ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে শহীদ মিনার চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে দমন করার একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী মত দমন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপচেষ্টা বন্ধের আহ্বান জানান নেতারা। জেলা এনসিপি’র আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান শাওনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের এনসিপি মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা এনসিপি’র সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান রাসেল। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের উপর হামলা করে জনগণের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। জাতীয় নাগরিক পার্টি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করে নেবে।” এছাড়াও বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা যুব শক্তির আহ্বায়ক মীর সায়মন ইসলাম ও টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র শক্তির আহ্বায়ক আবু আহমেদ শেরশাহ। তারা বলেন, তরুণ সমাজ আর কোনো সন্ত্রাসী রাজনীতি মেনে নেবে না এবং হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব মাহাথির খান ভাসানী। এসময় জেলা এনসিপি, যুবশক্তি ও ছাত্র শক্তির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে একটি চক্র প্রতিবেশী দেশ ভারতে বসে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে দেশবাসীকে সর্বোচ্চ সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, যারা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার কায়েম করতে চায়—তারাই এসব ষড়যন্ত্রের মূল হোতা।’ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আরও বলেন, ‘যারা অতীতে এ দেশের নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, তারাই আজ নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গণতন্ত্র ধ্বংস করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার অপচেষ্টা চলছে। এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি দাবি করেন, ‘এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব একমাত্র বিএনপির হাতেই নিরাপদ। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করাই বিএনপির প্রধান লক্ষ্য।’ সমাবেশে জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল হক শাহীন, শফিকুর রহমান লিটন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ পাহেলী এবং জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল আলম। বক্তারা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় আন্দোলন আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
শরিফ ওসমান হাদি ও এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫) টাঙ্গাইল-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু’র নেতৃত্বে এই প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।মিছিলটি টাঙ্গাইল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নেতাকর্মীরা হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের ওপর ধারাবাহিক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বক্তারা।প্রতিবাদ মিছিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন,নির্বাচনের মাঠে বিরোধী কণ্ঠকে দমন করতে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হচ্ছে। এসব হামলা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায় করব।” মিছিলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান।
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি’র ওপর হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতের দিকে টাঙ্গাইল শহরের পৌর উদ্যান থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় পুরো শহরজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করে। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর টাঙ্গাইল জেলা আমীর আহসান হাবীব মাসুদ। তিনি বলেন, “একজন রাজনৈতিক নেতার ওপর প্রকাশ্য হামলা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের জন্য চরম হুমকি। অবিলম্বে হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মাজহারুল ইসলাম এবং শহর আমীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বারবার হামলা চালানো হচ্ছে, যা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা “হামলাকারীদের গ্রেফতার চাই”, “রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ কর”, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত কর”সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। নেতাকর্মীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ছাত্রশিবিরের বিপুলসংখ্যক কর্মী অংশ নেন। মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও পুরো সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে দিনব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে উপজেলা চত্বরে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষক-শিক্ষিকা একত্রিত হয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন। শিক্ষকদের উত্থাপিত তিন দফা দাবিগুলো হলো— ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ,সহকারী শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৈষম্য দূরীকরণ, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামোগত উন্নয়ন এবং পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধি। শিক্ষকরা জানান, বছরের পর বছর ধরে দাবি জানিয়ে কোনো ফল না পেয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা। তাদের ভাষায়, “আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ার দায়িত্ব পালন করি, অথচ নিজেরাই বঞ্চনার শিকার। দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সরকার আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করলে আমরা আবারও প্রাণবন্তভাবে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে পারব।” মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিলকিস সুলতানা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক, সহকারী শিক্ষক মো. লিটন সরকার, মো. ইউসুফ আলীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। বক্তারা বলেন— “শিক্ষকদের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে বেতনগ্রেড উন্নীতকরণ ও বৈষম্য দূরীকরণ এখন সময়ের দাবি। ন্যায্য প্রাপ্য নিশ্চিত হলে শিক্ষার্থীরা আরও গুণগত শিক্ষা পাবে, আর শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।” কর্মসূচিতে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাড়াও শিক্ষানুরাগী মানুষ, অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। বক্তারা আশা ব্যক্ত করেন, সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও সমাধানের মধ্য দিয়ে এ অচলাবস্থা কাটবে, এবং শিক্ষকরা আবারও স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যে যোগ দিতে পারবেন। দিনব্যাপী এ শাটডাউন কর্মসূচি পুরো উপজেলা জুড়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে খাদিজা খাতুন (২০) নামে এক তরুণীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া নবজাতকটি বেঁচে গেলেও তরুণীর মৃত্যু কেন্দ্রীক ক্ষোভে হাসপাতালজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাতের মীমাংসা বৈঠকে ৩ লাখ টাকায় বিষয়টি রফাদফা করার তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মধুপুর হাসপাতাল রোডের প্রাইভেট ক্লিনিক এশিয়া হাসপাতালে। মৃত খাদিজা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার কেশোরগঞ্জ এলাকার বাকতা গ্রামের সৌদি প্রবাসী শাহীন মিয়ার স্ত্রী। এটি ছিল তার দ্বিতীয় সিজার। স্বজনরা জানান, সিজার সম্পন্ন হওয়ার পরপরই খাদিজার শরীরে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ সময় দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হলেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। পরিবার অভিযোগ করে,অপারেশনের পর দীর্ঘ সময় রোগীর কাছে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি,চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।অবস্থার অবনতি হলেও সময়মতো অন্যত্র রেফার করা হয়নি।স্বজনদের দাবি—সন্ধ্যার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হলেও ততক্ষণে খাদিজা মারা গিয়েছিলেন। এশিয়া হাসপাতালের অন্যতম পরিচালক মানিক সাহা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান— “অপারেশনের পর রোগীকে নিয়ম অনুযায়ী পোস্ট অপারেটিভ রুমে রাখা হয়। সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। খাদিজার আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট ছিল। রক্তক্ষরণ ও শ্বাসকষ্টের কারণে তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও অবস্থার অবনতি ঘটে।” তিনি আরও দাবি করেন, ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিতে দেরি হওয়াতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। খাদিজার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতালের সামনে স্বজন ও স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করেন। স্বজনরা চিকিৎসার কাগজপত্র চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। এসময় হাসপাতালজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি সিজারের জন্য ভর্তি থাকা একাধিক রোগী হাসপাতাল ছাড়তে দেখা যায়। বিক্ষোভ ও চাপের মুখে রাতের দিকে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে হাসপাতাল প্রশাসন ও মৃতের পরিবারের মধ্যে মীমাংসা বৈঠক বসে। রাত ১১টা পর্যন্ত চলে এই বৈঠক। বৈঠকে তিন লাখ টাকায় রফাদফা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্থানীয়রা। স্বজনদের দাবি—চিকিৎসার স্পষ্ট অবহেলাতেই খাদিজার মৃত্যু হয়েছে, যা অর্থ দিয়ে শেষ করার মতো নয়।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার এলাসিন বাজার এলাকায় এই সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে টাঙ্গাইল-৬ আসনে জুয়েল সরকারকে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে এলাসিন বাজারে মানববন্ধন আয়োজন করেন জুয়েল সরকারের সমর্থকরা। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একই সময়ে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া রবিউল আউয়াল লাভলুর সমর্থকেরা তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণে একটি মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মিছিল মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন এবং একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এলাসিন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রিয়াজ সিকদার অভিযোগ করে বলেন, “খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল শেষে আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করি। মিছিল বের হওয়ার পর লাভলুর সমর্থকেরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের সাতজন আহত হয়েছে। আমরা দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।” অন্যদিকে লাভলুর সমর্থিত ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল মোল্লা বলেন, “দলের মনোনীত প্রার্থী লাভলুর সমর্থনে লিফলেট বিতরণ চলছিল। এসময় জুয়েল সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায় ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে।” দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোয়েব খান বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর‑বাসাইল) আসনে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান–এর সঙ্গে বিরোধের ফলে সখীপুর উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা পদত্যাগ করেছেন। অমর সংবাদ অনুসারে, একযোগে ১১ জন উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারা পদত্যাগ করেছেন। আরও আশঙ্কা করা হচ্ছে যে দুইশোরও বেশি পদাধিকাৰী নেতা পদত্যাগ করবেন। পদত্যাগকারীরা অভিযোগ করেছেন যে আযম খান তার ভোট শক্তি বাড়ানোর আশায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছেন এবং তাদের গুরুত্ব দিচ্ছেন দলীয় কার্যক্রমে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের অবমূল্যায়ন, নেতাকর্মীদের অবমাননা ইত্যাদি অভিযোগ উঠেছে। পদত্যাগকারীদের বক্তব্যে, আযম খানের আচরণ দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং তাদের অবস্থা “বহু ত্যাগী নেতার অবমূল্যায়ন”।একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে আযম খান allegedly একটি মুক্তিযোদ্ধাকে গালাগাল ও হুমকি দিচ্ছেন বলে দাবি করা হয়েছে। আযম খান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলছেন অডিও “এডিট করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে” ভাইরাল করা হয়েছে।