ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে শহীদ মিনার চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে দমন করার একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী মত দমন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপচেষ্টা বন্ধের আহ্বান জানান নেতারা। জেলা এনসিপি’র আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান শাওনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের এনসিপি মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা এনসিপি’র সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান রাসেল। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের উপর হামলা করে জনগণের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। জাতীয় নাগরিক পার্টি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করে নেবে।” এছাড়াও বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা যুব শক্তির আহ্বায়ক মীর সায়মন ইসলাম ও টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র শক্তির আহ্বায়ক আবু আহমেদ শেরশাহ। তারা বলেন, তরুণ সমাজ আর কোনো সন্ত্রাসী রাজনীতি মেনে নেবে না এবং হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব মাহাথির খান ভাসানী। এসময় জেলা এনসিপি, যুবশক্তি ও ছাত্র শক্তির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও নেত্রকোণা ১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, বিএনপি জাতীয় সংসদে গেলে ইসলামবিরোধী কোনো আইন পাস হওয়ার কোন সুযোগ নেই। শনিবার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে উলামাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ইসলাম ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। ফলে ইসলাম বা ধর্মবিরোধী কোনো আইন জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কখনো বলি না যে আমাদের ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া যাবে। কিন্তু বর্তমানে কেউ কেউ এ ধরনের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই বক্তব্য কতটুকু যুক্তিসংগত, তা আমার জানা নেই।’ কায়সার কামাল বলেন, ‘বিএনপির কোন নেতা যদি কখনো ইসলামবিরোধী কোন বক্তব্য দিয়ে থাকেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। তবে দল হিসেবে বিএনপি কখনোই ইসলামবিরোধী কোন আইন প্রণয়নের পক্ষে নয় এবং বিএনপি সংসদে গেলে এমন কোন আইন পাস হতে দেয়া হবে না।’ মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দল গঠনের পর সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে বিএনপি ইসলামকে পুঁজি করে রাজনীতি করতে চায় না; বরং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সম্মান রেখেই রাজনীতি করে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের বিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি করা অনুচিত। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই দেশের প্রকৃত কল্যাণ সম্ভব।’ বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।
(সাজিদ পিয়াল):- বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের দুই দিনব্যাপী কর্মশালার শেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মশালার শেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫) শেষ দিনের অধিবেশনে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি এবং গণসংহতি আন্দোলন (জিএসএ)-এর প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। শেষ অধিবেশনে জোনায়েদ সাকি ছাত্র রাজনীতির বর্তমান বাস্তবতা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা, শিক্ষার অধিকার এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনে ছাত্রসমাজ সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আগামীতেও বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ছাত্রদের সচেতন, সংগঠিত ও দায়িত্বশীল ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনায় তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার বাণিজ্যিকীকরণ, ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সংকুচিত হওয়া এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ—এসবের বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক আদর্শ ও নৈতিকতার ভিত্তিতে ছাত্র আন্দোলন পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। কর্মশালার শেষ অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন অন্যান্য অতিথিরাও। এ সময় প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে মতামত ও প্রশ্ন তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতারা জানান, দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালায় রাজনৈতিক শিক্ষা, সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, আন্দোলনের কৌশল এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে একাধিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনকে আরও সুসংগঠিত ও কার্যকর করার লক্ষ্যে এ ধরনের কর্মশালা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা। কর্মশালার শেষ অধিবেশন শেষে অংশগ্রহণকারীরা সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সক্রিয় থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক দরবার হলে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও মওলানা ভাসানীর রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “মওলানা ভাসানী ছিলেন আপসহীন রাজনীতির প্রতীক। তিনি আজীবন মজলুম মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর আদর্শ আজও আমাদের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সময়ে মওলানা ভাসানীর ন্যায় সাহসী ও জনবান্ধব নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। তাঁর দেখানো পথে দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে।” মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা প্রফেসর এ. কে. এম. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মওলানা ভাসানীর আদর্শ ও দর্শন নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিয়মিত গবেষণা, আলোচনা সভা ও স্মরণ কর্মসূচি জোরদার করা প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপি প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে কফিন মিছিল করেছেন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে টাঙ্গাইল শহরের শান্তিকুঞ্জ মোড় থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলটিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা কাফনের কাপড় পরে কফিন বহন করে অংশ নেন। প্রতিবাদের এক ভিন্নমাত্রা তৈরি হওয়ায় মিছিলটি শহরজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন—“দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঠিক এই সময়ে একটি সিন্ডিকেট সদরের জনমানুষের মতামত উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি করে মনোনয়ন ঘোষণা করেছে।”তারা বলেন,“সদরের জন্ম- এমন কাউকে বাদ দিয়ে বহিরাগত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এতে তৃণমূলের বহু ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতাকর্মী চরমভাবে হতাশ হয়েছে। এই মনোনয়ন বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে বিভাজন তৈরি করবে।” বক্তারা দ্রুত মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বলেন, “আমরা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তৃণমূলের সমর্থন তাঁর দিকেই বেশি।” বক্তাদের মতে,পক্ষপাতদুষ্টভাবে মনোনয়ন দেওয়ার চেষ্টা চলছে,স্থানীয় নেতাদের ত্যাগ-সংগ্রাম মূল্যায়ন করা হয়নি,তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে একটি সিদ্ধান্ত পুরো সংগঠনকে বিপদে ফেলতে পারে। মিছিল ও সমাবেশে বক্তাদের অভিযোগ—“যে সিদ্ধান্তে কর্মীদের রক্তক্ষরণ বাড়ে তা মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না।” সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন—রফিকুল ইসলাম স্বপন সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি,হাদিউজ্জামান সোহেল সিনিয়র সহ-সভাপতি, সদর উপজেলা বিএনপি,মামুন সরকার সহ-সভাপতি সদর উপজেলা বিএনপি এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। মিছিলে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল–সমর্থিত নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়দের মতে, এটি সাম্প্রতিক সময়ে টাঙ্গাইল সদর বিএনপির সবচেয়ে বড় প্রতিবাদমূলক শোভাযাত্রা। কফিন মিছিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন—কেন্দ্র ঘোষিত মনোনয়নকে তৃণমূলের ব্যাপক প্রত্যাখ্যান,দলীয় ঐক্যে সংকটের সম্ভাবনা,নির্বাচনী প্রচারণায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে,বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজন আরও স্পষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ জরুরি।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন বিতর্কের মধ্যে দিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে কালিহাতীতে অবরোধ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মসূচি নির্দেশ প্রদান করেন এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো। তারা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী লুৎফর রহমান মতিনের মনোনয়ন বাতিল চেয়ে টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পর্তুগাল বিএনপির আহ্বায়ক ও টাঙ্গাইল জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম (ইউকের) সভাপতি আবু ইউসুফ তালুকদার। তার ফেসবুক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমি নিজেও এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। আমরা সকল মনোনয়ন প্রত্যাশী বেনজির আহমেদ টিটো ব্যতীত সকলেই লুৎফর রহমান মতিনকে সমর্থন করেছি। বেনজির আহমেদ টিটো যে মশাল মিছিল করেছেন তা দল এবং সাধারণ জনতার কাছে তার নিজ ইমেজকে ক্ষুণ্ণ করেছেন। এছাড়াও এই মহাসড়কের অবরোধের কারণে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করলে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে তার বহিষ্কারের দাবি জানাতে পারেন কালিহাতীর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।” এ বিষয়ে আবু ইউসুফ তালুকদার মুক্তধ্বনি ডটকমকে জানান, "সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে তিনি এই খবর পেয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। তবে, ইউসুফ তালুকদারের ভিডিও বার্তার কমেন্ট সেকশনে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব এম. এ. বাতেন বিভিন্ন মন্তব্যের মাধ্যমে ইউসুফ তালুকদারকে হেয়-প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন।" বিগত ১৭ বছরের রাজনৈতিক স্মৃতিচারণ করে ইউসুফ তালুকদার উল্লেখ করেন, “স্বৈরাচার আমলে দেশে আসতে পারিনি। দেশের বাইরে থেকে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কারণে আমার পরিবারের ওপর নানা অত্যাচার চালানো হয় এবং ভাইয়েরা রাজনৈতিক মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে বার বার কারাবরণ করেছে।”
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, “আমরা রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণের জন্য। আগামীর বাংলাদেশ হবে মানবিক, গণতান্ত্রিক এবং সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা একটি রাষ্ট্র।” তিনি আরও বলেন, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে কোনো প্রকার হানাহানি থাকবে না, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ হবে এবং মানুষ তার ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে। বুধবার দুপুরে ৭৭তম বিশ্ব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মানববন্ধন ঘিরে প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। টুকু অভিযোগ করে বলেন, “বিগত দিনে দেশে একটি অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় ছিল, যারা মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। যে দেশে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়, সেখানে মানবাধিকার টিকে থাকতে পারে না।” তিনি বলেন, মানুষ এখন পরিবর্তন চায়—একটি মানবিক রাষ্ট্র চায় যেখানে মানুষ নিরাপদে মতামত প্রকাশ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, “জনগণের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করা রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব। সমাজে এখনো অনেক প্রতিবন্ধী মানুষ বঞ্চিত। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইলচেয়ার বিতরণ করেছি। রাস্তার পাশে ফুটপাতে যারা ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটায়, তাদের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি। ভবিষ্যতেও মানবিক কাজে আমাদের ভূমিকা আরও বাড়ানো হবে।” দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সামনের নির্বাচন জনগণের। দেশের ভবিষ্যৎ আপনারা নির্ধারণ করবেন। যেন কোনো অমানবিক, স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদী সরকার আর এ দেশে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে।” মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন—জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম রফিক, সদস্য সচিব মামুনুর রহমান মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জুয়েল, উপদেষ্টা মনোয়ার হোসেন, বুলবুল আহমেদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। মানবাধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজকে সমন্বিত ভূমিকা রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়। মানববন্ধন শেষে একটি শান্তিপূর্ণ র্যালি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাঙ্গাইল ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সমগ্র কর্মসূচিতে ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
যাদের জন্য সেতু নির্মাণ, সেই ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের হাতে উদ্বোধন; উপকৃত হবে ৬ গ্রামের হাজারো মানুষ, নেত্রকোণার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা এলাকার জনজীবনে দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় সমস্যা ছিল “বৈঠাখালি মঙ্গল শরি” নদী পারাপার। নদীতে সারা বছর পানি থাকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হতো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কৃষক, নারী ও সাধারণ পথচারীদের। সরকারি উদ্যোগের অভাবে বহু বছর ধরে এলাকা ছিল অবহেলিত। আর সেই দুর্ভোগের মধ্যেই স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত হলো ১০৫ ফুট দীর্ঘ কাঠ-বাঁশের সেতু—যা নির্মাণ করে দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। ২৯/১১/২০২৫ ইং নাজিরপুর কৃষক সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখতে পান—স্কুলের শ’খানেক ছাত্র-ছাত্রী এবং কয়েকজন শিক্ষক নদীর পাড়ে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করছেন। তিনি গাড়ি থামিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান এবং জানতে চান সমস্যার কারণ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল কে জানান, স্যার, প্রতিদিনই এই নদী পার হতে গিয়ে আমরা বহু কষ্ট করি। বর্ষায় নৌকা না পেলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকে। গ্রামবাসীর জন্যও নদী পার হওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই কথাগুলো তাঁকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নেন—এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নির্দেশনা ও আশ্বাসে স্থানীয় জনগণ, ছাত্রদের অভিভাবক, যুবসমাজ এবং দলীয় কর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসেন। মাত্র একদিনের প্রস্তুতির পরই শুরু হয় সেতু নির্মাণ। ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে শুরু হওয়া এই কাজটি দিনে-রাতে অব্যাহত থাকে। নির্মিত সেতুর বৈশিষ্ট্য—দৈর্ঘ্য: ১০৫ ফুট ,প্রস্থ: ৫ ফুট কাঠ ও বাঁশের সমন্বয়ে মজবুতভাবে তৈরি বর্ষাকালসহ সারা বছর ব্যবহারযোগ্য করে নকশা করা স্থানীয় প্রবীণ নাগরিকদের মতে, “বিগত ৩০ বছরে এমন কাজ কেউ দেখেনি। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত, এত দ্রুত কাজ—এটি এলাকার মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।” ১০ ডিসেম্বর: আবেগঘন উদ্বোধন ,মাত্র চার দিনের প্রচেষ্টায় সেতুটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে। এরপর ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, সেতুটির উদ্বোধনে ছিল অনন্য একটি দৃশ্য—কোনো রাজনৈতিক নেতা বা অতিথি নয়, সেতুটি উদ্বোধন করেন সেই শিশু-কিশোর, শিক্ষক এবং গ্রামবাসী, যাদের দৈনন্দিন জীবনের কষ্ট লাঘবের জন্যই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী মুহূর্তে উপস্থিত লোকজন বলেন, “এটি শুধু একটি সেতু নয়—এটি আমাদের বাঁচার স্বস্তি, আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা।”৬ গ্রামের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব নতুন সেতুটি চালু হওয়ায় উপকৃত হবে—২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী,পার্শ্ববর্তী জামে মসজিদের অসংখ্য মুসল্লি,কৃষক, দিনমজুর, কর্মজীবী মানুষ,এবং মোট ৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষ, যাদের প্রতিদিনের যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হয়েছে। স্থানীয় নারীরা জানান, হাসপাতাল, বাজার ও স্কুলে যেতে আর আগের মতো দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে প্রশংসা জানিয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন—মানুষের সমস্যা শুনে চুপ থাকা আমাদের কাজ নয়। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি কারণ মানুষের কষ্ট সহ্য হয় না। উন্নয়ন ও মানবসেবা—এই দুটি বিষয়ই আমার অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন,জনগণ সহযোগিতা করলে আরও অনেক এলাকায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে। এলাকার জনপ্রিয় মহল এবং প্রবীণদের মন্তব্য—ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখিয়ে দিলেন—উদ্যোগ চাই, কাজ করা সম্ভব। এটি মানুষকে সম্মান দেওয়ার নজির। আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা আজ নিশ্চিত হলো। দুর্গাপুর–কলমাকান্দা অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সক্রিয় ভূমিকা মানুষের মধ্যে নতুন আস্থা সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসা সহায়তা, রাস্তা-মেরামত, সেতু নির্মাণ, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো—সব ক্ষেত্রেই তাঁর কার্যক্রম জনমনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। এই কাঠের সেতু তাই শুধু একটি স্থাপনা নয়—এটি জনকল্যাণমুখী রাজনীতির জীবন্ত উদাহরণ।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মৌন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্যোগে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের পৌর উদ্যান থেকে এই মৌন মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও পৌর উদ্যানে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শহর বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসান আলীমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান জিন্নাহ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রৌফ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম ঝলক, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইজাজুল হকসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কয়েকটি আসনে যথাযথ যাচাই-বাছাই ছাড়াই মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। টাঙ্গাইল-৫ আসনেও কেন্দ্রীয় নেতাদের বিভ্রান্ত করে এমন একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যার জন্ম অন্য উপজেলায়—যা স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা বলেন, “যে আসনে স্থানীয় মানুষের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও আন্দোলন-সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, সেখানে বাইরের কাউকে মনোনয়ন দেওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা তৈরি হয়েছে।" সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে ঘোষিত মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে স্থানীয় নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা ফরহাদ ইকবালকে মনোনয়ন দেওয়ার জোর দাবি জানান। তারা বলেন, ফরহাদ ইকবাল স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়, যোগ্য এবং দীর্ঘদিন ধরে দলের কঠিন সময়ে রাজপথে ছিলেন। মিছিলে সদর উপজেলা ও শহর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। পুরো কর্মসূচি জুড়ে দলীয় নেতারা মুখে কালো ব্যাজ ধারণ করে নীরব প্রতিবাদ জানান। স্থানীয় রাজনীতিতে এই মৌন মিছিলকে বড় ধরনের বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে গণসংযোগ জোরদার করেছেন গণ অধিকার পরিষদ (ট্রাক প্রতীক) মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং জেলা গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক। নির্বাচনী মাঠ গরম হওয়ার আগেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ও মতবিনিময়ে তিনি দিন-রাত ছুটে চলেছেন শহর থেকে গ্রামে। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, রেজিস্ট্রিপাড়া ও পোস্ট অফিস এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং নিজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। শুধু সেদিনই নয়, প্রতিদিন তিনি শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নানান পেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে তাদের মতামত ও সমস্যার কথা শুনছেন। গণসংযোগে শফিকুল ইসলাম শফিকের সঙ্গে ছিলেন— করটিয়া ইউনিয়ন গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ইয়াদ আলী,জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কায়সার আহমেদ,অর্থ সম্পাদক মাহতাব মাহি,সহ দপ্তর সম্পাদক জুবাইদুল ইসলাম,টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমাদ সিয়াম,ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুজাহিদ,কার্যকরী সদস্য আব্দুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন,“আমি নির্বাচিত হলে সদর উপজেলাকে একটি সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত এলাকায় পরিণত করব। যুবসমাজকে বাঁচাতে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। মানুষ পরিবর্তন চায়—তাদের এই উৎসাহ ও আস্থা প্রমাণ করে দেয়, জনগণ নতুন নেতৃত্ব খুঁজছে। তাদের ভালোবাসা ও সমর্থনই আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শক্তি দিচ্ছে। নতুন কিছু হবে আপনাদের নিয়েই, আপনাদের জন্যই।” গণসংযোগ চলাকালে স্থানীয় বাসিন্দারা শফিকের সঙ্গে মতবিনিময় করে নানা সমস্যা তুলে ধরেন। তারা বলেন, এলাকায় মাদক, সড়কের বেহাল দশা, কর্মসংস্থানের স্বল্পতা এবং যুবসমাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এসব সমস্যা সমাধানে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন অনেকে। শফিকুল ইসলাম শফিক আরও বলেন,“রাজনীতিকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাই। ন্যায়বিচার, সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে গণ অধিকার পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক উপজেলা প্রশাসন গঠন করা।” অন্যদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে শফিকুল ইসলাম শফিকের মাঠপর্যায়ের কর্মকাণ্ড ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের নজর কাড়তে শুরু করেছে। তরুণ ভোটারদের মধ্যেও তাকে নিয়ে আলোচনা বাড়ছে। মনে করা হচ্ছে, নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি একটি বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছেন।
জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের শঙ্কা তৈরি করা হচ্ছে মন্তব্য করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “এসব শঙ্কা দূর করে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এই পরিবেশ কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না।” শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরে শ্রমিক, কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষ ও নিপীড়িত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত ‘মাথাল মার্কার মিছিল’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কার এখন অঙ্গাঅঙ্গিভাবে যুক্ত। সংস্কার করতে হলে ‘ভোট ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের’ নির্বাচন প্রয়োজন। এ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া ছাড়া গণতন্ত্রের সঠিক অগ্রযাত্রার বিকল্প নেই। এই নির্বাচন যাতে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা ষড়যন্ত্রের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।” নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট রাজনীতির ধারকরা বিভিন্নভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। কিছু গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে চাইছে। এসব অপচেষ্টা রুখে দিতে জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।” এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশন, সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে নির্বাচনসহ সার্বিক পরিস্থিতি দেখভালের জন্য একটি ‘পরিবেশ কমিটি’ গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। মিছিলে সদর আসনের প্রার্থী গণসংহতি আন্দোলনের সংগঠক ফাতেমা রহমান বীথি, সংগঠক তুষার আহমেদ, সদর উপজেলার সদস্য সচিব ফারজানা জেসমিনসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা জীবিকার ন্যায্য হিস্যা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, এবং সংসদীয় সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করেন।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির প্রার্থিতা ঘোষণার পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী আহসান হাবীব মাসুদ তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তার এই উদার পদক্ষেপ রাজনৈতিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় ৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন। টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন পান দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। মনোনয়ন ঘোষণার পর সন্ধ্যায় ফেসবুকে নিজের অফিসিয়াল পেইজে পোস্ট দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও জেলা কমিটির আমীর আহসান হাবীব মাসুদ। তিনি লিখেন, “অভিনন্দন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের জন্য।” এ পোস্টে তার অনুসারীরা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। অনেকেই লিখেছেন, রাজনীতিতে এ ধরনের উদার ও শিষ্টাচার আচরণ সবার জন্য উদাহরণ হওয়া উচিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বীকে শুভেচ্ছা জানানো একটি প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয়। এটি সাধারণ ভোটারদের মধ্যে রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রসার ঘটায় এবং মতবিরোধের মধ্যেও সহমর্মিতা ও শালীনতা বজায় রাখে। এদিকে, স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ জনগণও আহসান হাবীব মাসুদের এই পোস্টকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তাদের বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে সম্মান জানানো দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। এভাবে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে অভিনন্দন জানানোর ঘটনা টাঙ্গাইল-৫ আসনে আসন্ন নির্বাচনের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলে ইমাম মুয়াজ্জিন পরিষদের উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)–এর চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং দেশনেত্রীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল। তিনি তাঁর বক্তব্যে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং দেশবাসীর কাছে তাঁর জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে টাঙ্গাইল শহর বিএনপি। নেতাকর্মীরা বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব আজও বাংলাদেশের রাজনীতিতে অবিস্মরণীয়। তাঁর সুস্থতা জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাহফিল শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে সমাপনী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সমাজসেবক দানবীর সালাউদ্দিন আলমগীরের পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রায় ৭ হাজার পিস শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। চলমান শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে শীতার্ত নারী-পুরুষের হাতে কম্বল, সুয়েটার ও টুপি তুলে দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে গত ২৬ নভেম্বর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করা হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে সখীপুর উপজেলার গজারিয়া, বহেড়াতৈল, কালিয়া, কাকড়াজান, হতেয়া রাজাবাড়ি ইউনিয়ন ঘুরে এবার যাদবপুর ইউনিয়নে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি এলাকায় স্থানীয় সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবীরা সার্বিক সহযোগিতা করেন। আয়োজকরা জানান, শুধু একটি অঞ্চলে নয়—পুরো বাসাইল-সখীপুর উপজেলায় শীতার্ত মানুষের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বিশাল শীতবস্ত্র ভান্ডার। ধাপে ধাপে মোট দেড় লাখ শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে সালাউদ্দিন আলমগীরের পক্ষ থেকে। শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করায় বিতরণকৃত শীতবস্ত্র অনেক পরিবারের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বলে জানান উপকারভোগীরা। তারা বলেন— “প্রতিবছর শীত এলেই সমস্যায় পড়ি। এবার আগেভাগে কম্বল পাওয়ায় খুব উপকার হলো।” অনেকে বলেন, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন সালাউদ্দিন আলমগীর। মানবিক এ উদ্যোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় সালাউদ্দিন আলমগীর বলেন— “আমি এলাকার সন্তান। মানুষের কষ্টে পাশে দাঁড়ানো আমার দায়িত্ব। যেকোনো সময় যে কোনো সাহায্য আপনাদের উপহার হিসেবে দিই—কখনো বিনিময়ে ভোট চাই না। আমার দেওয়া সামগ্রীর বিনিময়ে যদি কেউ ভোট চাইতে আসে, তাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেবেন। ভোট আপনার—যাকে ভালো লাগে তাকে দেবেন।” তার এই বক্তব্য স্থানীয়দের মাঝে ইতিবাচক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে মানুষের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতাকে “ব্যতিক্রমী” ও “প্রশংসনীয়” বলে মত দিয়েছেন এলাকাবাসী। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও সালাউদ্দিন আলমগীরের এই শীতবস্ত্র উদ্যোগকে এলাকার মানুষ মানবিক সেবামূলক কাজ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে সমাজের অসহায়, নিম্নআয়ের পরিবারগুলো তার এ ধরনের কর্মসূচিকে আশীর্বাদ বলে মনে করছেন। বিভিন্ন এলাকায় প্রাপ্ত প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী, এ ধরনের পদক্ষেপ মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে—যা স্থানীয় রাজনীতিতেও ইতিবাচক বার্তা রেখে যাচ্ছে।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা জাতীয় পার্টির ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আব্দুল আউয়াল তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আলআমিন হোসেন। গত ২৬ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে এই কমিটির অনুমোদন প্রদান করে। নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সোবহান আলী মীর, আবুল হোসেন, সামছুল হক মাস্টার, নূর আলী মেম্বার, খলিল ফরাজি ও আব্দুল মজিদ মিয়া। সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন লাল মাহমুদ, ফারুক তালুকদার ও বাদশা আলমগীর। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে কায়কোবাদ মিলনকে এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন কায়সার মিয়া। এছাড়া প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন আব্দুল বাতেন খান। অর্থ বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে মোন্তাজ মিয়াকে এবং সহ-অর্থ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রফিক খান। কমিটির অনুমোদনের পর গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দেলদুয়ার উপজেলা সদরের মৌলভীপাড়ায় অবস্থিত জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে নতুন কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল আউয়াল তালুকদার। সভায় বক্তারা বলেন, নতুন কমিটির নেতৃত্বে দেলদুয়ার উপজেলা জাতীয় পার্টি আরও সুসংগঠিত হবে এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। তারা দলীয় আদর্শ বাস্তবায়ন ও জনসেবামূলক রাজনীতি এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পরিচিতি সভায় উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থেকে নবগঠিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান। সভা শেষে দলীয় কার্যালয়ে দোয়া অনুষ্ঠিত হয় এবং সবাই নতুন নেতৃত্বের সফলতা কামনা করেন।
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) নির্বাচন বিষয়ক সচেতনতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ উন্নয়নকে কেন্দ্র করে যুব প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সেমিনার রুমে ‘নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ’ আয়োজিত এ কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় তরুণদের ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রে তরুণদের ভূমিকা, নাগরিক দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা করা হয়। শিক্ষার্থীদের চারটি দলে বিভক্ত করে ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য নির্বাচিত সরকারের প্রতি তরুণদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক মতামত সংগ্রহ করা হয়। গ্রুপভিত্তিক আলোচনায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান, দুর্নীতি রোধ, মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, প্রযুক্তির উন্নয়ন, স্বচ্ছ নির্বাচন ও গণতন্ত্র চর্চা বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। কর্মশালার প্রধান অতিথি ছিলেন মাভাবিপ্রবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদেকীন। তিনি বলেন, “সচেতন নাগরিক গড়ে উঠলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়। তরুণ প্রজন্ম রাজনীতি সম্পর্কে জানবে, প্রশ্ন করবে এবং নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকবে—এটাই একটি উন্নত রাষ্ট্রের ভিত্তি।” অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের অতিরিক্ত পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান এবং সহযোগী প্রোগ্রামার মাহদিয়া মাহমুদ তাইমা। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সেশনে অনুষ্ঠিত হয় গ্রুপ ওয়ার্ক, ওপেন ডিসকাশন এবং নির্বাচনী সিমুলেশন সেশন, যেখানে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রক্রিয়া সম্পর্কে হাতে-কলমে ধারণা অর্জন করেন। আয়োজকরা জানান, যুব সমাজকে সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে সারাদেশজুড়ে এ ধরনের কর্মশালা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। শীঘ্রই অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হবে বলে তারা জানান।
সাজিদ পিয়াল: হুগড়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ১০ নং হুগড়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আজ বাদ আছর বাংলাদেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি ও পূর্ণ সুস্থতা কামনায় এক বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। দোয়া মাহফিলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের মধ্যে ছিল প্রাণচাঞ্চল্য, আবেগ ও গভীর শ্রদ্ধার পরিবেশ। হুগড়া ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আয়োজিত এ দোয়া মাহফিলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ইউনিট কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় অংশ নেন। স্থানীয় সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে সক্রিয় কর্মীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে দোয়া মাহফিলে শরিক হয়ে দেশনেত্রীর সুস্থতার প্রতি তাদের ভালোবাসা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দোয়া মাহফিলে সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন,“দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি শুধু বিএনপির নেতৃত্বই নন; বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাহস, ত্যাগ ও দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল প্রতীক। তাঁর সুস্থতা জাতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।”