বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শরণার্থী মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে একটি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, “দুর্ভাগ্যবশত শরণার্থী মন্ত্রণালয়ে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং কয়েকজন সহকর্মীসহ মন্ত্রী খলিল উর-রহমান হাক্কানি শহীদ হয়েছেন।”
৫৮ বছর বয়সি খলিল হাক্কানি ছিলেন জালালউদ্দিন হাক্কানির ভাই, যিনি হাক্কানি নেটওয়ার্ক নামের দুর্ধর্ষ গেরিলা বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই নেটওয়ার্ক তালেবানের দুই দশকের প্রতিরোধ যুদ্ধের সময় আফগান ও ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়াবহ হামলার জন্য পরিচিত। বর্তমান আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির চাচা ছিলেন খলিল হাক্কানি।
২০২১ সালে মার্কিন ও ন্যাটো নেতৃত্বাধীন বিদেশি বাহিনীর বিরুদ্ধে দুই দশকের যুদ্ধ শেষে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান এবং সরকার গঠন করে। খলিল হাক্কানি ছিলেন নতুন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একজন।
তালেবান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নত হলেও সহিংসতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আইএসআইএস-খোরাসান নামে পরিচিত জঙ্গি গোষ্ঠীটি এখনও সক্রিয় এবং নিয়মিত বন্দুক ও বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। এসব হামলায় প্রায়ই বেসামরিক নাগরিক হতাহতের শিকার হচ্ছেন।
খলিল হাক্কানির মৃত্যুর পর পাকিস্তান শোক প্রকাশ করেছে। এক্স প্ল্যাটফর্মে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক বার্তায় বলেন, “আমরা আফগান মন্ত্রী খলিল হাক্কানির মৃত্যু এবং সন্ত্রাসী হামলায় মূল্যবান প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত।”
কাবুলের এই হামলার আগে গত মাসে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাগলান প্রদেশে একটি মাজারে বন্দুক হামলা চালানো হয়, যেখানে অন্তত ১১ জন নিহত হন। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা নাহরিন জেলার একটি মাজারের ভেতরে গুলি চালায়।
এছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মধ্য আফগানিস্তানে আইএসের একটি হামলায় ১৪ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হন।
খলিল হাক্কানির মৃত্যু তালেবান সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এটি আফগানিস্তানে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং আইএসের সক্রিয়তাকে আরও জোরালোভাবে সামনে নিয়ে আসবে।