ফিলিস্তিন সংকট ঘিরে বিশ্বজুড়ে যখন মুসলিম উম্মাহ ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন, তখন জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী ফেসবুকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যাটাসে মুসলিমদের করণীয় সম্পর্কে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।

তিনি লেখেন, “গেল কয়েকদিনের ছবি এবং ভিডিও ক্লিপসগুলো দেখার পর এক অসহনীয় কষ্টে সময় পার করছি। এর মাঝেও আমাদের করণীয় নিয়ে ভাবনা প্রয়োজন, আত্মসমালোচনার প্রয়োজন।”

আজহারী বলেন, গোটা উম্মাহ আজ নানা সমস্যায় নিমজ্জিত, যার অন্যতম কারণ হলো জাতি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয় ভুলে যাওয়া। শুধু পণ্য বয়কট করলেই চলবে না, বরং বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য মুসলিমদের এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।

মুসলিম বিশ্ব রিলেটেড নিউজ

সিরিয়ায় ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিক নতুন সংবিধান কার্যকর

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৫ স্বাস্থ্যকর্মী নিহত: হৃদয়বিদারক ভিডিও প্রকাশ

হিজবুল্লাহর চার মিডিয়া কর্মকর্তার মৃত্যু: ইসরায়েলি হামলার নিন্দা

ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে ঝাওয়াইল ইউনিয়নে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল

তিনি লেখেন, “ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শুধু প্রতিক্রিয়াশীল জাতি না হয়ে আমাদের ক্রিয়াশীল জাতি হয়ে ওঠা প্রয়োজন। এর মাঝেই আমাদের মুক্তির পথ নিহিত।”
আজহারীর মতে, মুসলিমরা শুধু বয়কট করতে জানে, কিন্তু নিজেদের মানসম্মত ব্র্যান্ড বা পণ্য নেই।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, “একজন মুসলিম হিসেবে শিক্ষা, গবেষণা ও পেশাদারিত্বে নিজেকে শক্ত অবস্থানে নেওয়া মানেই গোটা উম্মাহকে শক্তিশালী করা।” তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস উল্লেখ করেন— “দুর্বল মুমিন অপেক্ষা সবল মুমিন শ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়।”

বর্তমানে মুসলিমরা নানা অনুৎপাদনশীল কাজে ব্যস্ত, যা উম্মাহর সামগ্রিক শক্তিকে দুর্বল করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। “এভাবে চলতে থাকলে বিশাল মুসলিম জনসংখ্যাও সংকটকালে কোনো কাজে আসবে না, যেমন এখন আসছে না,”— বলেন আজহারী।

রোববার দুপুরে দেওয়া স্ট্যাটাসের শেষ অংশে আজহারী আবু দাউদের ৪২৯৯ নম্বর হাদীস উল্লেখ করেন, যাতে রাসূল (সা.) বলেন—
“অনতিদূর ভবিষ্যতে সকল বিজাতি তোমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে, যেমন ভোজনকারীরা ভোজনপাত্রের উপর একত্রিত হয়।”
সাহাবিরা তখন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আমরা কি তখন সংখ্যায় কম থাকবো?” নবী (সা.) বলেছিলেন, “না, তোমরা তখন সংখ্যায় অনেক থাকবে, কিন্তু হবে তরঙ্গ তাড়িত আবর্জনার ন্যায়— শক্তিহীন ও মূল্যহীন।”

মাওলানা আজহারীর বার্তা স্পষ্ট— কেবল আবেগ নয়, প্রয়োজন বুদ্ধিবৃত্তিক প্রস্তুতি ও বাস্তব উদ্যোগ। উম্মাহকে জাগাতে হলে শিক্ষা, গবেষণা ও উৎপাদনশীলতাই হতে পারে ভবিষ্যতের হাতিয়ার।