নেতারা আরও বলেন,আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি—তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আবারও নেতৃত্ব দিতে পারেন।”অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও খতম অনুষ্ঠিত হয়। পরে মোনাজাতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য, এবং বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য দোয়া করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন স্থানীয় মসজিদের সম্মানিত ইমাম।দোয়া মাহফিল শেষে হুগড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা বলেন,“দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা মানেই দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নতুন উদ্দীপনা।” তারা আরও বলেন,“যতদিন তিনি সুস্থ না হচ্ছেন, ততদিন আমরা নিয়মিত দোয়া–মোনাজাত অব্যাহত রাখব।” এই দোয়া মাহফিলটি হুগড়া ইউনিয়নে শুধু রাজনৈতিক অনুষ্ঠানই নয়, বরং দেশনেত্রীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও শুভকামনার এক প্রতিফলন হয়ে ওঠে। পুরো এলাকাজুড়ে ছিল শান্ত, গম্ভীর ও আবেগঘন পরিবেশ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর সমর্থনে সহস্রাধিক মোটরসাইকেলের শোডাউন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে মধুপুর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এই শোভাযাত্রা। স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে পুরো এলাকা হাততালি, শ্লোগান ও মোটরসাইকেলের হর্নে মুখরিত হয়ে ওঠে। নেতাকর্মীরা বলেন—এই শোডাউনই প্রমাণ করে মধুপুর-ধনবাড়ীতে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীই তৃণমূলে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থী। শোভাযাত্রায় অংশ নেন—মধুপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীন খান বাবল,সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদ সরকার, সদস্য আনোয়ার হোসেন,শোলাকুড়ি ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান হবিবর রহমান,পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ পান্না,উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক আব্দুল মান্নান, ধনবাড়ী উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শাজাহান আলী,মধুপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশীদ,মধুপুর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মানিক মিয়া। এছাড়াও দলীয় বিভিন্ন স্তরের হাজারো নেতাকর্মী শোভাযাত্রায় যোগ দেন।শোভাযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, “ফকির মাহবুব আনাম স্বপন এই এলাকার সন্তান নন। তিনি শুধু নির্বাচনের সময়েই এলাকায় আসেন। দলের মনোনয়ন পেয়ে দুইবার নির্বাচনে অংশ নিয়েও পরাজিত হয়েছেন।” বক্তারা বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় টাঙ্গাইল-১ আসনে বিজয় নিশ্চিত করতে হলে স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ও পরীক্ষিত নেতা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীকেই মনোনয়ন দিতে হবে। এজন্য তারা দলীয় হাইকমান্ডের কাছে স্বপন ফকিরের পরিবর্তে মোহাম্মদ আলীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার জোর দাবি জানান।সমাবেশে আরও বলা হয়—অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি তৃণমূলে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলেছেন। তার নেতৃত্বে মধুপুর-ধনবাড়ীতে বিএনপি সুসংগঠিত হয়েছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে এ আসন পুনরুদ্ধারের জন্য তিনিই সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী।
সাজিদ পিয়াল:টাঙ্গাইলে খন্দকার আহমেদুল হক সাতিলের উদ্যোগে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় টাঙ্গাইলে বিশাল দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপার্সন, তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও রোগমুক্তি কামনায় টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক আবেগঘন ও মহাসমারোহপূর্ণ দোয়া মাহফিল। টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ খন্দকার আহমেদুল হক সাতিলের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। মাহফিলস্থলে দুপুর থেকেই বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে সমবেত হতে থাকেন নেতাকর্মী, সমর্থক, নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ। তাদের আগমনে পুরো অনুষ্ঠানস্থল পরিণত হয় প্রার্থনার আবেগঘন পরিবেশে। অনুষ্ঠানে ছিল দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা, যুবদল–স্বেচ্ছাসেবকদল–ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সরব অংশগ্রহণ। দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় বক্তারা বলেন— “খালেদা জিয়ার সুস্থতা শুধু একজন নেত্রীর ব্যক্তিগত বিষয় নয়; এটি পুরো জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন নতুন গতি পাবে।” অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, দেশনেত্রীর নেতৃত্বই দেশের মানুষের আশার আলো; তাঁর সক্রিয় ভূমিকা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে শক্তিশালী করে। আয়োজক খন্দকার আহমেদুল হক সাতিল তার বক্তব্যে বলেন— দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের হৃদয়ের প্রিয় মানুষ। তাঁর অসুস্থতা আমাদের সকলের কষ্টের কারণ। আমরা বিশ্বাস করি, আল্লাহর রহমতে তিনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। সেই কামনায় আজকের এই দোয়া মাহফিল।” তিনি আরও বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে খালেদা জিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। তার সুস্থতা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের জন্য অপরিহার্য।মোনাজাতে অংশ নেয় হাজারো মানুষমাহফিলের শেষে দেশ, জাতি, জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং বিশেষভাবে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য,দীর্ঘায়ুএবং দ্রুত আরোগ্য কামনায় এক হৃদয়স্পর্শী মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।মোনাজাতে হাজারো মানুষের কণ্ঠে একই প্রার্থনা—“হে আল্লাহ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে দিন।”
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি — দেশে-বিদেশে উদ্বেগ, পরিবারের আহ্বান দোয়ার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আবারও নাজুক হয়ে পড়েছে বলে দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকা এই বর্ষীয়ান নেত্রীর স্বাস্থ্যের হঠাৎ পরিবর্তন দেশে-বিদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জাতীয় রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী এই ব্যক্তিত্বের শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সাধারণ জনগণ—সকলের মাঝে উৎকণ্ঠা বাড়ছে।খালেদা জিয়ার শারীরিক জটিলতাগুলো নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক সময়ে তা আরও তীব্র হয়েছে বলে জানা গেছে। চিকিৎসকরা তাঁকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রেখেছেন এবং প্রতিটি চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হচ্ছে। পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, কোনো ঝুঁকি না নিতে চিকিৎসক দল ২৪ ঘণ্টাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে।পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক অবস্থা তাঁদের মানসিকভাবে আরও বেশি উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তারা বলছেন, “এখন প্রতিটি মুহূর্তই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চিকিৎসকদের সব নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করছি। দেশবাসীর দোয়াই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।” বিএনপি নেতারা বলছেন, দলের প্রধান নেত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা গভীরভাবে চিন্তিত। প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে পরিবার ও চিকিৎসকদের সঙ্গে। দলীয় নেতারা উল্লেখ করেন—“দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যিনি জীবনের প্রায় পুরোটা সময় ব্যয় করেছেন, সেই নেত্রীকে সুস্থ অবস্থায় দেখতে পুরো জাতি অপেক্ষা করছে।”বিএনপি মহাসচিব ও অন্য শীর্ষ নেতারা দেশবাসীর কাছে তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন। তারা বলেন, “জাতির প্রিয় নেত্রীর সুস্থতা এখন জাতীয় প্রত্যাশা। আমরা আল্লাহর রহমত কামনা করছি।”ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহীসহ নানা অঞ্চলে খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হচ্ছে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, উপাসনালয়—সব জায়গায়ই তাঁর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে শুভকামনা ও সমর্থনের বার্তা।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবনতির খবর শুধু তাঁর দলের ভেতরেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও বাড়তি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আসন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দলের সিদ্ধান্ত এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচির ওপর এ ঘটনা প্রভাব ফেলতে পারে বলে তাঁরা মনে করেন।বহু দশকের রাজনৈতিক জীবনে নানা কঠিন সময় অতিক্রম করা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য এখন রাজনীতি, পরিবার এবং জনগণের মাঝে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। দেশবাসী তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনায় একত্রিত হয়েছে।
দলীয় কোন্দল, কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এবং সাময়িক অব্যাহতির পর শেষ পর্যন্ত দলীয় সর্বপ্রকার পদ-পদবী থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান ভূঞা (শাজাহান সাজু)। ২৫ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে তিনি পদত্যাগপত্রটি নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করে বিষয়টি জনসমক্ষে আনেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এই পদত্যাগ এসেছে সামনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের ভেতরে তীব্র অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে। সাজুর প্রধান অভিযোগ—বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অশালীন ও আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এটি তিনি নিজের মর্যাদার প্রতি অবমাননাকর বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া তার অভিযোগ, অ্যাডভোকেট আজম খান সখীপুরে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বিএনপিতে পুনর্বাসন করে একটি পৃথক বলয় গড়ে তুলছেন। ফেসবুকে প্রকাশিত পদত্যাগপত্রে শাজাহান সাজু লেখেন—সখিপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট আহমেদ আজম খানের আওয়ামী পুনর্বাসন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অশালীন ভাষায় কথা বলার প্রতিবাদ স্বরূপ, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সাজু দলীয় সর্বপ্রকার পদ-পদবী থেকে পদত্যাগ করিলাম।” স্বাক্ষরিত চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন যে ২৫ নভেম্বর ২০২৫ থেকে তিনি দলের সকল পদ-পদবী থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াচ্ছেন। দীর্ঘদিন সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেও সাম্প্রতিক সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা, ষড়যন্ত্র ও অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের কারণে দায়িত্ব পালন করা তার পক্ষে আর সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন। এর আগে কিছুদিন আগেই তাকে সখীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়—মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাময়িক অব্যাহতির পর থেকেই সাজু ক্ষুব্ধ ছিলেন। অবশেষে কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ এনে ফেসবুকে পদত্যাগপত্র প্রকাশ করায়, সামনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে সখীপুর বিএনপির রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা, বিভাজন ও নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।