জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেওয়ার মাত্র তিন ঘণ্টা পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বিশাল মিয়া (১৭) নামে এক ফার্মেসি কর্মচারী। সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে পৌরসভার শিমলা বাজারের সুমন ফার্মেসিতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বিশাল মিয়া টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়নের কেরামজানি গ্রামের সাগর মিয়ার ছেলে। তারা কিছুদিন ধরে সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কাবারিয়া বাড়ি গ্রামে বসবাস করছিলেন। বিশালের বাবা সাগর মিয়া পেশায় একজন ভ্যানচালক।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিশাল স্থানীয় আইডিয়াল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি সুমন ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রেতা হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন—
“বেঁচে থেকে লাভ কী, যদি আল্লাহর ইবাদতই না করি।”
স্ট্যাটাস দেওয়ার পর বিশাল ফার্মেসির বিশ্রামঘরে গিয়ে ঘুমানোর কথা বলে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর ফার্মেসির মালিক সুজিত কুমার রায় তাকে ডাকলেও কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে দেখা যায়, রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন বিশাল মিয়া। দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ রাজবংশী তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা সাগর মিয়া জানান, “ভ্যান চালিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালাই। ছেলে মাঝেমধ্যে বড় কিছু জিনিসের জন্য বায়না ধরত। না দিতে পারলে মন খারাপ করে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দোকানে চলে যেত। আজ সে এমন কাজ করবে, ভাবিনি।”
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হাসান বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
বাংলাদেশের বৃহৎ এনজিও সংস্থা "আশা"এর উদ্যোগে হয়ে গেল ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন যেখানে ফ্রিতে চিকিৎসা দেওয়া হয় এলাকার বিভিন্ন পেশাজীবী এবং কর্মজীবী মানুষের মধ্যে। ২৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার সোনামুই গ্রামে সকাল থেকে এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন করা হয় আশায় এনজিও হেমনগর শাখার উদ্যোগে এটি বাস্তবায়িত করা হয়। উক্ত ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং মেডিকেল অফিসারসহ অন্যান্য সেবিকারা। আশা এনজিও কর্তৃক ক্যাম্পেইনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন "আশা" হেমনগর ব্রাঞ্চের পক্ষথেকে আশা এনজিওর এই ক্যাম্পেইনে গ্রামের সকল পেশাজীবীর মানুষেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্যাম্পেইনটিতে অংশগ্রহণ করেন এবং তারই মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সঠিক ভাবে নিরূপণ করতে সহযোগিতা করেন। আশা এনজিওর মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করে মানুষের জন্য সময় উপযোগী এবং প্রয়োজনীয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়াবে যেটি গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা এবং স্বাস্থ্য সঠিকভাবে পর্যালোচনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই উদ্যোগে এলাকাবাসী অত্যন্ত প্রাণবন্ত ভাবে উৎফুল্ল প্রকাশ করেছে। উক্ত ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকবৃন্দ এবং সাধারণ মানুষ। এবং তাদের ক্যাম্পেইন ডাক্তার সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছে। আশা এনজিও আগামী দিনগুলোর জন্য এইরকম ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ধাপ হিসাবে গণ্য হবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলার স্থানীয় বেতগঞ্জ বাজাএই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবুল কাশেম দুলু সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এডভোকেট দীপংঙ্কর বনিক সুজিতের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মনাজ্জির হোসেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সুহেল মিয়া, শাহজাহান মিয়া, এডভোকেট আব্দুল আহাদ জুয়েল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মুজাব্বির হোসেন অপু, ইমরান হোসেন শ্যামল, বিপ্লব খান, মো:শামিম আহমদ, সেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক সাদিকুর রহমান চৌধুরী, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতাউর চৌধুরী শাহীন প্রমুখ। এ ছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার আলম, লিয়াকত আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আতহাব চৌধুরী হাসান, শাখাওয়াত হোসেন পলাশ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমন আহমেদ, ফয়সাল আহমেদ, মিছবাহ হোসেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মহিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মঈনুদ্দিন আহমেদ রিপন,সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম সৌরভ, বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম, ময়না মিয়া,স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুজেল আহমেদ, আবুল হাসনাত, জেলা ছাত্রদল নেতা ইয়াহিয়া হাসান প্রমুখ। এ সময় সদর উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন,বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের দুঃসময়ে যারা রাজপথে নির্যাতিত ও নিপিিতড় হয়েছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ভবিষ্যতের ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঘেঁষা বা ফ্যাসিস্টদের সাথে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে কমিটিতে রাখা যাবে না বলেও তারা দাবি জানান। দুর্দিনে যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন তাদেরকে কমিটিতে মুল্যায়ন করা হবে। তারা বলেন,সুনামগঞ্জে জাতীয়তাবাদি শক্তির প্রাণপূরুষ এবং বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জেল জুলুম,হুলিয়া মাথায় নিয়ে এই সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা কেবল জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তূমান জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৪(সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে ছিলাম এবং আগামী নির্বাচনে এই আসনে জনপ্রিয় ধানের শীষের প্রার্থী একমাত্র নুরুল ইসলাম নুরুলকে বিএনপির প্রার্থী করতে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া,ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট তৃণমূলের নেতৃবৃন্দরা জোর দাবী জানান।
(২২ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার পার্ক বাজার সংলগ্ন গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল। তিনি তার বিশেষ মনিটরিং টিম নিয়ে দোকানে থাকা দইয়ের উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকা, বেশ কিছু পরিমাণ পচে যাওয়া দই দোকানে সংরক্ষণ করা এবং মিষ্টান্ন তৈরীর বড় কড়াইয়ে টিকটিকির মল পাওয়ার দায়ে টাঙ্গাইলের গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে, আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবেন। অভিযানে পৌর স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে গৌর ঘোষ দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী স্বপ্নন কুমার ঘোষ জানান, সাধারণত তিনি খুচরা ভাবে দধি বিক্রি করে থাকেন। ফলে তৈরিকৃত দধিতে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে এখন থেকে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত পচে যাওয়া দধিগুলো ফেলে দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল। এছাড়া যে মিষ্টি তৈরীর বড় কড়াইয়ে টিকটিকির মল হাওয়া গেছে, সেটি বর্তমানে মিষ্টি তৈরীর কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে না। আমরা সবসময় চেষ্টাকরি গ্রাহককে সর্বোচ্চ মানের দধি ও মিষ্টান্ন সরবরাহ করার।
