দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর ফেসবুক লাইভে এসে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর–বাসাইল) আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আহমেদ আযম খানকেও দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন সখীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে প্রায় এক ঘণ্টা ২৫ মিনিট বক্তব্য দেন নাসির উদ্দিন। এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টাঙ্গাইল-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী আহমেদ আযম খানকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। লাইভ বক্তব্যে নাসির উদ্দিন বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হলেও তিনি কোনো চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি কিংবা জমি দখলের সঙ্গে জড়িত নন। বরং টাঙ্গাইল-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী আহমেদ আযম খান সখীপুর উপজেলার ঘেঁচুয়া মৌজায় প্রায় তিন একর জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ছাড়া সখীপুরে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগও তোলেন আযম খানের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের পক্ষে তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেন নাসির উদ্দিন। ফেসবুক লাইভে একাধিকবার তিনি আহমেদ আযম খানকে ‘জমি দখলবাজ’ হিসেবে আখ্যা দেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালকেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কারের দাবি জানান নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে (টুকু) মনোনয়ন দেওয়ার পর ফরহাদ ইকবাল প্রকাশ্যে ওই মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে বলে দাবি করে ফরহাদ ইকবালের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস আগে সখীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ স্থগিত করে জেলা বিএনপি। সর্বশেষ গতকাল শনিবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নাসির উদ্দিনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। দুপুরে বহিষ্কারের চিঠি পাওয়ার পরই তিনি রাতেই ফেসবুক লাইভে আসেন। নাসির উদ্দিন সখীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আহমেদ আযম খান তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সাড়ে পাঁচ মাস আগে সখীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ স্থগিত করেছিল জেলা বিএনপি। এরপর সাধারণ সম্পাদক মীর আবুল হাশেম দলের সঙ্গে থেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে কিন্তু দল বহিষ্কার করেনি। অথচ সভাপতি নাসির উদ্দিন গত সাড়ে পাঁচ মাস ধরে দলের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। জেলা কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করেছে।” তিনি আরও বলেন, “এ আসনে যখন ধানের শীষের বিজয় প্রায় নিশ্চিত, তখন একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তবে এসব ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও সখীপুরে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।”
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে শহীদ মিনার চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে দমন করার একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী মত দমন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপচেষ্টা বন্ধের আহ্বান জানান নেতারা। জেলা এনসিপি’র আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান শাওনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের এনসিপি মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা এনসিপি’র সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান রাসেল। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের উপর হামলা করে জনগণের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। জাতীয় নাগরিক পার্টি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করে নেবে।” এছাড়াও বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা যুব শক্তির আহ্বায়ক মীর সায়মন ইসলাম ও টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র শক্তির আহ্বায়ক আবু আহমেদ শেরশাহ। তারা বলেন, তরুণ সমাজ আর কোনো সন্ত্রাসী রাজনীতি মেনে নেবে না এবং হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব মাহাথির খান ভাসানী। এসময় জেলা এনসিপি, যুবশক্তি ও ছাত্র শক্তির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে একটি চক্র প্রতিবেশী দেশ ভারতে বসে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে দেশবাসীকে সর্বোচ্চ সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, যারা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার কায়েম করতে চায়—তারাই এসব ষড়যন্ত্রের মূল হোতা।’ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আরও বলেন, ‘যারা অতীতে এ দেশের নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, তারাই আজ নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গণতন্ত্র ধ্বংস করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার অপচেষ্টা চলছে। এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি দাবি করেন, ‘এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব একমাত্র বিএনপির হাতেই নিরাপদ। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করাই বিএনপির প্রধান লক্ষ্য।’ সমাবেশে জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল হক শাহীন, শফিকুর রহমান লিটন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ পাহেলী এবং জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম। বক্তারা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় আন্দোলন আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
