টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে “প্রত্যেকটি অবদানই গুরুত্বপূর্ণ” প্রতিপাদ্যে নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে। গুডনেইবারস বাংলাদেশ ঘাটাইল সিডিপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে স্বেচ্ছাসেবার মর্মবাণী ছড়িয়ে দেন স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের পাকুটিয়া পাবলিক মডেল হাই স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে গুড নেইবারস ইয়ুথ সদস্যদের অংশগ্রহণে বের হয় এক প্রাণবন্ত র্যালি। র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা স্বেচ্ছাসেবা, মানবিক মূল্যবোধ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বিষয়ে নানা বার্তা সম্বলিত ব্যানার ও প্লকার্ড প্রদর্শন করেন। র্যালিকে ঘিরে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে উৎসর্গ, ঐক্য ও মানবসেবার মূল্যবোধে। পরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব, সমাজে যুবসমাজের অবদান, কমিউনিটি উন্নয়ন ও পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। গুডনেইবারস উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম হোসাইনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিডিসি’র ভাইস চেয়ারপার্সন ড. ফনীন্দ্র লাল পাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাকুটিয়া মডেল পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ কুমার। বক্তারা বলেন, স্বেচ্ছাসেবীরা সমাজের প্রকৃত পরিবর্তনকারী—তাদের একেকটি উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আলোচনা সভার পাশাপাশি আয়োজন করা হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, যেখানে স্থানীয় শিল্পী ও শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবা ও মানবিকতার বার্তা বহনকারী গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন। এতে অনুষ্ঠানস্থলে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে কমিউনিটিতে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে পরিচালিত হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান। তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা বিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় ঝাড়ু দেওয়া, আবর্জনা সংগ্রহ ও বর্জ্য পৃথকীকরণে স্থানীয়দের সচেতন করেন। পরিবেশবান্ধব আচরণ উৎসাহিত করতে গুড নেইবারস বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে পাকুটিয়া মডেল পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়কে রিসাইকেলযোগ্য ও সাধারণ বর্জ্যের জন্য দুটি ৬০ লিটারের ডাস্টবিন উপহার দেওয়া হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগকে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে গুড নেইবারস বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানের শেষাংশে গুডনেইবারস বাংলাদেশ ঘাটাইল সিডিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বেচ্ছাসেবাকে তারা সামাজিক পরিবর্তনের মূল শক্তি মনে করে। ভবিষ্যতেও শিশু, কিশোর, যুব ও কমিউনিটি উন্নয়নমূলক কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সমাজসেবক দানবীর সালাউদ্দিন আলমগীরের পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রায় ৭ হাজার পিস শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। চলমান শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে শীতার্ত নারী-পুরুষের হাতে কম্বল, সুয়েটার ও টুপি তুলে দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে গত ২৬ নভেম্বর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করা হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে সখীপুর উপজেলার গজারিয়া, বহেড়াতৈল, কালিয়া, কাকড়াজান, হতেয়া রাজাবাড়ি ইউনিয়ন ঘুরে এবার যাদবপুর ইউনিয়নে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি এলাকায় স্থানীয় সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবীরা সার্বিক সহযোগিতা করেন। আয়োজকরা জানান, শুধু একটি অঞ্চলে নয়—পুরো বাসাইল-সখীপুর উপজেলায় শীতার্ত মানুষের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বিশাল শীতবস্ত্র ভান্ডার। ধাপে ধাপে মোট দেড় লাখ শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে সালাউদ্দিন আলমগীরের পক্ষ থেকে। শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করায় বিতরণকৃত