এর আগে আযম খান বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগও উঠেছিল, যা কিছু নেতারা ষড়যন্ত্র বলছেন। এছাড়া, টাঙ্গাইলে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভও হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই পদত্যাগের ঘটনা শুধু কিছু সাংগঠনিক অসন্তুষ্টি নয়, বরং এটি একটি গভীর রাজনৈতিক বিভাজনকে ইঙ্গিত দিচ্ছে — বিশেষ করে স্থানীয় নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় নেতা (আযম খান)–এর মধ্যে।যেহেতু পদত্যাগকারীরা “আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন”–এর অভিযোগ তুলছেন, এটি নির্বাচনী কৌশল হিসেবে সম্ভাব্য বিরোধ সৃষ্টি করতে পারেঅডিও ফাঁস এবং ব্যক্তিগত বিরোধ আরও একটি মাত্রা যোগ করছে — এটি শুধু রাজনৈতিক না, ব্যক্তির প্রতি আস্থাহীনতার ইস্যু তোলে।দুইশোর পর্যন্ত নেতার পদত্যাগের সম্ভাবনা যদি সত্য হয়, তাহলে টাঙ্গাইল-৮ এলাকায় বিএনপির একক তার শক্তি হুমকির মুখে পড়তে পারে।এই সংকট যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে বিএনপির আসন‑প্রার্থিতা দুর্বল হতে পারে কারণ দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য কমে যাবে।আযম খান প্রশাসন বা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেতে পারেন — হয় ব্যাখ্যা দিতে হবে, হয় পদত্যাগ বা মনোনয়ন বাতিলের দাবি উঠতে পারে।সাধারণ দলের কর্মীদের মধ্যে আস্থা ব্যাহত হলে, নির্বাচন‑প্রচারণায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।এ পরিস্থিতি মিডিয়া ও ভোটারদের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন ইমেজ তৈরি করতে পারে, বিশেষত যদি পদত্যাগ ও অভিযোগগুলো বড় আকার নিতে থাকে।সখিপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এড. আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে আ.লীগ পূর্ণবাসনের অভিযোগ এনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ মাষ্টার, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আঃ মান্নান, গজারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রউফ এবং বহুরিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লতিফ মিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ২৭০ জন নেতাকর্মী দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেলে সাউথ আফ্রিকা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী হাবিবুর সিদ্দিকী লিটনের উদ্যোগে উপজেলার শামছুল হক কলেজের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মাঠ এসে শেষ হয়। এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম শোভা, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি মজনু মিয়া, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হাসমত আলী রেজা, এলেঙ্গা পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল বাতেন প্রমুখ। এসময় বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় সাউথ আফ্রিকা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী হাবিবুর সিদ্দিক লিটন বলেন, সম্প্রতি টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে লুৎফর রহমান মতিনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু মনোনয়ন পাওয়ার পরও মতিন কোনো গণসংযোগ কিংবা সভা করেনি। যার ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশ দেখা দিয়েছে।এ ছাড়া দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতা বেনজীর আহমেদ টিটোকে মনোনয়ন না দেওয়ায় আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা দ্রুতই মনোনয়ন পরিবর্তন করে টিটোকে দেয়ার দাবি করছি।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মির্জাপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের আয়োজনে গোড়াই ইউনিয়নের শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাব এবং বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ও টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ফিরোজ হায়দার খান। এ সময় তাদের অনুসারী, উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোড়াই শিল্পাঞ্চল এলাকা ঘুরে গোড়াই ফ্লাইওভারের নিচে এসে সমাবেশ করেন। সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মহসীন হলের সাবেক জিএস সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাব ছাড়াও বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ফিরোজ হায়দার খান, উপজেলা কৃষকদলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর মৃধা, লতিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন রনি, বিএনপি নেতা খন্দকার মোবারক হোসেন, ছোরহাব হোসেন মাহবুব শিকদার, সেতু হায়দার খান, আলী আযম খান উথান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। জানা গেছে, গত (৩ নভেম্বর) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনসহ দেশের ২৩৭টি সংসদীয় আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের প্রাথমিক নামের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকায় টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে মনোনয়ন পান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। স্থানীয় বিএনপির নেতারা জানান, ওই ঘোষণার পর থেকেই দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। মনোনয়ন বঞ্চিত নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মহসীন হলের সাবেক জিএস সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাবের অনুসারীরা মনোনয়নটি বাতিলের দাবিতে এর আগে একাধিক কর্মসূচি পালন করেন।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলীকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির অফিস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা শহরের বিভিন্নস্থানে প্রদক্ষণিক করে বিএনপির অফিসে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় মধুপুর বিএনপি সভাপতি জাকির হোসেন সরকার, ধনবাড়ি উপজেলা সভাপতি আজিজুর রহমান, মধুপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, পৌর বিএনপির সভাপতি প্রিন্স, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আব্দুল মোতালেব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তারা বলেন, টাঙ্গাইল ১ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ফকির মাহবুব আনাম স্বপন মনোনয়ন পরিবর্তনের নাম করে দাবিতে গতকাল বুধবার টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিক্ষোভ করছিলো মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা। জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মী ও শ্রমিকরা এগিয়ে আসলে মোহাম্মদ আলী সমর্থকরা হামলা করে। এসময় দুটি ক্লিনিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়। আমরা এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলীকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি করছি। একই সাথে ঘটনার জড়িত সবাইকে বহিষ্কারের দাবি করেছি। এছাড়া মোহাম্মদ আলী লোকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।
মোস্তফা মাসুদ: জুলাই–আগস্ট ২০২৪ সালে সংঘটিত সহিংস ঘটনাবলীর সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবিতে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে উপজেলা তাঁতীদলের উদ্যোগে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা এই ঘটনাগুলোকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।রবিবার (১৬ নভেম্বর ২০২৫) বিকালে আয়োজিত এই বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে তারালি চৌরাস্তা মোড় এলাকায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ জড়ো হন।পরে উপজেলা তাঁতীদলের আহ্বায়ক শরীফ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে মিছিলটি তারালি চৌরাস্তা মোড় থেকে শুরু হয়ে কাকশিয়ালী ব্রিজ পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিভিন্ন মোড়ে স্লোগান, ব্যানার ও ফেস্টুনে পুরো এলাকা উত্তাল হয়ে ওঠে। কাকশিয়ালী ব্রিজ এলাকায় গিয়ে মিছিলটির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।মিছিলে অংশগ্রহণ করেন— কালিগঞ্জ উপজেলা তাঁতি দলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন,সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক সাইফুল ইসলাম,নুর ইসলাম,আবু হাসান,আব্দুল আলিম,এবাদুল ইসলাম, কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রদলের আহ্বায়ক হৃদয় হোসেন , রতনপুর ইউনিয়ন তাঁতী দলের আহ্বায়ক ওয়াহেদুর রহমান মান্নান, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান, দক্ষিণ শ্রীপুর তাঁতি দলের আহবায়ক শরিফুল ইসলাম মধু, সদস্য সচিব ফারুক হোসেন, মথুরেশপুর ইউনিয়নের আহ্বায়ক ফারুক হোসেন,সদস্য সচিব শেখ হাফিজুর ইসলাম ছোট, ভাড়াসিমলা ইউনিয়ন ইউনিয়নের আহবায়ক মহিউদ্দিন গাজী ,সদস্য সচিব আলামিন হোসেন পুটু,ইব্রাহিম খলিল ও শাওন মুখার্জি প্রমূখ। বিক্ষোভকারীরা জুলাই–আগস্ট ২০২৪ সালের ঘটনাবলীর নিরপেক্ষ তদন্ত,নিহতদের পরিবারের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বক্তারা বলেন—“ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। এ ধরনের ঘটনায় বিচারহীনতা চলতে থাকলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এটি জাতির সামনে একটি বড় পরীক্ষা।”অঞ্চলের জনগণ দাবি জানায় যে, অনতিবিলম্বে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে এবং প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “আমাদের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ন্যায়বিচারের জন্য এই সংগ্রাম আমরা থামাবো না।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বিনিময় পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাসের চাপায় এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাতটার দিকে উপজেলার গোলাবাড়ি নামকস্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয় জনতা ওই পরিবহনের অন্য আরেকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে নিহত মোটরসাইকেল চালকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল কবির জানান, রাতে ধনবাড়ী থেকে ঢাকাগামী বিনিময় পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস মধুপুরের গোলাবাড়ি নামক স্থানে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলের চালক নিহত হন। পরে স্থানীয় জনতা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ধনবাড়ীগামী বিনিময় পরিবহনের অন্য একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে মধুপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
মধুপুরে বাসচাপায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত, আহত ১ সাজিদ পিয়াল: টাঙ্গাইলের মধুপুরে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান (১৬) নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল–জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোলাবাড়ী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনায় আরেকজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা জানান, ঢাকা–ধনবাড়ীগামী বিনিময় পরিবহনের একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে সামনে থাকা মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী ভাইঘাট উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র জাহিদ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তার সঙ্গে থাকা সঙ্গী গুরুতর আহত হয়ে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নিহত জাহিদ গোলাবাড়ী ইউনিয়নের বাসুদেববাড়ী গ্রামের জাকের হোসেনের ছেলে। পরিবার জানান, অসুস্থ বাবাকে দেখতে এসে বাড়ি ফেরার পথে সে দুর্ঘটনার শিকার হয়। জাহিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের গ্রাম থেকে কয়েকশ মানুষ মহাসড়কে জড়িয়ে পড়ে। তারা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে টাঙ্গাইল–জামালপুর মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ধনবাড়ী থেকে ঢাকাগামী বিনিময় পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা মিলে পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমরানুল কবীর বলেন, “নিহত জাহিদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘাতক বাসটি দুর্ঘটনার পর পালিয়ে গেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” স্থানীয়দের অভিযোগ, মহাসড়কটিতে দ্রুতগতির যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল ও নজরদারির অভাবে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। একদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী অধিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ১৩ ই নভেম্বর কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরের দেশীয় অস্ত্র হাতে মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে দলটির কর্মীরা। এ সময় মহাসড়কে গাছের গুড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। অবরোধ চলাকালে শিশুদেরও দেশীয় অস্ত্র রামদা সহ লাঠি সোটা হাতে সড়কে অবস্থান করতে দেখা যায়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে ঢাকা টু খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলার আলগা ইউনিয়নের শুয়াদী বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এই অবরোধ করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯ টার পর্যন্ত তারা সড়ক অবস্থান করে। জেলা যুবলীগ নেতা দেবাশীষ নয়ন কে তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভ ভিডিওতেও দেখা যায়। মহাসড়কটির ও পর গাছের গুড়ি ফেলে রেখে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এতে শতাধিক স্থানীয় নেতা - কর্মী দেশীয় অস্ত্র রামদা,ঢাল,সরকি হাতে মহাসড়কে অবস্থান করছেন।এ সময় নারীদের পাশাপাশি অন্ততপক্ষে ১০ টি শিশুরা ও হেলমেট মাথায় ও অবস্থান করতে দেখা যায়, তাদের একটি শিশুকে রামদা হাতে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় ঢাকা মুখি যানবাহন সহ সড়কে দুই পাশে বেশ কিছু গাড়ি আটকা পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ঢাকা খুলনা মহাসড়কে ভাঙ্গা থেকে গোপালগঞ্জ মুখী ওই এলাকা আওয়ামী লীগ অধু্্যষিত । লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণার আগে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীরা ওই এলাকায় অবস্থান করেন। ভোররাত থেকে কয়েকজন নেতা কর্মী লকডাউন এর সমর্থনে সড়কে অবস্থান নেন এবং পরে অন্যরা যোগ দিয়ে পুরো রাস্তা অবরোধ করেন। এতে এলাকায় উত্তেজনাসৃষ্টি হয়। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রোকিবুজ্জামান বলেন, ঢাকা বরিশাল মহাসড়কের মাধবপুরে অবরোধকারীরা অবরোধ করতে পারেনি। তবে ভাঙ্গার পুলিয়া এলাকায় অবরোধ করা হলেও সেটিও এক ঘণ্টার মধ্যেই অবসর করা হয়েছে। পুলিশ অবরোধ করিয়ে দিতে নিরবিচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে ফরিদপুর বাস মালিক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা ৩: টা পর্যন্ত তারা সকল পথে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। গোল্ডেন লাইন বাস কাউন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সকাল ৬ টা থেকে বেলা ৩: ০০ টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ বিষয়ে ফরিদপুর বাস মালিক গ্রুপের নেতা কামরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, আমরা বাস চালাতে চাই, তবে যাত্রী না পেলে তো বাস চালানো সম্ভব না। খালি বাস নিয়ে তো আর পথে নেওয়া যায় না।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে একটি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন এক প্রসূতি মা। নিহতের নাম মাসুমা আক্তার (২৫)। তিনি ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া গ্রামের জামাল ভূঁইয়ার স্ত্রী। তবে মৃত্যুর মধ্য দিয়েও বেঁচে গেছে তার নবজাতক সন্তান। (৩০ অক্টোবর) ভূঞাপুর পৌর এলাকার সিটি হার্ট ক্লিনিকে। অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলা, অনিয়ম এবং পরবর্তীতে ঘটনাটি গোপন করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে প্রসব ব্যথা ওঠায় মাসুমাকে ভূঞাপুরের সিটি হার্ট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। দুপুর দুইটার দিকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নেওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। অপারেশন করেন ধনবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. এনামুল হক সোহেল যিনি একইসঙ্গে ওই ক্লিনিকের পার্টনার হিসেবেও পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এনেস্থেসিয়ার দায়িত্বও নিজেই পালন করেন, যদিও এ কাজে আলাদা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। অপারেশনের পরপরই রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কিন্তু কোথাও স্থানান্তরের ব্যবস্থা না করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্লিনিকেই ফেলে রাখা হয় তাকে। একপর্যায়ে নিথর দেহে পরিণত হন মাসুমা আক্তার। স্বজনদের অভিযোগ, মৃত্যুর পরও প্রায় ছয় ঘণ্টা তাকে অপারেশন থিয়েটারে আটকে রাখা হয়, কাউকে দেখতেও দেওয়া হয়নি। পরে ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য’ অন্যত্র পাঠানোর নামে মরদেহই অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্লিনিক প্রাঙ্গণে শুরু হয় কান্না, ক্ষোভ আর বিক্ষোভ। স্থানীয়দের চাপের মুখে পুলিশ এসে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয় এবং দুইজন স্টাফকে আটক করে। তবে চিকিৎসক ও ক্লিনিকের মালিকপক্ষ পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাতে ভূঞাপুর থানায় ‘মীমাংসার নাটক’ মঞ্চস্থ হয়। সেখানে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ৫ লাখ টাকা প্রদান করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া তথ্যে জানা যায়, ওই টাকার একাংশ কিছু তথাকথিত সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও পুলিশের হাত ঘুরেছে। ঘটনার পর থেকে সিটি হার্ট ক্লিনিকের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ভূঞাপুর থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, “থানায় মীমাংসা বা টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুব হাসান বলেন, ঘটনার পর থেকে ক্লিনিক বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে সংঘটিত লগি-বৈঠার তাণ্ডব ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা থানা চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আমির অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের জামায়াত মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা হুমায়ুন কবির। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা ইদ্রিস হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা রাফিউল আলম রুমু, উপজেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আব্দুল মান্নান এবং উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক উবাইদুল্লাহ। ফরহাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা বাজার ও প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। বক্তারা বলেন, “২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের পল্টন হত্যাযজ্ঞ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। আমরা সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।” সমাবেশে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের অসংখ্য নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
টাঙ্গাইল জেলায় আসন্ন ২০২৬ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর ৫ আসন জুলাই সনদ এবং নানাবিধ কার্যকলাপ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে জেলা জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (২৭ অক্টোবর ২০২৬ ইং) তারিখে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশ করে তারা। দাবিগুলো হলো, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনে PR পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। সমাবেশে টাঙ্গাইল জেলা আমির আহসান হাবীব মাসুদের সভাপতিত্ব করেন। টাঙ্গাইল জেলার জামায়াতী ইসলামে সদর ৫ আসনের প্রার্থী আহসান হাবীব মাসুদ বলেন,দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। হাজারো ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জাতিকে সঠিক গন্তব্যে নিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। সদর উপজেলা আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন বাদলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি মাওলানা হুমায়ুন কবির, সহকারী সেক্রেটারি হোসনে মোবারক বাবুল, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান, খেলাফত মজলিসের জেলা সহসভাপতি মুফতি আব্দুর রহমান মাদানি, খেলাফত মজলিসের জেলা সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান কোরায়েশী, শহর আমির অধ্যাপক মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ। এই বিক্ষোভ সমাবেশে সবাইকে ধৈর্য এবং শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানান এবং দেশের সকল নেতাকর্মীদের সঠিকভাবে কার্যকলাপ অংশগ্রহণ করতে আহ্বান জানান।
টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার করটিয়া নামদার কুমিল্লি গ্রামে প্রেমের অভিযোগে কারাগারে থাকা যুবকের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী। রোববার (২৬ অক্টোবর ২০২৫) করটিয়া ইউনিয়নের নামদার কুমিল্লি বাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এই মানববন্ধনে অংশ নেয় এলাকার শত শত মানুষ যেটি একটি অন্যরকম আলোড়নায় সৃষ্টি হয় এবং প্রশাসনকে উল্লেখ করে বলা হয় যে সোহাগের নামে যে মিথ্যা এবং অন্যায় ভাবে তাকে কারাগারে নির্যাতন করা হচ্ছে এর বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সোচ্চার এবং তাকে ছেড়ে দেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ার এলাকাবাসীর। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গ্রামের হিতৈষী ব্যক্তিবর্গ হাফিজ উদ্দিন ভুইয়া, খলিলুর রহমান, আশরাফ আলী মিঞা,ফরিদ মিঞা ,মজিবর রহমান মিঞা, আবুল কালাম আজাদ, মো. জাহিদ মিয়া ও ফরিদ মিয়া প্রমুখ। নামদার কুমল্লী গ্রামের মো. সহিদুল ইসলামের ছেলে মো. সোহাগ মিয়া (২৩) দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের মো. লোমান মিয়ার মেয়ে নাফিছা আক্তার লুবনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে লুবনা গত দুই বছরে একাধিকবার সোহাগের বাড়িতে গিয়েছিলেন। প্রতিবারই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মেয়েটিকে বুঝিয়ে তার বাবার বাড়িতে পৌঁছে দেন। সম্প্রতি লুবনা আবারও প্রেমিক সোহাগের কাছে চলে এলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার পিতা লোমান মিয়া সোহাগের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর—নারী ও শিশু ১৫৭/২৫। বর্তমানে ওই মামলায় সোহাগ চার মাস ধরে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দি আছেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, মেয়ের পিতা প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রেমের সম্পর্ককে ‘অপহরণ’ আখ্যা দিয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। তারা অবিলম্বে সোহাগের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং মুক্তি না পেলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। মানববন্ধনে সোহাগের বাবা সহিদুল ইসলাম ও মা সুর্যভানু কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলের মুক্তির আবেদন জানান। মানববন্ধন শেষে নামদার কুমিল্লি বাজার থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকায় বসবাসরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে এ মানববন্ধন অনু্ষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া টাঙ্গাইলবাসীরা জানান, টাঙ্গাইলকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব তারা মেনে নেবেন না। টাঙ্গাইল নিয়ে টানাহেঁচড়া চলবে না। টাঙ্গাইল ৪২ লক্ষ্য মানুষের একটি বড় জেলা যেটি ময়মনসিংহ এর থেকে অধিক উন্নত ব্যবস্থা রয়েছে বক্তারা আরো বলেন,আমাদের কে বার বার এমনভাবে হয়রানি করা যাবে না আর যদি টাঙ্গাইলকে জোর পূর্বক ময়মনসিংহ বিভাগে দেওয়া হয় আমরা কঠিন প্রতিবাদ করবো এবং যদি ঢাকা বিভাগে না থাকে, তাহলে একে স্বাধীন বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি রবিন খান বলেন, ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করাকে আমি ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছি। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে টাঙ্গাইলের সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করে এই ষড়যন্ত্রমূলক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বাধ্য করবে। টাঙ্গাইল ঢাকার সঙ্গেই থাকবে, উল্টো পথে হাঁটবে না। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ বলেন, কোথাও মধু কিংবা সোনার খনি থাকলে সবাই লুফে নিতে চায়৷ টাঙ্গাইল তেমন একটি স্থান। তাই বারবার এই জেলাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়। এর আগেও একই ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, তখন ঢাকা ও টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ করে দাবি আদায় করেছিলাম। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আবারও একই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, আমরা টাঙ্গাইলবাসী এটা মেনে নেব না। আমাদের কথা- আমরা ঢাকার সঙ্গে আছি এবং থাকব। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি সুরুজ মন্ডল বলেন, টাঙ্গাইল ঐতিহ্যবাহী জেলা। ময়মনসিংহ বিভাগে টাঙ্গাইলের প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তকে আপামর জনসাধারণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি বিভাগে যা প্রয়োজন তা টাঙ্গাইলে আছে।