(সাজিদ পিয়াল):শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে টাঙ্গাইলে গভীর শ্রদ্ধা বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর ও গৌরবময় দিন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করতে আজ শনিবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সকালে টাঙ্গাইল বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, টাঙ্গাইল জনাব শরীফা হক। এ সময় শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করা হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা পরিকল্পিতভাবে জাতির শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। এটি ছিল স্বাধীনতার প্রাক্কালে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার একটি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন জাতির বিবেক তাঁদের চিন্তা-চেতনা ও আদর্শ আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রেরণা। তিনি আরও বলেন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আমাদেরকে সত্য ন্যায় ও মানবিকতার পথে চলার শিক্ষা দেয়। নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ছড়িয়ে দেওয়া এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শে দেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।আলোচনা সভায় সম্মানিত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ তাঁদের স্মৃতিচারণায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান তুলে ধরেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ শিক্ষাবিদ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আলোচনায় অংশ নেন।এছাড়াও অনুষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত থেকে কর্মসূচির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই একটি শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। গভীর শ্রদ্ধা ভাবগাম্ভীর্য ও শোকের আবহে টাঙ্গাইলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের শঙ্কা তৈরি করা হচ্ছে মন্তব্য করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “এসব শঙ্কা দূর করে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এই পরিবেশ কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না।” শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরে শ্রমিক, কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষ ও নিপীড়িত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত ‘মাথাল মার্কার মিছিল’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কার এখন অঙ্গাঅঙ্গিভাবে যুক্ত। সংস্কার করতে হলে ‘ভোট ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের’ নির্বাচন প্রয়োজন। এ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া ছাড়া গণতন্ত্রের সঠিক অগ্রযাত্রার বিকল্প নেই। এই নির্বাচন যাতে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা ষড়যন্ত্রের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।” নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট রাজনীতির ধারকরা বিভিন্নভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। কিছু গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে চাইছে। এসব অপচেষ্টা রুখে দিতে জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।” এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশন, সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে নির্বাচনসহ সার্বিক পরিস্থিতি দেখভালের জন্য একটি ‘পরিবেশ কমিটি’ গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। মিছিলে সদর আসনের প্রার্থী গণসংহতি আন্দোলনের সংগঠক ফাতেমা রহমান বীথি, সংগঠক তুষার আহমেদ, সদর উপজেলার সদস্য সচিব ফারজানা জেসমিনসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা জীবিকার ন্যায্য হিস্যা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, এবং সংসদীয় সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করেন।
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর‑বাসাইল) আসনে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান–এর সঙ্গে বিরোধের ফলে সখীপুর উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা পদত্যাগ করেছেন। অমর সংবাদ অনুসারে, একযোগে ১১ জন উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারা পদত্যাগ করেছেন। আরও আশঙ্কা করা হচ্ছে যে দুইশোরও বেশি পদাধিকাৰী নেতা পদত্যাগ করবেন। পদত্যাগকারীরা অভিযোগ করেছেন যে আযম খান তার ভোট শক্তি বাড়ানোর আশায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছেন এবং তাদের গুরুত্ব দিচ্ছেন দলীয় কার্যক্রমে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের অবমূল্যায়ন, নেতাকর্মীদের অবমাননা ইত্যাদি অভিযোগ উঠেছে। পদত্যাগকারীদের বক্তব্যে, আযম খানের আচরণ দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং তাদের অবস্থা “বহু ত্যাগী নেতার অবমূল্যায়ন”।একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে আযম খান allegedly একটি মুক্তিযোদ্ধাকে গালাগাল ও হুমকি দিচ্ছেন বলে দাবি করা হয়েছে। আযম খান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলছেন অডিও “এডিট করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে” ভাইরাল করা হয়েছে।