সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া শেখ আশহাবুল ইয়ামিনকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদন ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
গত বছরের ১৮ জুলাই সাভারের পাকিজা মডেল মসজিদের কাছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের সাজোয়াযান (এপিসি) থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় ইয়ামিনকে টেনে হিচড়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। এরপর কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে সড়ক বিভাজকের ওপরে ঠেলে দেন। এই নির্মম ঘটনার ভিডিও এবং ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশের মানুষ স্তম্ভিত হয়ে যায়।
তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের দাবি, আন্দোলন চলাকালে ইয়ামিন এপিসির পেছন দিক দিয়ে উঠে পুলিশের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। তখন এপিসির ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যরা উপরের ঢাকনা বন্ধ করে দেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলি এবং ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়ে ইয়ামিন এপিসির উপর লুটিয়ে পড়েন।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃথক তদন্তে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে। তাদের মতে, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা নিরস্ত্র ছিলেন, এবং পুলিশের গুলিতেই ইয়ামিন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে টেনে হিচড়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
জাতীয় দৈনিক ‘আমার দেশ’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা শুধুমাত্র পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য নিয়েছেন, কিন্তু কোনো প্রত্যক্ষদর্শী বা সংবাদকর্মীর সাক্ষ্য নেননি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশের প্রতিবেদনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং এটিকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছে।
এ ঘটনার জেরে তদন্তে যুক্ত পুলিশ সদস্যদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে জনমনে ক্ষোভ ও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শহীদ ইয়ামিনের পরিবার ও সাধারণ জনগণ এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেছেন।