা মাতারবাড়িকে দেশের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর, পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ এবং জ্বালানি উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রয়োজন, যা আকর্ষণ করতে আমাদের মাস্টারপ্ল্যান ও কাঠামোগত প্রস্তুতি দ্রুত শেষ করতে হবে।” তিনি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কথা তুলে ধরে বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ করে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, গভীর সমুদ্র বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ এবং শ্রমিকদের জন্য একটি পরিকল্পিত আবাসিক শহর গড়ে তোলার নির্দেশনা দেন তিনি। প্রফেসর ইউনূস জানান, আগামী ২৮ মে শুরু হওয়া জাপান সফরে MIDI অঞ্চলের উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে উপস্থাপন করা হবে। সফরের অংশ হিসেবে ৩০ মে টোকিওতে আয়োজিত “৩০তম নিক্কেই ফিউচার অব এশিয়া” সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। এই সফরে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে। বৈঠকে জানানো হয়, জাপান মহেশখালী-মাতারবাড়ী অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর আগে তারা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলে, যা ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। এছাড়া, MIDI অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে সৌদি আরবের পেট্রোকেমিক্যাল জায়ান্ট আরামকো, আবুধাবি পোর্টস, রেড সি গেটওয়ে, জাপানি বিদ্যুৎ কোম্পানি জেরা, এবং মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস। মাতারবাড়িতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে জাপানি সংস্থা পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও টোয়া কর্পোরেশন-এর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই প্রকল্পটি জাইকার সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং এটি MIDI উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করবে। উল্লেখ্য, মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন (MIDI) হলো বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ একটি উদ্যোগ, যা সরবরাহ ব্যবস্থা, জ্বালানি ও শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলকে একটি কৌশলগত অর্থনৈতিক করিডোরে রূপান্তর করার লক্ষ্যে কাজ করছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। উপস্থিত ছিলেন এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদসহ সড়ক পরিবহন, নৌপরিবহন, জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ। MIDI সেলের মহাপরিচালক সারওয়ার আলম চলমান প্রকল্পগুলোর একটি বিশদ পর্যালোচনা সভায় উপস্থাপন করেন।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।