এর আগে আযম খান বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগও উঠেছিল, যা কিছু নেতারা ষড়যন্ত্র বলছেন। এছাড়া, টাঙ্গাইলে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভও হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই পদত্যাগের ঘটনা শুধু কিছু সাংগঠনিক অসন্তুষ্টি নয়, বরং এটি একটি গভীর রাজনৈতিক বিভাজনকে ইঙ্গিত দিচ্ছে — বিশেষ করে স্থানীয় নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় নেতা (আযম খান)–এর মধ্যে।যেহেতু পদত্যাগকারীরা “আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন”–এর অভিযোগ তুলছেন, এটি নির্বাচনী কৌশল হিসেবে সম্ভাব্য বিরোধ সৃষ্টি করতে পারেঅডিও ফাঁস এবং ব্যক্তিগত বিরোধ আরও একটি মাত্রা যোগ করছে — এটি শুধু রাজনৈতিক না, ব্যক্তির প্রতি আস্থাহীনতার ইস্যু তোলে।দুইশোর পর্যন্ত নেতার পদত্যাগের সম্ভাবনা যদি সত্য হয়, তাহলে টাঙ্গাইল-৮ এলাকায় বিএনপির একক তার শক্তি হুমকির মুখে পড়তে পারে।এই সংকট যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে বিএনপির আসন‑প্রার্থিতা দুর্বল হতে পারে কারণ দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য কমে যাবে।আযম খান প্রশাসন বা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেতে পারেন — হয় ব্যাখ্যা দিতে হবে, হয় পদত্যাগ বা মনোনয়ন বাতিলের দাবি উঠতে পারে।সাধারণ দলের কর্মীদের মধ্যে আস্থা ব্যাহত হলে, নির্বাচন‑প্রচারণায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।এ পরিস্থিতি মিডিয়া ও ভোটারদের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন ইমেজ তৈরি করতে পারে, বিশেষত যদি পদত্যাগ ও অভিযোগগুলো বড় আকার নিতে থাকে।সখিপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এড. আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে আ.লীগ পূর্ণবাসনের অভিযোগ এনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ মাষ্টার, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আঃ মান্নান, গজারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রউফ এবং বহুরিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লতিফ মিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ২৭০ জন নেতাকর্মী দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
দলীয় কোন্দল, কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এবং সাময়িক অব্যাহতির পর শেষ পর্যন্ত দলীয় সর্বপ্রকার পদ-পদবী থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান ভূঞা (শাজাহান সাজু)। ২৫ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে তিনি পদত্যাগপত্রটি নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করে বিষয়টি জনসমক্ষে আনেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এই পদত্যাগ এসেছে সামনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের ভেতরে তীব্র অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে। সাজুর প্রধান অভিযোগ—বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অশালীন ও আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এটি তিনি নিজের মর্যাদার প্রতি অবমাননাকর বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া তার অভিযোগ, অ্যাডভোকেট আজম খান সখীপুরে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বিএনপিতে পুনর্বাসন করে একটি পৃথক বলয় গড়ে তুলছেন। ফেসবুকে প্রকাশিত পদত্যাগপত্রে শাজাহান সাজু লেখেন—সখিপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট আহমেদ আজম খানের আওয়ামী পুনর্বাসন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অশালীন ভাষায় কথা বলার প্রতিবাদ স্বরূপ, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সাজু দলীয় সর্বপ্রকার পদ-পদবী থেকে পদত্যাগ করিলাম।” স্বাক্ষরিত চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন যে ২৫ নভেম্বর ২০২৫ থেকে তিনি দলের সকল পদ-পদবী থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াচ্ছেন। দীর্ঘদিন সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেও সাম্প্রতিক সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা, ষড়যন্ত্র ও অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের কারণে দায়িত্ব পালন করা তার পক্ষে আর সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন। এর আগে কিছুদিন আগেই তাকে সখীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়—মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাময়িক অব্যাহতির পর থেকেই সাজু ক্ষুব্ধ ছিলেন। অবশেষে কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ এনে ফেসবুকে পদত্যাগপত্র প্রকাশ করায়, সামনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে সখীপুর বিএনপির রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা, বিভাজন ও নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তাঁর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক খালেক মণ্ডলকে মারধর করার হুমকি এবং আপত্তিকর ভাষায় কথা বলার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিএনপি নেতা আহমেদ আযম খান ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ওই অডিও এডিট করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মণ্ডলের বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায়। তিনি ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মণ্ডল জানান, গত বুধবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে আহমেদ আযম খান তাঁকে ফোন করেন। তাঁদের কথোপকথন হয় ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। সেই কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মাধ্যম ছড়িয়ে পড়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মণ্ডল বলেন, আহমেদ আযম খান আমাকে ফোন করে গালাগাল করেছেন। পিঠের চামড়া থাকবে না বলে হুমকি দিয়েছেন। তিনি আমার সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছেন, তার হুবহু রেকর্ডের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই অডিওতে বিএনপির মনোনিত এমপি প্রার্থী আহমেদ আযম খান বলেন, আপনি আমার নির্বাচনী এলাকায় কমিটি করবেন, আর আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না? আপনার বাড়ি কোথায়? আপনার সিএস আরএস কী। আপনি আমার নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত করবেন, এটা করতে দেওয়া হবে না। খামোশ। আপনার পিঠের চামড়া থাকবে না। কীভাবে আপনি বাসাইল আসেন, দেখব। ফাজিলের বাচ্চা। তিনি আরও বলেন, আপনি কি একা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? আর কেউ করে নাই? ফাইজলামি পাইছেন। মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট পকেটে নিয়ে আইসেন। মুক্তিযোদ্ধার সভাপতি হয়ে দুর্নীতি করছেন। টাকার লোভে পাইছে। টাকার লোভ আপনাকে খাইয়ে দেব, আপনার পিঠের চামড়া থাকবে না, একেবারে খাইয়ে দেব। ফাজিলের বাচ্চা, তোর সাথে আবার কিসের শ্লালিনতা রে, আমি তোকে দেখব। হুমকি দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আহমেদ আযম খান বলেন, আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি, তবে কোনো হুমকি দিইনি। অডিওতে এআই ব্যবহার করে অন্য রকম করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে উপর্যুপরি চক্রান্ত করছে। আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে অডিওটি ভাইরাল করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সখীপুর-বাসাইল আমার নির্বাচনী এলাকা। খালেক মণ্ডল আমার সঙ্গে কথা না বলে তাঁর ব্যক্তিগত লোকজনকে দিয়ে ইউনিয়ন কমিটি দিয়েছেন। তাঁরা আমার নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত ও আমার ইমেজ নষ্ট করতে অডিও এডিট করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমি অপেক্ষা করছি। আমি তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মণ্ডল বলেন, ওই অডিও স্পষ্ট। এখানে কোনো এআই ব্যবহার করা হয়নি। তিনি টাঙ্গাইল সদর থানায় অনলাইনে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড থেকে তাঁকে মামলা করতে বলা হয়েছে। তিনি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর তাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের বিষয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত স্পষ্টভাবে বলেছেন, ভারত কোনো পরিস্থিতিতেই শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না। দত্ত আল-জাজিরাকে বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে হস্তান্তর করবে না। গত দেড় বছরে ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক মোটেও ভালো ছিল না, বেশ কয়েকবার টানাপড়েনও দেখা গেছে।” আল-জাজিরাকে দত্ত জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কঠোর রায় আসা খুবই প্রত্যাশিত ছিল। তার ভাষায়, “দেশের পরিস্থিতি দেখে সবাইই অনুমান করেছিল তার বিরুদ্ধে কঠোর বিচার আসছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বলছে, ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বাংলাদেশের আইনি কাঠামো অনুযায়ী হয়েছে।” দত্ত দাবি করেন, নিরস্ত্র ছাত্রদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং গুলি করার নির্দেশ নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর অপরাধ হয়েছে—এ বিষয়ে কারও সন্দেহ নেই। এমনকি প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন—এ ধরনের প্রমাণও রয়েছে।” অধ্যাপক দত্তের মতে, আওয়ামী লীগ এখন পাল্টা বিবরণ তৈরির চেষ্টা করবে। তবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বড় অংশ বিশ্বাস করে, শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।” জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, উস্কানি, ষড়যন্ত্র ও নির্দেশ—এই অভিযোগগুলোকে ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। রায়ের পর থেকেই ভারত তাকে বাংলাদেশে ফেরত দেবে কি না, সেই প্রশ্ন জোরালো হয়ে ওঠে। আল-জাজিরার সাক্ষাৎকারে শ্রীরাধা দত্তের মন্তব্যে সেই বিতর্কে আরও স্পষ্টতা আসে।
উচ্চ আদালতের জামিনে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী রোববার (১৬ নভেম্বর) ঢাকার শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। ৮৬ বছর বয়সী লতিফ সিদ্দিকী এদিন ছোটভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকীকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজির হন। তার আইনজীবী রেজাউল করিম হিরণ আদালতে আবেদন করে বলেন, ‘বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে হাজিরা আইনজীবীর মাধ্যমে দেওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করছি।’ আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। ফলে লতিফ সিদ্দিকীকে আর সশরীরে হাজিরা দিতে হবে না। হাজিরা শেষে ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। মামলাটি ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান বিষয়ক এক আলোচনা সভায় ‘মব’ হামলার ঘটনায় দায়ের হয়। ওই দিন লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাসহ ১৬ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। পরদিন শাহবাগ থানায় তাদের বিরুদ্ধে ‘দেশকে অস্থিতিশীল করা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। প্রসঙ্গত, ৬ নভেম্বর হাই কোর্ট লতিফ সিদ্দিকী ও মঞ্জুরুল পান্নাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয়। এরপর জামিনের নথি পৌঁছানোর পর ১২ নভেম্বর কেরাণীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। মামলায় আরও গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম ও আবু আলম শহীদ খান। অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, মঞ্জুরুল আলম, কাজী এ টি এম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খান, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