শীতবস্ত্র অনেক পরিবারের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বলে জানান উপকারভোগীরা। তারা বলেন— “প্রতিবছর শীত এলেই সমস্যায় পড়ি। এবার আগেভাগে কম্বল পাওয়ায় খুব উপকার হলো।” অনেকে বলেন, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন সালাউদ্দিন আলমগীর। মানবিক এ উদ্যোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় সালাউদ্দিন আলমগীর বলেন— “আমি এলাকার সন্তান। মানুষের কষ্টে পাশে দাঁড়ানো আমার দায়িত্ব। যেকোনো সময় যে কোনো সাহায্য আপনাদের উপহার হিসেবে দিই—কখনো বিনিময়ে ভোট চাই না। আমার দেওয়া সামগ্রীর বিনিময়ে যদি কেউ ভোট চাইতে আসে, তাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেবেন। ভোট আপনার—যাকে ভালো লাগে তাকে দেবেন।” তার এই বক্তব্য স্থানীয়দের মাঝে ইতিবাচক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে মানুষের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতাকে “ব্যতিক্রমী” ও “প্রশংসনীয়” বলে মত দিয়েছেন এলাকাবাসী। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও সালাউদ্দিন আলমগীরের এই শীতবস্ত্র উদ্যোগকে এলাকার মানুষ মানবিক সেবামূলক কাজ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে সমাজের অসহায়, নিম্নআয়ের পরিবারগুলো তার এ ধরনের কর্মসূচিকে আশীর্বাদ বলে মনে করছেন। বিভিন্ন এলাকায় প্রাপ্ত প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী, এ ধরনের পদক্ষেপ মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে—যা স্থানীয় রাজনীতিতেও ইতিবাচক বার্তা রেখে যাচ্ছে।
সাজিদ পিয়াল: ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৭তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস–২০২৫ উদযাপন প্রতিপাদ্য: “Fostering disability-inclusive societies for advancing social progress” “Fostering disability-inclusive societies for advancing social progress” এই বৈশ্বিক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৭তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস–২০২৫। দিবসটি উপলক্ষে সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিতে জেলার সরকারি কর্মকর্তা, সমাজসেবক, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রতিবন্ধী সংগঠনের সদস্যসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার নিশ্চিত, তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে সরকার বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ভাতা প্রদান, পুনর্বাসন সেবা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং প্রবেশগম্য অবকাঠামো তৈরি এখন সময়ের দাবি। তারা আরও বলেন, প্রতিবন্ধীতাকে দুর্বলতা না ভেবে সক্ষমতার নতুন দিগন্ত হিসেবে দেখতে হবে—তবেই গড়ে উঠবে অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবিক সমাজ। অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা একাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। শেষে বিভিন্ন প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন, সবার জন্য সমান সুযোগ এবং এক আন্তরিক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
সাজিদ পিয়াল:সরকারি সা'দত কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে বিদায় সংবর্ধনা এবং বিএনসিসি কর্তৃক গার্ড অব অনার প্রদান। টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী সরকারি সা'দত কলেজ শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মনিরুজ্জামান মিয়া এবং উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সুব্রত কুমার সাহা স্যারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিএনসিসি প্লাটুনের ক্যাডেটরা দুই গুণী শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ–এর মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইং–এর পরিচালক প্রফেসর কাজী মোঃ আবু কাইয়ুম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে দীর্ঘদিন ধরে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ দু'জনই অসাধারণ দায়িত্বশীলতা, সৎ নেতৃত্ব ও আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁদের বিদায় কলেজের জন্য এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি করবে, তবে তাঁদের রেখে যাওয়া শিক্ষা ও আদর্শ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে। শিক্ষক পরিষদের নেতৃবৃন্দ, কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আবেগঘন এই বিদায় অনুষ্ঠানে প্রফেসর মোঃ মনিরুজ্জামান মিয়া ও প্রফেসর সুব্রত কুমার সাহা কলেজের প্রতি নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন এবং সকলের কাছে দোয়া ও শুভকামনা কামনা করেন। অনুষ্ঠানের শেষে অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্মারক উপহার প্রদান এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে বিদায় সংবর্ধনা শেষ হয়।