ঢাকা, শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
HTML tutorial

দরসে হাদিসের ইতিহাস ৩

মুফতি আহমাদ আলী

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৪:২৭ এএম

দরসে হাদিসের ইতিহাস ৩

ভারতবর্ষে দরসে হাদিস: যখন ভারত উপমহাদেশে ইসলামী শাসনব্যবস্থা তো দূরের কথা মুসলিম শাসকরা ও যখন বিদায় নিলো, প্রকৃতপক্ষে মুসলমানরা নিজেদের শিক্ষা- সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে বিজাতীয় শিক্ষা- সংস্কৃতি গ্রহণ করে ইংরেজদের গোলামে পরিণত হয়েছিল। ইসলামের চির শত্রু ইংরেজ বিনিয়া গোষ্ঠী মুসলমানদের দীর্ঘমেয়াদী গোলামী পরিণত করার পরিকল্পনা হিসেবে তারা নামে মাত্র কিছু মাদ্রাসা রেখে বাকি সমস্ত মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়। হাজার হাজার আলেম- ওলামাকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে। আর মাদ্রাসা নাম দিয়ে তারা খ্রিস্টানদের মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানে মুসলমানদের সন্তানদেরকে ব্রেন ওয়াশ করার কারখানা চালু করে। এসব প্রতিষ্ঠান তখন আলিয়া মাদ্রাসা নামে খ্যাতি লাভ করে।

যখন উম্মতের দরদী সন্তান হযরত কাসেম নানুতুবী রাহমাতুল্লাহ এসব পর্যবেক্ষণ করেন, তখন তিনি নিজের মনে অনেক ব্যথা অনুভব করতেন। তার চোখের সামনে মুসলিম জাতি যখন নিজের স্বকীয়তা ও আত্মপরিচয় হারা হতে চলছিল, তিনি অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়েন। এটাই তার রাত- দিনের চিন্তা ফেরেশানির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তার এই ব্যাথিত হৃদয়ের সান্তনা স্বরূপ আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে তিনি স্বপ্নযোগে দেখতে পান। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ লাঠি মোবারক দ্বারা একটি মাদ্রাসার ম্যাপ অংকন করে দেন। ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে তিনি সেই ম্যাপের আলোকে মুসলমানদেরকে দাসত্বের শিকল থেকে মুক্ত করতে পুনরায় সম্পূর্ণরূপে স্বকীয়তা বজায় রেখে ১৮৬৬ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ নামে বিশ্ববিখ্যাত মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার ধারাবাহিকতায় ১৯০১ সালে তাওহীদ ও সুন্নাতের আলোর মশাল নিয়ে সুফফা ও দেওবন্দের শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় দারুল উলুম হাটহাজারী। এইসব মাদ্রাসা সরাসরি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর ইঙ্গিতে প্রতিষ্ঠিত এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় পরিচালিত।

একেবারে প্রাথমিক যুগে যারা ভারতবর্ষে সুন্নাতে রাসুল ও হাদিসের নববীর ঝান্ডা বুলন্দ করেছিলেন তাদের মধ্যে ইসমাইল বিন মুসা বসরি, ফাতাহ মোহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ সিন্দি ও রবি ইবনে সবিহ আল বসরীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রবি ইবনে সবিহ  সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে কাশফুযযুনুন প্রণেতা বলেন কথিত আছে যে, তিনি সর্বপ্রথম হাদিস শাস্ত্রে গ্রন্থ রচনা করেন। এটি ছিল হাদিসের খেদমতের বিপ্লবী যুগ। তখন থেকেই ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেজে উঠল হাদ্দাসানা ও আখবারানা এর মোহনীয় ধ্বনি। সে যুগের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণের মধ্যে শাইখ আব্দুল মাক্কী, শায়খ রহমাতুল্লাহ সিন্দি, মাজমাউল বিহার ও আল- মুগনী প্রণেতা আল্লামা শায়েখ মোহাম্মদ তাহের ফাতনী, হাদিস শাস্ত্রের বিশ্বকোষ কাঞ্জুল উম্মাহ প্রণেতা প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা শাইখ আলী মুত্তাকি গুজরাটি, বিশিষ্ট মুহাদ্দিস সৈয়দ আব্দুল আউয়াল হুসাইন, যিনি সর্বপ্রথম ভারতবর্ষে সহীহ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যা করেছেন, গ্রন্থটির নাম ফয়যুল বারী।            লেখা চলবে ---

alo