মোস্তফা মাসুদ: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের থালনা দক্ষিণপাড়ায় এক অসহায় পরিবারের ওপর চরম হয়রানি ও নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয় এক চিটার ও মামলাবাজ চক্রের নেতৃত্বে চলছে এই অমানবিক নির্যাতন। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন কুখ্যাত প্রতারক কার্তিক চন্দ্র সরকার—যিনি তার সহযোগীদের নিয়ে নিরীহ ও গরিব গাজী পরিবারকে বারবার মিথ্যা মামলা ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে বিপর্যস্ত করে তুলেছেন। থালনা দক্ষিণপাড়ার ইউসুফপুর গ্রামের আলী বাক্স গাজীর দুই ছেলে আকিম গাজী (৩৬) ও তকিম গাজী (৩৮) বহু বছর ধরে সরকারি পজিশন জমিতে একটি ছোট টিনের ঘর ও সিমেন্ট পাইপের ছাউনি দেওয়া ছাপড়া ঘরে বসবাস করে আসছেন। এই জায়গায় বসবাসের জন্য তারা এক সময় স্থানীয়দের পরামর্শে টাকা দিয়ে বসবাসের অনুমতি পান। কিন্তু পরবর্তীতে কার্তিক চন্দ্র সরকার পুনরায় অর্থ দাবি করলে গাজী পরিবার তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। সেই থেকেই শুরু হয় একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ, মামলা ও ষড়যন্ত্র। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,“থালনা দক্ষিণপাড়া সর্বজনীন শ্মশান ঘাট ও শ্রীশ্রী তারকনাথ বাবার ধাম কমিটি”র নাম ব্যবহার করে কার্তিক চক্র বিভিন্ন সময় এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি প্রশাসনের কাছে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে পরিবারকে অবৈধ দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করারও চেষ্টা চালায়। সরজমিনে গেলে দেখা যায়, উচ্ছেদ হওয়া জায়গায় এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। ভাঙা টিনের টুকরো, সিমেন্ট পাইপের ভাঙা অংশ আর কান্নায় ভেজা এক পরিবার—এই যেন প্রতারণার এক বাস্তব চিত্র।পরিবারের সদস্যরা বলেন, “আমরা কারও জায়গা দখল করিনি, বৈধভাবে এখানে ছিলাম। হঠাৎ একদিন উচ্ছেদের নামে আমাদের মাথার ওপরের ছাউনিটা পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হলো। এখন আমরা পথে বসে আছি।স্থানীয় বাসিন্দা মো. মনি, আজিজুর রহমান, জয়ন্ত কুমার ও নজরুল ইসলাম জানান “এই পরিবার শান্তিপ্রিয় ও পরিশ্রমী মানুষ। চিটার কার্তিক চন্দ্র সরকার ও তার দলবল টাকার লোভে পড়ে এই পরিবারটিকে উচ্ছেদ করিয়েছে। প্রশাসন যেন প্রকৃত সত্য যাচাই করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। অভিযোগ রয়েছে, গত ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে গাজী পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু অভিযুক্তদের প্রভাব ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের কারণে প্রকৃত সত্য যাচাই ছাড়াই অভিযানটি পরিচালিত হয়।স্থানীয়রা দাবি করেন,“চিটার কার্তিক চন্দ্র সরকার ও তার মামলাবাজ চক্রকে আইনের আওতায় আনা না হলে, তারা আরও নিরীহ পরিবারকে একইভাবে সর্বস্বান্ত করবে। এলাকাবাসী প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে তদন্ত ও অবিলম্বে চিটার কার্তিক চন্দ্র সরকারসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন,ন্যায়বিচার পেলে শুধু একটি পরিবারই নয়, পুরো এলাকা প্রতারক ও মামলাবাজদের হাত থেকে মুক্তি পাবে।এ বিষয়ে অসহায় দিনমজুর আকিম গাজী ও তকিম গাজী তারা বলেন" চাম্পাফুল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ ও ইউপি সদস্য আবুল কালাম সহ একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি জানেন এই চিটার কার্তিক চন্দ্র আমার কাছে এই পজিশনের সরকারি জায়গাটি বিক্রি করে টাকা নিয়ে তারপরে আবারো টাকার দাবি করেন। আমি দিতে অস্বীকার করাই ,আমার নামে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিতে থাকেন বিষয়টি স্থানীয় এলাকাবাসী ও জানেন। এ বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মোস্তফা মাসুদ: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের চিংড়িখালিতে মিথ্যা মামলা দায়ের, ভুমিহীন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও অপ-প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ভূমিহীন জনপদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শতশত ভুমিহীন নারী পুরুষের অংশগ্রহনে এ মানববন্ধনে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে আতঙ্ক সৃষ্টি, সন্ত্রাস, মাদক বিস্তারসহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্বে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী মামলাবাজ সাইদুল ও সাত্তারের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার নলতা ইউনিয়নের চিংড়িখালিতে ভূমিহীন নেতা শহিদুল ইসলাম, মধু সরদারসহ তাদের একান্ত সহযোগীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, নানান ষড়যন্ত্র ও অপ-প্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১লা নভেম্বর) বিকেলে চিংড়িখালি বৈরাগীর চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বসুখালী বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ লাইনে মানববন্ধনে অংশ নেন চিংড়িখালি ভূমিহীন জনপদের প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। মানববন্ধনে উপস্থিত জনতা একক কণ্ঠে সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভূমিহীন জনপদের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ভুমিহীন জনপদের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম গাজী, সহ- সভাপতি আব্দুল হালিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বুল্লা, উপদেষ্টা আবুল হোসেন গাজী, সদস্য মধু সরদার, কুতুব মোড়ল, শওকত হাজী, গোলাপ ঢালী, মজিবার, রফিকুল ইসলাম, আরিজুল সরদার, ভুমিহীন নেত্রী নুরবানু, জাহানারা, শামসুন্নাহার ও মমতাজ প্রমুখ। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আশাশুনি উপজেলার বসুখালী গ্রামের মৃত আব্দুল হক গাজীর ছেলে মাদক সম্রাট ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাইদুল ইসলাম গাজী (৪৭) এবং নলতা ইউনিয়নের কাজলা কাশিবাটি গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মাদকসেবী শেখ সাত্তার (৪৫) দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। এরা ভূমিহীন ও অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে ভয় সৃষ্টি করে, চাঁদা দাবি করার পাশাপাশি নলতার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানসহ অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়ানো, মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনসহ এলাকায় দুঃশাসন কায়েম করে অশান্ত করার পায়তারা করে আসছে। বক্তারা আরও বলেন, বিগত সরকারের সময়ে এদের বিরুদ্ধে মাদক, নারী কেলেঙ্কারি ও চাঁদাবাজিসহ নানাবিধ অভিযোগ থাকলেও প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়ে থেকেছে। এরা আজও রয়েছে বহালতবিয়তে ও বেপরোয়া হয়ে। তারা বৈরাগীর চক, চিংড়িখালি, বসুখালী, সন্ন্যাসীর চক ও ঝায়ামারিসহ আশপাশের এলাকায় তাদের সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। ভূমিহীন জনপদের নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন,“অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে আতঙ্ক সৃষ্টি করা সন্ত্রাসীদের আর ছাড় দেয়া হবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজি ও মাদকের বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ব। ”বক্তারা অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মাদক-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। একই সাথে তিন শতাধিক ভুমিহীনের শেষ সম্বল যায়গাটুকু ফেরত পেতে সরকার বাহাদুরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা। এছাড়াও চিংড়িখালির শান্তি স্থাপন ও ভূমিহীনদের ন্যায়সঙ্গত দাবিতে জনতার এই জাগরণ এখন পুরো কালিগঞ্জের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টাবৃন্দ দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির পূজামণ্ডপে উপস্থিত হয়ে পূজা উপভোগ করেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস শেষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, শহিদ দানবীর আরপি সাহা নিজের জন্য নয়, এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় বরাবরের মতো ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। যা ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। এ বছর পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ছাড়াও বিমান বাহিনী ড্রোন দিয়ে কাজ করবে। তিনি বলেন, ইলিশ মাছ কম আহরণের মূল কারণ কারেন্ট জাল ও চায়না জালের অবাধ ব্যবহার। ফলে এ বছর বেশি সর্তকতা অবলম্বন করা হবে। গত বছর ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ মা ইলিশ রক্ষা করা গিয়েছিল। সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে কোনো জাতিসত্তার সংস্কৃতিকেই ধ্বংসের মুখে ফেলা যাবে না। সকল সংস্কৃতিকে ভালোবেসে দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা নিতে হবে আমাদের। কোনো উৎসবেই যাতে শৃঙ্খলা নষ্ট না হয়। তিনি বলেন, এদেশের সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ নেই আমরা সকল ধর্মের মানুষ এক ও অভিন্ন কিন্তু একটি গোষ্ঠী মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে এদেশে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বিত উদ্যোগে সারাদেশে সন্তোষজনক পূজার পরিবেশ সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি পূজামন্ডপে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮৭৭ জন কর্মীবাহিনী সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গাপূজায় দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত আছে। উপদেষ্টাবৃন্দ কুমুদিনী মিলনায়তনে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী উপভোগ করেন এবং কুমুদিনী হাসপাতাল, কুমুদিনী নার্সিং স্কুল ও কলেজ, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ, মেডিক্যাল টেকনোলজি ইনস্টিটিউট এবং ভারতেশ্বরী হোমসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। সন্ধ্যায় মির্জাপুর গ্রামে লৌহজং নদী পার হয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির পূজামণ্ডপ প্রাঙ্গণে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন অতিথিরা। এতে কুমুদিনী উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. রুদিগার লটজ দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক সুইস দূতাবাসের ডিপুটি হেড অব মিশন দিপক ইলমার , টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক এবং পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
টাঙ্গাইল জেলায় আসন্ন ২০২৬ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর ৫ আসন জুলাই সনদ এবং নানাবিধ কার্যকলাপ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে জেলা জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (২৭ অক্টোবর ২০২৬ ইং) তারিখে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশ করে তারা। দাবিগুলো হলো, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনে PR পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। সমাবেশে টাঙ্গাইল জেলা আমির আহসান হাবীব মাসুদের সভাপতিত্ব করেন। টাঙ্গাইল জেলার জামায়াতী ইসলামে সদর ৫ আসনের প্রার্থী আহসান হাবীব মাসুদ বলেন,দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। হাজারো ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জাতিকে সঠিক গন্তব্যে নিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। সদর উপজেলা আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন বাদলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি মাওলানা হুমায়ুন কবির, সহকারী সেক্রেটারি হোসনে মোবারক বাবুল, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান, খেলাফত মজলিসের জেলা সহসভাপতি মুফতি আব্দুর রহমান মাদানি, খেলাফত মজলিসের জেলা সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান কোরায়েশী, শহর আমির অধ্যাপক মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ। এই বিক্ষোভ সমাবেশে সবাইকে ধৈর্য এবং শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানান এবং দেশের সকল নেতাকর্মীদের সঠিকভাবে কার্যকলাপ অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানান।
টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকায় বসবাসরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে এ মানববন্ধন অনু্ষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া টাঙ্গাইলবাসীরা জানান, টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব তারা মেনে নেবেন না। টাঙ্গাইল নিয়ে টানাহেঁচড়া চলবে না। টাঙ্গাইল ৪২ লক্ষ্য মানুষের একটি বড় জেলা যেটি ময়মনসিংহ এর থেকে অধিক উন্নত ব্যবস্থা রয়েছে বক্তারা আরো বলেন,আমাদের কে বার বার এমনভাবে হয়রানি করা যাবে না আর যদি টাঙ্গাইলকে জোর পূর্বক ময়মনসিংহ বিভাগে দেওয়া হয় আমরা কঠিন প্রতিবাদ করবো এবং যদি ঢাকা বিভাগে না থাকে, তাহলে একে স্বাধীন বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি রবিন খান বলেন, ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করাকে আমি ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছি। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে টাঙ্গাইলের সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করে এই ষড়যন্ত্রমূলক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বাধ্য করবে। টাঙ্গাইল ঢাকার সঙ্গেই থাকবে, উল্টো পথে হাঁটবে না। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ বলেন, কোথাও মধু কিংবা সোনার খনি থাকলে সবাই লুফে নিতে চায়৷ টাঙ্গাইল তেমন একটি স্থান। তাই বারবার এই জেলাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়। এর আগেও একই ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, তখন ঢাকা ও টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ করে দাবি আদায় করেছিলাম। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আবারও একই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, আমরা টাঙ্গাইলবাসী এটা মেনে নেব না। আমাদের কথা- আমরা ঢাকার সঙ্গে আছি এবং থাকব। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি সুরুজ মন্ডল বলেন, টাঙ্গাইল ঐতিহ্যবাহী জেলা। ময়মনসিংহ বিভাগে টাঙ্গাইলের প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তকে আপামর জনসাধারণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি বিভাগে যা প্রয়োজন তা টাঙ্গাইলে আছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কানপুর শহরের সাইয়্যেদ নগর এলাকায় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মদিন উপলক্ষে মুসলমানরা “I ❤️ Muhammad” লেখা একটি আলোকিত সাইনবোর্ড টানান। কিন্তু এ নিরীহ ধর্মীয় ভালোবাসার প্রকাশই এখন অনেক মুসলমানের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাইনবোর্ডটি লাগানোর পরপরই স্থানীয় কয়েকজন হিন্দু যুবক আপত্তি জানিয়ে পুলিশের সহায়তায় তা খুলে ফেলে। পরে ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ নয়জন মুসলমানের বিরুদ্ধে মামলা করে, অভিযোগ করে তারা “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা” করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ২৬ সেপ্টেম্বর বেরেলি শহরে মুসলিম সংগঠন ইত্তেহাদে মিল্লাত কাউন্সিলের (IMC) পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসন অনুমতি না দিলে শুক্রবার নামাজের পর হাজারো মানুষ “I love Muhammad” লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নামে। প্রশাসনের দাবি—বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর ইট-পাথর নিক্ষেপ করেছে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও মাওলানা তৌকির রাজা খানসহ বহুজনকে গ্রেপ্তার করে। শহরের ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ রাখা হয়। মাওলানা তৌকির রাজা খান এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি দমন করা হচ্ছে। কিন্তু এই দমননীতি উল্টো প্রতিক্রিয়া ডেকে আনবে।” উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাকে “সমাজে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র” বলে উল্লেখ করেন। তার বক্তব্যের পরই অভিযুক্তদের একজনের মালিকানাধীন একটি ভবন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মুসলমানদের সম্পত্তি ধ্বংস এখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে ‘অঘোষিত শাস্তি’। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সম্প্রতি এমন ধ্বংসযজ্ঞকে বেআইনি ঘোষণা করলেও এ প্রক্রিয়া চলছে প্রকাশ্যে। সুমাইয়া রানা, বিখ্যাত কবি মুন্নাওয়ার রানা’র কন্যা, বলেন — “সরকার মুসলমানদের ভয় দেখাতে চায় যাতে তারা ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কথা না বলে।” অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব সিভিল রাইটস (APCR) জানিয়েছে, “I love Muhammad” ক্যাম্পেইন নিয়ে অন্তত ২২টি মামলা হয়েছে, যেখানে ২,৫০০ মুসলমানের নাম এসেছে এবং শুধু বেরেলিতেই ৮৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। APCR সচিব নাদিম খান বলেন, “নবীপ্রেমকে অপরাধ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এতে মুসলিম সমাজ মারাত্মক অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির মুখে পড়ছে।” অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সদস্য সিকিউআর ইলিয়াসি বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে নবীপ্রেম প্রকাশ করা মুসলমানদের অধিকার। এটি কোনো অপরাধ নয়।” বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি অভিযোগ করেছে, সরকার গণতন্ত্রের নামে দমননীতি চালাচ্ছে। দলটির নেতা মাতাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “সরকার গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু আচরণে তা একনায়কতন্ত্র।” আইনজীবী জিয়া জিল্লানি জানান, “অধিকাংশ অভিযুক্ত দরিদ্র দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। তাদের পক্ষে এমন মামলা চালানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য।” তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের ঘৃণার রাজনীতি দরিদ্র মুসলমানদের লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে, যাতে তারা সহজেই নিপীড়নের শিকার হয়।” সূত্র: আল জাজিরা |
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে এক কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আগজোয়ার নতুন বাজার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ সমাবেশে স্থানীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি যেন উৎসবে রূপ নেয়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের কর্মী থেকে শুরু করে ইউনিয়নের সর্বস্তরের বিএনপি পরিবার ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে ধানের শীষের বিজয়ের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) বেনজীর আহমেদ টিটো। আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন— "আমি ৩৫ বছর ধরে রাজনীতি করছি। এর পথে জেল, জুলুম, নির্যাতনের শিকার হয়েছি অসংখ্যবার। তবুও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে সরে যাইনি। শত শত মিছিল-মিটিং করেছি, অসংখ্য সমাবেশে অংশ নিয়েছি। কিন্তু যখন দেখি আপনারা আমার পাশে দাঁড়ান, তখন আমার বুকের ভেতর শক্তি বেড়ে যায়, কলিজা বড় হয়ে যায়। আত্মার ভেতর শান্তি অনুভব করি। আপনারা আমার সঙ্গে থাকুন, দেখবেন ধানের শীষের বিজয় নিয়েই ঘরে ফিরব।" তিনি আরও বলেন, "যে কোনো ষড়যন্ত্রকে আমরা যমুনার স্রোতে ভাসিয়ে দেব। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে আমাদের চূড়ান্ত জয়।" সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (ভিপি রফিক), সিনিয়র সহ-সভাপতি মজনু মিয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বালা ও শামীম প্রামাণিক, এলেঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ মিনু, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, পাইকড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছামাদ আজাদ, উপজেলা যুবদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা, উপজেলা বিএনপির নেতা জুলহাস উদ্দিন কাঠু ও আব্দুস ছাত্তার পলু, সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় নেতা আমিনুর তালুকদার ও আমিনুল ইসলাম লিটনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ওয়াজ করনি এবং সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আতোয়ার রহমান তালুকদার লিটন। এই কর্মী সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে। কালিহাতীর মাটি আবারও আন্দোলন-সংগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
নারীদের অধিকার রক্ষায় যেকোনো যৌক্তিক দাবিকে সর্বাত্মক সমর্থন জানানোর কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সার্জিস আলম। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, নারীর অধিকার আন্দোলনের আড়ালে যদি সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার কিংবা এলজিবিটিকিউ (LGBTQ) মত বিকৃত ও ধ্বংসাত্মক কালচারকে প্রমোট করার অপচেষ্টা চলে, তবে তা প্রতিহত করতে হবে সম্মিলিতভাবে। সার্জিস আলম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক স্টেটাসে লিখেন, "পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংস করার এই মরণব্যাধিগুলো যারা সরাসরি বা ঘুরপথে প্রমোট করতে চায়, তারা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। তাদের প্রয়োজন মানসিক চিকিৎসা, কিন্তু কোনোভাবেই এই বিষবৃক্ষকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। এটা সেই ক্যান্সার, যা ঘর থেকে শুরু করে পুরো জাতিকে ধ্বংস করতে পারে।" তিনি আরও বলেন, নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে ন্যায়বিচার ও মানবিকতার আলোকে। তবে এলজিবিটিকিউ ধরনের সংস্কৃতি সমাজে ঢুকিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। এদিকে, পতিতাবৃত্তির মতো মর্মান্তিক নির্যাতনকে 'পেশা' হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রবণতারও কড়া সমালোচনা করেন সার্জিস আলম। তিনি বলেন, "এটি কোনো পেশা নয় বরং একটি চরম মানবিক বিপর্যয়। যারা বাধ্য হয়ে অথবা প্রতারণার শিকার হয়ে এই পথে এসেছে, রাষ্ট্রের উচিত তাদেরকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা।" নারী অধিকার, সামাজিক মূল্যবোধ ও রাষ্ট্রীয় নীতির প্রশ্নে জাতীয় নাগরিক পার্টির এ বক্তব্য ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সমর্থকরা একে সত্য উচ্চারণ হিসেবে অভিহিত করলেও, সমালোচকরা বলছেন, বিষয়গুলো আরও সংবেদনশীলভাবে উপস্থাপন করা প্রয়োজন ছিল।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।