শহিদ নগর বারইপটল রেলস্টেশন: অবহেলার চরম নিদর্শন, এলাকাবাসীর ক্ষোভ চরমে
জামালপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা শহিদ নগর বারইপটল। এখানে গড়ে তোলা হয়েছিল একটি সম্ভাবনাময় রেলস্টেশন—শহিদ নগর বারইপটল রেলস্টেশন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই রেলস্টেশনটি পড়ে আছে সম্পূর্ণ অবহেলায়। ২০১২ সালের পর থেকে এখানে কোনো আন্তঃনগর ট্রেন থামে না। বর্তমানে মাত্র একটি আন্তঃনগর ট্রেন এই স্টেশন অতিক্রম করে, কিন্তু সেখানে কোনো যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা নেই।
স্টেশনে নেই কোনো স্টেশন মাস্টার, নেই কোনো লোকবল, এমনকি রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও নেই কোনো কর্মকর্তা। একসময়ে যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য নির্মিত ঘরগুলো আজ পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়, মূল্যবান আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অযত্নে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই রেলস্টেশন নির্মাণের সময় সরকার শত শত একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল স্থানীয়দের কাছ থেকে। তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল—এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ রেলস্টেশন গড়ে উঠলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে তাদের জীবনমানও উন্নত হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—উন্নতির বদলে তারা আজ দেখছেন ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি অবহেলিত রেলস্টেশন।
ময়মনসিংহ রিলেটেড নিউজ
অনেকে অভিযোগ করছেন, বিগত সরকারের সময়কার এক প্রভাবশালী মন্ত্রী এই স্টেশনটির প্রতি কোনো মনোযোগ দেননি। বরং তিনি নিজ বাড়ির পাশের স্টেশন এডভোকেট মতিউর রহমান স্টেশনকে গুরুত্ব দেন, যেখানে বর্তমানে সব ট্রেন থামে। ফলে শহিদ নগর বারইপটল স্টেশন হয়ে উঠেছে জনমানবহীন, কার্যত পরিত্যক্ত।
এলাকাবাসীর জোর দাবি—অতি দ্রুত এই স্টেশনে একজন স্টেশন মাস্টারসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। যাতে করে স্টেশনটির কার্যক্রম আবার সচল হয় এবং মূল্যবান সরকারি সম্পদগুলো সুরক্ষিত থাকে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার আমাদের জমি নিয়ে স্টেশন বানাল, আমরা ভেবেছিলাম উন্নতি হবে। অথচ আজ দেখি ঘর আছে, যাত্রী নেই। লাইট নেই, কর্মী নেই। এটা একটা মৃত স্টেশন।”
সরকার ও বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রতি এলাকাবাসীর আহ্বান—অবিলম্বে শহিদ নগর বারইপটল রেলস্টেশনের সংস্কার ও পূর্ণ কার্যক্রম চালু করে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব করা হোক। নইলে অমূল্য সম্পদ হারিয়ে যাবে, আর সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন