জার্মানির ফেডারেল কোর্ট অফ জাস্টিস (BGH) সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে ফেসবুকের ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের ডেটা লঙ্ঘনের শিকার ব্যবহারকারীরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী। আদালত উল্লেখ করেছে যে অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো নিজেই ক্ষতির একটি রূপ এবং এর জন্য আর্থিক ক্ষতির প্রমাণ বাধ্যতামূলক নয়।
২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ফেসবুকের "ফ্রেন্ড সার্চ" ফিচারের মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষ ব্যবহারকারীদের ডেটা সংগ্রহ করেছিল। ফোন নম্বর অনুমানের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা হয়, যা ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তাকে মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করে। এই ঘটনার শিকার জার্মানির হাজার হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী মেটার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
BGH-এর রায় অনুযায়ী, আর্থিক ক্ষতির সরাসরি প্রমাণ ছাড়াই ক্ষতিপূরণের জন্য প্রায় ১০০ ইউরো যুক্তিযুক্ত বলে বিবেচিত হতে পারে। তবে কোলনের নিম্ন আদালতকে ফেসবুকের শর্তাবলী পুনর্বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে যে, শর্তগুলো ব্যবহারকারীদের কাছে স্বচ্ছ ও বোধগম্য ছিল কিনা এবং তারা তাদের ডেটা ব্যবহারে স্বেচ্ছায় সম্মতি দিয়েছিল কিনা।
মেটার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “এই রায় ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিসের সাম্প্রতিক নির্দেশনার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। একই ধরনের দাবিগুলো আগেও ৬,০০০ বার জার্মান আদালত খারিজ করেছে।” তিনি আরও বলেন যে, এই ঘটনায় ফেসবুকের সিস্টেম হ্যাক করা হয়নি এবং কোনো ডেটা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেনি।
BGH-এর এই রায় ডেটা সুরক্ষা এবং ব্যবহারকারীদের অধিকার রক্ষায় একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই রায় ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
নিম্ন আদালতের পরবর্তী রায়ের ওপর নির্ভর করে মেটা হয়তো বড় ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হতে পারে। এই রায় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে এবং তাদের ডেটা সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে উৎসাহিত করবে।