২০২৫ সালের (বি.এম.টি) পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন

বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ অডিটোরিয়ামে হৃদয়ছোঁয়া আয়োজন, অতিথিদের অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যে মুখরিত বিদায় অনুষ্ঠান
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
একজন শিক্ষার্থীর জীবনে বিদায়ের মুহূর্ত যেমন আবেগময়, তেমনি তা নতুন জীবনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর সূচনালগ্ন। এমনই এক আবেগঘন পরিবেশে ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক (বি.এম.টি) পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অডিটোরিয়ামে।
কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজনটি পরিণত হয় এক অনন্য স্মরণীয় অনুষ্ঠানে। এতে অংশ নেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার গুণীজন। অনুষ্ঠানটি সূচনা পায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে, যা পরিবেশন করেন কলেজের এক শিক্ষার্থী।
শিক্ষাঙ্গন রিলেটেড নিউজ
এরপর একে একে শুরু হয় আলোচনা পর্ব, দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য ও দোয়া মাহফিল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ ওমর ফারুক। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন,
“তোমরা আজ এ প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিচ্ছ, কিন্তু এখানকার শিক্ষা, মূল্যবোধ ও আদর্শ তোমাদের পথ চলায় আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে। জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য চাই পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও সততা।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলহাজ্ব আব্দুর রহিম, সভাপতি—আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয়। তিনি বলেন,
“একজন শিক্ষার্থীর সুশিক্ষা শুধু তার ব্যক্তিজীবন নয়, পুরো জাতির অগ্রগতির পথকে আলোকিত করে। তোমাদের ভবিষ্যৎ যেন হয় গৌরবময়—এই কামনা করি।”
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন:
-
মোঃ মজিবুর রহমান হাওলাদার, সাবেক প্রধান শিক্ষক, আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয়। তিনি শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা বজায় রেখে লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
-
হাজি মোঃ সমুন কাজী, সদস্য, কলেজ পরিচালনা কমিটি। তাঁর ভাষ্য,
“একজন আদর্শ শিক্ষার্থী পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে সমাজ, সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধে পরিপূর্ণ থাকে।” -
সৈয়দ মোঃ জাফর, বিশিষ্ট সমাজসেবক, যিনি শিক্ষার্থীদের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মূল্যবোধ বজায় রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মোঃ শাহজাহান বাশার, যিনি বলেন,
“যেমন একজন সাংবাদিক সত্যের জন্য সংগ্রাম করে, তেমনি একজন শিক্ষার্থীকেও জীবনের সত্যিকারের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সংগ্রামী হতে হবে।”
আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাব-এডিটর এবং সানারপাড় আল হেরা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন,
“তোমাদের হাতে রয়েছে জাতির ভবিষ্যৎ। লেখাপড়ার পাশাপাশি আত্মশুদ্ধি ও চরিত্র গঠনের দিকেও মনোযোগী হও।”
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলেজের শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় সফলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন তিনি।
দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন শিক্ষক হাবীবুল্লাহ হাবিব, যিনি বিদায়ী শিক্ষার্থীদের জন্য সুস্থতা, সফলতা ও আলোকিত ভবিষ্যতের প্রার্থনা করেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক ও ফুল তুলে দেওয়া হয়। পুরো অডিটোরিয়ামজুড়ে ছিল এক আবেগঘন আবহ—যা সকলের মনে থাকবে চিরকাল।
বিদায়ী শিক্ষার্থীরা বলেন,
“এই কলেজ কেবল আমাদের শিক্ষাদান করেনি, দিয়েছে জীবনের দিকনির্দেশনা। আজ আমরা যেই স্বপ্ন বুকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছি, তা বাস্তবায়নে চাই সকলের দোয়া ও আশীর্বাদ।”
এই বিদায় অনুষ্ঠানটি শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, বরং ছিল শিক্ষা, অনুপ্রেরণা, ভালোবাসা ও ভবিষ্যতের প্রত্যয়ের এক সমন্বিত শিক্ষা-সংলাপ—যা শিক্ষার্থীদের জীবনে গেঁথে থাকবে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন