সিরিয়া একটি নতুন ও যুগান্তকারী পরিবর্তনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর বিদ্যমান সংবিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে। এরপর সিরিয়ায় নতুন সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে ইসলামী আইনশাস্ত্রকে সংবিধানের প্রধান উৎস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১৩ মার্চ, দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল সারা এই সংবিধান ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন। তিনি জানান, এই ঘোষণা সিরিয়ার পাঁচ বছরের অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল সারা ক্ষমতা গ্রহণের পর অস্থায়ী আইন পরিষদ গঠনের সুযোগ পান এবং তার পরপরই সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। সংবিধান প্রণয়ন কমিটির এক সদস্য স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নতুন আইনের মূল দিকগুলো তুলে ধরেন। সারা বলেন, "আমরা আইন প্রণয়নের উৎসগুলোর মধ্যে ইসলামী আইনশাস্ত্রকে প্রধান উৎস হিসেবে সংরক্ষণ করেছি।" তিনি আরও বলেন, "এই আইনশাস্ত্র প্রকৃত সম্পদ, যা সংরক্ষণ করা উচিত।"
নতুন সংবিধানে নারীদের শিক্ষা অধিকার, কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যম, প্রকাশনা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট সারা বলেন, "আমাদের আশা, এই সংবিধান সিরিয়ার জনগণের জন্য সংস্কার ও উন্নয়নের পথে একটি ভালো সূচনা হবে।"
গত ফেব্রুয়ারিতে সারা বলেছিলেন, সিরিয়ায় একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে। ২০১২ সালে কার্যকর হওয়া সিরিয়ার পূর্ববর্তী সংবিধান এই বছরের জানুয়ারিতে স্থগিত করা হয়। বাশার আল-আসাদের পতনের পর সামরিক কমান্ডোরা আহমেদ আল সারাকে সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর রয়টার্স জানায়, সিরিয়ার সংবিধান স্থগিত করা হয়েছে এবং অন্তর্বর্তী পর্যায়ের জন্য সারা একটি অস্থায়ী আইন পরিষদ গঠনের ক্ষমতা পেয়েছেন। নতুন সংবিধান গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত তিনি এই পরিষদ পরিচালনা করবেন।
নতুন সংবিধানের মাধ্যমে সিরিয়ার শাসনব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। বিশেষত, ইসলামী আইনশাস্ত্রকে প্রধান উৎস হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত দেশটির আইনি কাঠামোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নির্দেশ করছে। এটি সিরিয়ার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলে দেবে।
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন