ঢাকা, বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১০, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রমজানের ইতেকাফ: কোরআন ও হাদিসের আলোকে গুরুত্ব ও বিধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১ মার্চ, ২০২৫, ০৭:১৩ পিএম

রমজানের ইতেকাফ: কোরআন ও হাদিসের আলোকে গুরুত্ব ও বিধান
HTML tutorial

ইতেকাফের সংজ্ঞা

ইতেকাফ হলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মসজিদে অবস্থান করা এবং ইবাদতে মনোনিবেশ করা। এটি আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।


ইতেকাফের বিধান কোরআনে

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন:

وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ
“তোমরা যখন মসজিদে ইতেকাফরত থাকবে তখন তোমরা স্ত্রীগমন করো না।”
📖 (সুরা বাকারা: ১৮৭)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, ইতেকাফ একটি সুন্নাত ইবাদত, যা নবী (সা.) ও সাহাবিগণ পালন করতেন।


হাদিসের আলোকে ইতেকাফ

নবীজি (সা.) আজীবন ইতেকাফ করেছেন

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন:

"রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করতেন। মৃত্যুর পূর্ববর্তী বছর তিনি বিশ দিন ইতেকাফ করেন।"
📖 (বুখারি: ২০২৬, মুসলিম: ১১৭২)

ইতেকাফের উদ্দেশ্য

আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন ও আত্মশুদ্ধির জন্য এটি পালন করা হয়।

নারীদের ইতেকাফ

নারীরাও ঘরের নির্দিষ্ট স্থানে ইতেকাফ করতে পারেন, যা রাসূল (সা.)-এর সময়কার নারীরা করতেন।


ইতেকাফের ফজিলত ও উপকারিতা

কদরের রাতের সওয়াব লাভ: রমজানের শেষ দশ দিনে কদরের রাত রয়েছে, যা এক হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম।

গুনাহ মাফ হয়: রাসূল (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি ইখলাসের সাথে ইতেকাফ করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (আবু দাউদ)

আত্মশুদ্ধির সুযোগ: ইতেকাফে ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে মুমিন আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে পারে।

দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে মুক্তি: মুমিন ব্যক্তি পার্থিব চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদতে ব্যস্ত থাকতে পারে।


ইতেকাফের নিয়ম ও শর্ত

📌 সময়সীমা:

  • সুন্নাতে মুআক্কাদা ইতেকাফ: ২০ রমজানের সূর্যাস্ত থেকে ঈদের চাঁদ দেখার আগ পর্যন্ত।
  • নফল ইতেকাফ: যেকোনো সময় করা যায়।

📌 ইতেকাফকারী যা করতে পারবেন:
✔ কোরআন তিলাওয়াত
✔ নামাজ, জিকির, দোয়া
✔ ইসলামি জ্ঞান অর্জন

📌 যা পরিহার করতে হবে:
❌ অহেতুক কথা বলা
❌ দুনিয়াবি কাজকর্ম
❌ মসজিদ ত্যাগ করা (অবশ্যকীয় প্রয়োজনে ব্যতীত) HTML tutorial


উপসংহার

রমজানের ইতেকাফ একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত ইবাদত, যা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি করলে গুনাহ মাফ হয়, কদরের রাতের ফজিলত লাভ হয় এবং দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

আসুন, আমরা সবাই রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের চেষ্টা করি। 🤲

মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Google News Icon গুগল নিউজে দেখুন
HTML tutorial