বুয়েটে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর দ্রুত শাস্তির দাবি জানায়। শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযোগের পর অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুয়েট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা সোচ্চার ভূমিকা রাখছে, এবং প্রশাসনও এসব ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির নতুন ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) হলেন মোঃ মনিরুজ্জামান। নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবারে ব্যুরো চিপ (ঢাকা বিভাগ) পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী মোঃ মনিরুজ্জামান। তার দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীলরা জানান, দুর্নীতি দমন ও সামাজিক অন্যায়-অবিচার তুলে ধরতে মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভির কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নেবে। এই উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেনঃ ১️⃣ মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ২️⃣ মোঃ শহিদুল ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি ৩️⃣ মোঃ মাহমুদুল হাসান, বার্তা সম্পাদক, দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন— “আমরা মোঃ মনিরুজ্জামান সাহেবের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। তার প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বে দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি পরিবার অচিরেই আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে।”
মাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৩৩৪তম পর্বে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে নিয়ামত কমে যাবে কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন একজন দর্শক। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া। প্রশ্ন : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করলে কি নিয়ামত কমে যাবে? উত্তর : নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা কুফরি। এটা বড় কুফরি না, ছোট কুফরি। যদি আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে থাকেন, তাহলে তাঁরা কুফরি কাজ করে থাকলেন। এ জন্য আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, আমার সঙ্গে কুফরি করো না।’ আল্লাহ যে নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন, আল্লাহর নিয়ামত লাভ করে সুন্দর জীবনযাপন করা, এটা যদি কেউ আল্লাহর কাছে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে না পারে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া করলেন না, কুফরি করলেন। এই জন্য আল্লাহ সুরা দোহার শেষ আয়াতে বলেছেন, ‘তুমি তোমার রবের নিয়ামত প্রকাশ করো। কারণ, তোমার কাছে যখন নিয়ামত আসছে, তখন আল্লাহ পছন্দ করেন যে তুমি আল্লাহর এই নিয়ামতের বিষয়টি তুলে ধরবে।’ আল্লাহর কাছে বলবে, আল্লাহ আমাকে এই নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। আল্লাহ নিয়ামতকে বান্দার কাছে তুলে ধরার জন্য বলেছেন, বহিঃপ্রকাশ করার জন্য বলেছেন। বহিঃপ্রকাশ দুই ধরনের হতে পারে। একটি হলো নিয়ামতের ব্যবহারের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত, নিয়ামতের বিষয়টি হলো মানুষের কাছে নিয়ামত তুলে ধরবে। যাতে করে আল্লাহর প্রশংসা প্রকাশ পায়। নিয়ামতের শুকরিয়া যদি কেউ আদায় না করেন, তাহলে কুফরি হবে। আল্লাহ বলেছেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করে থাক, তাহলে আমি আরো বৃদ্ধি করে দেব। বান্দারা যখন নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবে, তখন আল্লাহ আরো নিয়ামত দিয়ে সমৃদ্ধ করে দেন। আর যদি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করা হয়, তাহলে আল্লাহ নিয়ামত কমিয়ে দেবেন এবং সেইসঙ্গে আরেকটি কঠিন বাণী আল্লাহ বলেছেন, ‘জেনে রাখো আল্লাহর কঠিন আজাবও তোমাদের জন্য অবধারিত থাকবে।’ নিয়ামতের শুকরিয়া শুধু মুখে আদায় করা যথেষ্ট নয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর শুকরিয়া আমলের মাধ্যমে আদায় করো।’ সুতরাং বান্দারা শুকরিয়া আদায় করবে। শুকরিয়ার অনেকগুলো দিক রয়েছে, তার মধ্যে আমলের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করা হলো শুকরিয়ার সর্বোচ্চ স্তর।
তিনি ছিলেন মানবজাতির আদর্শ। তিনি অত্যন্ত উদার ও বিনয়ী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন সাহসী যোদ্ধা। এছাড়াও তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক, একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক এবং একজন সফল প্রচারক ছিলেন। তিনিই উত্তম চরিত্র ও উদারতার একমাত্র উৎস। তিনি সকলের আদর্শহীন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার প্রেমে, দুনিয়া মাতাল। তিনি আমার আদর্শ, তিনি আমার নেতা। তিনি আমার নবী, আমাদের নবী এবং সকলের নবী। তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তিনি সর্বোত্তম আদর্শ। সমস্ত মানবজাতির জন্য করুণা। অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে। তার অসাধারণ চরিত্র, মাধুর্য এবং অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব সবাইকে অবাক করেছে। মুমিনের চঞ্চল হৃদয় তাকে এক নজর দেখার জন্য আকুল হয়ে থাকে। কবি কাজী নজরুল বলেছেন: “বিচ্ছেদের রাত ছিল একাকার কান্নার ভোর; আমার মনে শান্তি নেই, আমি কাঁদছি। হে মদিনাবাসীর প্রেমিক, আমার হাত ধর।" তার নিষ্কলুষ চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।" (সূরা আল-আহজাব, আয়াত 21)। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে আজ কিছু লোক সেই নবীর সম্মানকে অবমাননা করছে। হৃদয় ভেঙ্গে যায়। আমাদের ক্ষমা করুন, হে নবী! তিনি তার অবিস্মরণীয় ক্ষমা, উদারতা, সততা, নম্রতা প্রভৃতির বিরল মুগ্ধতা দিয়ে বর্বর আরব জাতির আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য তারা তাকে ‘আল-আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তারা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকার করেছিল যে তিনি নম্র এবং গুণী ছিলেন। টাকা দিয়ে নয়, ভালো ব্যবহার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে জয় করেছেন। আল্লাহ তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহৎ চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা আল কালাম, আয়াত ৪)। তিনি কখনো মানুষকে তুচ্ছ করেননি। আত্মসম্মানবোধে তিনি কাউকে তুচ্ছ মনে করেননি। তিনি বিশ্বের হৃদয়ে উচ্চতর চরিত্রের একটি অনুপম মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। নম্রতা তার চরিত্রে সর্বদা উপস্থিত ছিল। পৃথিবীর মানবতার কল্যাণে তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল শ্রেষ্ঠ আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবে। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাকে আমার উত্তম চরিত্র পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত করা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত) ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং আচার-আচরণে অত্যন্ত বিনয়ী। দুর্বল ব্যক্তিকে কড়া কথায় আঘাত করবেন না। তিনি কোন মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অসাধ্য সাধন করতে বাধ্য করেননি। গরিব-অসহায় মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। তিনি লোকদেরকে তাদের আচরণে অপ্রয়োজনীয় রাগ ও রাগ থেকে সর্বদা বিরত থাকার উপদেশ দিতেন এবং মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন এবং যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করেন।” (মিশকাত) কাফেররাও তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সদয় ও নম্র আচরণ পেয়েছিল। তার অনুসারীরা তাকে উচ্চ সম্মানের সাথে ধরেছিল কারণ তিনি খুব নমনীয় এবং নম্র ছিলেন। হজরত আয়েশা (রা.) তার ভদ্র আচার-আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘নবী (সা.) রূঢ় বক্তা ছিলেন না, প্রয়োজনের সময়ও তিনি কঠোর ভাষা ব্যবহার করতেন না। প্রতিহিংসা তার সাথে ছিল না মোটেও। মন্দের বিনিময়ে ভালোই করেছেন। সব ক্ষেত্রেই তিনি ক্ষমা পছন্দ করতেন। তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন, “আল্লাহর ইবাদত কর, করুণাময় প্রভু, ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, সালাম দাও এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ কর। তিনি উত্তর দিলেন, "ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং অপরিচিত সকলকে সালাম করা।" (বুখারী ও মুসলিম)। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদাকে সম্মান করা মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের মৌলিক অংশ।
নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আপনার জিজ্ঞাসার ২৯২৯তম পর্বে ই-মেইলের মাধ্যমে কানিজ নাহার দিপা জানতে চেয়েছেন, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? অনুলিখন করেছেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ। প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া-মাহফিল করা জায়েজ কি? উত্তর : না দোয়ার জন্য আলাদা কোনো মাহফিল নেই। এটা আসবে কেন? আমরা একটা জায়গা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি কাজ করছি। কিন্তু সেই কাজটি ভুল করে আরও বড় ভুলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমাদের সমাজে একটি প্রথা একেবারে ছেয়ে গেছে। যেমন—একজন মারা গেলে তার জন্য মিলাদ-মাহফিল করা কিংবা কূলখানি করা। কিন্তু এগুলো সবই বেদআতি কাজ। এগুলো সঠিক কাজ নয়। অনেকে মনে করছে, দোয়া-মাহফিল করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা একদমই নয়। এসব ইসলামে অনুমোদন দেয়নি। এইগুলো পুরোটাই বেদআত। মানুষ চাইলে যে কোনো সময় কিংবা যে কোনো জায়গা থেকে দোয়া করতে পারবেন। দোয়ার সঙ্গে মাহফিল কিংবা আলাদা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা জায়েজ নেই। আশা করি, আপনি বুঝতে পেরেছেন।
র্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি ও চীনের ডিপসিকের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতার নয়, বরং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চ্যাটজিপিটি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ লেখা, গবেষণা, প্রোগ্রামিংসহ নানান কাজে অপরিহার্য টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি চীনের তৈরি ডিপসিক এআই জগতে নতুন আলোড়ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, তুলনামূলক কম চিপ ব্যবহার করেই অত্যাধুনিক এআই সেবা দেওয়া সম্ভব, যেখানে ওপেনএআই-এর বিশাল মডেলগুলোর জন্য ১৬,০০০ বা তারও বেশি চিপ প্রয়োজন হয়, সেখানে মাত্র ২০০০ চিপ দিয়ে ডিপসিক কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। দুই প্ল্যাটফর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ✅ চ্যাটজিপিটি: বিস্তৃত বিশ্লেষণ ও গভীর গবেষণা উপস্থাপন করতে পারে, যা একাডেমিক ও জটিল সমস্যার সমাধানে সহায়ক। ✅ ডিপসিক: দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে পারে, যা তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাশী ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী। লেখালেখির ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি কেবল ধারণা ও প্লটের কাঠামো গড়ে তোলে, যেখানে ডিপসিক প্রায় পুরো গল্প তৈরি করে দিতে পারে। একইভাবে, কোডিংয়ের ক্ষেত্রেও ডিপসিক কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সমাধান দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশের সরকার ইতোমধ্যেই ডিপসিকের ডেটা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওপেনএআই নিজেও অতীতে অনুমতি ছাড়া মানুষের লেখা ডেটা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, যা এখন ডিপসিকের বিরুদ্ধে উঠছে। ডিপসিকের সাফল্যের ফলে এআই চিপের বাজারেও বড় প্রভাব পড়েছে। এনভিডিয়া, যারা উন্নত চিপ তৈরিতে বিশ্বব্যাপী অগ্রগণ্য, তাদের শেয়ারের মূল্য একদিনে প্রায় ১৭% কমে গেছে। কারণ, কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যারেও কার্যকর এআই সম্ভব হলে উচ্চমূল্যের উন্নত চিপের বাজার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়, তবে ডিপসিকের উদ্ভাবন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই চীনে উন্নত চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কম খরচে ভালো এআই তৈরি হলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতেরও লাভ হতে পারে। এই প্রতিযোগিতা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎকে আরও উন্নত ও বহুমাত্রিক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান দরকার, সেখানে হয়তো ডিপসিক এগিয়ে থাকবে, আর যেখানে গবেষণা ও জটিল বিশ্লেষণের প্রয়োজন, সেখানে চ্যাটজিপিটির মতো বৃহৎ মডেলগুলো প্রাধান্য পাবে। শেষ পর্যন্ত, এই প্রতিযোগিতাই হয়তো এআই প্রযুক্তিকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করবে।