“মিস এন্ড মিসেস এলিগেন্স বাংলাদেশ সিজন ওয়ান”–এ প্রথম রানার্সআপ আদ্রিজা আফরিন সিনথিয়া দেশের আয়োজিত বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতা “মিস এন্ড মিসেস এলিগেন্স বাংলাদেশ সিজন ওয়ান”-এ প্রথম রানার্সআপের মুকুট জয় করলেন তরুণ ফ্যাশন মডেল আদ্রিজা আফরিন সিনথিয়া। ফ্যাশন জগতে ইতিমধ্যেই তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কাজ করে। শুধু মডেলিং নয়, সিনথিয়া অভিনয়ের ক্ষেত্রেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন বুকে লালন করছেন। ইতোমধ্যে তিনি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সাদেক সিদ্দিকীর পরিচালনায় “দেনা পাওনা” সিনেমায় অভিনয় করছেন। রানার্সআপের মুকুট মাথায় পরার পর আবেগে আপ্লুত সিনথিয়া জানান—ঢালিউড কুইন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস আমাকে মুকুট পড়িয়ে দিয়েছেন এই আনন্দ আমি বুঝাতে পারবো না। “এই সাফল্য আমার জন্য অনেক বড় অর্জন। তবে আমি শুধু এখানেই থেমে থাকতে চাই না। আমি চাই নিজেকে মিডিয়া অঙ্গনে আরও দূর, বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে। দেশবাসীর কাছে আমি দোয়া চাই।” আজকের এই অর্জন আমি আবার মা বাবা পরিবার এবং আমাকে যারা সাপোর্ট করেছেন তাদেরকে উৎসর্গ করতে চাই। বহু বাধা ও প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছেছেন সিনথিয়া। তাঁর অদম্য চেষ্টা, আত্মবিশ্বাস আর স্বপ্নই তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাশন থেকে চলচ্চিত্র—সব জায়গাতেই আলো ছড়ানোর ইচ্ছে তার। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে সিনথিয়া এখন এক অনুপ্রেরণার নাম। তাঁর কথায়— “এই মুকুট আমার স্বপ্নযাত্রার প্রথম ধাপ মাত্র। সামনে আরও অনেক পথ, আরও অনেক লড়াই।”
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দীর্ঘ প্রতিকূলতা পেরিয়ে এমন ফলনে কৃষক-কৃষাণীদের মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি। স্বপ্ন পূরণের আশায় তারা দিন গুনেছেন। সেই সোনালি ধান কেটে ঘরে তোলা শুরু করেছেন। আর সেই ধান বাজারে বিক্রি করে পরিবারের চাহিদা মেটাবেন। ছেলে-মেয়েদের জন্য নতুন জামাকাপড়, পরিবারের সকল চাহিদা মেটানোর নতুন স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক নতুন ধান বিক্রি করে বাজার থেকে গরম জিলাপি ও মিষ্টি কিনে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। বাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ের যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হতো নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। ঋতু চক্রের পথ পরিক্রমায় হেমন্ত কালের অগ্রহায়ণ মাসের যাত্রা শুরু। অগ্রহায়ণকে ঘিরে নবান্নের ঘ্রাণে ভরে উঠছে কৃষকের আঙ্গিনা। এ অঞ্চলে কৃষকদের ঘরে ঘরে আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। গ্রামীণ জীবন থেকে নবান্ন উৎসব হারিয়ে যেতে বসলেও অনেকে বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। বাজারে ধানের দাম ভাল এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই ভালভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারায় কৃষকরা খুবই খুশি। বাংলার প্রকৃতিতে অগ্রহায়ণ এলেই কৃষককেরা দিগন্ত জুড়ে ধানকাটা মাড়াই উৎসবে মেতে উঠেন কৃষক। ব্যস্ত সময় কাটান কৃষক-কৃষাণীরা। ধান তোলার সুভাস ভেসে বেড়ায় বাতাসে বাতাসে। কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনা ভরে উঠছে সোনালী ধানে। নতুন চালের ভাতে ভিন্ন এক আমেজ এনে দেয় কৃষক পরিবারে। অনেক পরিবারে তৈরি হয় নতুন চালের পিঠা, ক্ষীর, পায়েসসহ নানা উপাদেয় খাদ্য। নবান্ন শব্দের অর্থ নতুন অন্ন। নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবকেই নবান্ন উৎসব বলা হলেও বাস্তব জীবন থেকে এই উৎসবটি অচেনা এক দূরে চলে যেতে বসলেও কেউ কেউ ধরে রেখেছেন পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য। সরজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, হেমন্তের হালকা বাতাসে দুলছে পাকা ও আধাপাকা ধানের স্বর্ণালি শীষ। মাঠজুড়ে ধানের সমারোহ যেন সৌন্দর্যের উৎসব। পাকা ধানের মিষ্টি গন্ধে ভরে উঠেছে বাংলার মাঠ-ঘাট। কোনো কোনো জায়গায় শুরু হয়েছে ধান কাটার মহোৎসব। কৃষকের উঠোনে ইতোমধ্যে জমতে শুরু করেছে নতুন ধান। ব্যস্ত সময়ের মাঝে কৃষাণীরাও দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছেন না। ধান কাটার পর দ্রুত জমি প্রস্তুত করে সরিষা চাষের পরিকল্পনায় ব্যস্ত সবাই। নতুন করে পাইজাম ধান চাষে রেকর্ড গত কয়েক বছর অতিরিক্ত বন্যার কারণে যেসব জমিতে ধান চাষ করা সম্ভব হয়নি। এবার সেসব জমিতে পানির পরিমাণ কম থাকায় রেকর্ড পরিমাণ পাইজাম জাতের ধান চাষ হয়েছে। ফলে আমন উৎপাদন আরও বেড়েছে। স্থানীয় কৃষক আলম মিয়া বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার বন্যার পানি কম থাকায় ফলন অনেক ভালো হয়েছে। ধানের দাম কিছুটা কম হলেও খড়ের দাম বেশি। সব মিলিয়ে খরচ মিটিয়ে ভালোই লাভ হবে আশা করছি। কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, আগে নবান্ন উৎসব ধুমধাম করে পালিত হতো। এখন ধুমধাম না থাকলেও বাপ-দাদার ঐতিহ্যটি ধরে রেখেছে তার পরিবার। কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, ১০ বছর আগেও ধুমধাম করে পহেলা অগ্রহায়ণে তিনি নবান্ন পালন করতেন। নবান্নে তিনি আত্মীয়স্বজন বন্ধু বান্ধবকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতেন। নবান্ন উপলক্ষে ২ দিন আগে সকাল বেলা গোসল সেরে পবিত্র হয়ে বাম হাত দিয়ে এক মুঠি ধান কর্তন করে নবান্নের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করতাম। গত বেশকয়েক বছর থেকে তার বাড়িতে এসব অনুষ্ঠান অনুপস্থিত। চাকরিজীবী তরুন আসাদুজ্জামান মিলন বলেন, আমি ছোট বেলায় গ্রামে দেখেছি, দাদা-দাদী নানা-নানি আত্মীয়-স্বজন সকলে মিলে নবান্ন উৎসব পালন করত। ধান ঘরে তোলার দিন মসজিদের ইমামকে ডেকে দোয়া পড়িয়ে নবান্ন উৎসব শুরু করা হতো। সবাই মিলে এক সাথে দুপুরের খাবার খেতাম। ইতিহাস লেখক জুবায়ের আলী বলেন, গ্রামেগঞ্জে আবহমানকাল ধরে নবান্ন উৎসব অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়ে এলেও বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই উৎসবে ভাটা পড়েছে। এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, এবার আমনে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে অর্জন হয়েছে ১২ হাজার ৯০০ হেক্টর। প্রতিবারের মতো এবারও কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের পর্যাপ্ত সহযোগিতা করা হয়েছে। গোপালপুরে ইউনিয়ন ও পৌর শহরের আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, তাই কৃষকের মুখে হাসি। এবারের আমন মৌসুমে এমন অপ্রত্যাশিত বাম্পার ফলন কৃষকদের নতুন আশার সঞ্চার করেছে। কৃষকের মাঠ এখন সোনালি শস্যে ভরে উঠেছে।
টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে একটি পামওয়েল বোঝাই ট্রাকের গতি রোধ করে ডাকাত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে যমুনা সেতু পূর্ব থানা পুলিশ। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভোর রাতে মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার হাতিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ জানায়, নারায়ণগঞ্জ থেকে পাবনাগামী পামওয়েল বোঝাই ট্রাকটি (ঢাকা মেট্রো ট-১৪-৭৫৭৯) মহাসড়কের হাতিয়া অংশে পৌঁছালে একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো গ-৪৩-৫৪৮৬) এবং একটি পাজেরো (ঢাকা মেট্রো ঘ-২১-৭৬৯৯) গাড়ি দিয়ে ট্রাকটির গতি রোধ করা হয়। বিষয়টি টহল পুলিশের নজরে এলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে সন্দেহ হলে প্রাইভেটকার ও পাজেরোতে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিতে একটি লাইসেন্সকৃত শর্টগান, ছয়টি সিসা কার্তুজ, একটি লেজার লাইট, দুটি সিগন্যাল লাইট, চারটি শর্ট ওয়াকিটকি ও দুটি কাঠের লাঠি উদ্ধার করা হয়। পরে তিনটি গাড়ি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আটককৃতরা হলেন- পাবনা উপজেলার চকধুবুলিয়া গ্রামের আকবরের ছেলে আকাশ মিয়া (২৫), ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার নুরুল ইসলামের ছেলে জাহিদুল (৩৪), পাবনা সদর উপজেলার নয়নামতি গ্রামের রেজাউলের ছেলে রহিম (১৯), চট্টগ্রাম জেলার আকবরশাহ উপজেলার লতিফপুর গ্রামের বদিউল আলমের ছেলে নাজিম উদ্দিন (৩০), একই জেলার কর্ণফুলী উপজেলার বাবুল লালের ছেলে সুমন মিয়া (৩৫) ও পাবনা সদর উপজেলার রাধানগর চক জায়েনপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মারুফ হোসেন (৩০)। যমুনা সেতু পূর্ব থানার (ওসি) সবজেল হোসেন জানান, হাইওয়েতে সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা প্রতিনিয়ত টহল জোরদার রেখেছি। এরই অংশ হিসেবে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভোর রাতে মহাসড়কে সন্দেহজনকভাবে চলাচল করায় এই তিনটি গাড়ি থামানো হয়। তল্লাশিতে একটি প্রাইভেট কার ও একটি পাজেরো থেকে শর্টগান, কার্তুজ ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার হওয়ায় ছয়জনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে র্যাবের অভিযানে অভিনব পন্থায় পাচারের জন্য বহনকৃত বিপুল পরিমান নিষিদ্ধ অবৈধ মাদকদ্রব্য হেরোইনসহ এক মাদক কারবারী গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ তোহর আলী (৬০)। সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার মৃত সোয়ব আলীর ছেলে। রোববার (১৬ নভেম্বর) ভোরে যমুনাসেতু-ঢাকা মহাসড়কের টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ৪৬০ গ্রাম নিষিদ্ধ অবৈধ মাদকদ্রব্য হেরোইন, একটি বাটন মোবাইল ফোন এবং নয়শত পঁয়ষট্রি টাকা উদ্ধার করা হয়। সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মোঃ কাওসার বাঁধন এ তথ্য জানান। তিনি জানান, সিপিসি-৩, র্যাব-১৪, টাঙ্গাইল ক্যাম্পের আভিযানিক দল নিয়মিত টহল ডিউটি ও মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা কালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চাপাইনবাবগঞ্জ হতে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী রিয়াজ পরিবহনে একজন মাদক কারবারি অবৈধ মাদক দ্রব্যসহ যাত্রীবেশে টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকা যাচ্ছে। প্রাপ্ত গোপন সংবাদের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যমুনাসেতু-ঢাকা মহাসড়কের টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পাঁকা রাস্তার উপর চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশীকালে চাপাইনবাবগঞ্জ হতে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী রিয়াজ পরিবহনের বাসটি চেকপোস্টে আসা মাত্রই সিগনাল দিয়ে বাসটি থামিয়ে সন্দেহজনক মাদক কারবারি মোঃ তোহর আলী কে বাস হতে নামিয়ে দেহ তল্লাশী করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার হেফাজতে থাকা কালো রঙের ট্রাভেল ব্যাগের মধ্যে সেলাই করা অবস্থায় বিশেষভাবে রক্ষিত চার পুড়িয়া এবং একটি বস্তার মধ্যে রক্ষিত কাগজের কার্টুনের ভিতরে পেয়ারার নিচ হতে চারটি পলিথিনের প্যাকেটসহ সর্বমোট ৪৬০ গ্রাম কথিত অবৈধ মাদকদ্রব্য হেরোইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত কথিত অবৈধ মাদকদ্রব্য হেরোইন এর অবৈধ বাজার মূল্যে ৪৬ লাখ টাকা। গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারি মোঃ তোহর আলী’র বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় চারটি মাদক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি থানায় মামলা দায়ের পূর্বক আসামী এবং জব্দকৃত হেরোইন হস্তান্তর করা হয়েছে