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বরকত উল্লাহ বুলু। এইসময় রোগমুক্তির জন্য মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মোনাজাত করেন চৌমুহনী কাচারি বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কবির আহমেদ। এই সময় তিনি জাতির ক্লান্তি লগ্নে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিভিন্ন কর্মকান্ড সামনে এনে আল্লাহর কাছে তার রোগ মুক্তি হয়ে জাতির নেতৃত্বে আবার এসে সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার জন্য দোয়া করেন। আজ দুপুরে বেগমগঞ্জের সেন্টাল কমিউনিটি সেন্টার এ দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন বেগমগঞ্জ ১৬ইউনিয়ন ও চৌমুহনী পৌরসভার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এইসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য শামীমা বরকত লাকী। চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক জহির উদ্দিন হারুন এর সভাপতিত্বে ও যুবদলের আহবায়ক রুস্তম আলী সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামাখ্যা চন্দ্র দাস, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ মাহফুজুল হক আবেদ, যুগ্ম-আহবায়ক নাজমুল গনি চৌধুরী (মান্না), যুগ্ম আহবায়ক মীর জুমলা (মিঠু)। চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপি সদস্য সচিব মোঃ মহসিন আলম, যুগ্ম-আহবায়ক ইসমাইল হোসেন দুলাল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেগমগঞ্জ উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক কাজী মাওলানা আবদুল আলী ও সদস্য সচিব মাকসুদুর রহমান। বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমিন, সেচ্চাসেবক দলের আহ্বায়ক সুমন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেগমগঞ্জ উপজেলা, চৌমুহনী পৌরসভার বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ
ভোটকক্ষে সাংবাদিক প্রবেশে দায়িত্বশীলতা জরুরি: নির্বাচনকে ‘হযবরল’ হতে দিতে চাই না — সিইসি নাসির। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মো. নাসির উদ্দিন। শুক্রবার অনুষ্ঠিত নির্বাচন পরিচালনার প্র্যাক্টিক্যাল ডেমনস্ট্রেশন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভোটকক্ষে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল আচরণ এবং বিবেক প্রয়োগের বিকল্প নেই। ভোটগ্রহণের পরিবেশ অস্থির হয়ে গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।‘ছোট বুথে বেশি লোক ঢুকলে হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি তৈরি হবে’সাংবাদিকদের ভোটকক্ষে প্রবেশের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন,“সাংবাদিক ভাইয়েরা বলছেন—আমাদের ভেতরে থাকতে দিতে হবে। কিন্তু আপনি যখন ছোট্ট একটা বুথে একসঙ্গে অনেক সাংবাদিক ঢুকবেন, তখন ধাক্কাধাক্কি হবে, জায়গা সংকুলান হবে না। বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকলে ভেতরের পরিবেশ অস্থির হয়ে যাবে। আমরা চাই না ভোটকক্ষে হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি তৈরি হোক।”তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট, পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, ভোটার—এত মানুষের উপস্থিতিতে ভিড় তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। এর মাঝে যদি সাংবাদিক ও দেশি–বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বড় দল একসঙ্গে ঢোকে, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।“সাংবাদিকদের আমরা নিষেধ করছি না। আমরা শুধু বলছি—বিবেচনা প্রয়োগ করে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে বেরিয়ে যান।”সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, আগাম নির্বাচনের আগে কেমন পরিবেশ তৈরি হওয়া উচিত এবং আদর্শ পরিস্থিতিতে ভোটের দিন একটি কেন্দ্র কীভাবে পরিচালিত হবে—তা বাস্তবে দেখে নেওয়ার জন্যই আজকের ডেমনস্ট্রেশন আয়োজন করা হয়েছে। “আমরা যে নির্বাচনকে কলঙ্কমুক্ত, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি—সে লক্ষ্যেই এই অনুশীলন। ভোটার আসা–যাওয়া, ব্যালট প্রদানের প্রক্রিয়া, পোলিং অফিসারদের অবস্থান, প্রিজাইডিং অফিসারের ভূমিকা, সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের চলাচল—সবকিছু আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি।”তিনি বলেন, প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিমার্জন আনা হবে। “মোটামুটি সব ঠিক আছে। তবে কোথাও কোথাও উন্নতির জায়গা আছে—আমরা বসে সেগুলো ঠিক করবো।” সিইসি জানান, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের চাপ, প্রত্যাশা ও আন্তর্জাতিক নজরদারি সম্পর্কে সচেতন। তাই একটি শান্ত, শ্রদ্ধাশীল ও নিয়মতান্ত্রিক ভোটকেন্দ্র পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। তিনি বলেন, “আমরা একটি সুন্দর, গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। এজন্যই বারবার বলছি—কেন্দ্রে যারা যাবেন, সবাই যেন দায়িত্বশীলভাবে কাজ করেন।”সংবাদমাধ্যম নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে উল্লেখ করে সিইসি বলেন— “সাংবাদিকদের উপস্থিতি আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেন কেন্দ্রে সাধারণ ভোটারের চলাচল বা ভোটগ্রহণে কোনো ব্যাঘাত না হয়, সেটি সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি জানান, কমিশন খুব শিগগিরই সাংবাদিকদের জন্য পৃথক নির্দেশিকা ও গাইডলাইন প্রকাশ করবে, যাতে তারা নির্বাচন কাভার করতে পারেন কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই।
১৩৩, টাঙ্গাইল ৪ কালিহাতী আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী লুৎফর রহমান মতিনের বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত।এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জনসভার আয়োজন করা হয়।উক্ত জনসভায় সভাপতি হিসেবে ছিলেন কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহব্বায়কও বীর মুক্তিযোদ্ধা শুকুর মাহমুদ ও সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কৃষিবিদ এস এম এ খালিদ । তা ছাড়াও উক্ত জনসভায় বক্তব্য রাখেন এলেঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র শাফী খান, টাঙ্গাইল জেলা জিয়া পরিষদের সাবেক সভাপতি প্রফেসর এ কে এম আব্দুল আওয়াল, মালেশিয়া বিএনপির সভাপতি প্রকৌশলী বাদলুর রহমান খান বাদল, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম- আহ্বায়ক মোহর আলী, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি রহিমা খাতুন এবং কালিহাতীর বিভিন্ন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানগন সহ কালিহাতী উপজেলা বিএনপিও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে লুৎফর রহমান মতিন নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন" দেশ নেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে দেশ দ্রুত গতিতে অগ্রসর হবে এবং আমরা সকলেই ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করে যেন টাঙ্গাইল-৪ অর্থাৎ আমাদের কালিহাতী আসনটি ম্যাডাম খালেদা জিয়া ও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানকে উপহার দিতে পারি"।
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে, টাঙ্গাইল সদর থানায় কর্মরত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. বিপুল ইসলাম তাঁর কর্মদক্ষতা ও সততা স্বীকৃতি স্বরূপ অক্টোবর ২০২৫ মাসের টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন। জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনসেবায় তাঁর প্রশংসনীয় ভূমিকার জন্য তিনি এই সম্মাননা লাভ করেন। জেলার মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা ও কল্যাণ সভায় আজ বিপুল ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মাননা জানানো হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের মাসিক সভায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এএসআই মো. বিপুল ইসলামকে শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়।
ধীর গতিতে এগিয়ে চলছে টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগাধীন আরিচা-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ যজ্ঞ । যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প শুরু হয় ১ লা জানুয়ারী ২০২২ সালে।চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ কাজ চলতি বছরেরই শেষ হবার কথা থাকলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা , এলাইমেন্ট নকশা প্রনয়ণে জটিলতা ,বনবিভাগ কর্তৃক গাছপালার মূল্য নির্ধারণে অসহযোগিতা ও পল্লীবিদ্যুতের অসহযোগিতায় থমকে আছে আঞ্চলিক এ মহাসড়কের কাজ। এরই মধ্যে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে মাটি ভরাট, পুরাতন রাস্তায় খানাখন্দের সৃষ্টি ও নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় জনদূর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।টাঙ্গাইল জেলার সাথে সদর উপজেলাসহ দেলদুয়ার ও নাগরপুরের একমাত্র এ আঞ্চলিক মহাসড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় জরুরি স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন জরুরি কাজে জেলা শহরে আসা হাজার হাজার নাগরিক ভোগান্তিতে পড়ছেন প্রতিনিয়ত। খানাখন্দভরা এ আঞ্চলিক মহাসড়কের গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহনের মেইনটেইন খরচ বেড়েছে বহুগুণ। টাঙ্গাইল জেলা ভূমি অধিগ্রহণ শাখা হতে জানা যায়, আঞ্চলিক এ মহাসড়কের ভূমি অধিগ্রহণে জেলার টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার ৪৬ টি মৌজায় ২৪৫.৫৫৭৭ একর জমি ২০ টি এলএ কেস পর্যবেক্ষণ পূর্বক জমির সঠিক মালিকানা নিশ্চিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যালয়। এর মধ্যে বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে কেস নং ৩২,৩৩ ও ৩৪ এর অন্তর্ভুক্ত মৌজা সূমহের সঠিক জমির মালিকদের মধ্যে ক্ষতিপূরণ কার্যক্রম চলমান আছে । কেস নং ৩১ অলোয়া,বরটিয়া ও ভবানী অংশে ৮ ধারা নোটিশ প্রদানের কার্যক্রম চলমান। শীঘ্রই জমির মালিকদের মধ্যে প্রাপ্ত টাকা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। বাকী ১৬ টির মধ্যে কেস নং ২৮, গোমজানী,বান্ধাবাড়ি ও ভুড়ভূড়িয়ায় মৌজায় ৭(১) ধারা নোটিশ প্রস্তুত ও কেস নং ২২, ২৩, ২৫,২৬ ও ৩০ সহবতপুর, নলসন্ধ্যা,ভাটপাড়া,বাদে নলসন্ধ্যা, সানবাড়ি,পাছ এলাসিন সাকোইজোড়া, বিন্যাওরী ও সন্তোষ মৌজাসূসহে আপত্তি সমূহ সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক আপত্তি নিস্পত্তি কল্পে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট সাব- রেজিস্ট্রি অফিস হতে জমির মূল্যহার পাওয়া যায়নি চাষাভাদ্রা, সাটিয়াগাজী, আররা কুমেদ, ভাদ্রা, টেংরীপাড়া মৌজার। সড়ক বিভাগ টাঙ্গাইলের এলাইমেন্ট নকশা জটিলতায় আটকে আছে দুয়াজানি,বাড়াপুষা, কাঠুরি,বাবনাপাড়া, ঘিওরকোল ও ডাঙ্গা মৌজার ভূমি অধিগ্রহণ । কেস নং ১৫ ও ২৪ মৌজা চাষাভাদ্রা,সাটিয়াগাজী, লক্ষিকোট ও আগ এলাসিন মৌজায় বন বিভাগ কর্তৃক গাছপালার মূল্য নির্ধারনের কার্যক্রমে ধীরগতিতে ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে। কেস নং ১৬, ১৭ ও ১৯ আররা কুমেদ,ভাদ্রা, ভাদ্রা বিকন,টেংরীপাড়া,ধুবড়িয়া,মাইঝাল,অলোয়াতারিনী,বান্ধাবাড়ি ও ভুড়ভুড়িয়া মৌজা সূমহে প্রাক্কলন প্রস্তুতি ও প্রেরণের কার্যক্রম চলমান আছে। তবে সম্প্রতি সড়ক বিভাগ টাঙ্গাইল অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সওজ ঢাকা জোন বরাবর প্রকল্পের ব্যায় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ আগামী দুই বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রেরণ করেছে। এর ফলে আগামী দুই বছরের মধ্যে আঞ্চলিক এ মহাসড়কের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হতে পারে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারন করা হয় ১৬৩৫ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে টাঙ্গাইল অংশে ১১৩৫ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারন করা হয়েছে।এতে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিয়েনকো, হাসান টেকনো,মীর ব্রাদার্স ও এনডিই প্রকল্প কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করে। এ আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা যাত্রী জাহানারা আক্তার বলেন, প্রায় ৫ বছর ধরে আমরা এ পথে বিভিন্ন কাজে জেলা শহরে যাতায়াত করি। আমাদের ভোগান্তির শেষ নাই। সুস্থ মানুষ এ পথে গাড়ির ঝাকুনিতে অসুস্থ হয়ে যায়। খানাখন্দভরা এ পথে সময়ের অনেক অপচয় হয়। খুব বিপদে না পড়লে আমরা টাঙ্গাইল শহরে যাতায়াত করি না। দ্রুত রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করার অনুরোধ করছি। নাগরপুর থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী ট্রাক চালক শহীদ মিয়া বলেন, এ রাস্তায় চললে গাড়ির হায়াত কমে। বড় বড় গর্তে ভরা এ সড়ক। এতে দূর্ঘটনা যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে গাড়ির মেইনটেইন খরচও। দ্রুত এ রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করার জোর দাবি জানাই। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিই এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ আবু তালিব ফাহমিদুর রহমান জানান, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় শুধু সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ হয়নি বরং আমাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিকের মজুরি, যানবাহনের মেরামত ও ভাড়াসহ বিভিন্ন ভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখনো পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারলে ক্ষতি কিছুটা লাঘব হয়। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান,ডিসি স্যারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দ্রুত সময়ে সকল জটিলতা কাটিয়ে উঠে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে টাকা প্রদান করা সম্ভব হবে। টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. সিনথিয়া আজমিরী খান জানান ,দেশের পট পরিবর্তন, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা সহ বিভিন্ন কারনে এ আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ কিছুটা স্থবির এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে। এতদ কারনে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে কাজের মেয়াদ আরো দুই বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করছি, এ সময়ে মধ্যে সকল সমস্যার সমাধান করে আমরা অত্র এলাকাবাসীকে চলাচল উপযোগী ও নিরাপদ একটি আঞ্চলিক মহাসড়ক উপহার দিতে পারবো।
চীন থেকে মাও জেদংয়ের উপহার পাওয়া ট্রাক্টর, টাইপরাইটারসহ মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে টাঙ্গাইলের সন্তোষে। অনেক সরঞ্জাম আবার নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। এই সরঞ্জামগুলো ভালোভাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ, পরিবারের সদস্য, ভক্ত ও অনুসারীরা। সরেজমিন দেখা যায়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিম পাশে একটি টিনশেডে রয়েছে ট্রাক্টর ও টাইপরাইটারটি। টিনশেডের চারপাশে স্বচ্ছ কাচ। ট্রাক্টর ও টাইপরাইটার মেশিনটিতে জমেছে ধুলার আস্তরণ। মওলানা ভাসানী ও চীনের কমিউনিস্ট বিপ্লবের নেতা মাও জেদংয়ের স্মৃতিবিজড়িত এই ট্রাক্টরের সামনের একটি চাকা নেই। এটি উচ্চতায় ৬ ফুট, লম্বায় ১০ ফুট। জানা যায়, মওলানা ভাসানী ১৯৬৩ সালে প্রথম এবং ১৯৬৪ সালে দ্বিতীয়বার চীন সফর করেন। ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ‘মাও সে-তুঙ এর দেশে’ নামে একটি বইও লেখেন। ১৯৬৬ সালে মওলানা ভাসানী তৃতীয় ও শেষবার চীন সফর করেন। সে সময় চীনের নেতা মাও জেদং তাকে একটি ট্রাক্টর উপহার দেন। ১৯৬৭ সালে চীন থেকে ট্রাক্টরটি এ দেশে পাঠানো হয়। সমবায় পদ্ধতির কৃষিকাজে ট্রাক্টরটির সাহায্যে একসঙ্গে ৫০ একর জমি চাষ করা যেত। সে সময় মওলানা ভাসানীর কৃষিকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড চলমান ছিল জয়পুরহাটের পাঁচবিবির মহীপুর এলাকায়। সেখানে ট্রাক্টরটি কিছুদিন কাজে লাগানো হয়। এরপর ১৯৭৪ সালে ট্রাক্টরটি টাঙ্গাইলের সন্তোষে নিয়ে আসা হয়। পরে মওলানা ভাসানী ট্রাক্টরটি বসিয়ে না রেখে কাজ করার জন্য বিএডিসিকে দিয়ে দেন। বিএডিসি সেটি জামালপুরে কিছুদিন কাজে লাগায়। জামালপুরে ট্রাক্টরটি একপর্যায়ে অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকার পর বিক্রির কথা ওঠে। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ড ট্রাক্টরটি ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনে। বর্তমানে ট্রাক্টরটি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান সাজু বলেন, মওলানা ভাসানী দলমত নির্বিশেষে আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ; তিনি আছেন আদর্শ, স্মৃতি, ইতিহাস ও কবির কবিতায়। তিনি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ ও জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। এই বঙ্গীয় ‘ব’-দ্বীপে এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়েও যে বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা যায় মওলানা ভাসানী তার জ্বলন্ত উদাহরণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তার রেখে যাওয়া স্মৃতিচিহ্ন ও প্রতিষ্ঠানগুলো আজ ধ্বংসের পথে। মজলুম জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর ‘হক কথা’ পত্রিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘শান্তি প্রেস’র ব্যবহার্য সরঞ্জামগুলো আজ অবহেলায় অযত্নে পড়ে আছে; এই স্মৃতি সংরক্ষণে সরকার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কারও দায় নেই। মওলানা ভাসানী জাদুঘরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে তার স্মৃতি সংরক্ষণ করা এখন সময়ের দাবি। ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী সমাপ্তি খান বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন কৃষক ও মেহনতি মানুষের নেতা। তার সংগ্রামী জীবন, চীন থেকে উপহার পাওয়া ট্রাক্টরসহ নানা স্মৃতি আজ আমাদের ইতিহাসের অমূল্য সম্পদ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এসব জিনিসপত্র অনেক জায়গায় অযত্ন ও অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভাসানীর ব্যবহৃত জিনিস, যেমন-ট্রাক্টর, পোশাক, দলিল, বই ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য একটি স্থায়ী ‘ভাসানী জাদুঘর’ করা উচিত। সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাজেট ও তদারকি টিম গঠন করা দরকার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তার জীবন ও আদর্শ পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তার ভাষণ, চিঠিপত্র ও আলোকচিত্র ডিজিটাল আকারে সংরক্ষণ করে অনলাইনে উন্মুক্ত করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সহজে জানতে পারবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নিয়মিত মেরামত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করতে হবে। মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক চেতনা তরুণদের মাঝে উজ্জীবিত করতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনয়নের চরপৌলী হাটে ধানের শীষে ভোট চেয়ে জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের অব্যাহত রেখেছেন টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা। আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের হাট-বাজার, পথচারী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে ধানের শীষে মনোনয়ন প্রত্যাশী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র পক্ষে ভোট চেয়ে এবং ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মনিরুল হক (ভিপি মুনীর) এর নেতৃত্বে এই লিফলেট বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন, সদর থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ, বিদ্যুৎ শ্রমিকদল নেতা সোহেল, ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আল আমিন বাবু, ইউনিয়ন শ্রমিক দল নেতা সোলাইমানসহ জেলা ও উপজেলা শ্রমিক দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নেতাকর্মী বৃন্দ ভোটার এলাকা বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় ও পথসভা করেন এবং আগামীতে টাঙ্গাইল কে একটি সুন্দর নগরি উপহার দেওয়ার আশ্বাস অভিব্যক্ত করেন।
দুর্গাপুর প্রেসক্লাবকে কম্পিউটার সেট উপহার দিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নেত্রকোণার দুর্গাপুর প্রেসক্লাবকে কম্পিউটার সেট উপহার প্রদান করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। বুধবার (৮ অক্টোবর) ব্যারিস্টার কায়সার কামালের পক্ষ থেকে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের কাছে কম্পিউটার সেট হস্তান্তর করেন শিবগঞ্জ-দুর্গাপুর সেতু কমিটির সদস্যগণ। উপহার প্রদান অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে প্রেসক্লাব সভাপতি তোবারক হোসেন খোকন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন - সেতু কমিটির সদস্য পঙ্কজ মারাক, প্রভাত সাহা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ জিন্নাহ, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন মাস্টার, কুল্লাগড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম। দুর্গাপুর প্রেসক্লাবকে কম্পিউটার সেট উপহার দেয়ায় ব্যারিস্টার কায়সার কামালের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিক ও সদস্যগণ।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।